মিন্টু মিয়ার জীবনী প্রথম পর্ব||১০% বেনিফিসিয়ারি লাজুক শেয়ালের জন্য

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম

আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকল কে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি আজকের পোস্টঃ

মিন্টু মিয়ার জীবনী

boy-1226964__480.jpg

Source

মিন্টু মিয়ার জন্ম এক কৃষক পরিবারে। মিন্টু মিয়ার বাবা দরিদ্র কৃষক হলেও অনেক সত্য ছিল। মিন্টু মিয়ারা ছিল পাঁচ ভাই বোন, তিন বোন দুই ভাই।মিন্টু মিয়া ছিল সবার বড়। মিন্টু মিয়া পাঁচ ভাই বোনি এক বছর করে ছোট বড়।মিন্টু মিয়া যখন ছয় বছর এ স্কুলে ভর্তি হয় তখন তার ছোট ভাই ও বোনোরা সবাই ভালো করে খাওয়া শিকছে । কিন্তু মিন্টু মিয়ার বাবার পক্ষে এতো গুলো লোকজনের খাবার যোগার করার কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ল।

তবে মিন্টু মিয়ার বা কি করা সেও তো অনেক ছোট। মিন্টু মিয়া পড়াশোনায় অনেক ভালো। এখন তার বাবার এই অবস্থা দেখে মিন্টু মিয়া ভাবলো কিভাবে তার বাবাকে সাহায্য করা যায়।একদিন স্কুলে যায় আর ভাবতে থাকে কিভাবে তার বাবাকে সাহায্য করবে। কারণ ছোট ভাই বোনদের কষ্ট দেখে আর ভালো লাগে না।তারপর সে দেখে তার স্কুলের পাশে এক চাচার হোটেলের দোকান আছে। সেই চাচার নাম হলো রহিম । সেই চাচার লোক আছে আরো একজন লোকের দরকার । অনেক দিন ধরে লোক খুঁজছে। মিন্টু মিয়া বলল চাচাকে বলে দেখি আমাকে নেবে কি না।

স্কুলের টিভিনের সময় চাচার দোকানে গিয়ে বলল চাচা আপনকি লোক পেয়েছেন। চাচা বলল না কেনো কি হয়েছে। মিন্টু মিয়া বলল একটা কথা বলি, চাচা বলল কি বলবি বল। মিন্টু মিয়া বলল চাচা আপনি আমাকে দোকানে রাখবেন? আমি আপনার সব কাজ করে দেব। চাচা বলল তুই সব কাজ করতে পারবি। মিন্টু মিয়া বলল জি চাচা আমি পারবো। তারপর চাচা মিন্টু মিয়াকে বলল কাল সকালে আসবি। মিন্টু মিয়া তখন ক্লাস থ্রিতে পরে, প্রাইমারি স্কুলে থ্রির ক্লাস শুরু হয় ১২ টা থেকে।মিন্টু মিয়া সকাল বেলা ছয়টার সময় চলে গেল হোটেলে।

যাবার পর দেখল রহিম চাচা দোকানে নেই, দোকানের আরো একজন লোক ছিল সে বলল মিন্টু মিয়া তুমি প্লেট গুলো ধুতে থাক। মিন্টু মিয়া ছিল ছোট তাই সে প্লেট ধুতে পারবে কিন্তু কিভাবে ধুবে বুঝতে পারছে না।কারণ বেসিনটা অনেক উপরে সে লাগল পায়না । মিন্টু মিয়ার অনেক বুদ্ধি ছিল । সাথে সাথে সে চেয়ারের উপর চেয়ার দিয়ে প্লেট ধুতে শুরু করলো।ইতি মধ্যে রহিম চাচা দোকানে এলো,মিন্টুর কাজ দেখে অনেক খুশি হলো। তখন মিন্টু এসে বলল চাচা আমাকে সপ্তাহে তিন দিন ক্লাস করতে দেবে ১২ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত।রহিম বলল ঠিক আছে করবি।এতে মিন্টু অনেক খুশি ।এভাবে চলতে লাগল মিন্টু মিয়ার জীবন।মিন্টু মিয়া হোটেলে যখন লোকজন কম থাকে তখন বই নিয়ে পড়াশোনা করতে বসে। এভাবেই কাজ করে আর ফাঁকে ফাঁকে পড়াশোনা করে। এভাবে এক বছর পার হয়ে গেল, এখন মিন্টু মিয়া অনেক ভালো কাজ পারে। রহিম চাচাও খারাপ ছিলেন না। এক বছর মিন্টু মিয়াকে পেটে ভাতে রেখেছিল কিন্তু এখন যেহেতু মিন্টু মিয়া অনেক কাজ পারে তাই সে ভাবলো মিন্টু মিয়াকে কিছু টাকা দেবে।

