কেমন ছিল কালকের দিনটি ???

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? সবাইকে জানাই পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা। কালকে সারা দেশে কি অবস্থা সঠিক জানি না। তবে আমার যতদূর মনে হয় সারা বাংলাদেশেই বৃষ্টি হয়েছে। ঈদের দিনটা কেমন কাটল ছোট্ট করে শেয়ার করতে চলে এলাম। এবিবির প্রত্যেকটা মেম্বারের ঈদ কেমন কাটলো সেটা তো আমরা দু'একদিনের মধ্যেই সব দেখতে পারবো। আশা করি সবাই নিজ নিজ এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করবে। তাহলে চলুন আমার ঈদের দিনটি কেমন কাটলো আপনার সাথে শেয়ার করি।

সকালে ঘুম থেকে উঠলাম। আজ ঈদ, এটা ভেবে মনটা কেমন নেচে নেচে উঠলো। সকালবেলা বাহিরের অবস্থা কেমন দেখতে বেরিয়ে পড়েছিলাম। বাহিরে বলতে আমাদের বাড়ির পাশের তিন রাস্তার মোড়ের কি অবস্থা সেটাই দেখতে গিয়েছিলাম। ঈদের দিন সবার মধ্যে একটা আনন্দ বিরাজ করে। সবাই মোড়ের উপর সকাল বেলায় এসে গল্প-গুজব করে, আড্ডা দেয়। বেশ ভালই লাগে বড়দের গল্প শুনতে। যাইহোক, মোড়ের দিকে গিয়ে আমার এক চাচাতো ভাইকে ডাকলাম। ও ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছে। আমার ওই ভাইটি বাংলাদেশ আর্মি তে জব করে। ওকে ডেকে বাইরে নিয়ে আসলাম। এরপর ওর সাথে একটু মাঠের দিকে গেলাম। মাঠের মধ্যে একটি রাস্তা আছে ওইখানে গেলাম। ওয়েদার টা কেমন যেন অন্ধকার হয়ে আসছিল। তবে বাইরের পরিবেশটা ঠান্ডা ছিলো। হালকা বাতাসে অসাধারণ লাগছিল। সব মিলিয়ে খুবই রোমান্টিক ছিল পরিবেশটি।

1651636361258-01.jpeg

যখন হালকা অন্ধকার হয়ে আসছিল পরিবেশটা তখন আমরা ওখান থেকে চলে এলাম। আমার আরও একটি ভাইয়ের সাথে দেখা করলাম। ওর সাথেও সকালেই প্রথম দেখা হল। ও ছুটিতে এসেছে বাড়িতে। আমরা তিনজন রাস্তার উপর বসে গল্প করছিলাম। এমন সময় হাল্কা বাতাস উঠেছিল। চারিদিকে ঘন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে। ১০ মিনিটের মধ্যে চারিদিকের পরিবেশটা অন্ধকার হয়ে গেল, আর সাথে ঝড়ো বাতাস বইতে লাগলো। অন্ধকারে পরিমাণ টা এতটাই বেশি ছিল মনে হচ্ছে রাত্রি নেমে গেছে। আমরা চিন্তা করলাম বাড়িতে চলে যেতে হবে। নামাজ কালাম এর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। এজন্য বাড়িতে চলে আসলাম। ওরাও চলে গেলো। বাড়িতে আসার সাথে সাথে দেখি প্রচণ্ড বেগে বৃষ্টি নামল। এর পর কি আর করার আমার মত আমি গোসল সেরে নিলাম এরপর রেডি হয়ে নিলাম নামাজের জন্য। কিন্তু বৃষ্টি যেন থামছেই না।

এদিকে বৃষ্টি হচ্ছে আর আমরা ফ্যামিলির সাথে সবাই একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এমন মুহূর্ত সচরাচর আসে না। এই দুটি ঈদেই এরকম মুহূর্ত আসে। খুব ভালো লাগছিল পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সাথে সময় কাটাতে। দুটি ভাগ্নের সাথে কিছু ছবিও উঠলাম।

