আধো-আধো সকালের সতেজ নিঃশ্বাসে।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা। কেমন আছেন সবাই। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আপনাদের দিনকাল কেমন কাটছে? সুস্থ চিন্তাধারার একটি কমিউনিটিতে আপনারা মন খুলে ব্লগিং করতে পারছেন আশা করি। আমি আজকে আপনাদের সাথে আমার সকালবেলায় কাটানো কিছু মুহূর্তের অনুভূতি এবং কিছু পরামর্শ দিতে চলে এলাম।

সকাল দেখি না অনেকদিন। শেষ কবে একদম ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাহিরে গিয়েছে সেটা ভালোভাবে মনেই করতে পারি না। এটা মোটেও সুখকর বিষয় নয়। সকালবেলা ঘুমে থাকা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আমার ধর্ম ইসলামেও সকাল বেলা ঘুমিয়ে থাকা নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু কেন জানি না সকালে উঠতে একদম ইচ্ছে করেনা। শয়তান যেন ভর করে মনের উপর। সকাল সকাল ঘুম থেকে না ওঠা আর হাঁটাহাঁটি না করার কুফল ইতিমধ্যেই টের পেতে শুরু করেছি। এর জন্য মনস্থির করেছিলাম সকালবেলা হাঁটাহাঁটি করব। কিন্তু সমস্যা হল একা একা বেশি সময় ধরে হাঁটাহাঁটি করতে ভালো লাগেনা। আধাঘন্টা একঘন্টা যদি হাঁটি তাহলে অনেক দূর পর্যন্ত চলে যেতে হবে কিন্তু অতদূর একা একা যেতে মন বসবে না।

আজ আমি ঘুম থেকে উঠেছিলাম সকাল ৫ টা বেজে ৪১ মিনিটে। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে আমার বন্ধুকে ফোন দিয়ে বললাম হাঁটতে যাবে নাকি ? ও রাজি হয়ে গেল। তখন দুজনে একসাথে বেরিয়ে পড়লাম হাঁটা হাঁটি মিশনে। বহুদিন পর সকালটা দেখে সত্যিই মনটা ফ্রেশ হয়ে গেল। মানসিক শান্তি এবং সাথে শারীরিক ব্যায়াম দুটি একসাথে হলে শরীর এবং মন দুটোই ভালো থাকে। মনটা প্রফুল্ল হয়ে যায়। শরীরে আসে সুন্দর এক সতেজ অনুভূতি। লক্ষ কোটি টাকা দিয়ে এ প্রশান্তি খুঁজে পাওয়া সম্ভব না। বাইরের পরিবেশটার প্রেমে পড়ে গেলাম। পরবর্তী দিনেও আবার আসার এনার্জি হয়ে থাকবে এই অনুভূতিটা। সকালের দৃশ্যগুলোর কিছু ফটোশুট করেছিলাম আমার ফোনে। সেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করি।

1646446748473-01.jpeg

1646446779832-01.jpeg

1646446712388-01.jpeg

1646446685921-01.jpeg

1646446646100-01.jpeg

1646446613956-01.jpeg

1646446562087-01.jpeg

ফটোগুলো তোলা হয়েছে Xiaomi Redmi Note 9 Pro Maxফোন দিয়ে।

যেহেতু বন্ধুর সাথে হাঁটছিলাম, অনেক গল্প হচ্ছিল দুজনের মাঝে। হঠাৎ একটি খেজুর গাছের সাথে বাঁধা রসের খুঁটি দেখে রস খাওয়ার ইচ্ছা জাগলো। সেই কবে রস খেয়েছি...... মনে আছে? আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম । অনেক ভোরে বন্ধুদের সাথে বাইক নিয়ে শহরের শেষ প্রান্তে চলে গিয়েছিলাম রস খেতে। সেই যে খেয়েছি, আর খাওয়া হয়নি। এবার দুজন চিন্তা করলাম হাঁটাহাঁটি শেষ করে নিজেদের এলাকার পাশেই একটা গ্রাম আছে ওইখানে রস বিক্রি করে। ওখানে যেয়ে খেতে হবে।

প্রায় এক ঘন্টা হবে হবে ভাব। এমন সময় আমরা আমাদের নিজ এলাকায় চলে আসলাম। তার পরেই ওই রস খাওয়ার জন্য পাশের গ্রামের দিকে রওনা দিলাম। যার কাছ থেকে আমরা রস খাবো লোকটা পূর্বপরিচিত। ঐ লোকটা অনেক সৎ। স্বাস্থ্যকর পরিবেশেই রস সংগ্রহ করে। এই সময়টাতে গাছের রস অনেক কম হয়। আর উনি সপ্তাহে ১ দিনই রস সংগ্রহ করে। এতে খুব ভালো মানের এবং মিষ্টি রস পাওয়া যায়। আজকে উনি অনেকগুলো কলসির রস সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু প্রত্যেকটা কলসিতেই অল্প অল্প করে রস ছিল। ২ থেকে ৩ টা কলসির রস ঢেলে মাত্র একটা কলসি পূর্ণ হয়েছে।

