জেনারেল রাইটিং :-জীবন অনিশ্চিত
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি ।
বরাবরের মতো আজও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটা পোস্ট নিয়ে। আসলে আজ এসেছে একটি জেনারেল রাইটিং নিয়ে। আমি প্রতি সপ্তাহে একটি করে জেনারেল রাইটিং লেখার চেষ্টা করি। আসলে আমাদের জীবন অনিশ্চিত। জন্ম নিলে মৃত্যু বরণ করতে হবে। প্রতিটি প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে এটা আমরা সবাই জানি। জীবন অনিশ্চিত জেনে ও আমরা আশাকরি পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য। সত্যি বলতে আমরা কেউ পৃথিবী থেকে যেতে চায় না। তবে আমরা কেউ মনে করি না পৃথিবী ক্ষণস্থায়ী। পৃথিবীতে আমাদের হায়াত নির্ধারিত ।আমাদের যখন হায়াত শেষ হয়ে যাবে আমরা যতই চেষ্টা করি না কেন আর পৃথিবীতে থাকার সুযোগ নেই।আর আমরা পৃথিবীর কোন কিছুই সাথে করে নিয়ে যেতে পারবো না। তবে এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে আমাদের এতো অহংকার কিসের। তাই আমাদের সবার উচিত পরকালের জন্য কিছু করা। শুধু পৃথিবীর মায়ায় আবদ্ধ থাকলে চলবে না। যাইহোক তাহলে চলুন শুরু করি আজকের পোস্ট।
প্রায় মাস খানেক আগের ঘটনা । আমার ননদের স্বামীর বয়স মোটামুটি (৬৫-৭০)বছর হবে মনে হয়। তার তিনটি ছেলে মেয়ে। মেয়ে ও বড় ছেলে বিয়ে করেছে কিন্তু ছোট ছেলে এখনো পড়াশোনা করছে।আর ভাইয়া ছিল কৃষি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার। প্রায় দুবছর ধরে অবসর প্রাপ্ত হয়েছে। ভাইয়ার শহরে নিজেস্ব একটা বাড়ি ও আছে। যাইহোক সবাই বেশ ভালোই আছে আবার ভাইয়া ও সম্পূর্ণ সুস্থ। ও যে বললাম না জীবন অনিশ্চিত। আসলে আমাদের এক মিনিটের ভরসা নিয়ে। এখন ভালো তো একটু পরে কেমন থাকবো বলা মুশকিল। একদিন ভাইয়া মসজিদে নামাজ পড়ে বাসায় আসছিল। আসার পরপরই তার পেট ব্যথা শুরু হলো।যেহেতু ভাইয়ার বাসা শহরের অতি নিকটে। তার বাসা থেকে হসপিটালে যেতে কয়েক মিনিট লাগে। তারপর সবাই তাকে হসপিটালে নিয়ে গেল।যাবার সাথে সাথে ডাক্তার সকল পরীক্ষা নিরিক্ষা করালো।আসলে ভাবতেই অবাক লাগে ভালো মানুষ মসজিদে গেল আর বাসায় আসার সাথে সাথে অসুস্থ।
তারপর দুদিন পরে পরীক্ষার রিপোর্ট দিল ধরা পড়লো ভাইয়ার ব্লাড ক্যান্সার হয়েছে। তারপর সাথে সাথে ঢাকায় নিয়ে গেল। ঢাকা থেকে সকল পরীক্ষা নিরিক্ষা করে, ক্যান্সারের কেমোথেরাপি দিয়ে বাসায় আনলো।আনার পরপরই ভাইয়া অনেক সুস্থ। আবার আগের মতো মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে কিন্তু আগের মতো আর শক্তি নেই শরীরে। তবে প্রতি সপ্তাহে কেমোথেরাপি দিতে হয়। আর কয়েক দিন পরপরই ঢাকা নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আনে। আর মাঝে মাঝে রক্ত দিতে হয়। এভাবে এক বছর পেরিয়ে গেল। ডাক্তার বললো আপনারা সপ্তাহে একটি করে কেমোথেরাপি দিবেন। আর ঢাকায় আসার প্রয়োজন নেই। তবে ভাইয়া বেশ ভালো ভাবেই খাওয়া দাওয়া করতে পারতো।