ফোটোগ্রাফি পোস্ট : "বাংলাদেশের পুজো -০৯"
রাম-রাবণের মহারণ । রামের সাথে রাবণের ঘোরতর যুদ্ধ হয় বেশ কিছুদিন ধরে । রাবণ ছিল মহাবীর, নানান দিব্য অস্ত্র ছিল তার । সবগুলোই সে রামের ওপর একে একে প্রয়োগ করেছিল । কিন্তু, রাবণের চাইতেও মহা পরাক্রমশালী বীর ছিলেন শ্রীরাম । তিনি একে রাবণের সকল অস্ত্র কেটে পাল্টা অস্ত্রাঘাত করেন । কিন্তু, কোনোক্রমেই রাবণকে পরাস্ত করা সম্ভব হচ্ছিলো না । কারণ, রাম একাধারে ছিলেন ব্রহ্মার বলে বলীয়ান, শিবের উপাসক এবং দেবী দুর্গার শরণাগত । স্বয়ং দেবী দূর্গা রাবণের রথের সারথ্য গ্রহণ করেন । এর ফলে রামের সকল দিব্য অস্ত্র প্রতিহত হয়ে যাচ্ছিলো । অবশেষে দেবী দুর্গার অকাল বোধন করে তাঁকে তুষ্ট করে রাম রাবণকে দুর্গার শরণ থেকে নিষ্ক্রান্ত করে তাকে ব্রহ্মাস্ত্রে বধ করেন ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ২৫ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।
যুদ্ধে রাবণ রামের কাছে পরাজিত ও নিহত হলে রাম অশোকবন থেকে সীতাকে উদ্ধার করে অযোধ্যায় নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন । কিন্তু, তার আগে কিছু বাধার সম্মুখীন হতে হয় তাঁকে । দীর্ঘদিন সীতা রাক্ষসদের কাছে বন্দিনী ছিলেন তাই তাঁর চরিত্রের নিষ্কলুষতা প্রমাণের জন্য তাঁকে অগ্নি পরীক্ষা দিতে হয় । অগ্নি পরীক্ষায় সীতাদেবী উত্তীর্ন হলে তখন আরেকটি সমস্যা সামনে আসে । রাম যখন অযোধ্যা ত্যাগ করেছিলেন তখন ভরত এই বলে প্রতিজ্ঞা করেন যে যদি রাম ১৪ বছর শেষ হওয়ার পরে তার পরের দিনে অযোধ্যা নগরীতে উপস্থিত না হন তবে ভরত আত্মহত্যা করবেন । এখন যুদ্ধ শেষে সীতার অগ্নি পরীক্ষা শেষে দেখা যায় যে রামের বনবাসে ১৪ বছর পূর্ণ হয়ে গিয়েছে । এখন আগামীকালের মধ্যে তাঁকে অযোধ্যায় পৌঁছতেই হবে, না হলে তাঁর ভাই ভরত আত্মহত্যা করবেন । কিন্তু, লঙ্কা ছিল অযোধ্যা থেকে বহু ক্রোশ দূরে । অযোধ্যা যেতে রথে যেতেও দিন পনের-কুড়ি লেগে যাবে । এখন উপায় ? মাত্র ১ দিনের মধ্যে লঙ্কা থেকে অযোধ্যায় যাওয়ার একমাত্র উপায় হলো বিমান যোগে আকাশপথে ভ্রমণ । শেষমেশ রাবণের ভাই কুবেরের পুষ্পক রথ যেটি রাবণ জোরপূর্বক তার ভাইয়ের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিল তাতে চেপেই রাম-লক্ষণ-সীতা আর হনুমান লঙ্কা থেকে আকাশপথে অযোধ্যায় পৌঁছান ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ২৫ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।
হনুমানের বক্ষ বিদীর্ণ হওয়া । যুদ্ধ শেষে রাম অযোধ্যার রাজা হয়ে যুদ্ধে যে সব মহান বীর যুদ্ধে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন সবাইকে যথোচিত পুরস্কৃত করেন । সুগ্রীব, জাম্বুবান, বিভীষণ, অঙ্গদ, নল ও নীল প্রমুখ বীরদের যথোচিত নানান মূল্যবান অলংকার ও উপাধিতে ভূষিত করার পরে সবশেষে মহাবীর হনুমানকে সীতাদেবী একটি বহুমূল্য মুক্তার হারে ভূষিত করেন । কিন্তু, হনুমান সেই মহামূল্যবান মুক্তার হারের মুক্তা গুলো দাঁত দিয়ে চিবিয়ে ভেঙে নষ্ট করেন । তাই দেখে লক্ষণ তাঁকে নির্বোধ বানর বলে উপহাস করেন । তখন হনুমান জানান যে তিনি মুক্তা ভেঙে দেখতে চেয়েছিলেন যে তাতে রামের নাম আছে কি না । তখন লক্ষণ আরো উপহাস করে বলেন যে হনুমানের বুকের মধ্যেও তো শুধু রক্ত-মাংস আর হৃদপিন্ড ছাড়া আর কিছুই নেই, সেখানে তো রাম নেই, তাহলে হনুমান মুক্তা ভেঙে তার ভিতরে রামকে খুঁজতে গেলেন কেন ? এই কথা শুনে ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে হনুমান নিজের নখরাঘাতে নিজের বক্ষ বিদীর্ণ করেন । তখন সকলে মহা বিস্ময়ে লক্ষ করেন যে হনুমানের হৃদয় মাঝে রাম-সীতার মূর্তি ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।
