স্মৃতিচারণ: শৈশব কালে ঘটে যাওয়া একটি মর্মান্তিক ঘটনার স্মৃতিচারণ
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
বুধবার, ২৬ ই জুন ২০২৪ ইং
আসলে প্রত্যেক টি মানুষের জীবনে এমন কিছু স্মৃতি রয়েছে তা কখনোই ভোলার মতো নয়। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এই স্মৃতি গুলো মনের মধ্যে জীবিত অবস্থায় থাকবে।আর আমাদের এই স্মৃতি গুলো আমাদের মন মস্তিস্ক কে বার বার নাড়া দেয়। শৈশবের স্মৃতি কে আঁকড়ে ধরেই বেঁচে থাকে মানুষের আত্মা। যখনই শৈশবের স্মৃতি গুলো মনের মধ্যে ভেসে ওঠে তখন মনের ভেতর আলাদা রকম অনুভুতি কাজ করে। তবে কিছু কিছু স্মৃতি রয়েছে যে গুলো অল্প দিনের মধ্যেই মানুষ ভুলে যায়। আসলে এই ধরনের স্মৃতি গুলো মুলত ক্ষণস্থায়ী। শৈশব মানেই এক রঙিন অধ্যায়।যে অধ্যায়ে আমরা রংধনুর সাত রঙে এঁকেছি ছবি।আর সেই ছবি গুলো এখনো আমাদের মনের ভেতর দোলা দিয়ে উঠে।
আসলে আমি মূলত ছোট বেলা থেকেই গ্ৰামের মধ্যে বেড়ে উঠেছি। তবে একটু খানি বড় হয়ে শহরের মধ্যে লেখা পড়ার জন্য গিয়েছিলাম । কিন্তু আমি ছোট বেলায় গ্ৰামের কাটানো প্রতিটি দিন একটি করে মধুর স্মৃতি হয়ে মনের ভেতর জায়গা নিয়েছিল।আর এই স্মৃতি গুলো মনের ভেতর এখন মাঝে মাঝে দোলা দিয়ে উঠে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে আবার নিজেকে সেই শৈশব কালের দিন গুলির মধ্যে নিয়ে যেতে। তবে এটা কখনো সম্ভব হবে না, তবুও আমার অবুঝ মন চায় সেই দিন গুলোর মধ্যে ফিরে যেতে। তবে যদি টাকার বিনিময়ে সেই শৈশবের দিনগুলোর মধ্যে ফিরে যাওয়া যেত, তাহলে আমি টাকা ব্যয় করে আবার ফিরে যেতাম সেই শৈশবের দিনগুলোর মধ্যে।
আপনারা হয়তো সকলেই গরুর গাড়ির সাথে পরিচিত। গরুর গাড়ি আমাদের দেশের একটি প্রাচীন ঐতিহ্য।আর এই ঐতিহ্য আমাদের দেশের মানুষ কখনো ভুলে যাবে না। আসলে আজকে আমি গরুর গাড়ি নিয়েই আজকে আমার একটি শৈশব কালের মর্মান্তিক ঘটনার স্মৃতি শেয়ার করবো।আমি খুব ছোট বেলা থেকেই আমার বাবার সাথে গরুর গাড়ির মাধ্যমে ঘোরাঘুরি করছিলাম।এক সময় গরুর গাড়ির মধ্যে ঘোরাঘুরি করা আমার একটি নেশা ছিল। কখনো যদি আমার বাবা আমাকে রেখে গরুর গাড়ি নিয়ে কোথাও যায়, তাহলে আমি কান্না করছিলাম তখন।আমি আমার বাবার সাথে গরুর গাড়ি নিয়ে ঘোরাঘুরি করার এক পর্যায়ে আমিও গরুর গাড়ি চালা শিখে যাই।
তখন আমার বয়স বারো হবে। তখন আমি প্রায় প্রতিদিনই গরুর গাড়ি নিয়ে মাঠের মধ্যে যে কোন কাজের জন্য গিয়েছিলাম। হঠাৎ একদিন আমার বাবা অসুস্থ হওয়ার ফলে গরুর গাড়ি নিয়ে মাঠের মধ্যে যাই কিছু পরিমাণ ধান নিয়ে আসার জন্য। সাথে আমার দাদা ও ছিল। কিন্তু গরুর গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে আমি ছিলাম। এরপর আমরা মাঠে গিয়ে গরুর গাড়ির মধ্যে বেশ কিছু পরিমাণ ধান লোড করেছিলাম গাড়ির মধ্যে। এরপর আমি গরু নিয়ে এসে গাড়ির মধ্যে ধরিয়ে দিলাম এবং আমি গরুর গাড়ির উপরে বসে গাড়ি পরিচালনা করছিলাম। আমরা বেশ কিছুদূর জায়গা বেশ ভালো ভাবেই আসতে পারছিলাম। কিন্তু একদম রাস্তার যাওয়ার পর, যখন আমরা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় উঠতেছিলাম, তখন গরু গুলো গাড়ি ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।