তবে ভাইয়াকে তার ছেলেমেয়েরা কোন কষ্ট করতে দেয় নি। আবার যতক্ষণ প্রাণ আছে ততোক্ষণ তারা চিকিৎসা করাবে বাবাকে।আমরা মাঝে মাঝে গিয়ে দেখে আসতাম। হঠাৎ একদিন শোনি ভাইয়াকে হসপিটালে নিয়ে গিয়েছে। আসলে যেদিন হসপিটালে নিয়ে গেল সেই দিন দুপুরে আমরা ভাইয়াকে দেখে বাসায় আসলাম। আর রাতে শুনি হসপিটালে ।
তার পরের দিন সবাই হসপিটালে গিয়েছিলাম। হসপিটালে নেবার প্রায় একদিন পরে ভাইয়া হসপিটালে মারা যান।যদিও উনি সুস্থ ছিলেন হঠাৎ অনেক অসুস্থ হয়ে হসপিটালে ভর্তি হলো। তবে ক্যানসার হলে অনেকে অনেক দিন বেঁচে থাকে কিন্তু ভাইয়া ততোটা অসুস্থ না হলেও হঠাৎ করে মারা গিয়েছে।আজ অনেক দিন পরে আমার ননদের বাসায় গিয়েছিলাম সত্যি বাসাটা দেখে অনেক খারাপ লাগলো। তার সব কিছু পরে রয়েছে কিন্তু মানুষটা নেই। আসলে আমরা সবাই এভাবে একদিন পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব শুধু আগে আর পরে।ভাইয়ার মতো আমাদের সব পরে থাকবে শুধু আমরা থাকবো না।আল্লাহ সবাইকে সত্য পথে থাকার সুযোগ করে দিন, আমিন।
প্রয়োজনীয় | তথ্য |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @parul19 |
ডিভাইস | redmi note 12 |
লোকেসন | ফরিদ পুর |
আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।
https://x.com/MimiRimi1683671/status/1807061001616945388?t=6iCpCr8Dj1RaRPlO1f7mZg&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
উপরের লেখায় একটু ভুল রয়েছে আপু। পৃথিবীর মায়ার আমরা সবাই পরে আছি। আমরা সকলেই জানি যে আমাদের মৃত্যু হবে। এর পরে ও আমাদের কোন ভয় কাজ করে না। নিজের মতো করে চলছি আমরা সকলেই। কখন কার কিভাবে মৃত্যু হবে বলা মুশকিল। সব কিছুই তো সৃষ্টিকর্তার কাছে। আমাদের কে ও একদিন চলে যেতে হবে। বেশি বেশি দোয়া করুন। আপনার পোস্ট পড়ে খারাপ লাগলো দোয়া রইল সৃষ্টিকর্তা ওনাকে বেহেস্ত নসিব করুন আমিন।
গঠন মূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
সত্যি ই আপু জীবন আমাদের বড্ড অনিশ্চিত। কার কখন ডাক আসবে কেউ আমরা জানি না।আপনার ননদের হাসবেন্ড সুস্থ হয়েও হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরপারে চলে গেলেন।আর এজন্য ই আমাদের সব সময় তৈরি থাকতে হবে পরপারের জন্য। সবকিছুই পরে থাকবে দুনিয়ায়। সাথে যাবে শুধু ভালো আমল।
সাবলীল মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আসলে আমার জীবন কখনোই নিশ্চিত নয়। আমরা যেকোনো সময় মারা যেতে পারি৷ কেউ বলতে পারে না কখন সে মারা যাবে৷ একইসাথে মানুষকে অবশ্যই তার মৃত্যুকে বিশ্বাস করতে হবে৷ সে মৃত্যুকে মেনে নিতে হবে৷ তা না হলে কিছু করার থাকবে না৷ আপনার ননদের হাসবেন্ড সুস্থ হয়েও হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন শুনে খারাপ লাগছে৷