শৈশবের জীবনটা যদি আবার ফিরে পেতাম [10% beneficiary to @shy-fox]
আসসালামুয়ালাইকুম,
সবাই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর মেহেরবানীতে সবাই ভালো আছেন।
আবারো চলে এসছি একটি পোস্ট নিয়ে,আমার আজকে পোস্ট নিজের জীবনের প্রতি তিক্ত নিয়ে। আশা করি আমার লেখা টি আপনাদের ভালো লাগবে।।
শৈশব জীবনটা যেন খুব আনন্দময় ছিল।ছিলনা কোন ভাবনা-চিন্তা নিজের মতো করে চলতাম,বাঁধন ছাড়া ছুটে চলা ছিল সেই সময়,ছিল না কোনো ধরাবাধা নিজের ইচ্ছে মত জীবনটা চলছিল। মাঝে মধ্যে মায়ের কর্কশ শাসনে রুদ্ধ হয়ে থাকতাম,বাবার ভালোবাসা বেড়ে উঠেছি। তারপরও ওই জীবনটাই ছিল যেন স্বপ্নের মত।
সেই জীবনটা ছিল আনন্দময়,ছিল না কোন তিক্ততা।
সহপাঠিদের সাথে বউচি, হাডুডু, কানামাছি খেলে দিন পার হত। খেলার ছলে সহপাঠিদের সাথে সারাদিন কাটিয়ে দিতাম। তখনও ছিল না জীবনের প্রতি এত তিক্ততা,ছিল আনন্দময়ী বাঁধন ছাড়া একটি জীবন।
সহপাঠিদের সাথে স্কুলে যেতাম আবার স্কুল থেকে ফিরে আসতাম।সহপাঠীদের সাথে মেলায় ঘুরতে যেতাম,তখন বাহারি রকমের জিনিস দেখতাম,তখন কারো অনুমতি লাগত না, মায়ের অনুমতি ছিল যথেষ্ট।
বর্ষা এলেনা নাও নিয়ে যেতাম,সহপাঠীদের সাথে ঘুরতে ঐ অজানা তেপান্তরে। তখনও ছিল না জীবনের প্রতি এত তিক্ততা। তখন এই জীবনটা ছিল উপভোগ করার। বয়সের সাথে সাথে সব যেন পরিবর্তন হয়ে যায়।ফেলে আসা দিনগুলো মনে হলে মনের মধ্যে কেমন যেন লাগে।মন চায় সেই জীবনে চলে যায়,আবার যদি পারতাম আমার শৈশবের জীবন টা ফিরিয়ে আনতে।
চঞ্চলতায় গ্রামের প্রতিটা জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর সেইমেয়েটি আজ নীরব নিস্তব্ধ হয়ে ঘরে বসে আছে। নেই কোন সহপাঠী,নেই বাবা-মার কর্কশ রুদ্ধ শাসন।এখন জীবনটা যেন তিক্ততাই ভরে গেছে। বয়সের সাথে সাথে সবকিছু যেন পরিবর্তন হতে চলেছে।গ্রামে ঘুরে বেড়ানোর সেই অভ্যাসটা যেন মেয়েটির আস্তে আস্তে পরিবর্তন হয়ে গেছে, এখন ঘর থেকে বের হতে তিক্ত লাগে।
এক সময় কথার খৈ ফুটত মুখ দিয়ে, অনেক সময় কথার খৈ নিয়ে বিরক্ত হতো বাবা।সারাদিন কথা বলতে বলতে নিজেই ক্লান্ত হয়ে যেতাম,তারপরও কথা বলা বন্ধ করতাম না। তখন কথা বললে নিজেকে অনেক হালকা মনে হতো।
প্রায় সময় বাবা বলতেন কখনো কি তোর কথা বন্ধ হবে না?
