স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
হ্যালো বন্ধুরা। আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আজকে বাংলাদেশিদের জন্য একটি আনন্দের দিন। আজ ২৫ শে জুন আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হলো। সেই ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অবশেষে স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পূর্ণ ভাবে প্রস্তুত। এই প্রথম আগামী ঈদুল আজহায় দক্ষিণবঙ্গের মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবে এই সেতুর উপর দিয়ে।
প্রত্যেকবার ঈদের সময় কি পরিমাণ স্ট্রাগেল করে যাতায়াত করতে হয় শুধুমাত্র তারাই জানে যারা এই পথে যাতায়াত করছে। স্বাভাবিক সময়েই এমন অবস্থা হয় যে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ ঢাকাতে গিয়ে এক দিনে ফিরে আসার কথা কখনো চিন্তাই করতে পারে না। সারাদিন লেগে যায় ঢাকা পৌঁছতে। ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য আনা-নেয়া করার জন্য যে পরিমাণ সমস্যার সম্মুখীন হয় তাতে ব্যবসা বিমুখ হয়ে পড়ে ব্যবসায়ীরা। কিছু পণ্য আছে যেগুলো ঢাকা পৌঁছতে পৌঁছতে প্রায় নষ্ট হয়ে যায়। আর সবচেয়ে অসহায় হয়ে যায় তারা যারা অ্যাম্বুলেন্সে রুগী নিয়ে জ্যামে বসে থাকে। এ পর্যন্ত কত রুগী যে জ্যামে আটকা পড়ে মারা গেছে, ডাক্তার পর্যন্ত যেতেই পারেনি, এর কোনো হিসাবই নেই। ওই পরিবার জানে স্বপ্নের পদ্মা সেতু কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
সবাই পানিপথে যখন যাতায়াত করতো তখন প্রত্যেক দিন হাজার হাজার অভিযোগ পাওয়া যেত টোকাই দের বিরুদ্ধে। মানুষ এক প্রকার জিম্মি ছিল। চাঁদাবাজি তো ছিলো কমন। কুলিদের অত্যাচার ছিল ভয়াবহ। ব্যবসায়ীদের নিয়মিত যাতায়াত করতেই হতো কোন উপায় ছিল না। দেখুন, কোন একটা দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি তখনই হয় যখন সে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা পাকাপোক্ত হয়। যোগাযোগব্যবস্থা প্রাথমিক একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কোন একটা দেশের উন্নতি ঘটানোর জন্য।
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে হলে নদী পাড়ি দিতে হবে এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশে প্রচুর ব্রিজ আছে। যেগুলো ছোট ছোট নদী, খাল বিলের উপর দিয়ে তৈরি। কিন্তু পদ্মা সেতুর মতো এত বড় একটা ব্রিজ করতে মেগা প্রজেক্ট এর প্রয়োজন ছিল। যেটা বাংলাদেশ সরকার খুব সুন্দরভাবেই হ্যান্ডেল করেছে। আমি কোন সরকারের গুনো গান গাইতে আসিনি। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় একটি অর্জন ছিল। এটা বাংলাদেশের জনগণের জন্য বিশাল বড় একটা পাওয়া। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজকে যেহেতু পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়ে গেলো, এখন থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতির চাকা আরো বেশি গতিতে ঘুরবে বলে আশা করি। বাংলাদেশে উদ্যোক্তা বৃদ্ধি পাবে, ব্যবসার সংখ্যা বাড়বে, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, চাহিদার সমান যোগান দেওয়া সম্ভব হবে, প্রডাক্টিভ টাইম বৃদ্ধি পাবে, সর্বোপরি মানুষের ভোগান্তি কমবে।
