শৈশবের কিছু দুঃসাহসিক এডভেঞ্চার এর স্মৃতি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)


কপিরাইট ফ্রি ইমেজ সোর্স : pixabay


নেকদিন আগের কথা ।

স্মৃতিবিজড়িত সেই সব দিনের কথা আজও যেন চোখের সামনে ভাসে । কালের প্রভাবে কিছুটা মলিন । তবু, মুছে যায়নি । ছোটবেলায় আমার শৈশবের বেশ কয়েকটি বছর কেটেছে গ্রামে । বেশ দুরন্ত ছিলাম ওই সময়টায় । আমাদের গ্রাম ছিল একেবারে অজপাড়া গাঁ যাকে বলে । এত বেশি গাছ গাছালি ছিল যে দিনের বেলাতেও যেন অন্ধকার কাটতো না । আমার মা তো তার বিয়ের পর এই গ্রামে পা দিয়ে স্রেফ অজ্ঞান । সাপ খোপ, শিয়াল, বন বেড়াল, গোসাপ, ভোঁদড় আর বেজিতে ভরা ছিল । আমার মনে আছে পুকুর পাড়েই ছোটখাটো একটা বেতঝাড় ছিল, সেটা একটি জঙ্গলের খুদে সংস্করণ । প্রায় বিঘে দুয়েক জায়গা নিয়ে দুর্ভেদ্য একটি জঙ্গল ছিল এটি । আর ছিল বাঁশঝাড় । অন্ধকারচ্ছন্ন । সাপের ভয় বড্ড বেশি ছিল এই বাঁশঝাড়ে ।

আজ আমার ছোটবেলায় ঘটে যাওয়া কিছু দুঃসাহসিক এডভেঞ্চার এর স্মৃতি শেয়ার করবো আপনাদের সাথে ।

আমাদের গ্রাম ছাড়িয়ে দক্ষিণ দিক বরাবর বেশ কিছুটা গেলে একটি ছোট্ট খাল পড়ে । বৈশাখ-জষ্ঠিতে জল তেমন থাকে না । তবে আষাঢ় শ্রাবণে যেন বান ডাকে খালে । নতুন জল পেয়ে মাছেদেরও খুব ফুর্তি হয় । সারাদিন ছোটাছুটি করে বেড়ায় । এই সময়টাতে তাই মাছ পাওয়া যায় প্রচুর । একদিন আমরা সবাই মিলে ঠিক করলাম মাছ ধরে যেতে হবে । আষাঢ় মাসের শুরু । বর্ষার আগমন হয়েছে । তবে সেই রকম বর্ষা এখনো নামেনি । মাছ ধরার বেস্ট টাইম হলো শেষ রাতে । তবে, আমাদের মতো বাচ্চাদেরকে কি আর শেষ রাতে বাড়ি থেকে বেরোতে দেয় কেউ ? তাই, শেষ রাতের বদলে আমাদের অতি প্রত্যুষে "মৎস্য অভিযানের" কথা ঠিক হলো ।

আগের দিন সন্ধ্যা বেলায় পুকুর ঘাটে ছোটখাটো একটা মিটিং এ সব ঠিকঠাক করে নেওয়া হলো । তিন জন জাল দিয়ে মাছ ধরবে, দুই জন নৌকা বাইবে আর আমি মাছের খারুই -এ মাছ গুলো রাখবো । মাছের জিম্মাদারের দ্বায়িত্ব আর কারোর হাতে ছাড়তে ভরসা হলো না মোটে ।

