রোজার রেখে মাছ ধরতে স্মৃতিময় গল্প//পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


আমাদের জীবনে অনেক গল্প রয়েছে। সেই গল্পগুলোই এখন স্মৃতির পাতায় জমা হয়ে রয়েছে। আসলে ফেলে আসা সেই দিনগুলো আমাদের জীবনে স্মৃতি হয়ে এখনো মনে করিয়ে দেয়। রোজার মধ্যে তাই আপনাদের মাঝে সেই গল্প শেয়ার করতে আসলাম। আসলে এই রোজার মধ্যেই পুরনো সেই দিনগুলোর কথা খুবই মনে পরছে আমার।কারণ রোজা আসলেই সেই দিনগুলো চোখের সামনে ভাসতে শুরু হয়। বন্ধুদের সাথে রোজার ভিতর মাছ ধরতে গিয়েছিলাম।আসলে রোজা রেখে সারাটা দিন কেন জানি পার হতে চায় না। আর এই দিন পার হওয়ার মুহূর্তগুলো আমরা আনন্দের সাথে উপভোগ করি।সে জন্যই মাছ ধরতে নদীর পাড়ে গিয়েছিলাম। আর সেই স্মৃতিময় গল্পটি আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে আসলাম। আসলে মাহে রমাজান রহমতের মাস।এই বরকতের মাসের রোজার রাখতে খুবি ইচ্ছা করে।যার কারণে এই মাসে আমরা নানাভাবেই দিন পার করে থাকি।আর আপনাদের মাঝে আজকে তাই রোজার মধ্যে মাছ ধরার একটি গল্প নিয়ে আসলাম। আশা করছি এই গল্পটি পড়ে ভালো লাগবে।


boat-164977_1280.jpg

source

আমি তখন ক্লাস সেভেনে পড়াশোনা করি। এই সময় আমার বন্ধুদের সাথে নিয়ে আমি সবসময় চলাফেরা করতাম। আসলে রোজার মাস ছিল, পড়াশোনার চাপ ছিল না। যার কারণে রোজা রাখতে খুবই মন চাচ্ছিল। বাড়িতে বারবার বলতাম রোজা রাখবো কিন্তু মা রাখতে দিত না। তারপরেও জোর করে রাখতাম, কারণ প্রথম প্রথম রোজা রাখার খুবই ইচ্ছা ছিল আমার। আর রোজা রেখে সারাটা দিন যেন ভালোই লাগতো, তবে বিশেষ করে আসরের নামাজ পড়ে এত ক্ষুদা লেগেছে যেন কিছুই করতে মন চায় না।একদিন রোজা রেখে আমি মাঠে পাশে বসে রয়েছি। তখন আমার বন্ধু আসলো, বলল যে চল আমরা নদীর পাড়ে যাই। নদীর পাড়ে অনেকেই মাছ ধরছে, এই মাছ ধরার দৃশ্য দেখতে আসলেই, আমাদের সময়টাও পার হয়ে যাবে। আর ভালো লাগবে। তাই বন্ধুর সাথে রাজি হলাম মাছ ধরার দৃশ্য দেখার জন্য নদীর পাড়ে যাওয়ার জন্য।


তাই আমি আমার আরো কয়েকজন বন্ধু মিলে নদীর পাড়ে আসলাম। নদীর পাড়ে এসে দেখতে পেলাম বট গাছের নিচে বসে থেকে অনেকেই বড়শি দিয়ে মাছ ধরছে। আসলে মাছ ধরার এই দৃশ্য দেখার জন্য আমরা এসেছি। আমরা বন্ধুরা মিলে বটগাছের ছায়াতলে বসে ছিলাম। আসলে আমাদের নদীর পাড়ে অনেক বড় একটি বটগাছ রয়েছে। আর এই বট গাছের ছায়াতলে বিকেলবেলা অনেকেই এসে বসে থাকে। নদীর শীতল বাতাস উপভোগ করলে অনেক ভালো লাগে। যার কারণে বিকেল বেলা এই নদীর পাড়ে এসে অনেকেই বসে থাকে এবং মাছ ধরার দৃশ্য উপভোগ করে। আর কেউ কেউ মাছ ধরে, আমি এসে দেখতে পেলাম আমাদের গ্রামের রহিম চাচা নামে এক চাচারে বসে রয়েছে মাছ ধরার জন্য এবং চাচার পাশে এসে আমি বসলাম। আর চাচার সাথে গল্প করতে লাগলাম। তার মাছ ধরার নিয়ে অনুভূতিগুলো শুনতে লাগলাম।


ship-952292_1280.jpg

source

চাচার পাশে বসে অনেক গল্প করতে লাগলামম আসলে চাচা খুবই ভালো মানুষ, সে বলল যে বাবা তুমি রোজা রেখেছো বললাম জি, চাচা আমি রোজা রেখেছি। তখন চাচা বলল যে আমিও ছোটবেলা থেকে রোজা রাখতাম। আসলে ছোটবেলা মা রোজা রাখতে দিত না। আমিও জোর করে থাকতাম। আসলে মায়েরা এমনই হয়, তারা যে সন্তানদের রোজা রাখতে দিতে চায় না। নিজে রোজা রাখবে ঠিকই কিন্তু সন্তানদের রাখতে দিতে চায় না। সন্তানের কষ্ট হবে, তাই চাচার কাছ থেকে তার ছোটবেলার গল্প জানতে চাইলাম।চাচা গল্প করতে লাগলো, আমরা বন্ধুরা মিলে চাচার পাশকে বসে সেই ছোটবেলার গল্প শুনতে ছিলাম। এরই মধ্যে চাচা বড়শিতে মাছ ধরেছে, চাচা তাই বড়শির সুতা টানতে লাগলো।