1646446878308-01.jpeg

1646446820017-01.jpeg

ফটোগুলো তোলা হয়েছে Xiaomi Redmi Note 9 Pro Maxফোন দিয়ে।

আমরা দুজন প্রায় চার গ্লাস রস খেয়েছিলাম। উনি পূর্ব পরিচিত হাওয়ায় আমাদের কাছে রস বিক্রি করেছিলেন। এ সময়টায় যেহেতু রস অল্প হয় তাই তারা রস বিক্রি করতে চায় না। কারণ রস বিক্রি করলে তাদের লস হয়। এখান থেকে যে গুড় হবে অথবা পাটালি হবে সেটা অনেক বেশি দামে বিক্রি করতে পারে। প্রথমে আমার ইচ্ছা ছিল বাসার জন্য পুরো এক কলসি রস নিয়ে যাব। কিন্তু তারা তো গরিব। একটু বেশি লাভ করতে পারবে গুর বানিয়ে বিক্রি করলে। এজন্য আর বাসার জন্য নিয়ে আসলাম না। আমি মনে করি প্রত্যেকটা জায়গায় সুযোগ থাকলেও অন্যের ভালো-মন্দ বিবেচনা করেই প্রত্যেকটা কাজ করা উচিত। আমাদের মালিক তো অন্তর্যামী। তিনি সন্তুষ্ট হবেন।

রস খাওয়ার পর্ব শেষ। আর এরই মধ্য দিয়ে শেষ করলাম আজকের হাঁটাহাঁটি। আগামীকাল আবার এই এনার্জি টা ধরে রাখতে পারলে হয়। ইনশা আল্লাহ্ আগামীকালকে ও চেষ্টা করব সকাল বেলা হাঁটাহাঁটি করার। আজ এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে আবার আগামী কোন পোস্টে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 3 years ago 
এই শীতে খেঁজুরের রস খেতে গিয়েও পারি নাই। ঘুম থেকে উঠতেই লেট হয়ে গেছিলো গিয়ে দেখি তারা রস বাজারে নিয়ে চলে গেছে। শীতকালীন ফটোগ্রাফির সময়কার কথা।
তবে এটা সত্যি তারা গুড় বানিয়ে সেল করলে বেশি লাভনান হয়। আমার এক প্রতিবেশি ভাই গুড় বানানোর কাজ করতো তার কাছে থেকে অনেক তথ্য জানতে পারছি। 💓💓💓
 3 years ago 

অসাধারণ একটি সকাল কাটিয়েছেন ভাই। আপনার দিকে দেখে আমার হিংসা হচ্ছে। যদি আমি আপনার সাথে থাকতে পারতাম। আসলেই আমাদের এই সময়ে ভোর কখন হয় আমরা টের পাই না। আপনার সকালের ছবিগুলো দেখে অসম্ভব ভালো লাগতেছে ভাই। আপনি সবকিছু খুব সুন্দর করে বর্ণনা আমাদের মাঝে অবস্থান করেছেন। দেখে বোঝাই যাচ্ছে খুব সুন্দর একটি সকাল কাটিয়েছেন আপনি। এর সাথে আবার সকালে খেজুরের রস খেয়েছেন। সব মিলিয়ে আপনার সকালটা অসাধারণ কেটেছে। আর আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই সকালের কিছু মুহুর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।

 3 years ago 

হ্যাঁ ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন, আমাদের ইসলাম বলেই তাড়াতাড়ি ঘুমাও এবং সকাল সকাল উঠে যাও। আমাদের ইসলাম আমাদেরকে যে বিধি- নির্দেশনাগুলো দিয়েছে সেগুলো একজন মানব দেহের জন্য সর্বোকৃষ্ট পন্থা। আমি সব সময়ে সকালে উঠি সেটা আমার ডিউটির কারণে, যেহেতু আমার ডিউটি ভোর পাঁচটায়, তবে আপনার মত গ্রামের দৃশ্য দেখাও আমার কপালে জুটে না। তবে সবচেয়ে অবাক লাগে আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখলে। আপনি কিভাবে যে এত সুন্দর করে ফটোগ্রাফি গুলো ক্যাপচার করেন, কাছে থাকলে দৌড়ে যেতাম আপনার কাছে শেখার জন্য। আপনার এত সুন্দর একটি সকাল বেলায় ঘুরে বেড়ানো এবং বন্ধুকে নিয়ে আনন্দঘন মুহূর্ত কাটানো এবং আমাদেরকে এত সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি উপহার দেওয়ার জন্য, আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম।