পরের দিন অতি ভোরে উঠে তো সবাই মিলে হাজির সেই ছোট্ট খালপাড়ে । বৃষ্টি শেষ রাতে বেশ কয়েক পশলা হয়ে গিয়েছে । এখন আর বৃষ্টি নেই, তবে আকাশ মেঘলা আর তীব্র জোলো হাওয়া । ঠক ঠক করে কাঁপছি আমরা । বেশ কিছুক্ষন গেলো শীতটা একটু ভাঙতে । এবার মাছ ধরার পালা । কালভার্টের কাছে আমাদের নিজেদের ছোট্ট একটা ডিঙি নৌকা বাধা থাকতো সব সময় । দ্রুত বাঁধন খুলে আমরা ছ'জন উঠে পড়লাম তাতে । তীর ঘেঁষে বেশ কিছুটা চালানোর পর প্রথম জাল ছুঁড়লো একজন, আমার এক কাজিন । পুঁটি, খলসে, ট্যাংরা জাতীয় কিছু মাছ উঠলো জালে । দ্রুত সেগুলো জাল থেকে ছাড়িয়ে নৌকোর গলুইয়ে ফেলা হলো । আর আমি সেখান থেকে খুঁটে খুঁটে নিয়ে খারুই ভর্তি করতে লাগলাম ।

বেশ চলছিল মাছ ধরা । খারুই প্রায় ভর্তি । এমন সময় ঘটে গেলো সেই অঘটনটা । এতদিন পরে মনে পড়লে আজও বুক কাঁপে । মাছ ধরা প্রায় শেষ । জাল দ্বারা মুখ আঁটা খারুই আমি জলে ধুয়ে নিচ্ছি আর সবাই একটু মজা করার জন্য খালের একেবারে মাঝে নিয়ে গিয়েছে নৌকো । কেউ কেউ মনের সুখে গান জুড়েছে । এমন সময় শেষবারের মতো জাল উঠলো জল থেকে । মাছ ছাড়াতে গিয়ে আঁতকে উঠলাম সবাই । জালে একটা সাপ উঠেছে । চকরা বকরা গায়ে হলুদ রঙের বেশ মোটাসোটা একটা সাপ । সাপ দেখে তো হয়ে গিয়েছে আমাদের । জাল উঁচু করে ওটাকে জলে ফেলতে গিয়ে হঠাৎ সাপটি কিলবিলিয়ে উঠলো, আর ছিটকে এসে একেবারে নৌকোর পরে এসে পড়লো ।

প্রায় সঙ্গে সঙ্গে সব বীরপুরুষের বীরত্ব উবে গেলো নিমেষে । বেশ একটা হুটোপুটি হলো । আর তার ফল হলো মারাত্মক । চোখের পলকে ডিঙি ব্যালান্স হারিয়ে কাত হয়ে গেলো ভীষণ বিপজ্জনক ভাবে । কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিজেকে খালের জলের মধ্যে আবিষ্কার করলাম । একটুর জন্য ডিঙিটা আমার ঘাড়ের উপরে পড়লো না । ঘটনার আকস্মিকতায় বেশ কয়েক ঢোক খালের জল গিলে ফেললুম । গ্রামের ছেলে, সবাই সাঁতারে ওস্তাদ । তবুও, দুর্ঘটনার একেবারে প্রথম দিকে সবাই হাবুডুবু খেলাম । বেশ কয়েক ঢোক ঘোলা জল খেয়ে সাঁতরে যখন ডাঙায় উঠলাম তখন আমাদের মাছের খারুই, জাল আর নৌকো তিনটেই মাঝ খালে । ফ্যালফ্যাল করে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আস্তে আস্তে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম । বাড়ি ফিরে সবাই সেদিন অল্পবিস্তর মার খেয়েছিলুম । জাল বা নৌকো ডোবার জন্য নয় । কোনো গতিকে ওই নৌকো যদি আমাদের কারোর ঘাড়ে পড়তো তবে তার সলিলসমাধি ছিল সেদিন নিশ্চিত ।

মৃত্যু সেদিন কত কাছ থেকে চলে গিয়েছিলো আমাদের । ভাবলে এখনো শিউরে উঠি । এরপর থেকে নৌকো দড়ির বদলে শিকল আর তালা দিয়ে বাঁধা থাকতো সব আমোদ মাটি করে আমাদের ।




