আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে খুব ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালোই আছি। যা পরিমাণে গরম পড়েছে এক সেকেন্ডও এসি ছাড়া এদিকে থাকতে পারছি না। কিন্তু মনে মনে লজ্জা হচ্ছে এভাবে এসি চালানোর জন্য। কারণ আজকে এই জঘন্য গরম হওয়ার পেছনে আমরাই দায়ী।যেভাবে পরিবেশকে আমরা নষ্ট করছি তার মাসুল তো আমাদেরই দিতে হবে। তাই না? আসুন না, আমরা প্রত্যেকে মিলে প্রতিজ্ঞা করি যে প্রত্যেক বছর পাঁচটা করে গাছ লাগাব আমরা প্রত্যেকে। তাতে করে আগামী দিনগুলো আর একটু আরামে এবং আনন্দে কাটাতে পারব। নয়তো এই দুর্বিসহ গরম বাড়তেই থাকবে। আর এর সলিউশন হিসেবে প্রত্যেকের বাড়িতে একটা করে এসি বসানো মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আমি জানি আমার বাড়িতেও এসি আছে। অনেকটা জ্ঞানপাপীর মত কথা বলছি ঠিকই। তা সত্ত্বেও নিজের লজ্জাবোধ থেকেই এই কথাটা আজকে বললাম। প্রত্যেকে মিলে যদি প্রতিজ্ঞা করি যে পাঁচটা করে গাছ লাগাবো,তাহলে হয়তো একটু ভালো থাকতে পারবো।

আজকে আমি একটা সিনেমার রিভিউ নিয়ে এসেছি আপনাদের কাছে। সিনেমাটি আমি কিছুদিন আগেই জি ফাইভে দেখেছি। কমিডির উপরেও যথেষ্ট শিক্ষামূলক সিনেমা বলে আমার মনে হয়েছে। সিনেমাটি হল রাধিকা আপ্টের অভিনীত "মিসেস আন্ডারকভার"।সিনেমাটি রিলিজ করেছিলো ১৪ই এপ্রিল ২০২৩ এ।

দুর্গা একটা খুব সাধারণ মেয়ে। তার বাবা-মা নেই।তার বিয়ে হয় কলকাতার এক শাড়ির দোকানের মালিক দেবের সাথে। সে গুছিয়ে সংসার করছে তার স্বামীর শ্বশুর শাশুড়ি এবং বাচ্চা নিয়ে। এমন সময় শহরের খবর পড়ে, একজন সিরিয়াল কিলার এক এক করে প্রতিষ্ঠিত মহিলাদের খুব বাজে ভাবে খুন করছে। এই ঘটনায় যখন সারা ভারতের তোলপাড় হয়ে যায়, তখনই বোম্বের স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ নড়েচড়ে বসে এবং তারা ঠিক করে কলকাতায় তাদের যে আন্ডারকভার এজেন্ট আছে তাকে দিয়েই এই সিরিয়াল কিলারকে ধরা হবে।

স্পেশাল ব্রাঞ্চ এর অফিসার খোঁজ করতে করতে যখন কলকাতায় আসেন, তিনি জানতে পারেন দুর্গা আসলে তাদের আন্ডার কভারে এজন্ট। যে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সংসার করে চলেছে আন্ডার কভার এজেন্ট হিসেবে। এর পরেই ঘটনার ঘনঘটা। দুর্গা কিছুতেই রাজি হয় না পুনরায় তার কাজ শুরু করার জন্য। আসলে সে কোথাও তার কনফিডেন্স খুঁজে পাচ্ছিল না।দীর্ঘদিন গৃহবধূ হিসাবে থাকতে থাকতে সে নিজের সমস্ত অস্তিত্বকেই হারিয়ে ফেলেছিল। এরপরে কিভাবে সাধারণ দুর্গা অসাধারণ হয়ে ওঠে এই নিয়েই গল্প।

আর এর থেকে বেশি ডিটেলসে বললাম না আপনাদের কাছে। বাকিটা আপনারা দেখলে হয়তো বুঝতে পারবেন। সিনেমাটা দেখে আমার খুবই পছন্দ হয়েছে।হয়তো যে মেয়েদের আমাদের সমাজ তুচ্ছ চোখে দেখে, সেই মেয়েরাই কতটা এগিয়ে রয়েছে আর সে কি করতে পারে তার উপরে এই গল্প লেখা হয়েছে বলেই আমার এত ভালো লেগেছে। দুর্গার মধ্যে আপনারা দৈনন্দিন জীবনের নিজেদের প্রতিচ্ছবি দেখতে পারবেন।একটা মেয়ে কিভাবে তার সংসার সামলেও তার দেশের জন্য কাজ করতে পারে তাই তুলে ধরা হয়েছে এই সিনেমাতে। সত্যি বলতে রাধিকা আপ্টের অভিনয় এক কথায় প্রাণবন্ত। সাথে সিরিয়াল কিলার হিসেবে সুমিত ভ্যাস তো একটা মনে দাগ কেটে রেখে যায় ই। আমরা অন্তহীন সিনেমাতেও রাধিকার অভিনয় দেখেছি।এছাড়াও বেশ কিছু সিনেমাতে সে নিজের পারদর্শিতার ছাপ রেখেছে। সুমিতও ঠিক তাই। এই সিনেমাটিও কৌতুক এবং থ্রিলার মেশানো। দুটোকে এত সুন্দর ব্যালেন্স করা হয়েছে সিনেমাতে তা সত্যিই দেখার মত। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ রাখবো অবশ্যই সিনেমাটি দেখবেন। আশা করি আপনাদের প্রত্যেকের খুব ভালো লাগবে।