চাচা আস্তে আস্তে এই বড়শির সুতা টানতে ছিল। আমি বললাম চাচা আস্তে আস্তে টানছেন ক্যানো মাছ যদি ছুটে যায়। চাচা বলল যে মাছ বড়শিতে ধরে সেই মাছ সহজে ছুটতে পারে না মতাই চাচা আস্তে আস্তে টানতে ছিলো। চাচার সুতা টানা দেখতে পেয়ে আমিও টানতে লাগলাম। তবে সুতা এত চিকন ছিল টানতে গিয়ে আমার হাতে ব্যথা লাগতেছিলো।তাই চাচাই টানতে লাগলো।আসলে এর আগে চাচা আরও কিছু মাছ ধরেছে, তবে বড় মাছ ধরেনি। আর চাচা বলল এই মাছটি বড় মাছ হতে পারে কারণ চাচা টেনেই বুঝতে পেরেছিলো।তার বড়শিতে অনেক বড় একটি মাছ ধরেছে। আর আমাদের বলতে ছিল ভাতিজা দোয়া কর। বড় মাছ ধরবে আমরা তখন আল্লাহর কাছে দোয়া করতে লাগলাম। আসলে রোজার মাস ছিলো।যার কারণে বড়দের কথা শুনে চলতাম।তাই চাচার কথা শুনে দোয়া করতেছিলাম হাত তুলে।


তারপরে চাচা বড়শি টেনেনদীর কিনারায় নিয়ে আসলো এবং কিনারায় এসে দেখতে পেলাম অনেক বড় একটি মাছ।বললাম কি মাছ চাচা।আর চাচা বলল যে দাঁড়াও আগে উপরে উঠিয়ে নেই। আসলে যখন পানি থেকে উপরে উঠিয়ে নিয়ে আসলো তখন দেখতে পেলাম অনেক বড় একটি বোয়াল মাছ ধরা পড়েছে। আসলে চাচা বড়শিতে এত বড় মাছ দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো।আমরা অনেক খুশি হলাম। আসলে সেদিন অনেক বেশি ভালো লেগেছিল, তখন মনে হচ্ছিল যে আমরা রোজা রেখেছি, আল্লাহ তায়ালা আমাদের দোয়া কবুল করেছেন। চাচাও বললো তোমাদের দোয়া কবুল করেছে। আজকে এখানেই শেষ করছি বাকি অংশটুকু আপনাদের সাথে আগামী পর্বে শেয়ার করবেন ইনশাআল্লাহ। 🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 3 months ago 

রমজান মাসে মাছ ধরার গল্পটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আপনি তখন রোজা রাখতে চাইতেন কিন্তু আপনার মা রোজা রাখতে দিত না। আসলে ছোট সময়ে এরকম সবারই হয়ে থাকে। ছোট সময় রোজা থাকার যে একটা অনুভূতি সেটা বলে বোঝানো যাবে না। আপনি আর আপনার কয়েকটা বন্ধু মিলে নদীর পাড়ে বট গাছের নিচে মাছ ধরা দেখতে গিয়েছেন। আর একটা কথা ঠিকই বলেছেন নদীর থেকে শীতল বাতাস গায়ে লাগলে মনটাও ভালো হয়ে যায়। খুবই সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 3 months ago 

একদম যেন গল্পের মধ্যে ঢুকে গেছিলাম। মনে হচ্ছে আপনার গল্পের সাথে আপনাদের সাথে আমিও ছিলাম। অনুভব করলাম সুন্দর এক বটগাছ। সেখানে মাছ ধরা মুহূর্ত। খুবই ভালো লাগলো আপনার সুন্দর এই স্মৃতিচারণ মূলক গল্প পড়ে। আপনার গল্প পড়ার পাশাপাশি ছোটবেলার এমন অনেক ঘটনা মনে চলে আসলো।

 3 months ago 

আসলে স্মৃতির পাতায় আমাদেরও অনেক গল্প রয়েছে। আর রোজার দিনে বিকেল বেলার মুহূর্তগুলো যেন পার হতে চায় না। সব সময় ঘুড়ি দেখি কখন পার হবে। আপনারা বিকালের মুহূর্ত পার করার জন্য নদীর পাড়ে মাছ ধরার দৃশ্য দেখতে গিয়েছিলেন। আর আপনি সেই চাচার বড়শিতে বড় একটি বোয়াল মাছ ধরা পড়ছিল জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। আশা করছি সামনের অংশটুকু আরো আকর্ষণীয় হবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 71342.73
ETH 3809.46
USDT 1.00
SBD 3.49