জেনারেল রাইটিং :-উপকার করলে বাঘে খায়, কথাটা একদম সত্যি

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

আসসালামু আলাইকুম

আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি ।

জেনারেল রাইটিং :-উপকার করলে বাঘে খায়, কথাটা একদম সত্যি

1000013637.jpg

বরাবরের মতো আজও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটা পোস্ট নিয়ে। আসলে আজ এসেছি একটা জেনারেল রাইটিং নিয়ে। আসলে সপ্তাহে একটি করে জেনারেল রাইটিং লেখার চেষ্টা করি। আমাদের চারপাশে ঘটে থাকে অনেক ঘটনা। সেগুলো অনেক সময় শিক্ষা নিয় হয়ে থাকে। আর আমার বাংলা ব্লগ এমন জায়গা যেখানে আমরা আমাদের ভালো মন্দ সম্পর্কে লিখতে পারি। সত্যি এখানে মন খুলে সকল কিছু শেয়ার করতে পারি। বিশেষ করে আমার বাংলা ভাষা মনের মতো লিখতে পারি। যাইহোক আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে যারা নিজেদের স্বার্থ নিজে ব্যস্ত থাকে। তবে পাশে আর কেউ মারা গেল কিংবা বেঁচে থাকলো দেখার কোন সুযোগ নেই। নিজের কাজ হলে এরা খুশি কিন্তু যাদের দিয়ে কাজ করানো হয় তারা কি খেল বা না খেলে তার কোন খবর নেই এদের কাছে।

যাইহোক আমাদের এক প্রতিবেশি নাম তার তাসলিমা যদিও এখানে আমি আসল নাম দেয়নি। আমি বিয়ের পর থেকে দেখে এসেছি সে এক বাড়িতে কাজ করে। আসলে কাজ বলতে তারা সবাই বেশ বড় লোক আর তাসলিমা ও তাদের গুষ্টির মেয়ে। যেহেতু তাসলিমার চাচা দাদি তাই তাসলিমা নিজে তাদের একটু দেখা শোনা করে থাকেন।আমার বিয়ের পরপরই তাসলিমার দাদি যদিও আপন নয়, গুষ্টির সম্পর্কের দাদি।তবে তাসলিমার চাচা দুজন একজন বাড়িতে থাকে আর একজন ঢাকায় থাকেন।তাসলিমার দাদি যখন অসুস্থ হয়ে ঘরে পড়ে গেল। তখন তাসলিমার চাচা ও ফুফুরা বললো তুই আমার মায়ের দেখাশোনা করবি বিনিময়ে তোর মেয়ের বিয়েতে আমরা সব দিয়ে দেব। আর এমনিতে টুকিটাকি কিছু দেয়। এভাবে প্রায় ৬ থেকে ৭ বছর তাসলিমা তার মায়ের দেখাশোনা করেছে। তারা তাসলিমাকে তেমন কিছু দিত না যেমন তরকারি তারপর ঈদে কাপড় চোপড় এই আর কি। তবে তাসলিমার স্বামী অটোরিকশা চালায় আর তাসলিমার বাড়ি একটু ভিতরে। তাই তাসলিমা তাদের জায়গার ওপর দিয়ে অটোরিকশা নেবার জন্য একটা রাস্তা বানিয়েছে।তাসলিমার চাচারা ও রাস্তা দিয়েছে। ।

প্রায় আট বছর পরে তাসলিমার দাদি মারা গেছে। তখন তাদের আর তাসলিমাকে দরকার নেই। এদিকে তাসলিমা সারাবছর অসুস্থ রোগী টেনে গেছে। যাইহোক তাসলিমার ঢাকার চাচা বাড়িতে এসে তাসলিমা যেখান দিয়ে রাস্তা করেছিল সেখানে বিল্ডিং করেছে। এখন তাসলিমার অটো ঘুরে আনতে হয় তারপর বৃষ্টি মেঘ হলে বাড়িতে আনতেও পারে না। এভাবে চলে গেল বেশ কিছু দিন। এদিকে তাসলিমার মেয়ে এসএসসি পরীক্ষা দেবে। তাই তাসলিমা তাদের বলেছে আমার কিছু টাকা দিলে ছেলেকে বিদেশে পাঠাতে পারি।তাই তারা বলেছে তুই আমাদের কিছু টাকা দে আমরা আরো কিছু ভরে তোর ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়।।

