গল্প : স্কুল লাইফের দুষ্টামি //by ripon40
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক
- স্কুল লাইফের দুষ্টামি
- ১৫, এপ্রিল ,২০২৪
- সোমবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি " স্কুল লাইফের দুষ্টামি " গল্প শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
আজকে স্কুল লাইফের একটি গল্প শেয়ার করব। তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। সেই সময় অনেক ছুটাছুটি করার মাধ্যমে ব্যস্ত থাকতাম। ক্লাস নাইনে পড়া কালীন সময় অনেক ধরনের দুষ্টামি করেছি। আসলে স্কুল লাইফের সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়লে আবার ফিরে যেতে মন চায়। চাইলেও সেই দিনগুলো ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। শুধু স্মৃতি হিসেবে সেগুলো ভেসে ওঠে। বন্ধুদের সাথে কত সুন্দর মুহূর্ত পার করেছি। যেগুলো এক সময় হারিয়ে যাবে সেটা কখনো ভাবিনি। এরকম মুহূর্ত হয়তো জীবনে আর কখনো আসবে না। সেই ধরনের ভাবনা সেই বয়সে কখনো আসেনি। আর সেই বয়সে না আসাটাই স্বাভাবিক কারণ তখন সাহসিকতার পরিচয় দেওয়ার বয়স।
যাইহোক, যখন আমরা ক্লাস নাইনে পড়ি বছর প্রায় শেষের দিকে। যারা ক্লাস টেনে পড়তো তাদের বিদায় বেলা। তারা ২০১৫ সালের পরীক্ষার্থী ছিল তাদের এই স্কুল থেকে বিদায় দেওয়ার জন্য আমাদের উপর দায়িত্ব পড়ে। এটাই স্কুলের রীতি ছিল। সিনিয়রদের বিদায় দেয়ার দায়িত্ব থাকে তার পরবর্তী ব্যাচের। বড় ভাইদের বিদায় উপলক্ষে আমাদের উপহার দেওয়া। সুন্দর ভাবে স্কুলে একটি আয়োজন করা স্যারদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে। সত্যিই সেই দিন অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। ২০১৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায়ী উপলক্ষে আমরা অনুষ্ঠানের আয়োজন করলাম। সবাইকে একটি করে ফুল, কলম, পেন্সিল আরও অনেক কিছু দিয়েছিলাম যেগুলো এখন মনে নেই। আসলে পরীক্ষার জন্য যেগুলো প্রয়োজন তার সব ধরনের ব্যবস্থায় আমরা করেছিলাম।
সেই সময় ফেব্রুয়ারি মাসে পরীক্ষা শুরু হতো। পরীক্ষার 10 থেকে 15 দিন আগে এই ধরনের বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। তাদেরকে খুব ভালোভাবে আমরা বিদায় দিলাম। কারণ বিদায় মুহূর্তটা অনেক কষ্টের হয়ে থাকে। পাঁচটি বছর স্কুলের সাথে যে সম্পর্ক সেটা হয়তো আগের মত থাকবে না। খারাপ লাগার অনেক বিষয় থাকে। সেদিন ভালোই উপলব্ধি করেছিলাম। আমাদেরও বিদায় নিতে হয়েছিল বিদায়ের কষ্টটা অনেক বড়। বন্ধুদের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া । যাইহোক, তাদের বিদায় দিয়ে দেওয়ার পর আমরা পিকনিকের আয়োজন করলাম। স্কুলে প্রধান শিক্ষক এবং স্কুলের সভাপতি তাদের কাছ থেকে পিকনিকের টাকা নিয়েছিলাম।
আমরা সকল বন্ধুরা আগে প্ল্যান করে রেখেছিলাম সেদিন অনেক মজা করব। আমাদের কয়েকজন দুষ্টু বন্ধু ছিল। এতটাই দুষ্টু ছিল যে সেটা বলে বোঝাতে পারবো না।🙂 আমি মনে করি স্কুল লাইফে এই রকম কয়েকজন দুষ্টু বন্ধু থাকে। স্কুলে থাকার প্লান ছিল আমাদের এর আগে কোন ব্যাচ স্কুলে থাকতে পারেনি রাতে। আমরা সেটা করার জন্য স্যারদের সাথে কথা বললাম। স্যার রাজি হয়ে গেল। রাত এগারোটার দিকে পিকনিকের রান্না শেষ হলো স্কুলের সকল শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির যারা সদস্য ছিল তারা পিকনিকে অংশগ্রহণ করে খাওয়া দাওয়া করল। তাদেরকে আমরা নিজ দায়িত্বে আপ্যায়ন করলাম।
