অগ্নি দূর্ঘটনা — শেষ পর্ব।
আমার বাংলা ব্লগের সকল ভাই এবং বোনেরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজও আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। টাইটেল দেখে অবশ্য এতক্ষণে বুঝে গিয়েছেন আজ আমি আপনাদের মাঝে কি ধরনের পোস্ট নিয়ে এসেছি। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব অগ্নি দুর্ঘটনার শেষ পর্ব। গত পর্বে আমরা জেনেছিলাম হঠাৎ শীতকালীন একটি মধ্যরাতে পাড়া প্রতিবেশী এক চাচীর গোয়াল ঘরে আগুন লেগে গিয়েছিল। সেই গোয়াল ঘরে ছোট বড় মিলিয়ে মোট ছয়টি গরু ছিল এবং দুইটি গরুর পেটে বাচ্চা ছিল। আর ছাগল ছিল মোট তিনটি। মসজিদে মাইকিং করার কারণে গ্রামের অনেক মানুষ চলে এসেছিল আগুন নেভানোর জন্য। গোয়াল ঘরে যেহেতু অনেকগুলো গবাদি পশু ছিল তাই সবাই মিলে দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করছিলো। এরপর থেকেই শুরু করছি গল্পের বাকি অংশ।
গোয়ালঘরের মধ্যে থেকে দুইটি গরুর দড়ি আগুনে পুড়ে গিয়েছিল জন্য আধপোড়া অবস্থায় গরু দুটি গোয়াল ঘর থেকে ছুটে চলে এসেছিলো। দুটি গরুর মধ্য থেকে একটির লেজ পুড়ে গিয়েছিল এবং অন্যটির শরীরে কোন পশম ছিল না,অতিরিক্ত আগুনের কারণে পশম পুড়ে গিয়েছিলো। পশম পুড়াতে মূলত গরুটি কালো বর্ণ ধারণ করেছিল। কিন্তু যে দুটো গরুর পেটে বাচ্চা ছিল এবং তিনটি ছাগল সহ আরো দুটি গরু গোয়াল ঘর থেকে বের হতে পেরেছিল না। যখন দুই তিন ঘণ্টা পর সবাই মিলে আগুন নেভাতে সক্ষম হলো তখন দেখা গিয়েছিল তাদের মৃতদেহ কিভাবে পড়ে রয়েছে। এটা দেখে সবারই খুব খারাপ লাগছিল। আগুনে পোড়ার কারণে যেই দুটো গরুর পেটে বাচ্চা ছিল তাদের পেটগুলো আরো বেশি ফুলে উঠেছিল। মনে হচ্ছিল যে পেটগুলো এখনই ফেটে যাবে। পেটে বাচ্চা নিয়ে গরু দুটি নিথর ভাবে পড়েছিলো। অন্য গরু এবং ছাগল তিনটি ওভাবেই পোড়া অবস্থায় পড়ে ছিলো। সবগুলো মৃত ছিল। এগুলো দেখে ঐ চাচীটা খুবই কান্নাকাটি করছিল।
সবাই মিলে যখন শুনলো এই আগুন লাগার কারণটি তখন ঐ মহিলার থেকে জানা গেল, যেহেতু শীতকাল গ্রামে প্রচুর মশা রয়েছে। তাই মশার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য গরু এবং ছাগলের ঘরে কয়েল জ্বালিয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু সে কয়েলটি জ্বালিয়ে বেঁধে রেখেছিল শুকনা পাট-কাঠির আঁশের সাথে।অনেকগুলো পাটকাঠি তাদের গোয়াল ঘরের ওপরে চালের নিচে জমা করা ছিল।পাটকাঠির গা থেকে আঁশগুলো ঝুলে ছিল। সেই আঁশের সাথে মূলত কয়েল জ্বালিয়ে বেঁধে রেখেছিল ওই চাচি। এখান থেকেই মূলত এতো বড় বিপদের সূচনা হয়েছিল। চাচির সামান্য একটা ভুলের কারণেই আজ এত বড় বিপদ।এটা ভুল নয় এটা বরং বোকামি ছিল চাচির।