মিন্টু মিয়া হোটেলে ঘুনায়,মাঝে মাঝে তার বাবা ও ভাই বোন এসে দেখা করে। এই মাস থেকে মিন্টু মিয়াকে ৫০০টাকা করে দেওয়া শুরু করলো।এভাবে মিন্টু মিয়া মনোযোগ দিয়ে কাজ করতো ও পড়াশোনা করতো। আসলে মিন্টু মিয়ার মেধা অনেক। সে চেয়েছিল পড়াশোনা করবে ও পাশাপাশি তার বাবাকে সাহায্য করবে। রহিম চাচা মিন্টুকে ৫০০ টাকা দিল সে বলল এই টাকা আমি বাড়ি নিয়ে বাবাকে দেবো। তখন রহিম চাচা খুশি হয়ে আরো দুই শত টাকা দিলেন মিন্টু হাত খরচের জন্য। মিন্টু মনের আনন্দে বাড়ি চলে গেল।



আজ এই পর্যন্তই। গল্পটি ভালো লাগলে আবার আসবো গল্পের বাকি অংশ নিয়ে। আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkKeUxjpvDicJC19Ww3PsohAvFMrugrSu1pSg638699Yh7Ad6pYix9LvdLXvARH2hxGmJfzFWD97xUzBMCRy1Fz5WLidW545LKQ.png

আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্মনিয়ে নিজেকে ধন্যমনে করি।ধন্যবাদ বাংলা ব্লগে এই বাংলা সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।

hPb2XtKwBGiwRzkrzveR1sSPznD4Wv2miQhHXdT4AQFLAHkykY3jBdZmCxJjk6ztifZuRFBV7zoGPBbLN7Lkye6VFmom81baPfeUCEyY7AHbTLxQc1o85rEUTzNp98...YVvDBETk3mJPgn7FZvEHUXrxkZzx8XXwvxZ1XaAXaUKMY1J4Jnwp1qFNdww2VMXKd9tbLkXzNUZiDGZRtCm2dynbYGBzJduBamEPX9ALJK2XX9TDqYeaKh8Gtd.gif

Sort:  
 2 years ago 

এমনটা হয়তো এখানেই সম্ভব।৫০০ টাকার সাথে আবার ২০০ হাত খরচ।অন্য গল্পের থেকে গল্পের ডিফারেন্স এখানেই।তাই পরের পর্বের জন্য আগ্রহ জন্মালো।অপেক্ষায় থাকলাম।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

মিন্টু মিঞার গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগলো এত ছোট্ট বয়সে বাবার পাশে দাঁড়ানোর জন্য হোটেলে কাজ শুরু করলো বিষয় টি খুবই কষ্টদায়ক হলেও এটা ভেবে ভালো লাগলো যে মিন্টু মিঞা তার বাবার কষ্ট একটু হলেও উপলব্ধি করতে পেরেছে। মিন্টু মিঞা আগামীতে নিশ্চয়ই অনেক ভালো কিছু করবে সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম আপু। সুন্দর গল্প টি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