আর আমি গাড়ির একদম নিচে পড়ে যাই। পড়ে যাওয়ার পর আমি কোমরের মধ্যে অনেক ব্যাথা পাই। বেশ কিছুক্ষণ এর মধ্যেই আমাদের গাড়ির কাছে প্রচুর পরিমাণ মানুষের ভীড় জমে যায়।তারা সকলে আমাকে গাড়ির নিচ থেকে বের করে কবিরাজের কাছে নিয়ে যায়।আমি বেশ কিছুদিন কবিরাজের কাছে চিকিৎসা করেছিলাম, অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আমি সুস্থ হয়ে উঠি। তখন থেকে আর কোনদিন গরুর গাড়ি চালানো হয়নি। কিন্তু এখন প্রায় এই গরুর গাড়ি বিলুপ্তির পথে। তবে গ্ৰাম এলাকার মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি গরু গাড়ি দেখতে পাওয়া যায়।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | Redmi 10C |
---|---|
Camera | 48 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
গল্পটির প্রথম অনেক সুন্দর আর শেষ টা সত্যি ভয়ংকরী ভাইয়া।ভাগ্যিস বড়ে ধরনের কোন দূর্ঘটনা ঘটেনি।আসলে গরুরা আপনি ছোট এবং তাদের রাখাল নয় বুঝতে পেরেই আপনাকে বোঝ বাহী গাড়িতে রেখে পালিয়ে গেছে। ভাগ্যিস মানুষজন ছিলো আর আপনাকে কবিরাজের কাছে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দিয়েছে।একদমই বিলুপ্ত এখন গরুর গাড়ি একদমই চোখে পড়ে না।ধন্যবাদ শৈশবের স্মৃতিচারণ করে আপনার সাথে ঘটে যাওয়া গল্পটি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
গরু গুলোর পালিয়ে যাওয়ার কারণ বুঝতে পারলাম না ভাই! আমার মনে হচ্ছে, গরুর গাড়ির চালক হিসেবে গরু গুলো আপনাকে মেনে নিতে পারিনি। হিহি..🤭 যাই হোক, একটু মজা করলাম আর কি। তবে গরুর গাড়ির নিচে পড়ে আপনার যে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি, সেটা জেনে অনেক ভালো লাগলো। গ্রামে গেলে সাধারণত দু-একটা গরুর গাড়ি এখনও দেখা যায়, তবে আগে যেমন দেখা যেত তেমন আর দেখা যায় না। এই গরুর গাড়ি নিয়ে আমারও একটা স্মৃতি রয়েছে ভাই, কোন একদিন হয়তো আপনাদের সাথে সেটা শেয়ার করবো।
গরুর গাড়ির নিচে পড়েছিল শৈশবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি আপনার এটাই অনেক।মানুষজন আপনাকে রেসকিউ করে নিয়েছিল এবং কবিরাজের কাছে নিয়ে গিয়েছিল।আসলে গল্পটি প্রথমদিকে খুব ভালো লাগলো পরে এসে অনেকটাই ভয়ংকর লাগলো।আপনার বড় কিছু হয়ে যেতে পারত।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
তোমার শৈশবের স্মৃতিচারণ সত্যিই হৃদয়স্পর্শী। গরুর গাড়ির সেই মর্মান্তিক ঘটনা এবং তোমার অসীম সাহসিকতা আমাদের সবাইকে শৈশবের স্মৃতির মূল্য ও তা থেকে শিক্ষা নেওয়ার গুরুত্ব বুঝিয়ে দিল। এমন লেখাগুলো আমাদের নিজেদের শৈশবের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে। ধন্যবাদ তোমাকে তোমার মূল্যবান স্মৃতিগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আল্লাহ তোমাকে সুস্থ ও সুখী রাখুন।
[@redwanhossain]
গরুর গাড়ি বাঙালি সংস্কৃতির খাঁটি ঐতিহ্যগুলোর মধ্যে একটি আর মোটরগাড়ি আসার আগে থেকে সাধারণ মানুষের চলাচলের নিত্য বাহন ছিল এটি।
আমি ছোটবেলায় গরুর গাড়ি দেখলেও তাতে চড়া হয় নি, ঘোড়ার গাড়িতে চড়েছি অনেক - তার স্মৃতিও মনে পড়ে।
কিন্তু সত্যিই আপনি ভাগ্যবান যে, গরুর গাড়ি চালিয়েছেন আর আফসোস এখন যে এই গাড়ির ব্যবহার নেই।
বড্ড সেকেলে হয়ে গিয়েছে যুগের অগ্রযাত্রার সাথে।
ধন্যবাদ দারুণ একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।