এদিকে তাসলিমা তাদের কথায় বিশ্বাস করে কিছু লোন নিল। তারপর তার চাচার ভাইরার কাছে টাকা জমা দিল। তারা বলেছে এক মাসের মধ্যে বিদেশে নেবে কিন্তু একবছর পার হয়ে গেল এখন টাকা ও ফেরত দেয় না আর বিদেশে ও নেয় না।আসলে তসলিমা তাদের বিশ্বাস করেই টাকা জমা দিয়েছিল কিন্তু তারা বিশ্বাস ভেঙে দিল।এখন তাসলিমাকে টাকা ও দিচ্ছে না তারপর আবার তাদের অটো নেবার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। তারা একটু ও তাসলিমার কথা মনে রাখে নি। আসলে তাদের মা মারা গিয়েছে এখন তারা বিপদ মুক্ত। কিন্তু তাসলিমা তাদের যে উপকার করেছে কয়েক বছর ধরে তার কোন দাম নেই। সত্যি এমন বাস্তব ঘটনা আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে থাকে। বিশেষ করে দুর্বল এর উপর সবলের অত্যাচার। আসলে উপকার করলে বাঘে খায়, কথাটা একদম বাস্তব সত্যি আমি মনে করি। আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। ।

প্রয়োজনীয়তথ্য
ফটোগ্রাফার@parul19
ডিভাইসredmi note 12
লোকেসনফরিদ পুর

1000000176.gif

আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

1000000175.png

আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।

1000000177.gif

1000000178.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 5 months ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে মনে হলো যে আপনি সমাজের বাস্তবতা এবং মানবিক দিকগুলোকে খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। তাসলিমার গল্পটি শুধু একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়, বরং এটি আমাদের সমাজের একটি বড় চিত্র প্রতিফলিত করে। আপনার লেখনীর মাধ্যমে আপনি পাঠকদের মনে একটি গভীর প্রভাব ফেলেছেন এবং সমাজের এই ধরনের অন্যায় ও অবিচারের প্রতি সচেতন করেছেন। এই চিন্তাকর্ষক পোস্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 5 months ago 

প্রশংসানীয় মতামতের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 5 months ago 

এই পৃথিবীতে উপকারকারীর কোন উপকার হয় না। যেহেতু তসলিমা কে তারা বিপদের সময় ব্যবহার করেছে এখন তাদের আর দরকার নেই। সত্যি মানুষ কথাই বলে এক আবার কাজের বেলায় অন্য রকমের। তসলিমা কে সেই দাদী মারা না যাওয়ার আগে সেই কাজগুলো করে নেওয়া উচিত ছিল। যেহেতু তারা বিপদ থেকে মুক্ত হয়েছেন এখন তাদের আর দরকার নেই। আপনি যে ডায়লগ টা দিলেন আমার বেশ ভালো লেগেছে।

 5 months ago 

আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো আপু, ধন্যবাদ আপনাকে।

 5 months ago 

আসলে এরকম বিশ্বাস ঘাতকের জন্য সবার বদনাম হয় কেউ সহজ ভাবে আর কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না।নিজের মা অসুস্থ থাকার কারনে তাসলিমা কে ব্যাবহার করেছে। মা মারা গেছে তাই তাসলিমার উপকার না করে উল্টে তাসলিমার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সৃষ্টি কর্তা অবশ্যই তাদের বিচার করবে।ধন্যবাদ আপু পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।

 5 months ago 

এটা সত্যি বিচার অবশ্যই হবে আগে বা পরে, ধন্যবাদ আপু।

 5 months ago 

আমিও এই কথার সাথে এক্কেবারে একমত। জীবনে অনেক উপকার করে বাঘের কামড় খেয়েছি। আজ আপনার পোস্টটি পরে সে কথাগুলো মনে পড়ে গেল । পোস্টটি আমার কাছে দারুন লেগেছে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 5 months ago 

আমি অনেক দেখেছি আপু উপকার করলে বাঘে তারে বেশি করে খায়, ধন্যবাদ আপনাকে।

 5 months ago 

আমরা যাদের আপন ভেবে সাহায্য করবো তারা এক সময় আমাদের থেকে দূরে পালিয়ে থাকবে। শুধু আমাদের নিজের স্বার্থের জন্য ব্যবহার করে। কিন্তু আমরা তাদের আপন ভেবে সব কিছু ত্যাগ করি। তাদের উদ্দেশ্যে থাকে বিপদে ফেলার। কিন্তু আমরা সেটি বুঝতে না পেরে তাদের পরিকল্পিত ফাদে পা দেই।খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপু। পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 5 months ago 

আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো, ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.16
JST 0.028
BTC 67340.80
ETH 2419.68
USDT 1.00
SBD 2.35