copyright free image




আর একটা এডভেঞ্চার এর ঘটনা বলে আজকের মতো ইতি টানবো আমার স্মৃতি রোমন্থনের । আশ্বিনের মাঝামাঝি । পুজোর আর মোটে কয়েকটা দিন বাকি । এই সময়টাতে ছোট ছেলে ছোকরাদের মনে অফুরন্ত খুশির বান ডাকে । চারিদিকে পুজো পুজো গন্ধ । রেডিওতে ভোরবেলা মহালয়া শোনা, আহা কি সব দিন ছিল ছেলেবেলায় । এই সময় গ্রামে খুব বন বেড়াল আর শিয়ালের উপদ্রব শুরু হয় । আজ এর হাঁস খাচ্ছে, কাল ওর মুরগি । অতিষ্ঠ সবাই । এরই মাঝে গেলো আমাদের সাধের দুধসাদা বড় রাজহাঁসটা । ভোরবেলা শুধু কয়েক ফোঁটা রক্ত আর অসংখ্য পালক ছড়ানো পাওয়া গেলো । কিন্তু, হাঁস নিখোঁজ । হয় বনবেড়াল নয় শিয়াল । যে কারো কাজ এটা নিশ্চিত ।

প্রতিশোধ স্পৃহা জেগে উঠলো মনে আমাদের জেঠতুতো খুড়তুতো ভাইদের মধ্যে । বিকেলবেলা খেলার মাঠে জরুরি মিটিং বসে গেলো । খেলা বাদ দিয়ে বনবেড়ালের গোপন ডেরায় হানা দিতে বদ্ধ পরিকর সবাই । আমাদের বাড়িতে একটা এয়ার গান ছিল । শক্তিশালী এয়ার গান । বাবা কাকারা বক মেরেছে কত সেটা দিয়ে । পরে অবশ্য সেটা আমি একজন কে দান করে দিয়েছিলাম । সে গল্প আরেকদিন বলবো । তো, এয়ার গান আমরা ছোটরাও চালাতাম । যদিও আমাদের কাছে বিশাল ভারী লাগতো, আর লোড করা একটু কষ্টকর ছিল তবুও আমরা চালাতাম সেটা । ডিসিশন হলো এয়ার গান নিয়ে হানা দিতে হবে বনবেড়ালের ডেরায় । তারপরে সবংশে নির্বংশ করতে হবে বনবেড়ালের গুষ্ঠি । উৎসাহের চোটে সেই বিকেল বেলাতেই অভিযান শুরু করে দিলাম আমরা । যেটি ছিলো বেশ বড় একটি ভুল ডিসিশন ।

এই অভিযানে খুব বেশি মানুষ গেলেই পন্ড, অথচ সবাই যেতে চায় । শেষমেশ লটারী করে নির্বাচন করা হলো । আমি দলপতি, তাই লটারির বাইরে আমি । আমার এক কাজিনের নাম লটারিতে উঠলো না । বিপদ । সেই একমাত্র ভালো এয়ার গান চালাতে পারে । আমরা আর কেউ তেমন একটা পারি না । শেষমেশ , তাকে সাথী করা হলো । না হলে অভিযান শুরুতেই ফেল হওয়ার আশংকা । অব্যর্থ তার হাতের নিশানা । দ্রুত বেরিয়ে পড়লুম সবাই । পুব দিকে আমাদের বিশাল বাগান ভিটে, পার হলেই আদিগন্ত ধান খেত । বুকসমান উঁচু হয়ে গিয়েছে ধানের শীষগুলো এখন । সেই ক্ষেতের বুক চিরে সরু আলের উপর দিয়ে শুরু হলো আমাদের যাত্রা । এয়ার গানটা অসম্ভব ভারী হওয়াতে পাল্টা পাল্টি করে নিয়ে চলেছি সবাই । অনেক্ষন হাঁটার পরে আমরা মাঠের মাঝামাঝি কয়েকটা জির গাছ আর ঝোপঝাড় দেখতে পেলুম । আরো কিছুক্ষন হেঁটে অবশেষে উপস্থিত হলুম সেখানে ।