আজ সব কিছু যেনো বদলে গেছে,এখন কথা বলতে ইচ্ছে করে না, সারাদিন নিজেকে ঘরের ভিতর বন্দি রাখতে মন চাই। এখন কেন যেন ভয় লাগে কথা বলতে,কারন এখন তো বড় হয়েছি এখন ভুল কথা বলা যাবে না। তখনের জীবনে ভুল করাটা যেন শুধু মজা , ভুল ছিল না বাবা মায়ের কাছে।
এখন শ্বশুরবাড়ির মানুষজন নিজের আপন নয়,তাই তারা আমার ভুলের কারণে বিরক্ত হতে পারে, তাই অনেকটা চিন্তা ভাবনা করে কথা বলতে হয়।
আমি তো এমন জীবন চাইনি,যেখানে নিজের স্বাধীনভাবে কথা বলা যাবে না, নিজের ইচ্ছে মত চলা যাবে না, সবময় ভয়ে থাকতে হবে।চলাফেরা করার সময় নিজেকে সংযত রেখে চলাফেরা করতে হবে,না হলে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কি ভাববে সেই চিন্তা করতে হয় এখন।ওই শৈশব জীবনে এই চিন্তাটা কখনো করতে হয়নি, কারণ তখন ছিলাম ছোট বাবা মায়ের কাছে।
নিজের পছন্দের জিনিসকে নিজে প্রাধান্য দেওয়া যাবেনা, পছন্দ করার মানুষ তো আছে স্বামীর পরিবারের লোকেরা ,তখন হাজার মন থেকে চাইলেও নিজের পছন্দের জিনিস নেওয়া যাবেনা,অনুমতির অপেক্ষায় থাকা লাগবে। শৈশবের জীবনে আমার পছন্দের জিনিস বাবা-মার কাছে প্রাধান্য ছিল, তখন বাবা মায়ের অনুমতির অপেক্ষায় থাকতে হতো না নিজের ইচ্ছে মত নিতাম, আর ঐ জীবনটাই ছিল সত্যিই আনন্দময়ী।
কোথাও যেতে হলে বাবা মায়ের অনুমতি লাগত, বাবা ঘরে না থাকলে মায়ের অনুমতি যথেষ্ট ছিল।আর এখন স্বামীর অনুমতি,ফ্যামিলির অনুমতি নিতে নিতে যেন তিক্ত হয়ে গিয়েছি। সংসার নামের বাস্তব জীবনটাই যেনো চঞ্চল জীবনটাকে রুদ্ধ করে রেখেছে।এই জীবনের দুশ্চিন্তা মানুষকে পরিবর্তন করতে সময় লাগে না। পরিবারের চাপ, সংসারের চাপ একটা মানুষকে জীবনের প্রতি তিক্ত করে তুলে।
আর তখন জীবনের প্রতি ভালবাসা কমে যায়, তখন হতাশায় হয়ে দিন কাটে,তখন কথা বলতে ইচ্ছে হয়না, তখন স্বপ্ন দেখতে ভয় লাগে।তখন মনের মধ্যেখানে তিক্ততায় ভরে যায়। বেঁচে থাকার আশাটাও মন থেকে চলে যায়।
তখন মন বলে এই জীবন থেকে কখন মুক্তি পাবো?
সেই চিন্তা নিয়ে বসে থাকতে হয়,জানি কখনো এই জীবন থেকে আবার শৈশবের জীবনে ফিরে যাওয়া যাবেনা, তখন এক বুক আশা নিয়ে বসে থাকি, ওই জীবনের স্মৃতি গুলো মনে করে ।
তখন মনে হয় এগুলো স্বপ্ন দেখছি,ওই শৈশবের জীবনটা যেন ছিল বাস্তব জীবন তখন ওই জীবনে যেতে মন চাই, এই জীবনটা যেন তিক্ত হয়ে গিয়েছে।
ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
সবকিছু পাওয়াই সম্ভব না। ছোটবেলার স্মৃতিময় দিনগুলো ফিরে পেলে অনেক ভালো হতো। কিন্তু চাইলেও কি সব কিছু সম্ভব?? আপনি ঠিকই বলছেন ছোট সময়ে অনেক খেলা খেলতাম বৌছি কানামাছি ইত্যাদি। একসাথে সবাই স্কুলে যাওয়া হতো আবার স্কুল থেকে একসাথে বাড়ি ফেরা। আর ঈদের সময় ছোট সময়ে কত মজা করতাম। এখন আর তেমন একটা মজা হয় না এখন বড় হয়ে গেছি এখন আর আগের মত ফিলিংস কাজ করে না। ধন্যবাদ আপু আপনার ছোটবেলারের স্মৃতিময় কাব্য আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
এটা ঠিক বলেছেন ভাইয়া,সবকিছু পাওয়া সম্ভব নয় তবে স্বপ্ন দেখতে আমরা প্রতিটা মানুষই পছন্দ করি। ধন্যবাদ ভাইয়া, সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।।
আসলেই আপু শৈশবের জীবনটা ছিল একদম ভিন্ন রকম ছিল না কোন চিন্তা-ভাবনা ছিলনা কোন টাকা রোজগার করার ধান্দা শুধু শৈশবের বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করা আর খাবার সময় হলে মায়ের কাছে গিয়ে মজার মজার খাবারের আবদার করা। আমারও শৈশবে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে, কোন চিন্তা ভাবনাহীন জীবনযাপন করতে কার না ভালো লাগে।