এবার আসলো আড্ডা দেওয়ার পালা। সকল শিক্ষক এবং অন্যান্য সদস্যবৃন্দ তারা চলে গেল। সেই ফাঁকে আমাদের ক্লাসরুমে আমরা আড্ডা দিতে থাকলাম। রাতে কিভাবে ঘুমাবো সেজন্য স্কুলের পাশেই বন্ধু আক্তারের বাড়ি ছিল। সে বালিশ এবং কাঁথা নিয়ে আসলো ঘুমানোর জন্য। বন্ধু আক্তার খুবই দুষ্টু ছিল। তার কথা রাতে ঘুমানো যাবে না শুধু আড্ডা হবে। রাত দুইটা পর্যন্ত আমরা আড্ডা দিলাম। তখন সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। সারাদিন দৌড়াদৌড়ি করেছে অনেকেই ঘুমের জগতে। আমি সহ আরো কয়েকজন জেগে ছিলাম। আক্তার স্কুলের অফিস রুম থেকে এক কলস পানি নিয়ে এসে যারা ঘুমিয়ে ছিল তাদের গায়ে ঢেলে দিল। তাহলে বুঝুন কেমন দুষ্টু ছিল। তারা তো ঘুম থেকে উঠে আক্তার কে দৌড়ানি দিল। সেই স্কুলের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে নিচে চলে গেল।
তখন কি আর করার সবার ঘুম শেষ আর ঘুমানো যাবে না। কাঁথা বালিশ ভিজে গেছে । রাত তখন চারটা বাজে শীতের সময় কি একটা অবস্থা। আমরা সবাই নিচে গিয়ে শুকনা কাঠের অংশ সংগ্রহ করে আগুন জ্বালিয়ে দিলাম। আর বন্ধুরা থাকলে অনেক ধরনের গল্প গুজব হয়ে থাকে। সেই রকম গল্প শুরু হয়ে গেল। তার কিছুক্ষণ পরেই আক্তার এসে উপস্থিত। সে এসে বলে আমাকে কিছু বলিস না আমি তোদের স্কুলের নারকেল গাছ থেকে ডাব পেড়ে খাওয়াবো ।যাইহোক, সেজন্য তাকে মাফ করে দিয়েছিলাম। সেই নারকেল গাছে উঠে পড়ল সেখানে গিয়েও দুষ্টামি। নরম জায়গায় ডাবগুলো না ফেলে শক্ত জায়গায় ফেলে সমস্ত ডাব ফাটিয়ে নষ্ট করে ফেলেছে। আমরা নিচ থেকে ঢিল ছুড়তে থাকলাম। কয়েকটি ডাব ছাড়া সবগুলোই ফেটে গিয়েছিল। আসলে সেদিন গুলোর কথা মনে পড়লে খুবই ভালো লাগে। কত ধরনের দুষ্টামিতে আমরা মেতে উঠতাম।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
স্কুল জীবনের স্মৃতিগুলোর মাঝে হারিয়ে গেলাম আপনার আজকের পোষ্টটি পড়তে পড়তে, দারুণ কিছু অনুভূতি চঞ্চল হয়ে উঠেছিলো অতীতের সেই স্মৃতিগুলো নিয়ে। অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
স্কুল জীবনের সেই দিনগুলো ছিল সোনালী সময়। যেটা খুবই মিস করি। যখন স্মৃতি হিসেবে ভেসে ওঠে অনেক ভালো লাগে । এই স্কুল জীবনের স্মৃতি সবার জীবনেই রয়েছে ।আমার মত সবাই অনেক মিস করে।
ভাইরে ভাই আপনার বন্ধু আক্তার আবার ও কী জিনিস। একেবারে টপ লেভেলের দুষ্টু। ঐ শীতের রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় আপনাদের উপর পানি ঢেলে দিল ভাবা যায়। আমাকে আর বলতে হবে না হা হা। স্কুলে টুকটাক দুষ্টামি করেছি। কিন্তু সেটা কখনো এইরকম সিরিয়াস পর্যায়ে ছিল না। আমাদের স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায়ের সব দায়িত্ব থাকত স্যারদের উপর। কিন্তু এখানে সকল দায়িত্ব আপনারা পালন করতেন। এটা বেশ ভালো লেগেছে আমার কাছে।
সেই দুষ্টামির স্বভাব এখনো যায়নি বড় হয়ে গিয়েছে তাতে কি হয়েছে। সেই দুষ্টামির কমবেশি স্বভাব এখনো রয়েই গেছে সর্বোচ্চ লেভেলের দুষ্টু ছিল সে।
আপনার পোষ্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনার পোস্টটি যখন পড়ছিলাম তখন ছোটবেলার স্মৃতিতে হারিয়ে গেলাম।স্কুল জীবনের স্মৃতি গুলো ভোলার মতো নয়। প্রত্যেকের জীবনে স্কুলের কিছু না কিছু স্মৃতি রয়ে গেছে।স্কুলে কত না দুষ্টুমি করেছি সেসব আজ শুধু স্মৃতি হয়ে আছে।অনেক ধন্যবাদ ভাই দারুন একটু পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
স্কুল জীবনের স্মৃতি মনে পড়লে মনে হয় যেন সেই সময়টা সবচেয়ে বেশি মজার ছিল। তাছাড়া বিদায় অনুষ্ঠানের সময় আসলেই খুব খারাপ লাগতো। আপনারা দেখছি সবাই মিলে খুব মজা করেছিলেন। আপনাদের ওই বন্ধুটি ডাবের লোভ দেখিয়ে তাহলে সেবারের মতো মাফ পেয়েছিল। খুব ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার ছোটবেলার স্মৃতি গুলো পড়ে। নিজের ছোটবেলায় হারিয়ে গেলাম পড়তে পড়তে।
সত্যি কথা বলতে ভাই, স্কুল লাইফের দুষ্টুমি গুলো আমরা সকলেই অনেক বেশি মিস করি। যদিও আপনাদের মত পিকনিক করার সুযোগ আমাদের খুব বেশি একটা হয়নি। তাছাড়া ডাব চুরি করে খাওয়া এবং গায়ে জল ঢেলে দেওয়ার মতো ব্যাপারও কখনও আমার সাথে ঘটেনি। তারপরও টুকটাক মজা করতাম আর কি। আপনার স্কুল লাইফের কথাগুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো।