মাঝ রাতে একটি কুকুরের আর্তনাদ //by ripon40
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক
- মাঝ রাতে একটি কুকুরের আর্তনাদ
- ২৬, মার্চ ,২০২৪
- মঙ্গলবার
আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন। আর আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি। আলহামদুলিল্লাহ। আপনাদের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকে আবারো একটি পোস্ট শেয়ার করতে চলে এসেছি।
আমি ছোটবেলা থেকেই পশুপাখি কে খুবই ভালোবাসি। এই বিষয়ে এর আগে একটি গল্প শেয়ার করেছিলাম । যেখানে আমার এক বন্ধুর সাথে এই বিষয় নিয়ে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আমাদের এই প্রতিকূল পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের পশুপাখি আমাদের কাছাকাছি বা দূরে যেগুলো আমরা দেখতে পাই। এদের মধ্যে বিড়াল এবং কুকুর এ দুটো মানুষের খুব কাছাকাছি থাকে। যখন বাড়িতে রান্না হয় খাওয়া দাওয়া শুরু হবে। সেই সময় দেখা যায় বিড়াল কিংবা কুকুর এগুলো এসে উপস্থিত তারাও সেই খাবারের দাবীদার। আমরা হয়তো কখনো তাদেরকে তাড়িয়ে দিই আবার আমাদের খাবারের অবশিষ্ট অংশ তাদের দিয়ে দিই। আমি যখন এই বিষয় নিয়ে চিন্তা করি তখন অবাক হই।
মানুষ পৃথিবীর সেরা জীব। আমাদের প্রয়োজন মেটাতে আমরা কত কিছুই না এই পৃথিবীতে করছি। একমাত্র পশুপাখি তাদের ইচ্ছা কিভাবে খাদ্য সংগ্রহ করা কোথায় গেলে খাইতে পারবে। আমরা ইচ্ছা করলে পেটপুরে খেতে পারি হয়তো এই কুকুর বিড়াল কোন কোন সময় না খেয়েই থাকে। এটা নিজের অন্তর্নিহিত বিষয় থেকে চিন্তাভাবনা না করলে বুঝতে পারা যায় না। বাড়িতে খাওয়ার সময় কুকুর কিংবা বিড়াল আসলেই আমি তাকে খেতে দেই। এবার আসল কথায় ফিরে যাওয়া যাক, হঠাৎ কয়েকদিন ধরে একটি কুকুরের চিৎকার আমার কানের ভেসে আসছে বিশেষ করে গভীর রাতে। আমাদের বাড়ির পাশে খরের গাধা তার নিচে সেই কুকুরটি রাতের বেলা শুয়ে চিৎকার করে কান্না করে।
আমার আবার রাত জাগার স্বভাব রাত দুইটা তিনটা বেজে যায় ঘুমাইতে। এভাবে কয়েকদিন শোনার পর আমার মাকে জিজ্ঞাসা করলাম। রাতের বেলা একটা কুকুর চিৎকার করে কিন্তু কেন কি হয়েছে? আমার মায়ের কাছ থেকে জানতে পারি সেই কুকুরটিকে এমন ভাবে তার পিছনে দুই পায়ের অংশে আঘাত করা হয়েছে ঠিকমতো হাঁটতে পারে না। ব্যথা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে আর এভাবে রাতে শুয়ে সেই যন্ত্রনায় চিৎকার করে। এই কথাটি শোনার পর সত্যিই খারাপ লাগলো। আমরা মানুষ হয়তো কোন ভাবে আঘাত খেলে বা এভাবে হাত-পা ভেঙ্গে গেলে ডাক্তারের কাছ গিয়ে চিকিৎসা নেই। কিভাবে তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়া যায়। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন পশুপাখি যখন আঘাত পায় তাকে আমরা যখন আঘাত দিই সেও ব্যথা পায়। সেই ব্যথার যন্ত্রণা সে বলতে পারেনা। তার এই আর্তনাদ চিৎকার বলে দেয় কতটা যন্ত্রণা হচ্ছে।
আমরা কোথাও আঘাত পেলে বলতে পারি কিন্তু এই প্রাণীগুলো যখন আঘাত পায় সেটা বলতে পারেনা। সেজন্য মানুষের এই মানসিকতা থেকে উপলব্ধি করে এসব প্রাণীর আঘাত করা ঠিক না। এমনিতেই তাদের ঠিকমত খাবার জোটে না আবার আমরা যদি তাদেরকে এভাবে আঘাত করি। এটা মানুষের মনুষ্যত্ববোধ হিসেবে পরিচয় দেয় না। তখন আমি ভাবছিলাম এটা যদি আমার সাথে হইতো তাহলে ঠিকই আমি এবং আমার পরিবার দ্রুত হসপিটালে নিয়ে যেত চিকিৎসার জন্য। আমি তখন আমার মাকে বললাম কুকুরটিকে খেতে দিতে। কুকুরটি খুবই ক্ষুধার্ত ছিল। কুকুরটির সকল যন্ত্রণা সহ্য করে দুই পা ভেঙে গিয়েছে তবুও দু পায়ের যন্ত্রণা নিয়ে ক্ষুধার্ত অবস্থায় আমাদের বাসার সামনে উপস্থিত। আমি আমার মাকে খাইতে দিতে বললাম। খাবার দেয়ার পরেও কুকুরটি আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। সে আমাদের দেখে অনেক ভয় পাচ্ছিল । যেভাবে তাকে আঘাত করা হয়েছে। যে কোন মানুষকে দেখে ভয় পাওয়াটাই স্বাভাবিক।
আমার মা বলছে খাও । সে একভাবে তাকিয়ে ছিল ।তার এই ক্ষুধার্ত মুহূর্তের দৃশ্যটি দেখে এতটাই মায়া করছিল। যেটা বলে বুঝাতে পারবে না। রাতের বেলা পরিবেশটা নিস্তব্ধ নিরব । চারিপাশের মানুষ ঘুমিয়ে গিয়েছে। শুধু কানে ভেসে আসছে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক আর কুকুরটির কষ্টের আর্তনাদ। আমি মাঝে মাঝেই এই চিৎকার আর্তনাদ শুনছি আর সেই বিষয় নিয়ে ভাবছি। এভাবে কয়েকদিন রাতের বেলা কুকুরটির চিৎকার শুনতে পেলাম। হঠাৎ একদিন সেই চিৎকার ডাকাডাকি আর নেই। আমি ভাবলাম অন্য কোথাও মনে হয় চলে গিয়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে মায়ের কাজ জিজ্ঞাসা করলাম। সেই কুকুরটি কোথায় গিয়েছে? আমার মা বলল পুকুরটি মারা গিয়েছে এ কথাটি শোনার পর অনেক খারাপ লাগলো। সেজন্য আমাদের উচিত কোন পশু পাখির অন্যায় ভাবে আঘাত না করা।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
বেশি রাত জাগা ভালো নয় রাত জাগলে শরীর নষ্ট হয়। কুকুরের বিষয়টা জানতে পেরে বেশ খারাপ লাগলো আসলে আমরা কেউ কারো খেয়াল রাখে না একটা প্রাণী যখন চিৎকার করে আর্তনাদ করছে তখন কিন্তু কেউ তার দিকে তাকায় না তবে এই সমস্ত প্রাণী গুলো কিন্তু আমাদের অনেক উপকারে আসে। এমন একটা মুহূর্তের কুকুরটা মারা গেছে। সত্যি বিষয়টা জেনে খুব খারাপ লাগলো, তবে তার প্রতি যে আপনাদের একটা দয়ার অনুভব জাগ্রত হয়েছে এটা আমার খুবই ভালো লেগেছে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
খুবই কষ্টদায়ক ঘটনা। অবশেষে কুকুরটি কষ্ট সহ্য করতে না পেরে মারা গেলো। আমরা সৃষ্টির সেরা জীব হয়েও পশু প্রাণীদের কষ্ট বুঝার চেষ্টা করি না। আপনি হয়তো সেই বিষয় উপলব্ধি করেছেন বলেই হয়তো নিজের সাথে তুলনা করে কষ্ট পাচ্ছিলেন। কুকুরটির কথা শুনে সত্যিই খুব খারাপ লাগছে। কোনো প্রাণী যদিও ক্ষতি করে থাকে তারপরও তাকে এভাবে আঘাত করা উচিত নয়। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
গল্পটা পড়ে অনেক কষ্ট লাগলো। ভেবেছিলাম হয়তো কুকুরটা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে যাবে কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে মারা যাবে এটা ভাবতে পারিনি। হ্যাঁ মানুষের ছোট্ট একটু সমস্যা হলেই ডাক্তারের কাছে দেখায় তার সমস্যার কথা বিভিন্ন মানুষকে বলে কিন্তু পশু পাখিদের এই সমস্যার কথা তারা তো বলতে পারেনা যেমন কুকুরটির পা ভেঙ্গে গিয়েছিল তারপরে আবার সে ক্ষুধার্ত ছিল।
মানুষের মধ্যে এখন আর মনুষত্ববোধ নেই। মানুষ মানুষকেই মেরে ফেলতে দ্বিধাবোধ করেনা আর এ তো কুকুর। আসলে আমাদের সবার সাথে সদাচরণ করা উচিত। তারা কিছু বলতে পারে না কিন্তু কষ্টটা ঠিকই হয়। বিষয়টা জেনে খুব খারাপ লাগলো।
সত্যি বলতে বন্ধু আমাদের নিজেদেরকে মাঝেমধ্যে মানুষ হিসাবে পরিচয় দিতে ইচ্ছে হয় না। আমাদের এই মানুষের ভিতরে অনেক মানুষ আছে যারা প্রচন্ড নিকৃষ্ট। আমিও তোমার মত পশু পাখি ভীষণ পছন্দ করি আমার নিজের বাড়িতেও একটি পোষা কুকুর রয়েছে। যে ব্যক্তি ওই কুকুরটির পেছনে দুই পা ভেঙে দিয়েছে সে আসলে মানুষ নামের কলঙ্ক। কুকুরটি শেষ পর্যন্ত জীবনযুদ্ধে হেরে গেছে সে হেরে গেছে মানুষের বিবেকের কাছে। তুমি আর আন্টি দুজনে মিলে কুকুরটিকে সেবা যত্ন করেছ এটা জেনে বেশ ভালো লাগছিল। আমাদের সবার উচিত পশু পাখিদের উপর অন্যায় অত্যাচার না করা।
আসলে সবকিছুই সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেছেন৷ তার সকল সৃষ্টির প্রতি আমাদেরকে সম্মান দেখানো উচিত৷ তাদের যে কোন সমস্যায় আমাদের সকলের এগিয়ে আসা উচিত৷ এই কুকুরের আর্তনাদে যখন কেউই তাকালো না এবং কেউ কোন মতে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসল না৷ তখন তো আসলে দেখা উচিৎ ছিল যে তার কি হয়েছে৷ তবে শেষ পর্যন্ত ওই কুকুর মারা গিয়েছে শুনে খুব খারাপ লাগছে৷
আমার জানামতে আপনি একজন পশু পাখি প্রেমী। পশুপাখিদের আপনি খুবই ভালোবাসেন। এই যে আমাদের বাড়ির পাশে মোল্লাপাড়া তে অনেকগুলো কুকুর আছে। আপনি সেই কুকুরগুলোকেও অনেক ভালোবাসেন।
আপনাদের লেখা কুকুরের আর্তনাদ ব্লগটি পড়ে দুঃখ লাগলো। আসলে মানুষ এই প্রাণীগুলোকে আঘাত করে কি মজা পায় এটা আমার মাথায় ঢুকে না। আমাদের খাবারের উচ্ছিষ্ট গুলো যদি তাদের দিয়ে থাকে তাহলে তারা অন্তত একবেলা হলেও খেতে পারে। তবে কুকুরটিকে আপনারা খাবার দিয়েছেন এটা খুবই ভালো দিক। দুঃখের বিষয় কুকুরটি মারা গিয়েছে। হয়তো তার জীবনে এখানেই সমাপ্ত ঘোষণা ছিল। তবে আমাদের এসব অসহায় প্রাণীদের একটু খেয়াল রাখতে হবে।
আমিও আপনার মতোই কুকুর বিড়াল দেখলে খেতে দেওয়ার চেষ্টা করি। এবং আমি কোন সময়েই ওদের গায়ে আঘাত করার পক্ষে না। আমরা আঘাত পেলে বলতে পারি কিন্তু ওদের ব্যাপারটা আলাদা। যারা এইসব প্রাণীকে আঘাত করে তাদের মনুষ্যত্ব নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। এক্ষেত্রে আপনি একটা ভালো কাজ করেছেন। কিন্তু সত্যি বলতে ওদের ঐরকম অর্তনাদ শুনতে সত্যি খারাপ লাগে অনেক।