তিন প্রজন্মের এক টাকার হোটেলে খাওয়া দাওয়া করার অনুভূতি। [দাদা থেকে বাবা থেকে ছেলে]
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
বুধবার, ১৩ ই মার্চ ২০২৪ ইং
বর্তমান সময়ের মধ্যে আমরা এক টাকা কে কোন টাকা হিসাবে গণ্য করি না। আসলে বর্তমান সময়ের মধ্যে এক টাকা দিয়ে কোন কিছু কিনে খাওয়া একটি ভাগ্যের ব্যাপার। কেননা বর্তমান সময়ে পণ্যের যে পরিমাণ দাম তাতে দশ টাকা দিয়ে ও কিছু কিনে খাওয়া সম্ভব নয়।আর এই পণ্যের উর্ধোগতির সময়ে রংপুর জেলার বিখ্যাত এক টাকার হোটেল আমাদের কে এক টাকায় বেশ ভালো সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে। এটা আসলে একটা অবিশ্বাস্যকর বিষয়।যা একেবারে একটি মেজিকের মতোই। বর্তমান সময়ের মধ্যে তারা এক টাকার মধ্যে বেশ ভালো ভালো খাবার আমাদের কে উপহার দিয়ে যাচ্ছে। তাদের খাবার গুলো ও বেশ উন্নত মানের। একদম ভেজাল মুক্ত খাবার।
এই হোটেলের বেশ অনেক ইতিহাস রয়েছে।এই হোটেল টি সর্বপ্রথম ১৯৭৫ সালে স্থাপিত হয়েছিল।আর সর্বপ্রথম এই হোটেল টি বর্তমান হোটেল মালিকের দাদা স্থাপন করেছিল। এরপর হোটেল টি কোন এক কারণে ১৯৮৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ১৯৯০ সালে বর্তমান হোটেল মালিকের বাবা আবার নতুন করে স্থাপন করেন সেই বিখ্যাত এক টাকার হোটেল। এভাবে তার বাবা ২০১৯ সাল পর্যন্ত চালায়। এরপর ২০২০ সালে ছেলের হাতে এই হোটেল টি তুলে দেয়। আশা করছি এই হোটেল আরো পাঁচ প্রজন্ম পর্যন্ত চলতে থাকবে। আপনারা এই হোটেলের খাবার মূল্যের তালিকা দেখলে বুঝতে পারবেন, খাবার মূল্যের পরিমাণ কতটা কম। আসলে এতো কম মূল্যের হোটেল বাংলাদেশের মধ্যে খুব কম রয়েছে।
এই বাংলাদেশের রংপুর শহরের লালবাগ বাজারে অবস্থিত। আপনারা হয়তো কারমাইকেল কলেজ এর নাম শুনেছেন, কারমাইকেল কলেজ গেটের সাথেই এই হোটেল টি অবস্থিত।এই হোটেলের পরিবেশ একদম মনোরম। কিছুদিন আগে আমি এবং আমার এক বড় ভাইয়া সহ এই হোটেলের মধ্যে গিয়েছিলাম।এর আগে ও আমি হোটেলের নাম শুনেছিলাম, তবে কোনদিন যাওয়া হয়নি। সেদিন বড় ভাই আমাকে এই হোটেলে নিয়ে গেছিলো। হোটেল টি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। হোটেলের কর্মচারীদের ব্যবহার ও বেশ সুন্দর।তারা কাস্টমারদের সাথে খুবই সুন্দর ভাবে কথা বলে।
আমরা সর্ব প্রথম দশটি পিঁয়াজু অর্ডার দিয়ে দিলাম। বেশ কিছুক্ষণ ধরে আমরা পিঁয়াজু গুলো খেয়ে শেষ করলাম। তারপর আমরা দুটি চিকেন রোল অর্ডার দিয়ে দিলাম। চিকেন রোল গুলো অর্ডার দেয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে তৈরি করে দেয়। দীর্ঘ পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমাদের দুটি চিকেন রোল এনে দেয়। চিকেন রোলের সাথে টমেটো সস ও দেয়। চিকেন রোল গুলো আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। খুবই মজাদার একটি খাবার।
এরপর আমরা দু প্লেট চিকেন বিরিয়ানির অর্ডার দিয়ে দিলাম। তারা অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের কে দু প্লেট চিকেন বিরিয়ানি আমাদের কে দিয়ে দিলো। চিকেন বিরিয়ানি গুলো বেশ দারুন ছিল। খেয়ে অনেক বেশি মজা পেয়েছিলাম ।মাত্র পঁচিশ টাকায় চিকেন বিরিয়ানি, এটা আসলে একটা হাস্যকর বিষয়। অনেকে প্রথমবার শুনে থাকলে হাসাহাসি করে।
আমরা যেহুতু বাসা থেকে খাওয়া দাওয়া করে গিয়েছিলাম, তাই আমরা বেশি কিছু খেতে পারিনি। চিকেন রোল এবং চিকেন বিরিয়ানি খেয়ে আমাদের পেট ভরে গিয়েছে। তাই আমরা ভাবলাম এই হোটেলের খাবারের দাম যেহুতু খুবই কম, তাহলে কিছু পরিমাণ খাবার প্যাকেট করে নেয়া যায়।প্যাকেট করে নিলে আমরা বাসায় গিয়ে খুবই সুন্দর ভাবে খেতে পারবো।।এরপর আমরা বেশ কয়েকটি খাবার প্যাকেট করার জন্য বললাম। আসলে তাদের প্যাকেট কোয়ালিটি বেশ দারুন। আমার চিন্তা হচ্ছে তারা এতো কম দামে এতো সুন্দর সুন্দর খাবার দিয়ে তারা কী লাভ করছে!
এরপর আমি বাসায় নিয়ে এসে প্যাকেট গুলো খুলে বেশ কয়েকটি ফটোগ্রাফী করে নিলাম। আপনারা আমার ফটোগ্রাফীর মাধ্যমে দেখতে পারছেন খাবারের মান কত ভালো।প্যাকেট খুলে প্লেটের মধ্যে খুবই সুন্দর করে সাজিয়ে আমি আমার আম্মু কে দেখালাম, আমার আম্মু অনেক খুশি হয়ে যায় দেখে। এরপর আমরা আমাদের পরিবারের সকলে মিলে একসাথে খাওয়া দাওয়া করলাম।বাংলাদেশের মধ্যে এতো সুন্দর আর হোটেল আছে কি না তা জানি না। তারা তিন প্রজন্ম ধরে তাদের এই হোটেল টি ধরে রাখার চেষ্টা করছে। আসলে উর্ধ্বগতির বাজারে এরকম একটি হোটেল ধরে রাখা খুবই কঠিন, তবুও তারা এতো সুন্দর একটি হোটেল ধরে আছে।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | Redmi 10C |
---|---|
Camera | 48 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাই সব কিছু তুলনামূলকভাবে তো দেখছি দাম অনেক কম। ৩ প্রজন্মের এক টাকার হোটেলে খাওয়া দাওয়ার অনুভূতি আপনি তুলে ধরেছেন আমাদের মাঝে এবং খাবারের মেনু কার্ড দেখে আমি তো অনেক অবাক হলাম কারণ এক টাকার জিনিসও পাওয়া যায় এই যুগে। এখন ইফতারি কিনতে গেলে কমপক্ষে ৩০০ টাকা ছাড়া হবেই না।খাবারের মানটাও অনেকে ভালো দেখে তো আমার ভীষণ ভালো লাগলো। ঠিক কথা ঊর্ধ্বগতির বাজারে এগুলো যথেষ্ট সাধারণ মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও সহায়তা করতেছে।
জী ভাইয়া একদম কম মূল্যের মধ্যে সব ধরনের খাবার পাওয়া যায়।এই হোটেলের মধ্যে ইফতারী করলে সর্বোচ্চ ৭০-৮০ টাকা বিল হতে পারে।
ভাই আপনার এমন বিখ্যাত রেস্টৃরেন্ট কোথায় গো। চিকেন বিরিয়ানী তো আমার বেশ পছন্দের। আর এমন কমদামে যদি চিকেন বিরিয়ানী পাওয়া যায় তাহলে তো পরিবার নিয়েই খেয়ে আসা যাবে। আপনার এখানে তো দেখছি সব গুলো আইটেম এর দামই কম। ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করে লোভ লাগানোর জন্য।
চলে আসেন আপু আমাদের রংপুর শহরের লালবাগে।
এত কম দামে এত আইটেম শুনেই তো অবাক হলাম। আপনি কিন্তু খুব লোভনীয় একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। শুনেই তো দৌড় দিতে মন চাইছে। তবে আপনার পোস্ট পড়ে বুঝা যাচেছ যে খুব কম দামে বেশ কিছু আইটেম খেয়েছেন আপনারা।
অবাক হওয়ার মত একটি হোটেল। আসলে যারা প্রথম অবস্থায় এই হোটেলের নাম শুনে তারা অনেকেই হাসাহাসি করে থাকে।একদম দামে কম মানে ভালো।
বাহ! দারুন একটি বিষয়ে আপনি শেয়ার করেছেন! রংপুরে আমার হুটহাট যাওয়া হয়। তবে আমি এই হোটেলের নাম আগে শুনিনি। আপনার পুরো লেখাটি পড়ে বেশ আগ্রহ জন্মালো। পরেরবার রংপুরে গেলে অবশ্যই যাব এই হোটেলে। আর আমার যেটা মনে হয় হোটেলের জায়গাটি বিখ্যাত কারমাইকেল কলেজের সামনেই হওয়ায়, কম দামে বিক্রি করলেও ওদের বিক্রি বেশি হয়। এভাবেই তারা হয়তো তাদের লাভের অংশ তুলে নেয়।
জী আপু কারমাইকেল কলেজের পাশেই এই হোটেল টি অবস্থিত। আপনি সময় করে একদিন চলে আসেন এই হোটেলের মধ্যে।জী আপু তারা কম দামে বিক্রি করে দেখে দিনের বেলা প্রচুর পরিমাণ মানুষের ভিড় জমায়।
এই এক টাকার হোটেলের কথা আমি খবরে শুনেছিলাম৷ আজকে আপনি এই স্থানে গিয়ে খুব সুন্দর কিছু সময় অতিবাহিত করেছেন এবং আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো৷ যেভাবে আপনি এখানকার অনেক কিছুই ফুটিয়ে তুলেছেন এবং অনেক কিছুই আমাদেরকে জানিয়েছেন, অবশ্যই সময় পেলে চেষ্টা করব এই স্থান থেকে ঘুরে আসার৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