স্মৃতিচারণ : শৈশবের ঘুড়ি উড়ানোর স্মৃতি
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং
আসলে ঘুড়ি বানানোর প্রতিযোগিতা দেখেই ছোট বেলার ঘুড়ি উড়ানোর স্মৃতি মনে পড়ে গেল। আসলে ছোট বেলায় আমরা কম বেশি সকলেই ঘুড়ি বানিয়ে উড়িয়েছিলাম। তবে বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে ছোট বেলায় ঘুড়ি উড়িয়ে ছিল। ছোটবেলায় আমি ঘুড়ি বানাতে এবং ঘুড়ি উড়ানোর উস্তাদ ছিলাম।গ্ৰামের প্রত্যেকটি ছেলে মেয়েরা আমার কাছে থেকে ঘুড়ি বানিয়ে উড়িয়েছিল। বৈশাখ মাসের শেষের দিকে আমার বাড়িতে ঘুড়ি তৈরি করার জন্য ছোট ছোট বাচ্চাদের ভিড় লেগে যেত। কেননা বৈশাখ মাসের শেষের দিকে আমাদের এলাকায় ঘুড়ি উড়ানোর একটা আমেজ থাকতো।
সবাই আমার কাছে থেকে ঘুড়ি বানিয়ে প্রতিযোগিতা করতো মাঠে গিয়ে।যার ঘুড়ি বেশি দুর উপরে উঠবে সে ইউনার হিসেবে গণ্য হতো। তবে বিকাল বেলা আমাদের গ্ৰামের একটি মাঠের কয়েকটি গ্ৰামের ছেলে মেয়েরা একত্র হয়ে ঘুড়ি উড়াইতাম। অনেকেই বাজার থেকে রেডিমেট ঘুড়ি কিনে নিয়ে এসে আমাদের সাথে ঘুড়ি উড়ানোর চেষ্টা করতো, কিন্তু তাদের ঘুড়ি উড়তো না তেমন। পরবর্তীতে তারা আবার আমার কাছে থেকে ঘুড়ি বানিয়ে নিতো। আমি ঘুড়ি বানিয়ে না দিলে তার আম্মু কে সহ নিয়ে এসে আমার কাছে থেকে ঘুড়ি বানিয়ে নিতো।
আমি ছোট বেলা থেকেই ঘুড়ি বানানোর কাজে অভ্যস্ত ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ একদিন ভাবলাম একটি বড় ঘুড়ি বানানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। পরবর্তীতে আমি বেশ কিছু টাকা ব্যয় করে একটি চং ঘুড়ি তৈরি করে নিলাম।এই ঘুড়িটি মূলত রাতে উড়ানোর জন্য তৈরি করেছিলাম। একদিন হঠাৎ সন্ধ্যায় গ্ৰামের ছেলে মেয়েদের কে নিয়ে এই ঘুড়ি উড়ানোর জন্য আমাদের মাঠে চলে গেলাম।ঘুড়ির মধ্যে বেশ কিছু কালারের লাইট লাগিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ এর মধ্যেই আমি ঘুড়িটি আকাশে তুলে নিলাম। ঘুড়িটি আকাশে উড়ানোর সময় গ্ৰামের মানুষ জাগ্রত হয়ে যায়। কেননা রাতের বেলা ঘুড়িটি অনেক শব্দ করছিল।
কিছুক্ষণ এর মধ্যে গ্ৰামের বেশিরভাগ মানুষ আমার কাছে চলে আসে ঘুড়ি উড়ানো দেখার জন্য।আর বিভিন্ন কালারের লাইট গুলোর জন্য রাতের আকাশে ঘুড়িটি অনেক বেশি সুন্দর লাগছিলো। বেশ কিছুক্ষণ এর ঘুড়ির সুতো টি গাছে বেঁধে আমরা বাসায় চলে আসলাম সকলেই। কিন্তু কিছুক্ষণ পর গিয়ে দেখতে পারলাম ঘুড়ি টি সুতো ছিঁড়ে উড়ে গেছে কোন এক জায়গায়। পরে আমার অনেক বেশি কষ্ট হয়, কেননা এই ঘুড়ি তৈরি করতে বেশ কিছু টাকা ব্যয় করেছি এবং প্রায় পাঁচদিন সময় লেগেছে তৈরি করতে।
পরবর্তীতে বেশ কয়েকদিন এলাকায় এই ঘুড়িটি খোঁজাখুঁজি করছিলাম কিন্তু পাওয়া যায় নি। আসলে পছন্দের জিনিস গুলো সবার আগে হারিয়ে যায়, বেশি দিন স্থায়ী হয় না। তখন থেকে আমি ঘুড়ি তৈরি করা ছেড়ে দিয়েছি। এখন পর্যন্ত আর একটি ঘুড়ি ও তৈরি করা হয়নি। তবে এক সময় আমাকে ঘুড়ি বানানোর জন্য এলাকার সকল মানুষ আমাকে চিনেছিল। তবে আমি এবছর আরো একটি বিশালাকার ঘুড়ি তৈরি করবো এবং রোদের তাপমাত্রা কিছুটা কম হলে তা আমাদের গ্ৰামের মাঠের মধ্যে উড়াবো।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Vote@bangla.witness as witness