 3 years ago 

হ্যাঁ ভাইয়া মনে আছে অনেক সকালবেলা আপনি বন্ধুদের সাথে মোটরসাইকেল নিয়ে রস খেতে অনেক দূর এগিয়ে ছিলেন। তারপরে আবার আজকের এই রস খাওয়ার গল্পটা পড়ে সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেল। আজকে আপনারা দুজন মিলে ৪ গ্লাস খেয়েছেন।আসলে এখন রস বিক্রি করতে চায় না। আমিও রস খেতে গিয়েছিলাম আমাকে বলল যে রস বিক্রি করব না।আপনার পূর্বে পরিচিত ছিল বলে আপনাদের কাছে বিক্রি করেছে । সত্যিই ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সত্যি অসাধারণ আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনার জন্য রইল শুভকামনা।

 3 years ago 

আমি মনে করি প্রত্যেকটা জায়গায় সুযোগ থাকলেও অন্যের ভালো-মন্দ বিবেচনা করেই প্রত্যেকটা কাজ করা উচিত।

আপনার এই চিন্তাধারাটি একেবারে মন কে ছুঁয়ে গেলো।সবাই যদি এভাবে ভাবতো!

হাঁটাহাঁটির চেয়ে খাওয়াই বেশি হয়েছে ভাই।🤪🤪

 3 years ago 

ভাই আপনার প্রথম ছবিটা দেখে আমি মনে করেছি এই ছবিটা কোন একটা সাইট থেকে ডাউনলোড দেয়া। আপনার কাছে গিয়ে ছবি তোলাটা শিখে আসতে হবে একসময়। রস খাওয়ার গল্প শোনালেন। এখন তো আমার রস খেতে ইচ্ছা করছে। এবছর রস চোখেও দেখিনি। সাধারণত প্রতি বছরই আমি একবার হলেও রস খাই। খেজুরের রস আমার খুবই পছন্দের। কিন্তু নিপা ভাইরাসের ভয়ে ইদানিং খেতে অনেক ভয় করে। তারপরও সময়-সুযোগ পেলেই খাই। কিন্তু শহরে থাকার কারণে রস পাওয়াটা খুব সমস্যা আমাদের জন্য। আপনার পোস্টটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। দীর্ঘদিন ধরে ঘরে শুয়ে আছি। আপনার পোস্ট পড়ে মনে হচ্ছে ইস আজকে যদি বন্ধুর সাথে কোথা থেকে ঘুরে আসতে পারতাম।

 3 years ago 

আর এই জন্যই ভাই মুরুব্বীরা বলে "সকাল বেলার হাওয়া লক্ষ টাকার দাওয়া"। আর আপনার মত আমিও ঠিক একই রকম অলস তবে চেষ্টা করছি এখন ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠার জন্য। তবে সকাল বেলার ফটোগ্রাফি গুলো কিন্তু দারুণ ছিল ভাই শিশির মাখানো সব কিছু এবং শান্ত একটি পরিবেশ।

 3 years ago 

আমি নিজেও অনেকদিন সকালে ঘুম থেকে উঠিনা। কিছুদিন উঠেছিলাম তবে পরীক্ষা ছিল তাই বাইরে যাওয়া হয়নি। সকালের শিশিরভেজা ঘাসের উপর দিয়ে খালি পায়ে হাটার মজাই আলাদা। এবং সকালের মুক্ত বাতাসের কথা বললামই না। ছবিগুলো অনেক সুন্দর ছিল। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

সকালে ঘুম থেকে ওঠার অনুভূতি সত্যিই প্রশান্তিকর। আজ অনেক স্বাস্থ্যসম্মত। সকালবেলায় হাঁটাহাঁটি করতে গিয়ে শীতের শেষ মুহূর্তে দারুন কিছু ফটোগ্রাফি ধারণ করেছেন। খালি পেটে এমন স্বাস্থ্যসম্মত রস শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

  • সকাল বেলা কে নিয়ে আপনি দারুন কিছু মুহুর্ত শেয়ার করেছেন। জ্ঞানগর্ভ মূল্যক এমন গল্প সত্যি অনেক ভালো লেগেছে।
 3 years ago 

সত্যি ভাই আজ অনেক ভালো লাগছে হাঁটাহাঁটি করে। দেখা যাক সামনের দিনগুলোতে মতিগতি স্থির থাকে কিনা। 🙂

 3 years ago 

চমৎকার এমন উদ্যোগ আপনার মনে লেগে থাকুক। প্রতিদিন নতুন ভোর হোক, আপনার হাঁটার নতুনসঙ্গী।আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো শ্রদ্ধেয়।

 3 years ago 

তাহলে আজকাল সকালবেলা করে মর্নিং ওয়াক করার চেষ্টা চলছে । ব্যাপারটা শুনে ভালোই লাগলো । ভাবা যায়, সকাল বেলা মর্নিং ওয়াক শেষে এই রকম সুন্দর গ্রামীণ পরিবেশ টাটকা খেজুরের রস । উফ আর কি লাগে জীবনে । আসলেই জীবন সুন্দর , সেটা সময় ও জায়গাভেদে । ফটোগ্রাফি গুলো সুন্দর ছিল , শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56477.82
ETH 2390.38
USDT 1.00
SBD 2.33