আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে খুব ভালো আছেন।আমিও বেশ ভালোই আছি। আমার প্রোফাইলটা ঘাটলে আপনারা হয়তো দেখতে পাবেন আমি যতগুলো গল্প লিখেছি তার বেশিরভাগই, বলতে গেলে পুরোটাই ভৌতিক গল্প বা ঘটনা। আসলে ছোটবেলা থেকে হরর স্টোরি বা ইনসিডেন্ট আমাকে সবথেকে বেশি টানে। আমি যেগুলো লিখেছি সেগুলো বেশিরভাগই ইনসিডেন্ট অর্থাৎ সেগুলোকে গল্প বলা যায় না সেগুলো এক একটা ঘটনা। আপনারা অনেকেই বড় গল্প পছন্দ করেন না। আসলে অনেকেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলে বড়ো গল্প পড়তে গিয়ে। ওই কারণেই আমি ঠিক করেছি এবার থেকে বেশি বড় করবো না। আসল ঘটনায় ফিরে আসব।তাতে করে আপনাদের ইন্টারেস্টটাও থাকবে। আর আমিও লিখে আনন্দ পাব। কিন্তু অনেকেই আছেন বড় গল্প হলেও পুরোটা পড়েন। আমিও তাদের মধ্যে একজন। আজও একটা ঘটনা আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেব। আমার জীবনে যত ভৌতিক ঘটনা শোনা বা জানা তার বেশিরভাগই আমার মামা বাড়ি সংক্রান্ত। আজও সেরকমই একটি ঘটনা আপনাদের মাঝে নিয়ে এলাম। চলুন তবে শুরু করি।

মহিলাদের সিরিয়ালের নেশা সকলেই জানে।আমি যদিও সিরিয়াল দেখি না।কিন্তু যারা দেখে তাদের নিয়ে আমি কোন ক্রিটিসাইজ করব না। ঠিক তেমনি একটা সময় "কসৌটি জিন্দেগি কি" বলে একটা সিরিয়াল হত সন্ধ্যেবেলা, হয়তোবা সাতটার সময়।

আমার রুবি মাসি মানে মায়ের কাজন বলা যায়, খুব তোর জোর করছিল যে তাড়াতাড়ি "কসৌটি জিন্দেগি কি" দেখতে হবে জেঠুর ঘরে গিয়ে। তাদের নিজস্ব টিভি তখনও ছিলো না। তার আগে একবার ওয়াশরুম থেকে ঘুরে আসবে ভেবে দিদা কে ডাকলো। ওদের ওয়াশরুম টা ছিল কুয়োর পাশেই যেহেতু সন্ধ্যা হয়ে গেছিল সেই কারণে মাসি তার মা অর্থাৎ আমার দিদাকে বলল একটু দাঁড়াতে,সে ওয়াশরুম যাবে। দিদা দাঁড়ালো। কিন্তু প্রায় ১৫ মিনিট হয়ে গেছে তাও মাসি আসছে না দেখে, দিদা এবার ওয়াশরুমের দরজা নাড়ালো। মাসি কোনো শব্দ করছে না দেখে দিদার সন্দেহ হলো। ওয়াশরুমের দরজাটাও টেনে খুলল যেহেতু ভেতর থেকে দরজা আটকানো ছিল না তাই বাচোয়া। দরজা খুলতেও কোন অসুবিধা হয়নি। দিদা দরজা খোলার সাথে সাথে, মাসি দিদার গায়ে এলিয়ে পড়লো।

এইবার চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হল।হঠাৎ কি হল! এরপর মাসিকে নিয়ে বিছানায় শোয়ানো হলো।দেখা গেল কয়েক মিনিটের মধ্যে মাসির চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেল ঠিক যেন কাজল কেউ লেপটে দিয়েছে। আর শুধু মুখ দিয়ে গোঙ্গানির আওয়াজ। এবার বিষয়টা বুঝতে কারোই বাকি রইল না।মাসির রাশ হালকা ছিল।এর আগেও মাসির সাথে কমবেশি এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তাই সকলেই বুঝতে পারল।

এইবার পাশের বাড়ি থেকে এক ওঝা মামাকে ডাকা হল। ওঝা মামা এসে প্রথমে মাসির সামনে ঠাকুরের একটা ছবি ধরল।হঠাৎ করে মাসি বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে জোরে চিৎকার করা শুরু করল, "দূরে সরা!দূরে সরা!" এবার আর সন্দেহের অবকাশ রইল না। ওঝা মামা মাসির নাকের সামনে আঁশটে পাতা ঘষে ধরতেই, মাসির অন্যরকম গলায় বলল, "এক্ষুনি সড়া আমার নাকের সামনে থেকে, নয়তো শেষ করে ফেলব। " তারপরে মাসির হাত-পা বেঁধে অনেকক্ষণ ধরে ওঝা মামা মন্ত্র তন্ত্র পাঠ করে মাসিকে খানিকটা স্থিত করল। তারপরে প্রায় এক মাসের মতো সময় লেগেছিল মাসিকে পুরোপুরি সুস্থ হতে।

সুস্থ হওয়ার পরে মাসিকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম কেন এমন হল? বলল সে যখন ওয়াশরুমে গিয়েছিল হঠাৎ করেই সে দেখল কালো একটা ছায়ার মত তার পাশ থেকে সরে গেল। তারপরে তারা কোন হুঁশ ছিল না। তার সারা শরীরে কাটা দিয়েছিল। সেইটুকুই মনে রাখতে পেরেছে। ওঝা মামা কে জিজ্ঞেস করার পরে ওঝা মামা বলল মাসিকে ডিঙিয়ে গেছে আত্মাটি। কিন্তু গলায় ঠাকুরের লকেট থাকায়, বিশেষ ক্ষতি করতে পারেনি। ডিঙিয়ে যাওয়ার জন্যই এইসব ঘটনা। যদিও তারপরে আর মাসির কিছু হয়নি। এখন সে ভালোই আছে,সুস্থ আছে।

আজ ঘটনাটা এখানেই শেষ করলাম। কেমন লাগলো ছোট্ট ভৌতিক ঘটনাটি অবশ্যই জানাবেন। আবার আসবো অন্যরকম কোন উপস্থাপনা নিয়ে। সকলে খুব ভালো থাকবেন।