1651636471531-01.jpeg

1651636684828-01.jpeg

1651636491650-01.jpeg

অনেক সময় অপেক্ষা করার পর সকাল সাড়ে দশটার দিকে আমরা আমাদের বাড়ির পাশের মসজিদে চলে গেলাম। তখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম মসজিদে নামাজ পড়বো। কিন্তু কিছু সময় যাওয়ার পর দেখলাম বৃষ্টি একেবারেই থেমে গেছে। একটা বছর অপেক্ষা করার পর যখন এমন দিনটি আসে তখন সবাই সম্মিলিতভাবে ঈদগাহ ময়দানে নামাজ পড়াটাই বেশি সুন্দর ও আনন্দের। এজন্য প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ ব্যতিত ঈদের নামাজ মসজিদে না পড়াই ভাল। সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর আমরা সবাই আবার ঈদগাহ ময়দান চলে গেলাম। ময়দানে গিয়ে আমরা দ্বিতীয় কাতারে বসলাম। পরিচিত সব ভাই-ব্রাদার যারা এসেছে তাদের সাথে দেখা, একসাথে বসে নামাজ পড়া, এগুলোর মধ্যে অন্যরকম একটা আনন্দ কাজ করে। আমার বাবা, ছোট ভাই এবং ভাগ্নে বসেছিল একদম সামনের কাতারে। ২ নাম্বার কাতারেই বসেছিলাম আমরা। সব মিলিয়ে খুবই সুন্দর একটা মুহূর্ত।

1651636571485-01.jpeg

1651636612459-01.jpeg

এগারোটার একটু পরে আমাদের নামাজ শুরু হয়েছিল৷ নামাজ সহি সালামতে শেষ করে এরপর পরিচিতদের সাথে কোলাকুলি করার পালা। এটা ঈদের আনন্দের একটা অংশ। কোলাকুলি সম্পন্ন করে আমরা সবাই একসাথে বাড়ির দিকে চলে এলাম। বাড়িতে এসে খাওয়া-দাওয়া। এরপর দেখলাম বৃষ্টি আবারো নামতে শুরু করেছে হালকা-পাতলা। এরপর আমার ওয়াইফ দেখলাম সাজগোজ করছে আর আমার কিনে দেওয়া শাড়িটা পরেছে। এরপর ওর সাথে অনেকগুলো ছবি তুললাম ওর আবদার মতই। এত এত ছবি তুলেছে ও যে আমি শেষের দিকে এক্সপ্রেশনই দিতে পারিনি। আমি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম ছবি তুলতে তুলতে। মেয়েরা যে কেমন ভাবে তৈরি ভাইরে ভাই,,, ক্লান্তই যায়না। ছবি তুলেই যায়,, তুলেই যায়,,,,,,,।

ছবি তোলার পর্ব শেষ করে আমি একদম সটান হয়ে শুয়ে পড়লাম। প্রচুর ঘুম পাচ্ছিল। দিলাম এক ঘুম৷ সন্ধ্যার সময় ঘুম থেকে উঠে বুঝতে পারছিলাম না এখন সন্ধ্যা না সকাল। যাইহোক ৩০ সেকেন্ড মাথায় কাজ করছিল না। তারপর বুঝলাম এখন সন্ধ্যা। আমার সার্কেল আমাকে ফোন দিল ওদের সাথে বেরোবো বলে। এরপর একসাথে বেরিয়ে পড়লাম। সারাদিন ঘোরা হয়নি। এ পর্যন্ত কোনো দিনই ঈদের দিনে তেমন মজা করতে পারিনি। যাইহোক আমারা বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। আমরা আমাদের এক পরিচিত ভাইয়ের এলাকায় গেলাম। ভাইকে ফোন দিলাম। একসাথে গিয়ে দুকাপ চা খেলাম। এরপর আবার আমরা ফিরে এলাম। ভাইয়ের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো খুবই আনন্দের। ভাই আমাদের এলাকায় আসবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। এজন্য আমরা বেশিক্ষণ থাকিনি। এবার বাড়ির দিকে চলে এলাম। এসে বাড়িতে ঢুকলাম।