জি আপু এতো অল্প বয়সে বাবার পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনেক চেষ্টা করছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

আসলে আমি মনে করি প্রত্যেকটা ছেলে মেয়ের উচিত বাবা মাকে সাহায্য করার চেষ্টা করা। মিন্টু মিয়া এত ছোট বয়স থেকে বাবা মাকে সাহায্য করতে শুরু করল। এমন কি বেসিন নাগাল না পেলেও, চেয়ার দিয়ে হলেও সে চেষ্টা করেছে কাজ করার। তবে হোটেলের দোকানদার তার চাচা লোকটিও ভালোই ছিল। কাজ শিখে যাওয়ার পরে মিন্টু মিয়াকে কিছু পারিশ্রমিক দিল। তার সাথে আবার বাবাকে দিয়ে দিবে বলেছিল, এজন্য আরো টাকা বাড়িয়ে দিয়েছিল। আজকাল এরকম দেখাই যায় না।

 2 years ago 

জি আপু আজকাল এমন মানুষ দেখায় যায়না, দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 years ago 

আসলে সমাজে এমন অনেক মিন্টু মিয়া আছে। যারা তার গরিব পিতার অসহায় অবস্থা তাকে সাহায্য করার জন্য ব্যাকুল হয়ে যায়। মিন্টু মিয়ার মত সবাই যদি হতো তাহলে আমাদের সমাজটা কতই না সুন্দর হতো। হোটেলে কাজ কর আবার নিজের লেখাপড়া বিষয়টা অত সহজ নয় কিন্তু।

 2 years ago 

জি আপু অনেক পরিশ্রম করে তারপরে ও পড়াশোনা করবে।এ দের জন্য আজ ও সমাজ টিকে আছে ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপনার গল্পটি খুবই সুন্দর ছিল আপু আপনার পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করবো। আর আমি দেখেছি আমার এক বন্ধুকে। তার বাবার একটি ছোট চায়ের দোকান ছিল যেখানে সে বিকেলবেলা করে বাবার সঙ্গে কাজ করতো এবং বাবাকে সাহায্য করতো। ধন্যবাদ সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপু বাবার দোকানে করা আর অন্যের দোকান এক নয়, ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করে পাশে থাকবেন।

 2 years ago 

মিন্টু মিয়ার গল্পটি পড়ে খুব ভাল লাগলো। মিন্টু মিয়া বাবার পাশে দাঁড়াতে এই ছোট বয়সেই হোটেলে কাজ নিল, খুব কষ্টের বিষয় কিন্তু ভাল ও লাগলো এই ভেবে এই বয়সে বাবার কস্ট সে বুঝতে পেরেছে।মিন্টু মিয়ার মতো যদি সব ছেলেমেয়ে বুঝতো,তবে কতই না ভালো হতো। অনেক ধন্যবাদ আপু। অনেক ভাল লাগলো।

 2 years ago 

সত্যি আপু মিন্টু মিয়ার মতো সবাই বুঝলে অনেক ভালো হতো।ধন্যবাদ আপু আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

মিন্টু মিয়ার মত এরকম ছেলে এখন তো দেখাই যায় না। খুবই ভালো লেগেছে মিন্টু মিয়ার জীবনের কাহিনী পড়ে। তার বেতনের ৫০০ টাকা তার বাবাকে দেবে বলার কারণে তার মালিক তাকে আরো হাত খরচের জন্য ২০০ টাকা বাড়িয়ে দেয় এটা জেনে ভীষণ খুশি হলাম। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করছি খুবই তাড়াতাড়ি পরের পর্ব নিয়ে হাজির হবেন। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

জি ভাইয়া এ যুগে এমন ছেলে পাওয়া সম্ভব নয়। চেষ্টা করবো তারাতাড়ি পরের পর্ব নিয়ে হাজির হবার।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 67808.66
ETH 3248.00
USDT 1.00
SBD 2.67