কিন্তু যে গরু দুটি অর্ধদগ্ধ অবস্থায় বেঁচে গিয়েছিলো তারা প্রায় চার পাঁচদিন বাড়ি আসতো না। তারা খুবই ভয় পেয়েছিলো। গরু দুটি শুধু এদিক ওদিক দিয়ে ঘুরে বেড়াতো। কয়েকদিন পর যখন সবাই মিলে গরু দুটিকে ধরতে পারলো। তখন তাদের পশু ডাক্তার দিয়ে ভালো ট্রিটমেন্ট করা হলো। তারা সুস্থ হয়ে উঠলো ধীরে ধীরে। আমাদের সকলেরই উচিত সতর্কতার সাথে কাজ করা এবং সকল বিপদকে মোকাবেলা করা।
আসসালামু আলাইকুম। আমি নীলিমা আক্তার ঐশী। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি অনার্স ৪র্থ বর্ষের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্রী। আর্ট করা,ঘুরতে যাওয়া এবং রান্না আমার খুবই প্রিয়। প্রিয়জনদের পছন্দের খাবার রান্না করে খাওয়াতে এবং তাদের প্রশংসা শুনতে আমার খুবই ভালো লাগে। নতুন নতুন রেসিপি শেখার আমার খুব আগ্রহ রয়েছে। আমি ২০২৩ সালের জুন মাসে স্টিমিটে জয়েন হয়েছি।আমি বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে জয়েন হয়েছি সবার সাথে বিভিন্ন রেসিপি এবং আর্ট শেয়ার করার জন্য এবং সেই সাথে অন্য সবার থেকে দারুন দারুন সব ক্রিয়েটিভিটি শিখতে। বাংলা ব্লগ কমিউনিটি একটি পরিবারের মত আর এই পরিবারের একজন সদস্য হতে পেরে আমি অনেক খুশি।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আগুন আর পানি বেশ ভয়ংকর। আপনার আজকের পোস্টে সেই বিষয়টি আরও বেশী ফুটে উঠেছে। পশুও কিন্তু সেই আগুন কে ভয় পায়। যার কারনে গুরু গুলোও বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিল। বেশ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করলেন। আসলেই আগুন থেকে আমাদের সবাই কে বেশ সর্তক থাকতে হবে।
ঠিক বলেছেন আপু,, ভালো লাগলো আপনার মতামত পেয়ে।
আসলে এমন ঘটনাগুলোর জন্য আমরা মোটেও প্রস্তুত থাকি না। চাচীর গাভীটি পুড়ে মারা গিয়েছিল এটা জেনে খুবই খারাপ লাগলো। বাকি গরু দুইটা ভয় পাওয়ার জন্য বাড়িতেই আসতে চাইনি। গ্রামের দিকে এমন ঘটনাগুলো ঘটে থাকে। আমাদের দিকে এমন ঘটনা ঘটেছিল একবার।
গরু গুলো মারা গিয়েছিল জন্য আমাদেরও অনেক খারাপ লেগেছিল ভাইয়া। মূল্যবান মতামত দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
এই গল্পের প্রথম পর্বটি আমি পড়েছিলাম৷ আজকে এর শেষ পর্ব দেখে খুব ভালো লাগছে৷ আসলে আগুনে পুড়ে যাওয়া কখন কাউকে শান্তি দেয় না এবং যদি কেউ আগুনে পুড়ে যায় তখন তার অনেক কষ্ট হয়৷ তেমনি এই গরুদের এমন কষ্ট হয়েছে। একটি গরু যখন মারা গেল পরবর্তীতে যে গরুগুলো ছিল তারা আগুনের ভয়ে আর বাড়িতে যাচ্ছিল না৷ ধন্যবাদ এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