মথুরার রাজা কংসের খুড়তুতো বোন দেবকীর সাথে বিয়ে হয় বসুদেবের । বিয়ের পরে কংস যখন দেবকী ও বসুদেবকে নিজের রথে করে দেবকীর শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে দিতে যান তখন দৈববাণী হয় যে দেবকীর গর্ভের অষ্টম সন্তানের হাতে কংসের মৃত্যু হবে । এই কথা শ্রবণ করে কংস দেবকীকে হত্যা করতে উদ্যত হলে বসুদেব বহুকষ্টে এই বলে তাকে নিবৃত্ত করেন যে দেবকী ও বসুদেবকে কংস কারাগারে বন্দি করে তাঁদের সন্তানদেরকে হত্যা করতে পারবেন, তাহলে কেন দেবকীকে কংস হত্যা করবেন ? এই প্রস্তাবে কংস রাজি হয়ে যান । কারাগারে নিক্ষেপ করেন দেবকী ও বসুদেবকে । একে একে ছ'ছটি সন্তানকে হত্যা করার পরে সপ্তম গর্ভের সন্তানের কোনো সন্ধান পেলেন না কংস । সপ্তম গর্ভের সন্তান বিষ্ণুর মায়ায় বসুদেবের দ্বিতীয় পত্নীর গর্ভে প্রতিস্থাপিত হলো । ইনিই বলরাম, শ্রীকৃষ্ণের বড় ভাই । আর অষ্টম গর্ভে জন্ম নিলেন স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ । বিষ্ণুর অবতার যেদিন জন্ম নিলেন সেদিন কারাগারে তিনিও আবির্ভূত হন এবং যোগবলে দেবকী ও বসুদেব ব্যতীত কারাগারের সকলকে যোগনিদ্রায় আচ্ছাদিত করেন ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।
ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ
------- ধন্যবাদ -------
পরিশিষ্ট
Account QR Code
VOTE @bangla.witness as witness
OR
দাদা আপনি অসাধারণ বর্ণনা করলেন ফটোগ্রাফির সাথে। শেষমেষ রাম রাবণকে পরাজিত করে সীতাকে উদ্ধার করলেন সেটা সবচেয়ে আনন্দের বিষয়। তাছাড়া ও আরো অন্যান্য বর্ণনা দিলেন। বিস্তারিত পড়ে খুবই ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ দাদা প্রতিনিয়ত ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের সাথে পর্ব আকারে শেয়ার করে যাচ্ছেন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এটা একদম জানা ছিল না ভাই। যতই পড়ছি এই সিরিজের পর্ব গুলো, ততই যেন অনেক তথ্য জানতে পারছি ভাই।
দাদা আজও কিছু ফটোগ্রাফির সাথে আপনি রাম এবং রাবণের যুদ্ধের কাহিনী বেশ সুন্দরভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সত্যি বলতে দাদা আপনার এই পোস্টগুলো দেখে অনেক অজানা বিষয়ই জানতে পারছি। বেশ দারুন লিখেছেন দাদা। তার সাথে ফটোগ্রাফি ছিল অনেক সুন্দর।
এবারের পুজোর ফটোগ্রাফিগুলো প্রতি একটা বাড়তি আকর্ষণ ছিলো দাদা, কারন এগুলো বাংলাদেশ হতে ক্যাপচার করা। কলকাতার চেয়ে বাংলাদেশের দৃশ্যগুলো বেশী ভালো লেগেছে আমার কাছে এখন পর্যন্ত। তবে ফটোগ্রাফির সাথে কাহিনীর বর্ণনাটা ছিলো যথার্থ। ধন্যবাদ
ওয়াও দাদা পূজা মণ্ডপের ফটোগ্রাফি গুলো জাস্ট চমৎকার লাগছে দেখতে।আপনি দুর্দান্ত ফটোগ্রাফি করেন দাদা সবসময়।।ধর্মীয় অজানা বিষয় সম্পর্কে জানতে পারলাম ।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
দাদা দেখতে দেখতে এই সিরিজের নবম পর্ব শেয়ার করে ফেলেছেন আমাদের সাথে। প্রতি পর্বের ন্যায় এই পর্বেও চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন দাদা। ফটোগ্রাফি গুলো দেখার পাশাপাশি ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারছি আমরা। অবশেষে তাহলে সীতাকে মুক্ত করতে পেরেছে রাম। হনুমানের হৃদয়ে রাম-সীতার মূর্তি দেখে ভীষণ লাগলো। সবমিলিয়ে পোস্টটি দেখে খুব ভালো লাগলো দাদা। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
বংলাদেশের পূজোর আজ ফটোগ্রাফি -৯ শেয়ার করলেন। ফটোগ্রাফিগুলো দারুন লাগলো।সুন্দর বর্ননায় আরো বেশী আকর্ষনীয় লেগেছে দাদা।এই তথ্যগুলোর কিছু কিছু আমার জানা ছিল।জানার আগ্রহ থেকেই জানা।তবে আজ আপনার পোস্টের মাধ্যমে আরো বেশী জানতে পারলাম।অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা আপনাকে সময় ও ধৈর্য ধরে সুন্দর বর্ননাগুলো তুলে ধরার জন্য।ভালো থাকবেন দাদা।
এই ফটোগ্রাফিগুলো দেখে একদম মুগ্ধ হয়ে গেলাম।আসলে বাংলাদেশের পুজো এত জাঁকজমকপূর্ণ হতে পারে তা হয়তো আপনার ফটোগ্রাফিগুলো না দেখলে জানতামও না।আমাদের এরিয়াতে এত সুন্দর করে পুজোর মন্ডপ সাজাতে দেখিনি। সত্যি খুব ভালো লাগছে দেখে।আর প্রত্যেকটা ছবিতে বর্ণনা ছিল একদম বোঝার মত।
This is beautiful… upvoted and reSteemed