এটাই ছিল আমার কালকের সম্পূর্ণ ঘটনা। আমি এ পর্যন্ত কোনদিনও ঈদের দিন তেমন পারফেক্ট ভাবে ইনজয় করতে পারিনি। আমি কোন ঈদের দিনেই ভালোভাবে ইনজয় করতে পারিনা। ঈদের আগে অথবা ঈদের পরের দিন গুলো অনেক ভালো কাটে। তবে পরিবারের সাথে কাটানো সেই সময়টা সত্যিই অতুলনীয়। এটা প্রত্যেকের কাছেই একটু বেশিই স্পেশাল। তো যাইহোক, এই ছিল কালকের গল্প কাহিনী। আজকে আমি পোস্টটি পাবলিস্ট করছি। আবারো আপনাদের সাথে দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

এগারোটার একটু পরে আমাদের নামাজ শুরু হয়েছিল৷

আমাদের এখানেও সেইম অবস্থা ছিলো ভাই। সকালে হুটহাট চার দিক অন্ধকার হয়ে বৃষ্টি শুরু হয়। সেই বৃষ্টি ছিলো ১২ টা পর্যন্ত। এজন্য আমাদের ঈদের নামাজ পড়তে হয় মসজিদে। এর আগের বছর করোনার জন্য মসজিদে পড়তে হইছিলো। এবার বৃষ্টির জন্য। তবে আমি মনে করি ঈদের দিন বৃষ্টি রহমতের সংকেত।

সংগ্রাম ও ইজানকে অনেক সুন্দর লাগছে মাশাল্লাহ। ইজানের হাসি বেশি সুইট। 💕💕
 2 years ago 

ঈদের নামাজ ঈদগাহে না পড়লে একদমই শান্তি লাগে না। মনেই হয় না যে ঈদ কাটাচ্ছি।

সংগ্রাম ও ইজানকে অনেক সুন্দর লাগছে মাশাল্লাহ।

🥰

 2 years ago 

সুমন ভাই ঈদের শুভেচ্ছা রইলো। বেশ লাগছিল লেখা টা পড়তে। আসলে বাইরে ঘোরার চাইতে পরিবার নিয়ে আড্ডা টা যদি একবার জমে ওঠে তাহলে ওর চাইতে ভালো আর কি হতে পারে ! ভাগ্নে দের এত মিষ্টি লাগছে ভাই 👌👌👌 অনেক আদর আর ভালোবাসা রইলো ওদের জন্য।

আর হ্যা বছরের একটা খুশির দিনে ভাবি একটু ছবি তুলেছে তাই বলে আপনি সেটা নিয়েও লিখবেন! 😂 তীব্র প্রতিবাদ করে ভাবির পাশে দারাচ্ছি 🙏😊

 2 years ago 

হাহাহা।।।
কি আর বলবো ভাই,, আমার এই পোস্টটা পড়ে সে ক্ষেপে গেছিল । 😅

 2 years ago 

কালকের দিনটি আমার হিরো দাদার বৃষ্টি বৃষ্টি কেটেছে। বুঝতে পারছি। মনে বৃষ্টি , রাস্তায় বৃষ্টি। এমন অনুষ্ঠানের দিনগুলো তে এমন হলে ভালো লাগে নাহ কারোর। তবে হ্যাঁ এটা কিন্তু ঠিক, হতেই পারে এটা আশীর্বাদ। এই গরমে ওয়েদার টা এত ঠান্ডা করে দিল, আল্লাহ চাইছেন পৃথিবী তে শান্তি ফিরে আসুক। বৃষ্টির পরে যেমন আবহাওয়া ঠান্ডা থাকে, শান্ত থাকে। অমন।

 2 years ago 

তুমি কিন্তু ঠিক বলেছো আপু। এই যে তাপদাহ ছিল কিছুদিন যাবত, তারপরে এই স্বস্তির বৃষ্টি । এটা সত্যিই আমাদের শান্তির কারণ ছিল ।

তোমার সাথে দেখা হলে ঈদ সালামি টা দিয়ে দিব,, কেমন?? 🥳

 2 years ago 

ঈদ মোবারক ভাইজান

সারা দিন বৃষ্টির কারণে ঈদ উদযাপন অতটা ভালো হয়নি তবে আপনাদের মত আমাদের ঈদগাহে ও নামাজ শুরু হতে হতে প্রায় সাড়ে এগারোটা বেজে গিয়েছিলো কারণ সকাল থেকেই তো প্রচন্ড বৃষ্টি। বিশেষ কোন দিন ছাড়া পরিবারের সব সদস্য একসাথে এরকম আড্ডা দেওয়া হয় না। ভাগ্নেদের সাথে অনেক সুন্দর সময় পার করে সেগুলোর ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