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার পছন্দের ঘুড়িটি সুতা ছিঁড়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে উড়ে যাওয়ার জন্যে দুঃখ প্রকাশ করছি।আপনি ঠিকই বলেছেন আমাদের জীবনের সব থেকে পছন্দের জিনিসটা সবার আগেই হারিয়ে যায় আমাদের জীবন থেকে।তবে আপনার পোস্ট পড়ে বুঝা যাচ্ছে আপনি এক সময় ঘুড়ি তৈরি করতে আর ওড়াতে বেশ এক্সপার্ট ছিলেন।অনাকাঙ্খিত একটি ঘটনার জন্যে হয়তো ঘুড়ি তৈরি করা ছেড়ে দিয়েছিলেন,তবে বর্তমান আমাদের কমিউনিটিতে ঘুড়ি তৈরির প্রতিযোগিতা ঘোষণা হয়েছে,তাই আবার ও আশা করছি আপনার থেকে একদম ইউনিক একটি ঘুড়ি দেখতে পারবো।সেই অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।
পছন্দের জিনিস গুলো বেশি দিন স্থায়ী হয় না।এটি কেন হয় তা আসলে আমার জানা নেই। ঘুড়িটির সুতো ছিঁড়ে উড়ে যাওয়ায় আমার অনেক খারাপ লেগেছিল, কেননা অনেক কষ্ট করে এই ঘুড়ি টি তৈরি করেছিলাম।
শৈশবে আমারও বেশ ঘুড়ি উড়ানোর গল্প আছে। আজ আপনার গল্প পড়ে মনে হয়ে গেল। একদিন সময় পেলে শেয়ার করবো। তবে আপনার আজকের গল্প গুলো কিন্তু আমায় সেই ছেলেবেলায় নিয়ে গেল কিছু সময়ের জন্য। খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে স্মৃতি গুলো তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি স্মৃতি শেয়ার করার জন্য।
আসলে প্রত্যেক টি মানুষের জীবনেই ঘুড়ি উড়ানোর স্মৃতি রয়েছে।প্রত্যেকেই ছোট বেলায় ঘুড়ি উড়িয়েছিল। তবে আমি একজন ঘুড়ি বানানোর পন্ডিত ছিলাম।
শৈশব এর ঘুরি উরানোর সৃতি মনে পরলে আমার মাথায় আঘাত পাওয়ার কথা মনে পরে যায়।ঘুরি উরিয়ে একবার বাসায় এসে বাবার ভয়ে দ্রুত হাত মুখ ধুতে গিয়ে টিউবওয়েল কেটে যায় আমার মাথা অনেক গুলো সেলাই দেওয়া লাগে এখনো সেই দাগ রয়ে গেছে। আপনার ৃতি পরে আমারো মনে পরে গেলো ধন্যবাদ।
আপনার মন্তব্য টি পড়ে আমার কাছে খারাপ লাগলো। আসলে আমি ও বেশ কয়েকবার পরিবারের ভয়ে এরকম পালিয়ে আম গাছের মধ্যে উঠে আম গাছ থেকে পড়ে গিয়েছিলাম।
আসলে ভাই আমারও এরকম সুন্দর একটি ঘুড়ি ছিল। ঘুড়িটি উড়ানোর সময় আমি প্রচুর পরিমাণে সুতা কাড়িয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় সামান্য একটু বাতাস উটার কারণে ঘুড়িটি এতো পরিমাণ জোরে টান দিলো, মুহূর্তেই মাঝখান থেকে সুতা ছিড়ে ঘুড়িটি অন্য গ্রামে পড়েছিল। কিন্তু খোঁজাখুঁজি করার পরে শেষ মুহূর্তে ঘুড়িটি পেয়েছিলাম। কিন্তু বাঁশের ঝাড়ে ঘুড়িটি বেধে যাওয়ার কারণে ঘুড়ির কাগজ অনেকখানি ছিড়ে গিয়েছিল। যাহোক আজকে আপনার শৈশব জীবনের ঘুড়ি উড়ানোর স্মৃতি পড়ে আমার শৈশবের ঘুড়ি উড়ানোর স্মৃতিগুলো খুবই মনে পড়ে গেল। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলে সত্যি কথা বলতে পছন্দের যে কোন জিনিস নিজের কাছ থেকে হারিয়ে গেলে সেটার জন্য অনেক মন খারাপ হয় সেটা হোক বড় বা অতি সামান্য। আর ঘুড়ি ওড়ানো তো অত্যন্ত আনন্দের ও মজা দায়ক।আর আপনার পছন্দের ঘড়িটি আপনার কাছ থেকে সুতা কেটে হারিয়ে যাওয়ার তো সত্যি দুঃখজনক । আমি কখনো ঘড়ি উড়াইনি তবে আমার ছোট ভাইকে কত বছরই একটা ঈগল পাখি ঘুড়ি কিনে দিয়েছি। ঘুড়ি উড়ানো দেখতে আমার অনেক ভালো লাগে ।মনে হয় শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি। ভালো লাগলো আপনার এই অনুভূতিমূলক পোস্টটি দেখে।
সুন্দর একটি মুহূর্ত শেয়ার করলেন শৈশবে ঘুড়ি উড়ানোর মুহূর্ত। ছোটবেলায় বেশ সুন্দর সুন্দর ঘুড়ি বানিয়ে উড়াতাম গ্রামের পরিবেশে। যখন গ্রামে থাকতাম তখন ছোটবেলায় গ্রাম অনেক ফাঁকা ছিল। বিশেষ করে এখন মানুষ বেড়ে যাওয়ার কারণে গ্রামের খোলামেলা পরিবেশ দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে। আপনি সেই হারিয়ে যাওয়া ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করলেন ঘুড়ি উড়ানোর মুহূর্ত নিয়ে। অনেক ভালো লেগেছে আপনার সেই স্মৃতি পড়ে।