একদমই ঠিক কথা বলেছেন ভাইয়া,শৈশব জীবনটা ছিল মধুময় একটা জীবন।তাই তো প্রতিটা মানুষই বারবার সেই জীবনে ফিরে যেতে চাই।ধন্যবাদ ভাইয়া, এত সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপু এটা শুধু আপনার জীবনের সাথে জড়িত নয়৷ প্রতিটি মানুষের জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে৷ আসলে সেই শৈশব ছোট্ট কৈশোরের জীবনগুলি যে এখন শুধু চোখের পাতায় ভাসছে ৷ আসলে সময় চলে গেছে সেই সময় আর ফিরে পাওয়া কখনোই সম্ভব নয় ৷ একটা বয়সে যখন ভুল করলে কোন ভুল ছিল না আর এ বর্তমান বয়সের সামান্য কিছু ভুলেই হতে পারে বিশাল কোনো কিছু ৷ আসলে এটাই বাস্তবতা এটাকে মানতেই হবে৷ কারণ এখন আর সেই সময়ের দিন নেই তবে হ্যাঁ মাঝে মাঝে এই বিষয়গুলিকে নিয়ে অনেক তিক্ততা লাগে৷ কিন্তু এই তিক্ততা লেগে কি হবে বলেন? এটাই বাস্তবতা আপনি যে একজন মেয়ে হয়ে তিক্ততায় ভুগছেন তা কিন্তু
নয়৷ একটি ছেলেও ঠিক আপনারই মতোই তিক্ততা অনুভব তার দিকটা একটু ভাবুন ৷
দিন শেষে আসলে এটাই বাস্তবতা৷
শৈশবটাকে আমি এখনো অনেক বেশি মিস করি সত্যি বলতে শৈশবটা ছিল অন্যরকম। যেখানে নিজের ইচ্ছামত চলে যেত যদিও মাঝে মাঝে মা-বাবার বকুনি খেতে হতো তবে নিজের স্বাধীনতাটা নিজের মাঝেই থেকে যত সব সময়। আসলে বর্তমান সময়ে স্বাধীনতা একদম হারিয়ে ফেলেছি স্বাধীনতা বলতে নিজের মাঝে কিছুই খুঁজে পাই না, আমরা একে অপরের কাছে পরাধীন ভাবে রয়েছি। বদ্ধ ঘরের মধ্যে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছি। সেই দিনগুলো হয়তো আর কখনোই ফিরে পাবো না কারণ বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় এমন নিজের স্বাধীনতার কথা বলতে মানা। চমৎকার কিছু কথা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন যেগুলো পড়ে ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেল।
শৈশবের জীবনটা যদি ফিরে পেতাম তবে কতই না আনন্দ হতো। মুক্ত স্বাধীন পাখির মত উড়ে বেড়াতাম তখন থাকে না কোনো দ্বিধা দ্বন্দ্ব লাগে না কোন অনুমতি। এমনকি কথা বলার সময়ও কোন দোষ ত্রুটি থাকতো না। ঠিকই বলেছেন আপনি আর যখন আমরা বড় হয়ে যাই এবং পরের সংসারে যাওয়া হয়। তখন কথা বলতেও ভয় লাগে যে কখন কি দোষ হয়ে যায় কি ভুল বলে ফেলি। আমরা চাইলে শৈশব জীবনে কেউ ফিরে যেতে পারবো না। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ শৈশবের জীবনের কথাগুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
জীবনে অনেক কিছু বারবার ফিরে আসে। কিন্তু কিছু মুহূর্ত কখন ফিরে আসেনা। আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ইমোশন হয়ে গেলাম। আসলে সত্যি যদি আবার শৈশবে ফিরে যেতে পারতাম তাহলে সময় গুলো খুবই সুন্দর ভাবে কাটাতে পারতাম। জীবনের এই পর্যায়ে এসে বুঝা যাচ্ছে জীবন কতটা কষ্টকর শৈশবটা খুবই ভালো ছিলো। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
ছোটবেলার স্মৃতি গুলো আজও হাতছানি দেয়। ই্স আবার যদি ফিরে পেতাম শৈশব। কতই না মজা হতো। ছোটবেলার দুষ্টুমি গুলো খুব মিস করি। ছোটবেলায় দুষ্টুমি করলে শাসন করতো না কেউ ছোট বলে ছেড়ে দিত। সেই ছোট আমিটা আজ এত বড় হয়েছি। আগের মত এখন অনেক কিছুই করতে পারিনা কারণ বড় হয়ে গেছি। সময়ের সাথে সাথে আজ অনেক কিছু বদলেছে। শৈশব নিয়ে চমৎকার কিছু কথা তুলে ধরেছেন আমাদের মাঝে। ধন্যবাদ আপনাকে এইরকম একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।