আয়েশার সাথে ঘটে যাওয়া এক অদ্ভুত ঘটনা— শেষ পর্ব।
আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আজকের নতুন ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজও আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজ আমি আপনাদের সাথে আয়েশার সাথে ঘটে যাওয়া এক অদ্ভুত ঘটনার শেষ পর্ব শেয়ার করবো। গত পর্বে জেনেছিলাম, ১০/১১ বছর বয়সের একটি মেয়ে। নাম তার আয়েশা। হাফেজি পড়া কালীন হঠাৎ তার জবান বন্ধ হয়ে যায়। মেয়েটি ২০ পারার ও বেশি কোরআন হাফেজা হয়ে গিয়েছিল কিন্তু হঠাৎ তার কথা বন্ধ হয়ে যাওয়াতে সবাই খুব টেনশনে পড়ে গিয়েছিল। আয়েশার পিতা-মাতা তাকে অনেক জায়গায় ট্রিটমেন্ট করা শুরু করলো। বড় বড় ডাক্তার, কবিরাজ সব জায়গায় ট্রিটমেন্ট করাচ্ছিলো। কিন্তু কোন কিছুতেই কোন কাজ হচ্ছিল না।
যে মেয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, তাহাজ্জুদ এবং প্রতিনিয়ত কোরাআন পড়তো সে মেয়ের এসবের উপর থেকে মনই উঠে গিয়েছিল। ১৪-১৫ দিন তার এমন অবস্থা হয়েছিল। এই ১৪-১৫ দিনে সে প্রচুর খাওয়া দাওয়া করতো। কিন্তু কোন প্রকার ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হতো না এমনকি হাঁচি-কাশি কিছুই হতো না। এই বিষয়ে ডাক্তার দেখিয়ে আয়েশার কোন কাজই হচ্ছিল না। পরবর্তীতে আয়েশার পিতা-মাতা একটি ভালো হুজুরের সন্ধান পেল। যে কিনা কুরআনের মাধ্যমে চিকিৎসা করিয়ে থাকে। এই হুজুরটির মাধ্যমে তারা জানতে পারলো আয়েশার উপর খুবই খারাপ একটি জ্বীনের নজর পড়েছে।
আয়েশার পিতা-মাতা এটা শুনে খুবই ভয় পেয়ে গেল। তারা হুজুর কে বলল, যেভাবেই হোক আমার মেয়েকে আপনি সুস্থ করে দিন। সেদিন হুজুর অনেক চেষ্টা করলো আয়েশাকে হাঁচি দেওয়ানোর জন্য। আয়েশার নাকের মধ্যে বিভিন্ন জিনিস দিয়ে হাঁচি দেওয়ানের চেষ্টা করছিল হুজুর। কিন্তু কিছুতেই আয়েশার হাঁচি আসছিল না। এমনকি তার কোন সমস্যাই হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবে আমাদের নাকের মধ্যে একটু সুতা দিলেও কিন্তু হাঁচি চলে আসবে। কিন্তু আয়েশাকে হুজুর কোন কিছুতেই হাঁচি দেওয়াতে পারে নাই। যেহেতু তার টয়লেট হচ্ছিল না তাই তাকে বমি করানোর চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু সে বমিও করেছিল না। বমি করানোর জন্য হুজুর তাকে অনেক কিছু খাইয়েছিল কিন্তু কিছুতেই তার বমি হয়েছিল না। সেদিন যতটা সম্ভব ট্রিটমেন্ট করে হুজুর তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল।
হুজুরটি অনেক ভালো ছিলো। হুজুরটি কোরআনের মাধ্যমেই এ ধরনের রোগের চিকিৎসা করাই। আমরা মুসলিমরা সকলেই মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যে,কোরআনের মধ্যেই সকল কিছুর সমাধান রয়েছে। যেহেতু হুজুরও এটাই মানে তাই আয়েশার পিতা-মাতা বিশ্বাস করলেন যে,মহান আল্লাহ তায়ালা এই হুজুরের উছিলায় তাদের মেয়েকে সুস্থতা দান করবেন। এভাবেই হুজুরের কাছ থেকে তারা তাদের মেয়ের ট্রিটমেন্ট চালিয়ে যাচ্ছিল।
কয়েকদিন আগে আমরা শুনতে পাই, মেয়েটি নাকি হঠাৎ সেদিন সকালে তার মাকে "মা" বলে ডাক দিয়েছে। এটা একটি মায়ের কাছে কতটা খুশির বিষয় হতে পারে এটা আসলে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আমরা সবাই শুনে অনেক খুশি হয়েছিলাম। কারণ একটি ভালো মেয়ের হঠাৎ কথা বন্ধ হয়ে যাওয়াটা খুবই দুশ্চিন্তার বিষয় ছিল। এখন সে আগের মতই স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারে। আল্লাহর রহমতে এখন সে অনেকটাই সুস্থ হয়ে গিয়েছে।
