জাকিয়ার অন্ধ ভালোবাসার গল্প প্রথম পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আসসালামু আলাইকুম

আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি।

জাকিয়ার অন্ধ ভালোবাসার গল্প প্রথম পর্ব

1000010236.jpg

Source

বরাবরের মতো আজও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটা পোস্ট নিয়ে। আসলে আমি সব সময় চেষ্টা করি সপ্তাহে একটি করে গল্প শেয়ার করার জন্য। আর গল্প মানে আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা। সত্যি বলতে অতিরিক্ত সব কিছুই খারাপ। আজ এসেছি বাস্তব একটা গল্প নিয়ে। আসলে আপনারা অনেকেই জানেন আমি একটা ট্রেনিং করছি দুই মাসের জন্য। এখনো দুই মাস শেষ হয় না। ট্রেনিং একটা মেয়ে আছে নাম তার জাকিয়া। আসলে অনেক দিন এক সাথে ট্রেনিং করছি তাই সবারই সাথে ভালোই পরিচিত হয়েছে। তবে জাকিয়া বয়স তেমন না আমাদের সেম বয়স হবে। যাইহোক এতদিন আমি ভাবতাম জাকিয়ার বিয়ে হয়নি। দেখতে শোনতে বেশ ভালো। এইচ এসসি পর্যন্ত সে পড়ালেখা করেছে। আর বিয়ে নিয়েই তার যত জ্বালা যাইহোক তাহলে চলুন শুরু করি আজকের পোস্ট।

জাকিয়ার বাবা একজন সেনাবাহিনীর অফিসার। জাকিয়া তার বড় মেয়ে। পরিবারের সবাই তাকে অনেক আদর করে। তবে জাকিয়া ক্লাস নাইনে থাকতে একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের প্রায় ছয় মাসের মধ্যে জাকিয়ার বয় ফ্রেন্ড সেনাবাহিনীতে চাকরি পায়।জাকিয়ার বয় ফ্রেন্ড এর নাম হৃদয় ।হৃদয় আসেলে মোটামুটি ভালো পরিবারের ছেলে। যাইহোক জাকিয়া এসএসসি পাশ করার পরে হৃদয়ের সাথে আরো বেশি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ল। কিন্তু প্রথম দিকে হৃদয় জাকিয়াকে অনেক ভালো বাসত। আর জাকিয়া হৃদয়কে তার জীবনের থেকেই বেশি ভালো বাসত।আসলে জাকিয়া এতটা ভালোবাসত বলে বুঝানো সম্ভব নয়। কারণ জাকিয়া যখন তার জীবনের কথা বলছে তখন তার দুচোখ জুড়ে পানি পড়ছে। সত্যি বলতে তার বিষয়টা কিছুটা হলেও আমি অনুভব করতে পেরেছি।


যাইহোক হৃদয় এর চাকরির দুই বছর পূর্ণ হয়েছে এখন তার বাবা মা তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য মেয়ে দেখতে লাগলো। এদিকে হৃদয় জাকিয়াকে কথা দিয়েছে বিয়ে করব। কিন্তু হৃদয় এর বাবা রাজি জাকিয়াকে তাদের ছেলের সাথে বিয়ে দিতে। তবে প্রথম দিকে জাকিয়ার বাবা রাজি না থাকায় বিয়েটা অনেক পিছিয়ে গেল।আর এর মাধ্যমে জাকিয়া এইচ এসসি পরিক্ষা দিল। তখন জাকিয়ার হৃদয় এর প্রতি ভালোবাসা দেখে জাকিয়ার বাবা বিয়েতে রাজি হলো।