সেখানে উপস্থিত হয়ে আশেপাশে তাকিয়ে আমাদের বুক শুকিয়ে গেলো । এ কোথায় এসেছি আমরা ? আশেপাশের বেশ কিছুটা জায়গা ঊষর ভূমি । ধান খেত বেশ কিছুটা দূরে । এদিকটা বুনো ঝোপঝাড়, বেতঝাড়, নিশিন্দা, অ্যাশ-শ্যাওড়া, ভাঁটকুল, বড় বড় ওল-কচুর ঝোপ আর জির গাছের জটলা । একটু দূরে ডোবা মতো একটা । তার পাড়ে অসংখ্য গর্ত । আর একটি বেঁটে তালগাছ, কয়েকটা খেঁজুর গাছও আছে । কিন্তু, এসব দেখে আমাদের বুক শুকোয়নি । যা দেখে আমাদের বুক শুকিয়েছে তা হলো অসংখ্য হাড় গোড় দেখে । মানুষের নয় । হাঁস মুরগি আর ছাগল-ভেড়ার ছানার । কিন্তু, যাই হোক হাড়গোড় তো । তার পরে সংখ্যায় অগুনতি । চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে । অধিকাংশই কাদা মাখা । দূরে তাকালে গ্রামের অস্পষ্ট রেখা দেখা যাচ্ছে । বেশ কিছুটা সময় লাগলো নিজেদেরকে ধাতস্থ করতে । সেই ডোবার পাড়ে গেলাম আমরা । ডোবার উঁচু পাড়ের ওই গর্তগুলো ছিল শেয়ালের গর্ত । বনবেড়ালের ডেরা খুঁজতে এসে হাজির হয়েছি শিয়ালের আড্ডাখানায় । বীরত্ব আর নেই তেমন একটা আমাদের । বাড়ি ফিরতে পারলে বাঁচি ।

এমন সময় ডোবার জলে তোলপাড় । কুমীর নাকি ? পাগল আর কাকে বলে ! কুমীর এখানে কোত্থেকে আসবে ? তবে জল থেকে যেটা উঠে এলো সেটা কুমীর না হলেও তারই খুড়তুতো মাসতুতো ভাই আর কি । বিশাল আকারের একটা গোসাপ । গোসাপ এমনিতে খুবই নিরীহ প্রাণী । মানুষ দেখলে পালাতে পথ পায় না । কিন্তু, সেদিন সেটা কিন্তু আমাদের দিকে তেড়ে এসেছিলো । "য পলায়তি স জীবতি" - চাচা আপন প্রাণ বাঁচা । টেনে দৌড় লাগলাম এয়ার গান টান সব ফেলে । কিছুটা দৌড়ে এসেই নিজেদের পৌরুষে আঘাত হানলো । ছিঃ ছিঃ ! এই আমাদের বীরত্ব ? একটা গোসাপ দেখে তিন তিনটি পুরুষ মানুষের বুক শুকিয়ে গেলো ? ছিঃ ! তাছাড়া এয়ার গান ফেলে গেলে বাড়িতে কাকার হাতে মার নিশ্চিত । সুতরাং, বুকে সাহস সঞ্চয় করে এগোলাম । এয়ার গানটা তুলে নিলাম । দ্রুত হাতে লোড করে আমার সেই কাজিনের হাতে দিলাম । সে এইম করে ট্রিগার টিপে দিলো । ধাম করে একটা শব্দ উঠলো । গুলি লেগেছে । কারণ, গোসাপটি'কে ছিটকে উঠতে দেখলাম । সে তখন আমাদের দিকে পিছন ফিরে মাটি খুঁড়ে গাছের শুকনো পাতা-টাতা সেখানে জড় করছিলো । বোঁ করে ঘুরে গেলো আমাদের দিকে । আবার ফায়ার করলো ভাই । এবারও নিখুঁত নিশানা, মাথায় লাগলো গুলি । তেড়ে এলো গোসাপটি । তবে, মাত্র হাত-পাঁচেক । আবার ফিরে গেলো সেই শুকনো পাতা জড়ো করা স্থানে । আবার গর্জন করে উঠলো এয়ার গান । এবারও লেগেছে । পিঠে । ফোঁস করে তেড়ে এলো আবার গোসাপটি । কিন্তু চার পাঁচ হাত এসে আবার ফিরে গেলো তার জায়গায় ।

