নববর্ষের প্রথম দিন(১০% @shy-fox এর জন্য)
তারিখ-১৮.০৪.২০২৩
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে খুব ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালোই আছি। শুভ নববর্ষের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই সকলকে। বছরের প্রথম দিন পোস্ট করতে পারিনি ঠিক কথাই। প্রথম কথা অফিসের কাজের চাপ, দ্বিতীয়ত এত অসম্ভব গরম পড়েছে দুদিন পরপর শরীরটা ভীষণ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সেরকম খারাপ নয় তবে গরমে কাহিল হয়ে যাচ্ছে এটাই যা। বাঙালিরা বছরের প্রথম দিন হিসেবে ধরে বৈশাখ মাসের প্রথম দিনটিকে। বঙ্গাধিপতি মহারাজ শশাঙ্ক এই বাংলা নববর্ষ প্রচলন করেন। এরপর থেকেই এপার এবং ওপার দু বাংলার মানুষই এই দিনটিকেই নিজেদের বছরের প্রথম দিন হিসেবে ব্যবহার করে।
আমি ছোটবেলা থেকেই নববর্ষ উপলক্ষে আমাদের পাড়াতে কালী মন্দিরের পাশে যে বটগাছ আছে তাকে ঘিরে ছোট্ট মেলা বসতে দেখেছি। কালের স্রোতে সেই মেলা বড় হয়েছে। দুটো মাঠ জুড়ে এখন মেলা হয়।
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই স্নান করে ছোটবেলায় নতুন টেপ জামা পরে ঘুরে বেড়াতাম।আর এখন এই টেপ জামা-ই বিবর্তন হয়ে নাইটিতে পরিণত হয়েছে। বছরে শুরুতে আগাগোড়াই স্নান করে উঠে বাবা-মায়ের দেওয়া জামা-ই পরি। এবারও তাই করলাম। স্নান করে উঠে নতুন নাইটি পরে প্রথমে ঠাকুর ঘরে ঢুকলাম।পুজো করে মা-বাবাকে প্রণাম করে, এইবার মামা বাড়ির সকলকে ফোন করার পালা।সকলকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়ে অফিসের কাজে বসলাম। প্রায় রাত আটটা পর্যন্ত অফিসের কাজ করে, তারপরে আমি আর শম্পা চলে গেলাম অনেক বছরের পুরনো আমাদের পাড়ার সেই মেলাতে।
গিয়ে দেখলাম মায়ের পুজো হচ্ছে। মাকে প্রণাম করে চলে গেলাম মেলায় ঘুরতে।ঘোরাফেরা বলতে এই বয়সে আর নাগরদোলা চড়ি না। এই দোকান-সেই দোকানে ঘুরে একটা কানের দুল ককিনলাম, কটা কফি মগ কিনলাম, আর দুটো সসের বাটি কিনলাম।মেলার মধ্যে এখন যেন সবকিছুই পুরাতন মনে হয়। মনে হয় এই জিনিসগুলো তো বাজারেও পাবো। কিন্তু মেলার মধ্যে কিছু জিনিস যেগুলো বাজারে মেলে না সেগুলো হলো মেলার বিভিন্ন খাবার। আমি আর শম্পা মনে মনে ঠিক করে গিয়েছিলাম যা পাবো-তাই খাব। করলামও তাই। প্রথমে মেলায় ঢুকেই দশ টাকা করে ফুচকা খেলাম। তারপরে গেলাম এগ রোল খেতে। ওই একটা কিনে দুজনে ভাগ করে খাওয়া। তারপরে এক প্লেট ফ্রাইড মোমো নিয়ে দুজন ভাগ করে খেলাম। একদমই বাজে ছিলো খেতে। এরপরে একটা গ্রীন মোহিত কিনলাম। সেটা কেও ভাগ করে খেলাম।
ফেরার সময় জিলিপি আর বাদাম না কিনলে মেলায় ঘোরা কিন্তু সম্পূর্ণ হবে না। সেই কারণে সে দুটো কিনলাম। এরপর ফিরেই যাব হঠাৎ করে শম্পা বলল, "মালাই খাবি?"আমি বললাম, "আমি তো কোনদিনও মালাই খাইনি!"বলল, "চল খাবি?" আমি বললাম, "আর লজ্জা করে কি হবে? এত কিছু যখন খেলাম মালাইটাও খাওয়া যাক।" এবারও এক প্লেট মালাই আইসক্রিম কিনে দুজনে ভাগ করে খেলাম।সেটা আমাদের খেতে মোটামুটি লেগেছে।
যখন বাড়ি ফিরলাম সব ঘুরে ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি সাড়ে দশটা বাজে রাত্রি। নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না এত রাত পর্যন্ত মেলায় ঘুরেছি। যাই হোক আবার তো সেই এক বছর পরে আসবে। তাই এটুকু করাই যায়।
এই ছিল আমার নববর্ষের মেলায় ঘোরার অভিজ্ঞতা। ঘোরা কম খাওয়ার বেশি। আপনাদের নববর্ষের অভিজ্ঞতা অবশ্যই ভাগ করবেন। আজ এখানেই শেষ করছি।আবার আসবো অন্য কোন উপস্থাপনা নিয়ে।সকলে খুব ভালো থাকবেন।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
পরিচিতি
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।
আর বলিয়েন দিদি যে পরিমান রোদ গরম ৷ যা হোক পহেলা বৈশাখের প্রথম দিনের মেলায় ঘুড়তে যাওয়ার মুহুর্ত টা সত্যি দূদান্ত ছিল ৷ ভালো লাগলো কালী মন্দিরের পাশে বট গাছের নিচে মেলা ৷ তবে দিদি ব্যস্ততার পরেও আমাদের থাকবেন এমনটাই প্রতার্শা করি ৷
চেষ্টা করি ভাই থাকার শরীর খুব খারাপ না লাগলে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রচন্ড গরমে মানুষ খুব অতিষ্ঠ।আপনি এই গরমেও খুব সুন্দর কিছু সময় কাটিয়েছেন দেখে খুব ভাল লাগলো। আপনি মন্দিরের পাশে মেলায় খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো কিন্তু তাই বলছে।সুন্দর কিছু অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দিদি আপনাকে।
ধন্যবাদ দিদিভাই
আপনার এই পোস্ট এর মধ্য থেকে বুঝতে পারলাম নববর্ষের দিন টা খুব সুন্দর ভাবে অতিবাহিত করেছেন আপনজনদের সাথে। খুবই ভালো লাগলো নববর্ষের দিনটা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করলেন দেখে। প্রত্যেকের জীবনে এমন সুন্দর আনন্দঘন মুহূর্ত ফুটে ওঠুক সে প্রত্যাশা রইল।
অনেক ধন্যবাদ দাদা।