বাংলাদেশ কৃষি নির্ভর দেশ। শুধুমাত্র যাতায়াত ব্যবস্থার বেহাল দশার কারণে বিভিন্ন ধরনের কৃষি পণ্য, কৃষি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন কীটনাশক আনায়নের খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষি উৎপাদন খরচ ও বেড়ে যায়। এতে কৃষকরা উৎপাদনে বিমুখ হয়ে পড়ে। এটি খুব খারাপ একটা ইফেক্ট ফেলে অর্থনীতিতে। এখন পদ্মা সেতুর কারনে এই সমস্যাটার সমাধান হবে। এছাড়া প্রত্যেক দিন যে পরিমাণ মানুষ যাতায়াত করে পানি পথে তাতে প্রডাক্টিভ টাইম যেভাবে লস হয় সেটি বাংলাদেশের জন্য বিশাল ক্ষতির কারণ। জনশক্তির সর্বোত্তম ও সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না এতে। এই সমস্যাটার ও সমাধান হবে পদ্মা সেতু। পুরো নদী পার দিতে এখন সময় লাগবে মাত্র ৫ থেকে ৭ মিনিট। এখন প্রত্যেকদিন লাখো মানুষের ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় বেঁচে যাবে। দক্ষিণবঙ্গের মানুষের কাছে এটা ছিল শুধুমাত্র স্বপ্ন। কিন্তু এই স্বপ্নটা অবশেষে বাস্তবে রূপান্তরিত হল।
পদ্মা সেতুর বদৌলতে এপার ওপার দুই পারেই গড়ে উঠবে নানারকম পর্যটন কেন্দ্র। ঢাকা থেকে দক্ষিণবঙ্গ রুটে যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি পাবে। যেখানে এক দিনে একটি বাস একবার মাত্র ট্রিপ মারতে পারত এখন সেখানে দুইবার যাতায়াত করতে পারবে। যাতায়াত ব্যবস্থার বেহাল দশার কারণে অনেকেই দক্ষিণবঙ্গের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ভিজিট করতে অনীহা প্রকাশ করত। কিন্তু এখন সেই সমস্যাটা থাকবেনা। দক্ষিণবঙ্গের অর্থনীতিতে পর্যটন খাত গুলো বিশাল ভূমিকা রাখবে , এটা এখন সহজেই অনুমেয়। যাহোক, প্রচুর প্রচুর সুবিধা আছে যেটা বলে শেষ করা যাবে না সহজে। এগিয়ে যাক বাংলাদেশ। মানুষের পথ চলা হোক নির্বিঘ্নে, সেই কামনা করি। আজ এ পর্যন্তই। দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
আসলে ভাই স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। আর এই পদ্মা সেতুর উপকার নিয়ে আপনি অনেক সুন্দরভাবে বর্ণনা দিয়েছেন। আসলে প মানুষের ভাগ্য বদলে দিয়েছে, কারণেই পদ্মা সেতু মানুষের জীবনযাত্রার মান আরো অনেক উন্নত করে দিয়েছে। আগে মানুষ ঢাকায় আসতে অনেক বেশি সময় লাগতো পদ্মার পাড়ের মানুষদের। যারা এই নদী দিয়ে পারাপার হত তারাই বুঝতে কতটা কষ্ট হত। এখন মাত্র তিন ঘন্টার মধ্যে ঢাকাতে পৌঁছাতে পারবে। সত্যিই পদ্মা সেতু বাংলাদেশের গৌরব। আর গৌরবময় সেতু প্রতিটা মানুষের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। পদ্মা সেতু বাংলাদেশকে আরো অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে। আজকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে, আর বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য খুলে গিয়েছে। খুবই ভালো লাগলো পদ্মা সেতু সম্পর্কে আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন।
অনেক অপেক্ষার পর অবশেষে পদ্মা সেতু চালু হলো। এই সেতুর যথাযথ ব্যবাহার করে ইহার উপকারে পেলেই আমরা খুুশি। সেতু যেন দীর্ঘায়িত হয় সেই কামনা করি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়া আপনার স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন। হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন দীর্ঘদিন পর নানান প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়ার পরও চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত উন্মুক্ত হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু। তবে আমাদের বাংলাদেশের জন্য একটা গৌরবের বিষয় যে আমরা শেষ পর্যন্ত করতে পেরেছি এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। আর হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন দক্ষিণবঙ্গের মানুষের কষ্টের সীমা ছিল। যাতায়াত ব্যবস্থা টিভিতে দেখতাম যে মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিলোনা। একদিনে হয়তো কেউ বাড়ি যেতে পারেনি। তবে এখন পদ্মা সেতু হওয়াতে অনেকটা সহজ হয়ে গিয়েছে। আজকে সকাল থেকে টিভিতে এবং কি ফেসবুকে এবং নানান ধরনের মিডিয়ি গুলোতে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান গুলো দেখলাম, খুবই ভালো লাগলো। এখন আপনার অনুভূতি গুলো আরো বেশি ভালো লাগলো। আমাদের মাঝে আপনার অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম ভাইয়া।