আরও বেশ কয়েকটা গুলি করা হলো । ৮-১০ বার । তার মধ্যে মাত্র দু'বার মিস । কিন্তু, গোসাপটির কিছু হলো বলে মনে হলো না । তবে ক্রমশ সে ভীষণ হিংস্র হয়ে উঠছে । অবশেষে, আমরা ব্যর্থ হয়ে বাড়ির পথ ধরলাম । বাড়ি ফিরে আমাদের অভিযানের কথা বাবা কাকাদের বললাম । তারা আমাদের যথেষ্ঠ বকলো । কারণ, সন্ধ্যে হয়ে গিয়েছিলো । গোসাপের ভয় নয় । শিয়ালের ভয় । শিয়ালে কামড়ালে জলাতঙ্ক হয় । আর কোনোদিনও ওখানে গেলে আমাদের পুঁতে ফেলবে এই ঘোষণা বাবার পক্ষ থেকে । শুনে আমাদের মুখ শুকিয়ে গেলো । রাতে খাওয়ার সময়ে আমাদের ছোট কাকা বললো যে ওই গোসাপটা তার ডিম পাহারা দিচ্ছিলো । তাই অমন তেড়ে এসেছিলো আমাদেরকে । এমনিতে ওরা খুবই নিরীহ । কিন্তু, ডিম পাড়ার পরে এমনটা করে । আর ওদের চামড়া অনেক মোটা তাই এয়ার গানের সীসার গুলিতে ওদের কাবু করা যায় না ।

Sort:  
 2 years ago 

দাদা আপনাদের দেখছি ভীষণ সাহস! আমার তো আগেই হাত পা কাপাঁ শুরু করলো দুটি গল্প পড়েই। আপনাদের একটা দিক ভালো লাগলো, আপনারা যেকোনো কাজ করেন পরামর্শ করে করেন। সকাল সকাল মাছ ধরতে গিয়ে পড়ে গেলেন। একটুর জন্য প্রাণে বেচেঁ গেলেন। কি সাঙ্গাতিক কান্ড। হলুদ রঙের সাপটা মনে হয় ধূরা সাপ ছিল। আমি যতদূর জানি তাদের শরীরে বিষ কম থাকে।

দ্বিতীয় গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো। শেয়াল এতো সব মুরগী, হাসঁ খেয়ে নিলো। এমনটা দেখতাম ছোটবেলায় শীতেরকালে। জঙ্গলে গেলেই মুরগী উধাও হয়ে যেত। যদিও কখনও শেয়ার ধরার বা মারার সাহস হয়নি 😑😑।

 2 years ago 

জায়গাভেদে একেকজনের অতীত একেক রকম ভাই , সেই মাছধরা ,খালে পড়ে যাওয়া ,গোসাপের তাড়া খাওয়া গল্প বেশ রোমাঞ্চকর ছিল । বেশ ভালই লাগলো আপনার শৈশবের স্মৃতির ঘটনা পড়ে ।

শুভেচ্ছা রইল ।।

Interesting interpretation Shuvo

Written in news column coin head style for the boaters

Knot A Few Days Ago

Knot = Unit of speed exactly 1.852 km/h
Day = 24 hrs
1.852 x 24 = 44.44800 price of steem

Amazon.jpg

 2 years ago 

, সেদিন সেটা কিন্তু আমাদের দিকে তেড়ে এসেছিলো । "য পলায়তি স জীবতি" - চাচা আপন প্রাণ বাঁচা । টেনে দৌড় লাগলাম এয়ার গান টান সব ফেলে

হাহাহাহা,,, দাদা কিছু কিছু জায়গা পড়ে আমি আমার হাসি আটকে রাখতে পারলাম না। আপনি ছোটবেলা কি দুষ্টু আর কি পালোয়ান ছিলেন তা আপনার ছোটবেলার গল্প না পড়লে বুঝতেই পারতাম না।

তবে নৌকা থেকে পড়ে যাওয়ার বিষয়টা একটু মজা লাগলে ও অনেকটাই কষ্টকর ছিল।
যাই হোক, পড়ে কিন্তু দারুণ মজা পেয়েছি। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

