স্মৃতিচারণ: শৈশবের শীতকালের ক্রিকেট খেলার স্মৃতিচারণ
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
রবিবার, ০৩ ই নভেম্বর ২০২৪ ইং
ক্রিকেট খেলা হয়তো প্রতিটি ছেলের সাথে একদা জড়িত ছিল। আমার কাছে মনে হয় ক্রিকেট খেলা প্রতিটি ছেলের একটি ইমোশন। ফুটবল খেলা জাতীয় খেলা হলে ও ক্রিকেট খেলার প্রতি মানুষের আসক্ত একটু বেশি। কেননা, ফুটবল খেলা সকলেই খেলতে পারেননা, কিন্তু অপরদিকে ক্রিকেট খেলা সকলেই কম বেশি খেলে থাকেন।আর ক্রিকেট খেলার মধ্যে নেই কোন ধরনের রিস্কি। ফুটবল খেলার মধ্যে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। প্রতিটি ছেলের জীবনে ক্রিকেট খেলার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে।যা মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মনে রয়ে যাবে। বিশেষ করে যারা গ্রাম এলাকার মধ্যে বসবাস করে থাকেন, তাদের ক্রিকেট খেলার প্রতি অন্যরকম নেশা থাকে।
প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন খেলার একটি আলাদা সময় থাকে।আর এই সময় গুলোর ঔ ধরনের খেলা গুলো খেলতে বেশ ভালো লাগে। ঠিক অনুরুপ ভাবে ক্রিকেট খেলা একটি শীতকালীন খেলা। শীতকালে প্রতিটি গ্রামে ক্রিকেট খেলার একটি আমেজ জমে উঠে।আর এই আমেজ পুরো শীতকালে জুড়ে থেকে যায়। আবার শীতকাল শেষে গ্রীষ্মকালে নতুন নতুন খেলার উদ্ভব হয়।আর এভাবেই চলতে থাকে পুরো বছর।আমি ছোট বেলা থেকেই ক্রিকেট খেলায় বেশ আসক্ত। তবে, বর্তমান সময়ে এই আসক্তি অনেক টা কমে গিয়েছে।কমে যাওয়ার মূল কারণ হলো, বিভিন্ন ধরনের কাজের চাপ এবং ব্যস্ততা।
আজকে আমি আমার জীবনের শৈশব কালে শীতের মৌসুমে ক্রিকেট খেলার বেশ কিছু স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আপনারা হয়তো সকলেই জানেন যে, শীতকালের বেশিরভাগ সময়ই আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ ছিল।আর এই বন্ধ সময়ে অনেকেই অনেক ধরনের খেলায় মগ্ন হয়ে পড়ছিল। তবে, আমরা শীতকাল চলে আসলেই ক্রিকেট খেলার মাঠ তৈরি করতাম। শীতকালের শুরুতে আমাদের গ্রামের বেশিরভাগ মাঠের ফসল বাড়িতে তোলা হয়ে যেত। আমরা আমাদের ইচ্ছা মতো মাঠ যাচাই করে ক্রিকেট খেলার মাঠ তৈরি করতাম।আর এই মাঠ তৈরি করার কাজে আমাদের গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল। এটা আসলেই আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল।
আমরা সকলে মিলে মাঠ তৈরি করা শেষ করে মাঠের মিলাদ স্বরুপ আমরা গ্রামের সকলে মিলে খাওয়া দাওয়ার ব্যাবস্থা করতাম। অনেক সুন্দর ছিল তখনকার সময় গুলো।মাঠ তৈরির প্রতিটি কাজ সম্পন্ন হলে আমরা গ্ৰামের প্রতিটি মানুষের কাছে থেকে টাকা উঠিয়ে ব্যাট বল এবং ক্রিকেট খেলার বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম কিনেছিলাম। আমাদের গ্ৰামের প্রতিটি মানুষ আমাদের খেলার জন্য টাকা দিতো।কম বেশি প্রতি বছরই খেলার সরঞ্জাম গুলো কেনা লাগতো। আমরা ক্রিকেট খেলার জন্য প্রতিদিন একটি সময় নির্ধারণ করতাম, আর এই সময়ের মধ্যে খেলার মাঠে সকলেই উপস্থিত হয়ে যেত। আমরা মূলত শীতকালের বিকাল বেলায় ক্রিকেট খেলতাম প্রতিদিন।
আর এই খেলার মধ্যে গ্ৰামের ছোট বড় সকলেই উপস্থিত থাকতো।আর গ্ৰামের বৃদ্ধ এবং মুরুব্বিরা খেলা দেখার জন্য আসতো। তবে, বর্তমান সময়ে আর এরকম আয়োজন করা হয় না। বেশ পাঁচ থেকে ছয় বছর থেকে এরকম কোন খেলার আয়োজন করা হয় না। আমরা যারা এই খেলার আয়োজন করছিলাম, তারা সকলেই এখন বাহিরে।আর যারা এখন গ্ৰামের মধ্যে রয়েছে তারা সকলেই অনলাইন গেমস নিয়ে অনেক ব্যস্ত। শৈশবের শীতকালের ক্রিকেট খেলা কে আমরা অনেক টা মিস করি। তবে, কোন এক সময় আবার এরকম খেলার আয়োজন করবো। তবে, আমরা অনলাইনের দেখা পেয়ে সব ধরনের খেলা ধুলার বাহিরে চলে এসেছি।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Vote@bangla.witness as witness
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
শুধু গ্রামে নয় ভাই, শহরাঞ্চলের শীতকালে প্রতি মাঠে ক্রিকেট খেলা হয়। আমার মনে পড়ে যাচ্ছে কলকাতা শহরের কথা। ছেলেবেলায় দেখতাম কলকাতা ময়দানে শীতকালে সমস্ত দলগুলির ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতো। মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে যেতাম খেলা দেখতে। সব প্লেয়াররাই দুর্দান্ত ছিল। প্রত্যেকে প্রশিক্ষিত এবং তারা সমস্ত কিছু পরে সাদা জার্সীতে ম্যাচ খেলত। দেখতে দারুণ সুন্দর লাগতো। আসলে ইডেন গার্ডেনে আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখার টিকিট সব সময় পেতাম না। তাই প্রতিদিন এই ম্যাচগুলো দেখতে খুব ভালো লাগতো। তবে ইডেনেও আমি বহুবার গেছি। সে এক অদ্ভূত অভিজ্ঞতা। প্রথম প্রথম ইডেনের মাঠ দেখে তার প্রেমে পড়ে গেছিলাম। অসাধারণ সেই সবুজের হাতছানি। আর তার মধ্যে ব্যাট করতেন সচিন তেন্দুলকার। খুব সেই সব ছেলেবেলার দিন মনে পড়ছে।