প্রথমত ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই ভাইয়া। এরপরে যে কথাটা বলব আপনার ভাগ্নের ছবিগুলো আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। বিশেষ করে ছোট ভাগ্নেকে অনেক কিউট লাগতেছে। অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। আমাদের মাঝে মুহূর্তটা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

সময়ের সাথে উৎসব উদযাপনের ধরনেও পরিবর্তন আসে। আমাদের ছোটবেলার ঈদের সাথে বর্তমান সময়ের ঈদের অনেক পার্থক্য খুঁজে পাই। আমরা কখনো ছোটবেলায় ঈদের দিন ঘুমানোর কথা চিন্তাও করতে পারতাম না। আমার কাছে শুধু মনে হতো ঘুমিয়ে সময় নষ্ট করলে তো ঈদ চলে যাবে। তবে আরও একটি জিনিস আমার কাছে খারাপ লাগে সেটা হচ্ছে। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন সবাই ঈদগাহে গিয়ে নামাজ পড়তাম। এখন দেখি শহরের সব মসজিদে ঈদের জামাত হয়। ঈদগাহে যাওয়ার প্রতি এখন আর মানুষের আগ্রহ দেখা যায় না। সবাই একসাথে মিলে ঈদগাহে গিয়ে নামাজ পড়ার যে মজাটা ছিল সেটা আর এখনকার ঈদে পাওয়া যায় না। আপনার ছোট ভাগ্নে তো দেখছি খুবই খুশি হয়েছে নানা বাড়িতে আসতে পেরে। সুন্দরভাবে আপনার ঈদের দিনটি বর্ণনা করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

 2 years ago 

আসলেই ঈদগাহ ময়দানে গিয়ে নামাজ না পড়লে ঈদের পূর্ণতা পায় না মনেহয়।

ছবির সাথে কথার মিলে
সাজিয়ে দিলেন ভাই,
ঈদ থেকে যা নেওয়ার
সব নিল এন তাই।

ঘুরাফেরা আর আনন্দ করার
সহযোগীও ছিল মেঘ,
আলোর তাপে করেনি হয়রান
সূর্যিমামার তেজ।

 2 years ago 

সূর্যিমামার তেজ ছিল ভালই। কিন্তু মাঝে মাঝে বৃষ্টির দেখা আর ঘন কালো মেঘ। ভালোই ছিল সবমিলিয়ে।

 2 years ago 

প্রথমে আপনাকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাই ঈদ মোবারক ভাইয়া। আশা করছি পরিবারের সকলের সাথে ঈদের আনন্দ খুবই ভালো ভাবে পালন করেছেন। তবে বৃষ্টির কারণে একটু সমস্যা হচ্ছিল। যাইহোক বৃষ্টির সময় আপনি পরিবারের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলেন, বিষয়টি ভালো লাগলো। আপনার ভাগ্নে দুটিকে অনেক সুন্দর লাগছে। যাইহোক নামাজ দেরিতে হলেও সুষ্ঠুভাবে নামাজ পড়তে পেরেছেন। আসলে আমারা মাঠে নামাজ পড়তে পারিনি। আমরা মসজিদে নামাজ পড়েছি।

 2 years ago 

ছোট বেলার ঈদের সাথে বড়বেলার ঈদের কোনো মিল ই নেই।তবে সে সব যাই হোক,পুচকুর হাসিটা জাস্ট মাশাল্লাহ।

 2 years ago 

পুচকুর হাসিটা জাস্ট মাশাল্লাহ।

বড় হলে মেয়েরা লাইন ধরবে। হাহাহাহা।।

 2 years ago 

আপনার ঈদের দিনটি বেশ ভালোই কেটেছে যদিও আবহাওয়া কিছুটা খারাপ ছিল। সকালে উঠে তিন রাস্তার মোড়ে যাওয়া ,ভাইয়ের সাথে মাঠের দিকে যাওয়া। পরবর্তীতে পরিবারের সকলের সাথে আড্ডা দেওয়ার বিষয়টি আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 62404.06
ETH 2426.64
USDT 1.00
SBD 2.65