এটা একদম ঠিক বলেছেন। আমরা এখানে বসে কখনই সেই পদ্মার দুই পাশের মানুষের কথা বুঝতে পারবো না কিংবা কষ্টটা বুঝতে পারব না। অনেকেই ট্রল করছে কিংবা হাসাহাসি করছে। হতেই পারে অনেক কিছু খারাপ তবে যে যাই বলুক অনেক মানুষের জীবন সহজ হয়ে গিয়েছে এই সেতুর জন্য এটা মানতেই হবে।
আসলেই ভাইয়া একদম ঠিক কথা বলেছেন পদ্মা সেতু আমাদের জন্য স্বপ্নের সেতু। ২১ টি জেলার মানুষের দুর্ভোগ কমবে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষগুলো স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে এই পদ্মা সেতুর মাধ্যমে। যা আমাদের বাঙালি জাতির জন্য গৌরবময় একটি সেতু। বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে আমাদের দেশ সমৃদ্ধির পথে হেঁটে চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে অনেক ভালো লাগছে আজকে।
আমাদের দেশ ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে আগাচ্ছে ।আশাকরি বিগত কয়েক বছরের মধ্যে আরও সমৃদ্ধি লাভ করবে । একদিকে যেমন দক্ষিণবঙ্গের মানুষগুলোর যাতায়াত সুবিধা হয়েছে আর একদিকে মানুষের কষ্ট লাঘব হবে । বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাক এটাই কামনা করি । ধন্যবাদ ভাই আপনাকে
হয়ত,,এই স্বপ্নের সেতুর জন্য দক্ষিন বঙ্গের মানুষের জন্য কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।সব কিছুরই ভালো খারাপ সব দিকই আছে।লিখাটা পড়ে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
কিছুটা নয় আপু। দক্ষিন বঙ্গের মানুষের কষ্টটা কাছ থেকে দেখলে সামান্য কিছু উপলব্ধি করতে পারবে হয়ত মানুষ। ৪-৫ ঘন্টা যখন অসুস্থ রুগী নিয়ে কেউ জ্যামে বসে থাকে তখন সে বোঝে পরিস্থিতি টা কতটা কঠিন।
আর মাঝে মাঝে লঞ্চ ডুবির ঘটনা তো আছেই।
আরও একটা বড় ব্যাপার হল অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা। কোন দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না হলে সেই দেশের অর্থনীতি কখনোই চাঙ্গা হয় না।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছে এর ফলে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের ভোগান্তি অনেক কমে আসবে। যারা এই ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে তারাই শুধু এই কষ্ট উপলব্ধি করতে পারে। দক্ষিণবঙ্গের মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা আরো বেশি উন্নত হয়েছে এবং তারা নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা পেয়েছে। পদ্মা সেতু দক্ষিণবঙ্গের মানুষের স্বপ্ন। আর এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে এতে আমরা সকলেই অনেক খুশি। ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আপনার অনুভূতি উপস্থাপন করেছেন এজন্য আপনাকে জানাচ্ছি অনেক অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো আপনার জন্য। ❤️❤️❤️
দক্ষিণ বঙ্গের মানুষই জানে এই পদ্মা সেতু তাদের জন্য কতটা উপকারী। ফেরিঘাটে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকার দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা আমাদেরই আছে শুধু। আহা মন চাচ্ছে এখনই ছুটে চলে যাই বাসায়। অনেক সময়ের কথা চিন্তা করে বাচ্চাদের নিয়ে কম যাওয়া হত বাবার বাসায়। এখন মন চাইলেই চলে যেতে পারবো। ভাবতেই ভালো লাগছে।