তারিখ-০৬.০৬.২০২৩
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে খুব ভালো আছেন।আমিও বেশ ভালোই আছি। এখন মনে হচ্ছে অফিসটা একটু দেরিতে হওয়াতে ভালোই হচ্ছে। অন্তত রোজের পোস্টটা রোজ করতে পারছি। আজকে চলে এলাম আরেকটা উপস্থাপনা নিয়ে, একটা আবৃত্তি পরিবেশন করতে আমার বাংলা ব্লগে। এখানে কাজ করতে গিয়ে মাঝে মাঝে আমি নিজেকে দেখে অবাক হয়ে যাই। নিজের ভেতরের বেশ কিছু সৃজনশীলতা ধীরে ধীরে লোপ পেতে পেতে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। এখানে কাজ করে আবার সেই সৃজনশীলতাগুলোকে নিজের মধ্যে ফিরে পেয়ে যেন মনে হয় নিজের সেই ছোটবেলাতে ফিরে গেছি।
![345464965_964198564630442_3453405838848005637_n.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmVr3AMFgZay6qtvaZNef6QF2amQfcGkQqef1nS8MujHVD/345464965_964198564630442_3453405838848005637_n.jpg)
সেই আগের মতনই ছবি আঁকা,গান গাওয়া, আবৃত্তি করা অথবা ক্রাফটের কাজ করা। তখন স্কুল,পড়াশোনার পাশাপাশি এই কাজগুলো ছিল সমান গুরুত্বের।
আর এখন অফিসের কাজের পাশাপাশি এই কাজটাও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এটা ঠিকই ভীষণভাবে অ্যাকটিভ থাকতে পারিনা। তবে ন্যূনতম যেটুকু দরকার সেটুকুতে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারি সেটার জন্যই আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। কমিউনিটিতে যখন থেকেই আমি কাজ করি, কোনদিনই আমার মনে হয়নি বিশাল অংকের ভোট পেতে হবে বলে কাজ করছি। সব সময়ই কাজ করতে ভালো লেগেছে বলেই কাজ করেছি। সেই কারণেই এক মাসের জন্য বন্ধ হয়ে গেলেও আবার ফিরে এসেছি পেনাল্টি দিয়ে।
আজকে যে কবিতাটি পাঠ করছি সেটা জীবনানন্দ দাশের খুবই বিখ্যাত কবিতাগুলোর মধ্যে একটি। আসলে জীবনানন্দ দাশ ভীষণই উদাসী কবি ছিলেন। আর যথেষ্ট ভাবুক একজন কবি ছিলেন। সেই কারণেই মর্মান্তিকভাবেও তার মৃত্যু ঘটে।ওনার লেখাগুলো বেশিরভাগই প্রকৃতি নির্ভর হলেও, বেশকিছু দুঃখবিলাসী কবিতাও তিনি লিখেছেন। এই কবিতাটা খানিকটা হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসার মানুষকে হঠাৎ করে যদি কুড়ি বছর পরে আমাদের জীবনে আমরা ফিরে পাই তবে ঠিক কি করব সেটা নিয়েই। অর্থাৎ হারিয়ে যাওয়া মানুষটি সাথে কুড়ি বছর আগে যেভাবে প্রকৃতির মধ্যে,প্রকৃতির ছায়ায় ভালোবাসার আবেশে জড়িয়ে পড়েছিলাম, ঠিক সেভাবেই কি আজ কুড়ি বছর পরেও তাকে আঁকড়ে ধরতে পারবো? সেই নিয়ে কবিতা।
যদিও আমি নিজেকে ব্যাখ্যা করতে পারব না এখানে কারণ কুড়ি বছর আগে আমি খুবই বাচ্চা ছিলাম। 😀কিন্তু যারা এখন মধ্যবয়সে তারা তাদের কুড়ি বছরের পুরনো ভালোবাসার কথা বেশ ভালোই রোমন্থন করতে পারবেন আশা করি। ভালোবাসা আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই আসে বা এসেছে।এখানে অস্বীকারের কিছুই নেই।যাইহোক কথা না বাড়িয়ে আবৃত্তিটা শুরু করছি।
আবার বছর কুড়ি পরে তার সাথে দেখা হয় যদি!
আবার বছর কুড়ি পরে-
হয়তো ধানের ছড়ার পাশে
কার্তিকের মাসে-
তখন সন্ধ্যার কাক ঘরে ফেরে-তখন হলুদ নদী
নরম নরম হয় শর কাশ হোগলায়-মাঠের ভিতরে!
অথবা নাইকো ধান ক্ষেতে আর,
ব্যস্ততা নাইকো আর,
হাঁসের নীড়ের থেকে খড়
পাখির নীড়ের থেকে খড়
ছড়াতেছে; মনিয়ার ঘরে রাত, শীত আর শিশিরের জল!
জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের পার-
তখন হঠাৎ যদি মেঠো পথে পাই আমি তোমারে আবার!
হয়তো এসেছে চাঁদ মাঝরাতে একরাশ পাতার পিছনে
সরু সরু কালো কালো ডালপালা মুখে নিয়ে তার,
শিরীষের অথবা জামের,
ঝাউয়ের-আমের;
কুড়ি বছরের পরে তখন তোমারে নাই মনে!
জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের পার-
তখন আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার!
তখন হয়তো মাঠে হামাগুড়ি দিয়ে পেঁচা নামে
বাবলার গলির অন্ধকারে
অশথের জানালার ফাঁকে
কোথায় লুকায় আপনাকে!
চোখের পাতার মতো নেমে চুপি চিলের ডানা থামে-
সোনালি সোনালি চিল-শিশির শিকার করে নিয়ে গেছে তারে-
কুড়ি বছরের পরে সেই কুয়াশায় পাই যদি হঠাৎ তোমারে !
দিদি আপনি আবার নিয়মিত হয়েছেন বলে আমরা অনেক খুশি। যখন ছিলেন না মিস করেছি। জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কবিতা কি অসাধারণ ভাবে আবৃতি করলেন! বেশ ভালো লেগেছে আমার। প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশের অসাধারণ কবিতা কুড়ি বছর পরের আবৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দিদি।
অনেক ধন্যবাদ দিদি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অনেক সুন্দর আবৃত্তি করেছেন দিদি। আপনি নিয়মিত থাকলে আমাদেরও অনেক ভালো লাগে। অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি কবিতা আবৃত্তি করে শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনি খুবই চমৎকার একটি কবিতা আবৃত্তি করেছেন। আপনার কন্ঠে কুড়ি বছর পরে কবিতা আবৃত্তি শুনে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনি অত্যন্ত নিখুঁতভাবে এই কবিতাটি আমাদের মাঝে আবৃত্তি করে শেয়ার করেছেন। চমৎকার একটি কবিতা আবৃত্তির পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনেকদিন পরে জীবনানন্দ দাশের কবিতা আবৃত্তি করতে শুনলাম তাও আবার সেটা আপনার কন্ঠে। আপনার কন্ঠে এত সুন্দর আবৃত্তি শুনে আমি মুগ্ধ হয়েছি। জীবনানন্দ দাশ গ্রাম প্রকৃতি নিয়ে অনেক সুন্দর কবিতা রচনা করে গেছেন যা পড়তে বেশি ভালো লাগে আমার।