ট্রাভেল || শ্রীচৈতন্য সারস্বত মঠ
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি। |
---|
নবদ্বীপে ঘোরাঘুরি নিয়ে এর আগেও কয়েকটি পোস্ট তোমাদের সাথে আমি শেয়ার করেছি। সত্যি কথা বলতে নবদ্বীপে এত বেশি ঘোরার জায়গা ছিল যা কখনোই এক দিনের ব্লগে শেয়ার করা সম্ভব না। এইজন্য কয়েকটি ব্লগের মাধ্যমেই তোমাদের সাথে সেগুলো শেয়ার করার চেষ্টা করছি। নবদ্বীপে বড় বড় ২০ থেকে ২৫ টি জায়গা ঘোরাঘুরির জন্য প্রধান ছিল। যেখানে গিয়ে সুন্দর করে সব কিছু ঘুরে দেখার সুযোগ ছিল। এইখানের ঘোরাঘুরির সব জায়গা গুলো আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ছিল। এখানে যারা ঘুরতে যায় তারা সব সময় চায় এইখানের সব জায়গা গুলো একবারের জন্য হলেও ঘুরে দেখতে। যদিও যারা হাতে একদমই কম সময় নিয়ে যায় তারা প্রত্যেকটি জায়গা খুব ভালো করে দেখার সুযোগ পায় না।
তবে কোনরকম করে হলেও এইখানে জায়গাগুলো এক নজর ঘুরে দেখার চেষ্টা সবারই থাকে। যাইহোক, আমরা এখানে দু'দিনের জন্য গেছিলাম যেটা আমি আগেও বলেছি তোমাদের। আমি, মা, দাদা এবং মায়ের এক বান্ধবী এই নবদ্বীপে ঘোরাঘুরি করার জন্য গেছিলাম। আমাদের ঘোরাঘুরির একদিন আমরা গেছিলাম শ্রীচৈতন্য সারস্বত মঠ । এই নবদ্বীপে আসলে অনেকগুলো মঠই রয়েছে। যাইহোক, এই মঠটি ১৯৪১ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এটা যিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার নামও শুনেছিলাম আমি, তবে এখন মনে করতে পারছিনা সেই নাম তাই তোমাদের সাথে শেয়ার করতে পারলাম না।
এই মঠে ঢোকার পর এখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছিলাম। এই জায়গাটা সত্যি খুব সুন্দর ছিল। নবদ্বীপে গিয়ে যে কয়েকটি জায়গা দেখেছিলাম তার মধ্যে এই জায়গাটিও আমাদের খুব ভালো লেগেছিল। এখানে মূলত শাস্ত্রীয় জ্ঞান দেওয়া হয়। আমাদের শাস্ত্রে যে জ্ঞানগুলো রয়েছে এখানে গিয়ে তা অর্জন করার সুযোগ ছিল। এখানে অনেক মহারাজ থাকেন যারা এই শাস্ত্রীয় জ্ঞান সবার মাঝে প্রদান করে থাকেন । সেসব তীর্থ যাত্রীরা এখানে যায় তারা সেখানে বসে তাদের কাছ থেকে এই শাস্ত্রীয় জ্ঞানগুলো অর্জন করতে পারে।
সন্ধ্যাবেলা শুনেছিলাম এখানে আরতি অনুষ্ঠান হয়। তবে আমরা যেহেতু সন্ধ্যা বেলায় যায়নি তাই সেটা দেখার সুযোগ পাইনি। আমরা এখানে ঘোরাঘুরির সময় রাধা গোবিন্দের দর্শনও করেছিলাম। এখানে রাধা গোবিন্দের ছোট একটি মন্দিরও ছিল। এই জায়গাটি একটা থেকে চারটা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। এখানে ঘুরাঘুরি করতে হলে ওই সময়ের আগে অথবা পরে যেতে হয়। আমরা দুপুর একটার আগেই গেছিলাম এই জায়গাটাতে। এই জায়গার উল্টোদিকে ছিল জল মন্দির যেটা এইখানে থাকা একটা পুকুরের মধ্যে অবস্থিত ছিল। এরকম জল মন্দির আমি এই প্রথম দেখেছিলাম এই নবদ্বীপে গিয়ে। এখানে পুজো করার সিস্টেমও আলাদা ছিল। নৌকায় করে এই মন্দিরে গিয়ে পুজো করতে হয়। এই জায়গাটিও খুব সুন্দর একটি জায়গা ছিল। এখানে প্রবেশ মূল্য কোন কিছুই ছিল না।