এই গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই আপনাদের মতামত জানাবেন। আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো কোন নতুন গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো ইনশাআল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম। আমি নীলিমা আক্তার ঐশী। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি অনার্স ৪র্থ বর্ষের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্রী। আর্ট করা,ঘুরতে যাওয়া এবং রান্না আমার খুবই প্রিয়। প্রিয়জনদের পছন্দের খাবার রান্না করে খাওয়াতে এবং তাদের প্রশংসা শুনতে আমার খুবই ভালো লাগে। নতুন নতুন রেসিপি শেখার আমার খুব আগ্রহ রয়েছে। আমি ২০২৩ সালের জুন মাসে স্টিমিটে জয়েন হয়েছি।আমি বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে জয়েন হয়েছি সবার সাথে বিভিন্ন রেসিপি এবং আর্ট শেয়ার করার জন্য এবং সেই সাথে অন্য সবার থেকে দারুন দারুন সব ক্রিয়েটিভিটি শিখতে। বাংলা ব্লগ কমিউনিটি একটি পরিবারের মত আর এই পরিবারের একজন সদস্য হতে পেরে আমি অনেক খুশি।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_Copy.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmQL4SxGA9Sdnn4JMpnVSe79yHzro2uaokTzUcohwupjb2/Heroism_Copy.png)
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপু হুজুরের ঠিকানাটা তো তাহলে নিতে হয়। যাই হোক, আয়শার কথা শুনে বেশ আনন্দ পেলাম। এবং মনটাই ভালো হয়ে গেল। আপনি কিন্তু গল্পটি বেশ সুন্দর করে উপস্থাপনা করেছেন আপু। ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
গল্পটি সম্পর্কে এত সুন্দর একটি মতামত দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপু, আপনার এই গল্পের প্রথম পর্বটি আমি পড়েছিলাম। আর তখন জেনেছিলাম আয়েশার বোবা হয়ে যাওয়ার কাহিনীটি। আয়েশার জন্য তখন খুব খারাপ লেগেছিল, তবে এখন আবার নতুন করে মা ডাক দিয়ে তার কথা বলা শুরু করেছে জেনে খুবই ভালো লাগলো। কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে চিকিৎসা কার্যকরী তা নতুন করে বলার কিছুই নেই। কেননা আমরা মুসলমানেরা কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে অনেক চিকিৎসাই করে থাকি এবং সেই চিকিৎসা সুফল হয় তা প্রমাণিত। যাইহোক আপু, আয়েশার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
জ্বী ভাইয়া,, কোরআনে সবকিছুরই সমাধান রয়েছে এটা আমরা সব মুসলমানরাই বিশ্বাস করি।যাইহোক,, গল্পটি পড়ার মাধ্যমে এত সুন্দর একটি মতামত প্রকাশ করেছেন দেখে অনেক বেশি খুশি হলাম ভাইয়া।
যে মেয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, তার উপর তো জ্বীনের আছর পড়া উচিত হয়নি। তবে যে হুজুর বাচ্চা মেয়েটার ট্রিটমেন্ট করেছে, সে মনে হয় ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিল। যাইহোক, শেষ পর্যন্ত যে মেয়েটা কথা বলতে পেরেছি এবং তার মাকে "মা" বলে ডাকতে পেরেছে, এটাই অনেক বড় কথা। আসলে সৃষ্টিকর্তার পথে থাকলেও যে মাঝেমধ্যে বিপদ হতে পারে, এটা কোন প্রকারেই মানা যায় না।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া,, সৃষ্টিকর্তা কখন কাকে কোন বিপদে ফেলে দেন সেটা আসলেই বোঝা মুশকিল।
আসলে আমাদের আশেপাশে এমন অনেক কিছুই ঘটে যার হয়তো বৈজ্ঞানিক কোন ব্যাখা পাওয়া মুশকিল। কিনতু পরিচিতদের মাঝে এমন ঘটনা গুলো অতিপ্রাকৃত বিষয়ের উপর বিশ্বাস করতে বাধ্য করায়। যাই হোক, প্রায় ১৫-২০ দিন জবান বন্ধ থাকার পর, অনেক চেষ্টার পর আয়েশা মেয়েটি যে আবারো কথা বলেছে এটি নিশ্চিত ভাবেই তার মা-বাবার জন্য অনেক বড় খুশির এবং তৃপ্তির খবর।
জ্বী আপু,সবশেষে যে আয়েশা নামের মেয়েটি কথা বলতে পেরেছে এটাই অনেক বড় পাওয়া।