যেহেতু জাকিয়া এইচ এসসি পরীক্ষা দিয়েছে রেজাল্ট এখনো বের হয়নি তাই তার বাবা এর মধ্যে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করবে। তবে ছেলের বাড়ির লোকজন ও রাজি। সবাই মিলে দিন তারিখ ঠিক করলো।জাকিয়ার বাবা তার মেয়ের জন্য গহনা আর আসবাবপত্র ও আনুষঙ্গিক জিনিস পত্র বানাতে দিল। আর ছেলেরা তেমন কিছু দিল না। যাইহোক মহা ধুম ধামে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গেল। জাকিয়া তার বরকে অনেক ভালোবাসে। এভাবে কেটে গেল এক মাস। তারপর জাকিয়ার বর তার চাকরিতে চলে গেল। সেখানে আবার মাস খানেক থাকবে।জাকিয়ার বর যাওয়ার পরে জাকিয়া বাবার বাড়িতে চলে এলো।গহনা গুলো সরল মনে তার শাশুড়ির কাছে রেখে। বাবার বাড়িতে কিছু দিন থাকার পর শশুর বাড়িতে গেল। তার কয়েক দিনের ভিতরে জাকিয়ার বর চাকরি থেকে চলে এলো।তবে আসার পর থেকেই হৃদয় জাকিয়ার সাথে খারাপ ব্যবহার করছে। তবে হৃদয় এর এত পরিবর্তন দেখে জাকিয়া অবাক দৃষ্টিতে শুধু তাকিয়ে থাকে আর কিছু বলার ভাষা খুঁজে পায় না।যাইহোক পরবর্তীতে কি হলো জানতে হলে পরের পর্ব গুলো পড়তে হবে। (চলবে)


আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

1000000175.png

আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।

1000000177.gif

1000000178.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 6 months ago 

জাকিয়া হৃদয় কে এতো ভালোবাসে যে তাকে বিয়ে করল। বিয়ে করার পর হৃদয় যখন চাকরি করতে গেল চাকরি থেকে এসে তার সাথে এত খারাপ ব্যবহার করল যে জাকিয়া অনেক কষ্ট পেল ।ভাইয়া জাকিয়া এবং হৃদয়ের গল্প শোনার জন্য পরের পর্ব সোনার আশায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

জি আপু শীর্ঘই পরবর্তী পর্ব নিয়ে আসার চেষ্টা করব, ধন্যবাদ আপু।

 6 months ago 

আপু আমি মনে করি ভালবাসাটা কোন অপরাধ নয় কিন্তু সেটা হতে হবে একজন সঠিক এবং বিশ্বস্ত মানুষের সাথে। যার দরুন জীবনের শেষ মুহূর্ত অবধি জীবনে কখনো দুঃখ নামক বিষয়টাকে অনুভব করা যাবে না জীবনে কঠিন সময় আসলেও। জাকিয়া এবং হৃদয় দুজনের খুবই গভীর সম্পর্কে এবং একে অপরকে ভালোবাসতো এটা আপনার পোস্ট করেই বোঝা যাচ্ছে। বিশেষ করে জাকিয়া তো অনেক বেশি ভালোবাসতো তা না হলে চোখ দিয়ে পানি পড়তো না। কিন্তু বিয়ে হওয়ার পর হৃদয়ের এরকম ব্যবহার পরিবর্তন হওয়ার বিষয়টি শুনে সত্যিই অবাক হয়ে গেলাম। কি হয়েছিল যার কারণে হৃদয়ে এরকম বিহাইভ করলো সেটা পরবর্তী পর্বে জানার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম আপু।

 6 months ago 

আসলে ভাইয়া হৃদয় কিভাবে পরিবর্তন হয়ে গেল আসলেও বোঝা মুশকিল। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 6 months ago 

আসলে ভালোবাসা সুন্দর যতক্ষণ পর্যন্ত দুটি মনের ভিতরে ভালোবাসার প্রতি সম্মান থাকে এবং ভালোবাসার প্রতি গুরুত্ব থাকে। কিন্তু এই ভালোবাসা খুবই খারাপ হয়ে যায় যখন ভালোবাসার প্রতি সম্মান আর থাকে না। জাকিয়া ও হৃদয়ের ভালোবাসা গভীর ছিল একে অপরকে খুবই ভালোবাসতো কিন্তু বিয়ের পর তাদের এই ভালোবাসার ভিতরে দূরত্ব বৃদ্ধি পেতে থাকে, জানিনা কি সমস্যার কারণে জাকিয়া এবং হৃদয়ে ভালবাসা এমন হয়েছিল। আসলে আগামী পর্বে পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্ট পড়ে গঠন মূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য,ধন্যবাদ আপনাকে।