এখানে যে কেউ প্রবেশ করে চারপাশের সবকিছু দেখতে পারবে এমন সুযোগ ছিল। এই মন্দিরের পাশেই থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। এখানে যেসব তীর্থযাত্রীরা যায় তাদের জন্য এইসব সুযোগ-সুবিধা গুলো ছিল আর কি। জল মন্দিরের আশেপাশের জায়গাগুলো দূর থেকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছিল। জলের মধ্যে যে মন্দিরটি ছিল, সেটি দেখতেও বেশ দারুন ছিল। যাইহোক,এই জায়গাটি ঘুরে আমাদের সবারই অনেক ভালো লেগেছিল। এই জায়গাটিতে হরিণ পোষার জায়গাও ছিল। যেখানে সুন্দর সুন্দর অনেক হরিণ ছিল আর যাদেরকে খাবার কিনে খেতে দেওয়ারও ব্যবস্থা ছিল। এই মন্দিরের পাশেই ছিল শ্রীসদাশিব গঙ্গাধর মন্দির। এই মন্দিরে বাবা ভোলানাথের পুজো করার ব্যবস্থা ছিল। আমরা এই মন্দিরের সামনে কিছু সময় দাঁড়িয়ে একটু প্রার্থনা করেও নিয়েছিলাম।
যাইহোক, এখান থেকে আরেকটু এগিয়ে যাওয়ার পরে আমরা দেখতে পাই শ্রী সমাধি মন্দির। এখানেও বেশ সুন্দর দেখার জায়গা ছিল। এই জায়গাটির চারপাশেও আমরা ঘোরাঘুরি করেছিলাম এবং আমাদের বেশ ভালো লেগেছিল। এসব জায়গায় সাধারণত ঘুরতে গেলে মনে একটা আলাদা শান্তি লাগে। ধর্মীয় স্থানগুলো আসলে অনেক পবিত্র হয়। এইখানে গিয়ে যে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় তা অন্য কোথাও গিয়ে পাওয়া সম্ভব না।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ট্রাভেল |
---|---|
ডিভাইস | Samsung Galaxy M31s |
ফটোগ্রাফার | @ronggin |
লোকেশন | নবদ্বীপ, ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অনেক সুন্দর একটি স্থান ভ্রমন করে আপনি আমাদের মাঝে চমৎকার একটি ভ্রমণের পোস্ট শেয়ার করেছেন। আপনার এই ভ্রমণের পোস্টটি পড়ে আমার অনেক ভালো লেগেছে। একই সাথে শ্রীচৈতন্য সারস্বত মঠের বিভিন্ন প্রকারের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আমার সবচাইতে বেশি ভালো লেগেছে। চমৎকার একটি ভ্রমণের পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার শেয়ার করা ভ্রমন মূলক এই পোস্ট টি আপনার কাছে চমৎকার লেগেছে, জেনে অনেক খুশি হলাম ভাই। আপনার এই সুন্দর মন্তব্যটির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক জাগায় অনেক মন্দির দেখেছি। তবে এই প্রথম আপনার পোষ্টে জল মন্দির সম্পর্কে জানতে ও দেখতে পারলাম। পুকুরের মাঝখানে নৌকা দিয়ে গিয়ে পুজো দিতে হয়। সিস্টেমটা দারুন। আপনার এক পোষ্টে কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থান দেখতে পেলাম। ধন্যবাদ।
জল মন্দিরের এই সিস্টেমটা আমার কাছেও বেশ দারুন লেগেছিল ভাই।
শ্রীচৈতন্য সারস্বত মঠ ভ্রমণ করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ আপনি প্রতিনিয়ত আমাদের মাঝে খুব সুন্দর সুন্দর কিছু পোস্ট শেয়ার করে আসছেন৷ তার মধ্যে খুব সুন্দর একটি পোস্ট হলো ভ্রমণের পোস্ট৷ আজকের এই ভ্রমণের স্থানের খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন যা আমি আগে কখনো দেখিনি এবং প্রতিনিয়ত আপনার কাছ থেকে নতুন নতুন অনেক কিছুই দেখতে পারছি এবং শিখছি৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷
ভাই, আপনার কাছ থেকে এই প্রশংসামূলক মন্তব্যটি পেয়ে অনেক ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার এই সুন্দর মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আসলে আপনার এই পোস্ট প্রশংসার দাবিদার৷
https://twitter.com/ronggin0/status/1777405250238030163?t=t5797dZ-acv-gXQr4G82aA&s=19