পাশের গ্ৰামের সাথে আমাদের গ্ৰামের একটি জাঁকজমকপূর্ণ ফুটবল ম্যাচ

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে পাশের গ্ৰামের সাথে আমাদের গ্ৰামের একটি জাঁকজমকপূর্ণ ফুটবল ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।

আসলে বর্তমান আর তেমন একটা ফুটবল খেলা হয়না। তবে, আমি ছোট বেলায় ফুটবল খেলার মধ্যে অনেক আসক্ত ছিলাম। কিন্তু মাধ্যমিক পাশ করার পর আমার এই ফুটবল খেলা নামক নেশা কেটে যায়। কেননা, আমাকে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার জন্য শহরে যেতে হয়েছিল।আর শহরে গিয়ে তেমন কোন ফুটবল খেলার সাথী ছিল না। তবে, বিকাল বেলা করে শহরের বিভিন্ন জায়গার মধ্যে টুকটাক ক্রিকেট খেলা হতো। তবে, ক্রিকেট খেলা আমার তেমন একটা পছন্দের না। আমার কাছে ফুটবল খেলাই একমাত্র প্রিয় খেলা।আমি এই ফুটবল খেলার জন্য আমার বাড়িতে অনেক মার খেয়েছিলাম। কিন্তু তবুও আমি এই খেলা ছাড়িনি। আসলে ফুটবল খেলা আমার একটি ইমোশন ছিল। মাধ্যমিক পাশ করার আগে আমি প্রতিদিন গ্ৰামের ছেলেদের সাথে ফুটবল খেলেছিলাম।

আগের তুলনায় আমার ফুটবল খেলা অনেক টা কমিয়ে গিয়েছে। আগে আমি দিনে অন্তত একবার হলেও ফুটবল খেলছিলাম। কিন্তু এখন বছরে গোনা কয়েকদিন ফুটবল খেলা। তবে, সেটা বিশেষ কোনো দিনে, যেমন; দুই দিনের দিন, কিংবা পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি। আসলে আমাদের গ্ৰামের মধ্যে বিশেষ বিশেষ দিন গুলোর মধ্যে ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়।আর এই বিশেষ খেলা গুলোর মধ্যে আমার অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয়। তাছাড়া বাকি দিনের মধ্যে তেমন একটা সময় সুযোগ হয়ে উঠে না ফুটবল খেলার। তবে, এখনো ফুটবল খেলা দেখলেই আমার ফুটবল খেলতে ইচ্ছে করে। কিন্তু ইচ্ছা করলেও এখন আর সম্ভব হবে না। কেননা, এখন আমার উপর অনেক রকমের দায়িত্ব এসেছে। আমাকে এই সব দায়িত্ব নিজ দায়িত্বে পালন করতে হবে।

গতকাল ফ্রেশ হয়ে বিকাল বেলা গ্ৰামের মধ্যে ঘুরতে বের হয়েছিলাম।গ্ৰামের মধ্যখানে গিয়ে শুনতে পেলাম, আমাদের গ্ৰামের ছোট ভাই গুলো পাশের গ্ৰামের সাথে ফুটবল খেলা নিয়েছে। তাদের কথা গুলো শুনে আমি ভিষন খুশি হয়ে গেলাম। কেননা, দীর্ঘ দিন পর আমাদের গ্ৰামের ছেলেদের ফুটবল খেলা দেখতে পারবো। আমাদের ছেলে গুলো আমাকে সাথে নিয়ে যায়, তাদের ফুটবল মাঠের মধ্যে। আমাদের গ্ৰামের মধ্যে তেমন একটা ফাঁকা মাঠ নেই, তাই আমাদের কে সব সময় আম বাগানের মধ্যে খেলতে হয়। অবশেষে আমরা আমাদের গ্ৰামের সকলে মাঠের মধ্যে উপস্থিত হয়ে গেলাম। বেশ কিছুক্ষণ এর মধ্যেই পাশের গ্ৰামের খেলোয়াড়রা চলে আসে। এরপর আমাদের গ্ৰামের ছোট ভাই গুলো আমাকে ও খেলার জন্য অনুরোধ করে। অবশেষে আমিও খেলার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম।

অল্প কিছু সময়ের মধ্যে আমাদের খেলা শুরু হয়ে যায়।আমি প্রথম অবস্থায় তেমন একটা খেলতে পারছিলাম না। কেননা সেদিন দীর্ঘদিন পর খেলছিলাম।আর আমার দৌড়াদৌড়ি করতে একটু কষ্ট বোধ হচ্ছিল। তবে, আমি কয়েকমিনিট পর আমার খেলার পারফরম্যান্স বাড়িয়ে নিলাম। পরবর্তীতে বেশ কয়েক মিনিটের মধ্যে আমরা আমাদের পাশের গ্ৰাম কে একটি গোল দিয়ে দেই। গোল দেয়ার পর আমাদের গ্ৰামের ছোট বাচ্চা গুলো অনেক চিৎকার করছিল। আবার অল্প কিছু সময়ের মধ্যে তারা আমাদের কে ও একটি গোল দিয়ে দেয়।এতে করে দুই দলের গোল সমান হয়ে যায়। আবার আমরা খুবই সুন্দর ভাবে খেলছিলাম।পরে বেশ কয়েক মিনিট খেলার পর হাঁফ টাইম দিয়ে দেয়।হাফ টাইমের মধ্যে মধ্যে আমরা সকলে একটু বিশ্রাম নিয়ে নিলাম।

অবশেষে আমরা আবার খেলা শুরু করে দিলাম। দুই দলের খেলোয়াড়রা বেশ ভালোই খেলছিল। কিন্তু হাফ টাইমের পর আর কেউ কাউকে গোল দিতে সক্ষম হতে পারিনি। অবশেষে আমাদের কে ট্রাইফিকার খেলতে হয়েছিল।ট্রাইফিকারে আমরা দুই গোল বেশি দিয়ে জিতে যায়। আসলে পুরো খেলা টি আমি বেশ ভালোই খেলছিলাম। তবে, আগের মতো খেলতে পারলে তাদের কে আরো কয়েকটি গোল দিতে পারলাম হয়।এক সময় আমাদের গ্ৰামের একজন সেরা ফুটবলার ছিলাম আমি। কিন্তু এখন আর তেমন একটা পারি না। তবে, চর্চা করলে হয়তো আবার আগের পর্যায়ে ফিরে যেতে পারবো। কিন্তু এখন আর সেই সুযোগ নেই আমার। তবে, আমার ফুটবল খেলা দেখলেই অন্য রকম আনন্দ কাজ করে।

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে রংপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।