ময়নামতির জীবনের গল্প ১ম পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

আসসালামু আলাইকুম

আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি।


ময়নামতির জীবনের গল্প ১ম পর্ব

1000011603.jpg

Source

বরাবরের মত আজও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটা পোস্ট নিয়ে। আসলে আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়ত অনেক কিছু ঘটে চলেছে। আর এই ঘটনা গুলোই গল্প আকারে পরিণত হয়। আমি সব সময় চেষ্টা করি সপ্তাহে একটি করে গল্প শেয়ার করার জন্য। আর সেই চেষ্টা থেকে আজও এসেছি একটা গল্প নিয়ে। আসলে গল্প লিখতে ও পড়তে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আজ এসেছি ময়নামতির জীবনের গল্প নিয়ে। সত্যি বলতে মানুষের ভাগ্যের ওপর কারো হাত নেই। তবে এমন কিছু সন্তান আছে তাদের জন্য বাবা মা অসহায় হয়ে পড়ে। একজন মা হাজার কষ্ট করে সন্তান মানুষ করে আর সেই সন্তান বড় হলে মায়ের কোন খোঁজ খবর রাখে না।আর তেমনি এক ঘটনা ঘটে গেল ময়মতির জীবনে।


ময়নামতি দেখতে অনেক সুন্দর। তবে বাবার টাকা পয়সা থাকা সত্বেও ময়নামতিদের তিন বোনকে পড়ালেখা করায়নি। শুধু ভাইদের পড়ালেখা করিয়েছে। যাইহোক ময়নামতি ভাই বোনের সবার থেকে অনেক বড়। আসলে আগের দিনের বাবা মারা মেয়েদের তেমন পড়াশোনা করায়নি। ময়নামতি কোনরকম স্কুলে যেতে না যেতে তাকে তার বাবা বিয়ে দিয়ে দিল। ময়না আমাদের বয়স তখন ১২ থেকে ১৩ হবে। তবে ময়নামতি অনেক কাজ জানতো।আসলে এমনিতেই বয়স ছোট তারপর আবার শশুর বাড়ির সকল কাজ ময়নামতিকেই করতে হতো। তবে অন্যেরা ময়নামতিকে তেমন ভালো না বাসলেও ময়নামতির স্বামী তাকে অনেক ভালো বাসতো।


এভাবে কেটে গেল ছয়মাস, যতই দিন যাচ্ছে ময়নামতির জন্য দিন গুলো কঠিন হচ্ছে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ময়নাৃতির গর্ভে সন্তান এলো।সন্তান গর্ভে আসার পর থেকে ময়নামতি তেমন কাজকর্ম করতে পারেনি। এদিকে কাজ কম হলেই ময়নামতির ওপর নির্যাতন চলতে থাকতো। তবে ময়নামতি কোন প্রতিবাদ করতো না এভাবে কয়েক মাস যাবার পরে ময়নামতি একেবারে অসুস্থ হয়ে পড়লো।তখন ডাক্তার বললো ময়নামতিকে বেডরেস্ট এ থাকার জন্য। তখন ময়নামতির শশুর বাড়ির লোকজন তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিল। ময়নামতি বাবার বাড়িতে বেশ ভালোই ছিল। মাঝে ময়নামতির স্বামী গিয়ে দেখে আসতো


তারপর কিছু দিনের মধ্যে ময়নামতির ব্যথা উঠলো তখন তাকে হসপিটালে নিয়ে গেল।হসপিটালে নিয়ে যাবার পরপরই ময়নামতির পুত্র সন্তান এর জন্ম দিল।কিন্তু সন্তান জন্মের পরপরই ময়নামতি জ্ঞান হারিয়ে ফেলল। তারপর সকল ডাক্তার পরামর্শ করে ঔষধ পানি খেল। কিছু দিনের মধ্যে ময়নামতি সুস্থ হয়ে বাড়িতে চলে এলো।ময়নামতি বাবার বাড়িতে কিছু দিন থাকতে চেয়েছিল কিন্তু তার শাশুড়ি জন্য চলে যেতে হলো।তারপর অসুস্থ শরীর নিয়ে ময়নামতি শশুর বাড়ির সবারই মন রক্ষা করতে চেয়েছিল কিন্তু ময়নামতি তা রক্ষা করতে পারলো না।এভাবে হাসি কান্নার মধ্যে দিয়ে ময়নামতির দুটি পুত্র সন্তান জন্ম দিল। হাজারো সংগ্রাম করে ময়নামতি তার দুটি ছেলেকে মানুষ করেছে। এখন ময়নাৃমতির সুখের সংসার। তবে ময়নামতির কপালে সুখ কি আর সইবে। কিছু দিনের মধ্যেই ময়নামতির স্বামী মারা গেল। আর তখনি ময়নামতির জীবনে দুঃখ নেমে এলো।(চলবে)


প্রয়োজনীয়তথ্য
ফটোগ্রাফার@parul19
ডিভাইসredmi note 12
লোকেসনফরিদ পুর

আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

1000000175.png

আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।

1000000177.gif

1000000178.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 3 months ago 

ঠিক বলেছেন আপু, আগের দিনের মা বাবারা ভাবতো যে মেয়েদের পড়াশোনা করিয়ে কোনো লাভ নেই। কারণ তারা তো অন্যের সংসারে চলে যাবে। তাই তাদের ঘরের কাজ শেখাটা জরুরী। যাইহোক ময়নামতির শ্বশুর বাড়ির পরিবার তো দেখছি অনেক খারাপ। গর্ভবতী অবস্থায় একজন মহিলা কি তেমন কাজ করতে পারে নাকি। কিন্তু তবুও যদি কাজ করার জন্য চাপ দেয় এবং নির্যাতন করে, এটা খুবই খারাপ একটি কাজ। যাইহোক ময়নামতির স্বামী মারা গিয়েছে,এটা জেনে খুব খারাপ লাগলো। এখন দুই পুত্র সন্তান নিয়ে ময়নামতি কি করবে,সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64614.75
ETH 3444.80
USDT 1.00
SBD 2.55