ট্রাভেল || নৌকায় করে ঘোরাঘুরি

in আমার বাংলা ব্লগlast month

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

বন্ধুরা, আজকের নতুন একটি ব্লগে তোমাদের সবাইকে স্বাগতম। আজকের এই ব্লগে তোমাদের সাথে একটি ট্রাভেল পোস্ট শেয়ার করবো। ঘোরাঘুরি করতে আমরা সবাই অনেক ভালোবাসি। আমি তো সুযোগ পেলেই কোন না কোন জায়গায় গিয়ে ঘুরে আসি। যাইহোক, আমি প্রায় কয়েক মাস আগে ঘোরাঘুরি করার জন্য গেছিলাম বাঁকুড়ার একটি জায়গায়। সেই জায়গাটার নাম ছিল খাতড়া। সেই খাতড়া থেকে একদিন ঘোরাঘুরি করতে আমি গেছিলাম মুকুটমনিপুর নামক একটি জায়গায়। এই জায়গাটি আসলে একটি পর্যটন কেন্দ্র ছিল এবং এর আশেপাশে অনেক ঘোরাঘুরির জায়গা ছিল। যদিও এই মুকুটমণিপুর ঘোরাঘুরি করা রিলেটেড কয়েকটি পোস্ট অলরেডি তোমাদের সাথে পূর্বে আমি শেয়ার করেছি।

20240427_074308.jpg

20240427_074317.jpg

20240427_074319.jpg

আসলে জায়গাটা এতটা বিস্তার নিয়ে ছিল যে সবকিছুর বর্ণনা একটি দুটি পোস্টের মাধ্যমে করা সম্ভব হয় না। এইজন্য কয়েকটি পোস্ট লেগে যায় এই ধরনের জায়গা ঘোরাঘুরি করে সেটা শেয়ার করতে গেলে। এই জায়গায় ছিল কংসাবতী জলাধার। এই জলাধারের মধ্যে আমরা নৌকায় করে ঘোরাঘুরি করেছিলাম। নৌকায় ঘোরার সময় একটি ভিডিওগ্রাফি করেছিলাম, সেটা পূর্বে যদিও তোমাদের সাথে শেয়ার করেছি। তবে এই নৌকা ভ্রমণ রিলেটেড বিস্তারিত বর্ণনা এবং অন্যান্য অনেক ফটোগ্রাফি শেয়ার করা হয়নি পূর্বে। সেজন্য আজকের পোস্টের মাধ্যমে সেগুলো শেয়ার করবো। এইখানে গিয়ে যে নৌকা ভ্রমণ করতে পারবো, সেটা আমরা প্রথমে ভাবতে পারিনি। তাছাড়া আশেপাশে কোন পর্যটক ছিল না আর নৌকাগুলো খালি অবস্থায় জলাধারের পাশেই পড়েছিল। আমরা অনেকটা খোঁজাখুঁজি করেই নৌকার মাঝিকে খুঁজে আনি এবং নৌকা ভ্রমণ করতে যেতে চাই।

20240427_075352.jpg

20240427_075456.jpg

20240427_080038.jpg

আসলে অনেক লোক থাকলে নৌকা ভ্রমণে অনেকটা সুবিধা হয়, কম টাকায় ঘুরা যায়। তবে কম লোক থাকলে একটু বেশি টাকা দিতে হয়। সেদিন নৌকা ভ্রমণের সময় আমার সাথে আমার দাদাও ছিল। আমরা যে নৌকায় করে এই জলাধার ভ্রমণ করেছিলাম, সেই নৌকাটি একটি ছোট নৌকা ছিল। এখানে অনেক বড় নৌকাও ছিল যেগুলোতে করে অনেক লোক একসাথে এই জলাধার ঘুরে দেখতে পারবে । এই জলাধারের কিনারা থেকেও অসাধারণ দেখতে লাগছিল চারপাশের সবকিছু। তবে জলাধারের মাঝে গিয়ে আশেপাশের পরিবেশটা কেমন দেখতে লাগে, সেই কৌতূহল আমাদের মধ্যে সব সময় ছিল। এই জলাধার টা যে অন্য একটি নদীর সাথে মিলিত হয়েছে, সেই ব্যাপারটা আমরা সেখানে গিয়েই জানতে পেরেছিলাম নৌকার মাঝির কাছ থেকে। আমাদের নৌকার মাঝি বেশ ভালই ছিল। খুব ভালোভাবে আমাদের সাথে মিশে সে কথা বলছিল। নৌকা ভ্রমণের পূর্বে সে নৌকা পরিষ্কার করে নেয় কারণ অনেকদিন ধরে নৌকায় কেউ না উঠার কারণে নৌকায় অনেকটা ধুলো জমে গেছিল।