শ্রদ্ধেয় দাদা, আশা করি ভাল আছেন? আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আসলে আপনার পোস্টটি পড়ে শৈশবে ফিরে যেতে খুব ইচ্ছে করতেছে। শৈশবের সময় গুলো খুবই আনন্দময় ছিল। সত্যি দাদা এই স্মৃতি গুলো যখন চোখের পাতায় ভেসে ওঠে। তখনই খুবই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি। এত অসাধারন পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। ভালো থাকবেন দাদা।

 2 years ago 

বাপরে বাপ দাদা আপনাদের কি ভয়ঙ্কর গ্রাম এই গ্রামে হঠাৎ করে কেউ গেলে তার অজ্ঞান হয়ে যাওয়ারই কথা সাপে ভরা। আপনার এই ছোটবেলার গল্প গুলো পড়তে আমার কাছে খুব ভালো লাগে দারুন দারুন গল্প আছে আপনার ছোটবেলায়। বিশেষ করে নৌকায় সাপ ওঠার গল্পটা আমার কাছে বেশি ভয় লেগেছে ।আমি মনে মনে চিন্তা করছিলাম যে হয়তোবা ভুত-প্রেত জাতীয় কিছু বলবেন পরে দেখি কি সাপ ।সাপের কথা শুনেই তো আমার পিলে চমকে গেছে ।আপনারা পানিতে পড়ে গেলে সাপ তখন কি করেছিল খুব জানতে ইচ্ছা করছিল। পরের গল্পটা ভাল লেগেছে সেটার ভিতরে যে সাপ আসবে এটা মাথাতেই আসেনি। এতগুলো গুলি খাওয়ার পরও সাপটা মারা গেল না আসলে সাপের চামড়া মনে হয় অনেক শক্ত ছিল ।খুবই ভালো লাগলো দাদা আরো মজার মজার গল্প খুব তাড়াতাড়ি চাই দাদা।

 2 years ago 

দাদা, আমারও শৈশব গ্রামেই কেটেছে । এরকম মজার মজার দুঃসাহসিক শৈশবের ঘটনা আমার অনেকগুলো রয়েছে তার মধ্যে থেকে তোমার শেয়ার করা প্রথম ঘটনাটি পুরোপুরি আমার ঘটনার সাথে মিলে গেল । একবার মাছ ধরতে গিয়ে আমাদের জালে বড় ঢোড়া সাপ বেঁধে যায়। আমরা তো সবাই ভয়ে জাল ছেড়ে পালিয়ে যাই । আমাদের বাড়ির পাশে খাল ছিল। আমরাও সেই খাল থেকে বিভিন্ন ধরনের মাছ জাল দিয়ে ধরতাম । একবার মাছ ধরতে গিয়ে বিলের অথৈ জলের মধ্যে নৌকাডুবি ঘটেছিল সেই কথা মনে পড়লে এখনো বুকের মধ্যে আতঙ্ক জেগে ওঠে । সময়টা বর্ষাকাল ছিল তাই বিলে জলের পরিমাণ অনেকটাই বেশি ছিল । আমি আর আমার একটা বন্ধু ডিঙ্গি নৌকা করে বিলে গেছিলাম বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে । খুব ভালো মাছ পাওয়া যাচ্ছিল আমাদের বড়শিতে। মাছ ধরতে ধরতে যখন বড়শিতে একটি বড় একটি রুই মাছ ধরা পড়ে। সেই রুই মাছ তুলতে গিয়ে আমরা আমাদের ডিঙ্গি নৌকার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলি ।পরে বিলের সেই অথৈ জলের মধ্যেমধ্যে আমরা দুজনে ডুবে হাবুডুবু খাই। সাঁতারে পারদর্শী থাকায় সেই যাত্রায় আমরা বেঁচে বাড়িতেই ফিরি । তোমার শেয়ার করা ঘটনা শুনে আমার সেই ফেলে আসা পুরনো স্মৃতি গুলো পুনরায় মনের মধ্যে জেগে উঠলো।

Thank You for sharing Your insights...

