ক্রিয়েটিভ রাইটিং || ছোটগল্প: চৌকিদার (পর্ব -০১)
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও ভালো আছি। |
---|
আজকের এই ব্লগে তোমাদের সাথে একটি ছোটগল্প শেয়ার করবো । গল্পটির নাম "চৌকিদার"। গল্পটির প্রথম পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক।
গ্রামটির নাম মিঠাপুকুর। এই গ্রামটি বিগত ১০ বছর ধরে বেশ ভালই উন্নতি করেছে। এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কৃষক। তারা কৃষির ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ার কারণে এই গ্রামের এত উন্নতি। প্রায় প্রত্যেকটা পরিবারেই সমৃদ্ধি ফিরে এসেছে এখানে। তবে এই সমৃদ্ধির সাথে সাথে অন্য আরেকটা ব্যাপারও ঘটেছে। তা হলো চোরদের নজর এই গ্রামের উপর পড়েছে। আগে এই গ্রামে এত চুরির ব্যাপার ঘটতো না। তবে ইদানিং প্রত্যেক বাড়ি থেকেই কিছু না কিছু চুরির ঘটনা জানা যাচ্ছে। এই ব্যাপারটা প্রত্যেকটা পরিবারকেই টেনশনের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। দিনের বেলা অপরিচিত অনেক লোকেরই আনাগোনা দেখা যায় এখন এই গ্রামে। তবে তারা চোর কি ভালো মানুষ সেটা বোঝা খুব মুশকিল। কারণ চুরির ঘটনা দিনে ঘটে না শুধু রাতেই ঘটে।
এই গ্রামের চৌকিদারের নাম সুনীল মজুমদার। বয়স তার মোটামুটি ৫০ বছরের বেশি হয়েছে ছাড়া কম না। সে বিগত অনেক বছর ধরেই এই চৌকিদারী পেশায় নিয়োজিত আছে। এই গ্রামের নিরাপত্তার দায়িত্ব তার উপরেই রয়েছে, অথচ তার চোখ ফাঁকি দিয়ে যে প্রতিনিয়ত এই চুরির ঘটনা হচ্ছে তাই নিয়ে সেও চাপের মধ্যে আছে। প্রতিদিন ঐ গ্রামের লোকের অভিযোগ তার কাছে আসছে এই চুরির ঘটনা নিয়ে। সুনীল বাবু গ্রামের মানুষদের নিয়ে কয়েকবার মিটিংও করেছে এবং চোর ধরার জন্য সবার কাছ থেকে পরামর্শও চেয়েছে। এত চুরির ঘটনা হয়ে যাওয়ার কারণে এখন সুনীল বাবুকে রাত জেগে জেগে গ্রামের এই পাশ থেকে ওই পাশ পাহারা দিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
যেদিন থেকে রাত জেগে পাহারা দেওয়া শুরু হয়েছে, সেদিন আর কোন চুরির ঘটনা ঘটেনি। এইভাবে চৌকিদারের পাহারা দেওয়ার কারণে বেশ কয়েকদিন ধরে চুরির ঘটনা ঘটে না ওই গ্রামে। বেশ কিছুদিন ধরে হয়তো চোরেরা চৌকিদারকেই পাহারা দিচ্ছিল, এইজন্য আর চুরির ঘটনা ঘটায় নিই । তবে চৌকিদারের পাহারা দেওয়ার প্যাটার্ন ফলো করে কয়েকদিন পর চোরেরা আবার চুরি করে গ্রামে। পাহারা দেওয়ার পরেও এবারে চুরির ঘটনা গ্রামবাসীরা চৌকিদারকে দোষ দিতে থাকে। আসলে চুরির ওই রাতে চৌকিদার একটু ঘুমিয়ে পড়েছিল, গ্রামের বাজারের একটি দোকানের মধ্যে গিয়ে।
বয়স যেহেতু মোটামুটি ভালোই হয়েছে তার তাই সবকিছু এখন আর সে সামলে পারে না। যাইহোক, সেটা বললে তো আর হবে না, নিরাপত্তার দায়িত্ব যেহেতু তার ওপরে তাই গ্রামবাসীর জিনিসপত্রের খেয়াল তারই রাখতে হবে, এইটা তার দায়িত্ব। এইবার চৌকিদার বাবু অ্যালার্ট হয়ে যায় আগের থেকে অনেক বেশি এবং চোরদের উপর প্রচন্ড রাগ নিয়ে থাকে একপ্রকার। চোর ধরার জন্য যা কিছু করার প্রয়োজন, তাই করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় সে। অন্যদিন বাঁশি দিয়ে দিয়ে গ্রামের এপাশ থেকে ওপাশ পাহারা দিলেও, এই দিন সে আর বাঁশি দেয় না এবং অনেকটা চুপি চুপি গ্রামের এদিক থেকে ওদিক পাহারা দেয় চোর ধরার জন্য।
সে যখন গ্রামের মধ্যে চুপিচুপি পাহারা দিয়ে বেড়াচ্ছিল, তখন সে খেয়াল করে একদল চোর গ্রামে ঢুকেছে এবং অনেকটা নিঃশব্দেই ঢুকেছে তারা। কিন্তু চৌকিদার যে পাহারা দিচ্ছে, তারা সেটা খেয়াল করেনি কারণ চৌকিদার এবার অনেকটা লুকিয়ে পাহারা দিচ্ছিল। "এইবার তো চোরদের চৌকিদারের কাছে ধরা পড়তেই হবে হবে", এই ভেবে মনে মনে একটু হেসে ওঠে সুনীল বাবু। চৌকিদার অনেকটা সাবধানতার সাথে গ্রামের অন্য দুইজন লোককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে চুপিচুপি এই চোরদের পিছনে যেতে থাকে।
চলবে..
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ক্রিয়েটিভ রাইটিং (ছোটগল্প) |
---|---|
লোকেশন | বারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাহ্ দারুন 😍
চৌকিদারের পাহারা দেয়ার প্যাটার্ন খেয়াল করে চোর আবারো চুরি করতে শুরু করেছে। তবে এবার পাহারাদার যেহেতু চুপিসারে পাহারা দিচ্ছে তাহলে হয়তো চোর ধরা পরতে পারে। আর পাহারাদার বয়স্ক মানুষ সে আরো দুজন লোক নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এটাই বুদ্ধিমানের কাজ হয়েছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি ঘটে।
বেশ ভালো লিখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন, সাধুবাদ জানাই ভাই।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, আপনার এই সুন্দর মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
মিঠাপুর গ্রামে দেখছি বেশ উন্নতই হয়েছে। তবে আবার উন্নত দেখে চোরেদের সহ্য হয়নি। চোরেরা থাকে চুরি করার কাজে। তবে চৌকিদারের জন্য খুবই খারাপ লাগলো। চোরেদের জন্য তার নিজেরই চোখে ঘুম চলে গেছে। যেহেতু একটু বয়স্ক মানুষ, সারারাত ধরে পাহারা দেওয়াটা খুবই কঠিন। তবে শেষ পর্যন্ত দেখছি চুপি চুপি চোরদেরকে দেখতে পেল। কিন্তু চোরদেরকে ধরতে পারল না কি চোরেরা ওর কোন ক্ষতি করল এটাই তো জানতে পারলাম না। পরের পর্বের জন্য আবার অপেক্ষা করতে হবে দেখছি।
পরের পর্বেই এই বিষয়টা জানতে পারবেন আপু।