20240427_080835.jpg

20240427_081601.jpg

যাইহোক, নৌকা পরিষ্কার করার পর সে আমাদের সেই নৌকায় উঠানোর ব্যবস্থা করে দেয়। নৌকার মাঝি অনেকদিন ধরে যে নৌকা চালায় নি সেটা তার নৌকা চালানোর ভঙ্গি দেখেই বুঝতে পারছিলাম। কারণ প্রথম অবস্থায় তার বেশ কষ্টই হচ্ছিল নৌকা চালাতে যা তার এক্সপ্রেশন দেখে আমরা বুঝতে পারছিলাম। এই সময় নৌকার মাঝির কাছে আমি বৈঠা চাই কিছুটা নৌকা চালানোর জন্য। তবে সে হাসিমুখে আমাকে বসতে বলে এবং চারপাশ উপভোগ করতে পারলে আর সে নিজেই নৌকা চালিয়ে আমাদের চারপাশ ঘুরিয়ে দেখায়। চলন্ত নৌকা থেকে চারপাশের সৌন্দর্য দেখতে অনেক সুন্দর লাগছিল। এরকম জলরাশি হঠাৎ করে দেখলে অনেকটা ভয় লাগে, এই জন্য জলাধারের মাঝ বরাবর গিয়ে কিছুটা ভয়ও লাগছিল। তাছাড়া এখানে জলের গভীরতাও অনেকটা ছিল, যেটা নৌকার মাঝি আমাদের বলেছিল। এই জলাধার থেকে অনেকটা দূরে গিয়ে জঙ্গলের মত জায়গা ছিল। তবে আমরা অতদূর আর যাই নি। আমরা যতটা জায়গা নিয়ে ঘুরেছিলাম সেখান থেকেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেছিলাম। এই ভ্রমণটা সত্যিই অনেক ভালো ছিল।

20240427_082138.jpg

20240427_080643.jpg

সেই দিন অনেক গরম ছিল তবে নৌকার উপরে যেহেতু শেড দেওয়া ছিল, এই জন্য খুব বেশি গরম লাগছিল না রোদের তাপে। আর চারপাশ দিয়ে একটা সুন্দর হাওয়াও বয়ে যাচ্ছিল, সেই জন্য সেই সময়টাতে ঘুরে বেশ ভালোই লাগছিল। এরকম একটা জায়গায় গিয়ে, এত দারুণ একটা নৌকা ভ্রমণের সুযোগ পাব, সেটা হয়তো আগে আমি চিন্তাও করিনি। তবে ওভারল খুব ভালো লেগেছিল এই নৌকা ভ্রমণ করে।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীট্রাভেল
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@ronggin
লোকেশনমুকুটমণিপুর, বাঁকুড়া, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, আজকে শেয়ার করা ভ্রমনমূলক এই ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

বেশ কয়েক বছর আগে আমিও মুকুটমনিপুর গিয়েছিলাম। তবে নৌকা চড়া হয়নি। আপনার নৌকা চড়ার গল্পটি বেশ সুন্দর লাগলো। ঠিকই বলেছেন নৌকায় করে ঘুরতে খুব ভালো লাগে আর অনেকে মিলে থাকলে খরচা কম হয়। আপনার নৌকায় চড়া গল্প দেখে আমার রূপনারানের উপর নৌকা চড়ার কথা মনে পড়ল। মুকুটমণি পড়ে সত্যিই দেখার অনেক কিছু রয়েছে।

খুব গুছিয়ে পোস্ট লিখেছেন আপনি।

 last month 

মুকুটমণি পড়ে সত্যিই দেখার অনেক কিছু রয়েছে।

হ্যাঁ দিদি, এটা একদম সত্যি কথা। যাই হোক, আপনার এই সুন্দর মন্তব্য টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 57913.08
ETH 2452.28
USDT 1.00
SBD 2.36