 2 years ago 

যাদের শৈশব গ্রামে কেটেছে, তাদের সকল এর ই এরকম অনেক মজার স্মৃতি থাকে। বিশেষ করে আপনার ছোটবেলাই ঘটে যাওয়া মাছ ধরতে গিয়ে নৌকা উলটে যাওয়া এবং ওখান থেকে ফিরে আসার ঘঠনাটি অনেক এডভেঞ্চারস ছিল। ভাগ্য ভাল ছিল বড় কোন দুর্ঘঠনা ঘঠে নি।
আমরাও ছোট বেলাই এইরকম নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে যেতাম। আপনার পোস্ট টি পরে ছোটবেলার কথা মনে পরে গেল।

 2 years ago 

আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। শৈশবের স্মৃতি গুলো মনে পড়ে গেল। আপনার মতো শৈশবে আমি আমার বন্ধুদের সাথে কলার গাছ দিয়ে বুড়া বানিয়েছিলাম। আর এই বুড়া করে আমরা মাছ ধরতে গিয়ে ছিলাম বিলের মধ্যে, তখন অনেক পানি আর মাছ ধরার সময় একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। আমার বন্ধু বুড়া থেকে পড়ে গেছিল। আমি তাকে তুলতে গিয়ে আমিও ডুবে যাচ্ছিলাম। তখন আমাদের পাশেই এক চাচা রয়েছে, সেই চাচা নৌকায় করে মাছ ধরতে ছিল। সে এসে আমাদের বাঁচিয়েছে তার নৌকায় তুলেছিল। যদি সেই চাচা না থাকতো তাহলে ঐদিন অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটতো।

 2 years ago 

দাদা কি বলবো বুঝে উঠতে পারছি না। যখন প্রথম ঘটনাটি পড়ছিলাম শেষ জাল মারার পর যে ঘটনা ঘটেছিল সেটি আমি আন্দাজ করছিলাম যে জালে সাপ উঠেছে। হা হা হা। সবাই মিলে পুকুরে। আহা এত কষ্টের মাছ গুলো আবার তাদের জায়গায় ফেরত গেল। দাদা বেত ফল খেয়েছেন কিনা জানি না। তবে স্বাদ লাগে কিন্তু। আমাদের বাড়ীর পিছনেও একটা খাল ছিল সেখানে বেত ঝোড় ছিল। দ্বিতীয় গল্পের যে বিষয় টি সবথেকে ভাল লেগেছে সেটি হল ঐ যে ধান খেত মাঠ বিভিন্ন জঙ্গল পার হয়ে একটি ডোবার মত জায়গায় গিয়ে পৌছলেন। সাহস কম ছিল না বোঝা যায়। কিন্তু একটি মাত্র এয়ার গান।সাথে দু একটা গুলতি নেয়া উচিত ছিল।আর এই এয়ার গানটি যতদূর মনে পড়ে আপনার শত্রুপক্ষের পালের গোদাকে দিয়ে দিয়েছিলেন।নাম টা ঠিক মনে পড়ছে না।সম্ভবত ইন্দ্র কে এয়ার গান টি দিয়ে এসেছিলেন গ্রাম ছাড়ার আগে। যাই হোক দাদা ভাল লাগে আপনার ছেলে বেলার গল্প গুলো পড়তে কারন এর মাঝে আমার অনেক স্মৃতি খুজে পাই অতীতের।সত্যিই আপনি খুবি দুরন্ত ছিলেন। ভাল থাকবেন দাদা। শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

রক্ত হিম করা দুটো ঘটনা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন দাদা। দুটো ঘটনার যেকোনো একটাতে আপনাদের বড় বিপদ হতে পারতো। ভাগ্য ভালো যে কোনো রকম ক্ষতি ছাড়াই ফিরে আসতে পেরেছেন। তবে আপনাদের সাহস আছে বলতে হবে। কারন গুইসাপ আমি ছোটবেলা থেকেই অনেক ভয় পাই। হিংস্র অবস্থায় গুইসাপের মুখোমুখি হওয়া একটা ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতাই বলতে হবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 66703.61
ETH 3518.80
USDT 1.00
SBD 2.68