 6 months ago 

জাকিয়া ও হৃদয়ে প্রেমকাহিনী বেশ ভালো লাগলো কারণ ওদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেয়েছে। এতো গভীর ভালোবাসা তবুও কেন হৃদয় জাকিয়ার সাথে এমন আচরণ করছে তা জানতে অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী পর্বের। ধন্যবাদ আপু গল্পটি শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

পরবর্তী পর্ব তারাতাড়ি নিয়ে আসার চেষ্টা করব, ধন্যবাদ আপু।

 6 months ago 

আজকে আপনি অনেক সুন্দর একটা গল্প লিখেছেন। কিন্তু গল্পটার শেষটা পড়ে একটু খারাপ লেগেছে। জাকিয়ার জন্য একটু খারাপ লাগছে। জাকিয়া হৃদয় কে খুব ভালোবাসতো। কিন্তু হৃদয়ের এরকম ব্যবহারের কথা শুনে তো আমার নিজের কাছেও খুব খারাপ লাগতেছে। আসলে এরকম কথাগুলো বলার সময় তো চোখে পানি আসবেই আপু। এর পরবর্তী পর্বটা পড়ার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। আসলে ভালোবাসার মানুষের এরকম ব্যবহার দেখলে সবাই অবাক হবে। অনেক সুন্দর করে আপনি লিখেছেন প্রথম পর্বটা।

 6 months ago 

আমরা শোনার সময় চোখে পানি চলে আসলো আর তো জাকিয়ার, ধন্যবাদ ভাইয়া।

 6 months ago 

আপু আপনি কিসের ট্রেনিং করেন? সেখানে সবার সাথে আপনার খুব ভালো সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে জেনে ভালো লাগলো। আপনার সাথে জাকিয়া নামের মেয়েটি ট্রেনিং করে আর সেই মেয়েটির জীবন কাহিনী আজ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। জাকিয়ার ভালোবাসা হয়তো সত্যি ছিল কিন্তু সেই ছেলেটির ভালোবাসা সত্যি ছিল না। মানুষ যখন উন্নতির দিকে যেতে থাকে তখন তার মধ্যে একটা পরিবর্তন চলে আসে। ঠিক তেমনি হৃদয়ের মধ্যে সেই পরিবর্তনটা এসেছে। তার জন্য জাকিয়া ও হ্নদয়ের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। যদিও পরিবারের মতামত নিয়ে তাদের বিয়ে হয়েছে তারপরও তাদের মধ্যে দূরত্ব থেকে যায় সব। জাকিয়া সরল মনে তার গয়না শ্বাশুড়ির কাছে দিয়ে আসে আর এদিকে তার স্বামী ছুটিতে এসে তার সাথে দুর্ব্যবহার করছে। এরপর কি হল জানার অপেক্ষায় রইলাম।

 6 months ago 

আসলে আপু ব্যবসা সংক্রান্ত একটা ট্রেনিং, চেষ্টা করব পরবর্তী পর্ব তারাতাড়ি নিয়ে আসার জন্য।

 6 months ago 

হ্যাঁ আপনি যে ট্রেনিং করেন বেশ কিছুদিন ধরে, সেটা আপনার পোস্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছিলাম। যাইহোক এতো ঝামেলার পর জাকিয়া এবং হৃদয়ের অবশেষে বিয়ে হলো,সেটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। আসলে প্রকৃত ভালোবাসার মিলন হলে খুব ভালো লাগে। তবে হঠাৎ করে হৃদয়ের এমন পরিবর্তন দেখে অবাক হয়ে গেলাম। আশা করি পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত জানতে পারবো। যাইহোক এতো চমৎকার একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 61986.20
ETH 2421.27
USDT 1.00
SBD 2.63