স্মৃতিচারণ: স্মৃতির পাতায় শৈশবের ঈদের দিন
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
মঙ্গলবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং
প্রত্যেকের জীবনেই শৈশব কালের ঈদের দিনের কিছু কিছু স্মৃতি রয়েছে, যা কখনো ভোলার মতো নয়। ঠিক অনুরুপ ভাবে আমার ও ঈদের দিনের কিছু স্মৃতি রয়েছে। তবে একেক জনের একেক রকম স্মৃতি রয়েছে।এক জনের স্মৃতির সাথে অন্য জনের স্মৃতির তেমন কোন মিল নেই।মিল থাকলেও আংশিক মিল রয়েছে। আমি ছোট বেলা থেকেই গ্ৰামেই বেড়ে উঠেছি। এককথায় আমার শৈশব জীবন গ্ৰামের মধ্যেই কেটেছে। আমার স্মৃতিতে ঈদ শুধুমাত্র একদিন ছিল না। আমার শৈশবের স্মৃতিতে ঈদ ছিল প্রায় এক সপ্তাহ ধরে।
আমরা আমাদের গ্ৰামের সম বয়সী ছেলে মেয়েরা এক সাথে প্রায় সপ্তাহ খানেক ঈদের আনন্দ উপভোগ করতাম। ঈদের প্রায় সাত দিন আগে থেকেই আমাদের মনের ভেতর একটি অন্যরকম আনন্দ কাজ করেছিল।গ্ৰামের মধ্যে আমাদের সম বয়সী ছেলে মেয়েদের একটি টিম ছিল, আমরা স্কুল ছুটির পর সবাই একত্রে বিভিন্ন ধরনের খেলায় মগ্ন থাকতাম। ঈদের প্রায় সাতদিন আগে থেকেই বাসায় ঈদ মার্কেট করার জন্য বায়না ধরতাম। অবশেষে আমাদের এতো বায়না দেখে আমাদের কে জামা কাপড় কিনে দিতো।
যখন প্রত্যেকের জামা কাপড় কেনা শেষ হতো তখন আমরা প্রত্যেকেই নতুন জামা কাপড় পরে গ্ৰামের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মিছিল করে ঘুরতাম।এটাই ছিল ঈদের সব থেকে বড় একটি আনন্দ। এটা দেখে অনেকেই অনেক কটু কথা বলতো, কিন্তু আমরা কারো কোন কথা না শুনে আমরা মিছিল করে ঘুরতাম। আবার যখন সন্ধ্যা লেগে যায় তখন আমরা এক সাথে বাসায় ফিরে যেতাম। কেননা রাতের বেলা একটু খানি পড়া শোনা করতে হতো।
ঈদের আগের দিন সন্ধ্যা বেলায় আমরা প্রায় তিন থেকে চার গ্ৰামের ছেলে মেয়ে এক জায়গায় একত্রিত হয়ে যেতাম। আমাদের গ্ৰামের পাশে একটি বড় মাঠ রয়েছে, সেখানে গেলেই চাদের দেখা পাওয়া যায়। আমরা মূলত সেখানে গিয়ে চাঁদ উদয়ের এক ঘন্টা আগে উপস্থিত হয়ে যেতাম।যখন পশ্চিম আকাশে ঈদের চাঁদ উদিত হয়, তখন আমরা সকলে মিলে জোরে চিল্লানি দিতাম। এতে করে আশেপাশের সকল গ্ৰামের মানুষেরা জাগ্ৰত হয়ে যেত। এটা আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লাগতো। আবার চাঁদ দেখা শেষে আমরা মিছিল করতে করতে বাসায় ফিরে আসতাম।
আবার ঈদের দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে পড়তাম সকলেই।একটু ফ্রেশ হয়ে সবাই একটা করে ঝাড়ু নিয়ে বের হয়ে পড়ি রাস্তা ঝাড়ু দেয়ার জন্য। আমাদের গ্ৰাম হতে আমাদের ঈদ গাহ পর্যন্ত পুরো রাস্তা ঝাড়ু দিয়ে পরিস্কার করে নিতাম। এতে গ্ৰামের মানুষেরা আমাদের কে কিছু পরিমাণ সালামি সকল কে দিয়ে দিতো।এটি আমার কাছে বেশ ভালোই লাগতো।এই দিন গুলো অনেক বেশি মিস করি। এরপর আমরা সকলে একত্রে গোসল করে ঈদের নামাজ পড়ার জন্য ঈদগাহ ময়দানে যাই। নামাজ শেষ করে আবার এক সাথে চলে আসি।এটাই ছিল আমার শৈশবের ঈদ।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | Redmi 10C |
---|---|
Camera | 48 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
https://twitter.com/Riyad121710/status/1777565716776169917?t=MvYGUjoU9kTCE0K9CmjZeg&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ছোট্ট বেলার ঈদগুলো সব সময় অনেক সুন্দর হয়। ঈদের কয়েকদিন আগে মনটা সব সময় উৎফুল্ল থাকতো । সমবয়সীদের সাথে বিভিন্ন খেলায় মেতে উঠতাম। চারিদিকে আত্মীয়-স্বজন সবাই বাড়িতে চলে এসেছে মানে ভিন্ন এক ধরনের আমেজ। সেই দিনগুলো এখন খুবই মিস করি। আপনার পোস্ট পড়ে সেটাই উপলব্ধি করলাম।
আপনার শৈশবের ঈদ উদযাপনের স্মৃতির সাথে আমার শৈশবের ঈদ উদযাপনের স্মৃতির বেশ কিছুটা মিল রয়েছে। তবে আপনার ঈদ উদযাপনের শৈশবের স্মৃতিটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। সত্যি আমাদের শৈশবের ঈদের দিনটি আমাদের সকলের জীবনে অত্যন্ত মধুর একটি স্মৃতি হয়ে রয়েছে।
ছোটবেলার ঈদের দিন গুলো তে অন্যরকম আনন্দ ছিল। বন্ধু বান্ধব মিলে একসাথে ঈদের আগের দিন রাতেও বেশ মজা করতাম। শৈশবের দিনগুলো আসলেই অন্যরকম। আপনারা ঈদের দিন সকাল বেলা বাড়ি থেকে ঈদগা পর্যন্ত সম্পূর্ণটা পরিষ্কার করতেন জেনে ভালো লাগলো। সুন্দর ছিল আপনার শৈশবের স্মৃতিগুলো।
ছোট বেলার ঈদ অনেক মজার ভাইয়া। সেই দিনের ঈদ আর এখনের ঈদের মধ্যে অনেক তফাৎ হয়ে গেছে। আপনি সেই ছোট বেলার অনেক সুন্দর একটি ঈদের দিনের স্মৃতি চারণ করলেন। আপনার অনুভূতি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
আসলে ছোটবেলায় সবার ঈদের স্মৃতি গুলো একেবারে অন্যরকম হয়ে থাকে৷ এই স্মৃতিগুলো মনে থাকলে মনের মধ্যে একটি আলাদা ভালোলাগা কাজ করতে থাকে৷ আপনারাও এরকম সুন্দর একটি মুহূর্ত উপভোগ করেছিলেন। ছোটবেলার আপনার এই মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগছে। একইসাথে আপনার বাড়ি থেকে ঈদগা পর্যন্ত যেতে যেতে পরিষ্কার করতেন শুনে খুবই ভালো লাগছে৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