নাটক রিভিউ || হয়নি বলা কোনো কথা...
হ্যালো বন্ধুরা , কেমন আছেন সবাই ? আশা করি সবাই ভালো আছেন ৷ আমিও বেশ ভালোই আছি ৷ তো আজ আবারও আপনাদের মাঝে চলে আসলাম , একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে ৷ আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে ৷
নাটকের নাম | হয়নি বলা কোনো কথা |
---|---|
পরিচালক | সোহাগ রানা |
অভিনয়ে | তৌসিফ মাহাবুব ও সাদিয়া আয়মান |
দেশ | বাংলাদেশে |
ভাষা | বাংলা |
ডুরেশন | ৪৫ মিনিট |
নাটকের লিংক | ইউটিউব |
গল্পের শুরুতে রোহান ও সাদিয়া'কে দেখা যায় ৷ রোহান সাদিয়াকে দেখতে এসেছে ৷ তাদের বিয়ের আলাপ চলছে ৷ কিন্তু সাদিয়া এখন বিয়ে করতে রাজি নয় ৷ এজন্য সাদিয়া রোহান'কে বলেছে বিয়ের বিষয়টা যেনো আর না এগোয় ৷ রোহান কিছুটা মন খারাপ করে নিচে চলে আসে , এবং সবাই কে জানায় বিয়ে বন্ধের কথা ৷ আর এখানেই বিয়ের আলাপন শেষ হয় ৷ সাদিয়ার বাবা মা বিষয়টা কিছুটা টের পায় ৷ তারা বুঝতে পারে তাদের মেয়েই কিছু বলেছে রোহান কে ৷ এতোক্ষন তো সব ঠিক ছিলো হঠাৎ কি হলো ৷ সাদিয়ার বাবা মা রোহানের সাথে সাদিয়ার বিয়ে দিতে চায় ৷ কিন্তু সাদিয়া এখন বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না ৷
তার কিছু দিন পর...
সাদিয়া যাচ্ছে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে ৷ হঠাৎ তার সিএনজি নষ্ট হয়ে যায় ৷ এজন্য রাস্তার পাশে দারিয়ে থাকে সিএনজি ঠিক হওয়ার অপেক্ষা ৷ সেই সময় রোহানও যাচ্ছে অফিসে ৷ আর তাদের দু'জনের দেখা হয়ে যায় ৷ সাদিয়া'কে দেখে রোহান বাইক থামিয়ে দারায় ৷ এরপর টুকটাক কথাবার্তা হয় তাদের ৷ রোহান সাদিয়া'কে পৌঁছে দেওয়া কথা বললে সাদিয়া না করে দেয় ৷ সিএনজি ঠিক হতে আরো দশ পনেরো মিনিট লাগবে ৷ এজন্য তারা দু'জন সামনের চায়ের দোকান যায় এবং চা খেতে খেতে টুকটাক গল্প করে ৷ তাতেই সিএনজি ঠিক হয়ে যায়..এবং সাদিয়া চলে যায় ৷
রাতের বেলা খাবার টেবিলে সাদিয়া'র বাবা মা আবারও বিয়ের কথা বলে সাদিয়া'কে ৷ কিন্তু সাদিয়া এখন বিয়ে করতে চাচ্ছে না ৷ সে চাকরি করতে চায় ৷ সাদিয়া'র মা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে ৷ বিয়ের পরেও চাকরি খোজা যাবে , চাকরি করা যাবে ৷ বিয়ের বয়স তো পেরিয়ে যাচ্ছে ৷ রোহান ছেলেটা ভালো , তার সাথে তোকে বেশ ভালো মানাবে ৷ রাজি হয়ে যা মা ৷ এসব বলে সাদিয়া'কে বোঝানোর চেষ্টা করে তার মা ৷ কিন্তু সাদিয়া এখন কোনো ভাবেই বিয়ে করবে না ৷
পরের দিন সাদিয়া আবারও চলে যায় চাকরির ইন্টারভিউ দিতে ৷ হঠাৎ রোহানের সাথে আবারও দেখা হয় সাদিয়া'র ৷ আবারও টুকটাক কথা হয় তাদের ৷ সাদিয়া'র চাকরির বিষয়টা বুঝতে পেরে রোহান চাকরির ব্যবস্থা করে দেয় ৷ কিন্তু সাদিয়া নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেতে চায় ৷ এজন্য রোহানের দেওয়া চাকরি না করে দেয় সাদিয়া ৷ রোহান এই বিষয়টা ভালো ভাবে নেয় ৷ এরপর সাদিয়া'কে চা খেতে বলে ৷ সাদিয়াও রাজি হয়ে যায় , এবং চলে যায় তার অফিসে ৷ রোহানের অফিসে বসে চায়ের আড্ডা হয় তাদের ৷ পাশাপাশি রোহানের বিষয়ে টুকটাক জানতে পারে সাদিয়া ৷
সাদিয়'র রিলেশন ছিলো একটা ছেলের সাথে দু-বছরের ৷ কিন্তু ছেলেটা তার সাথে প্রতারণার করে চলে যায় ৷ এজন্য সাদিয়া মানসিক ভাবে কিছুটা ভেঙে পরে ৷ রোহান এই বিষয়টা জানে এবং সেজন্য সাদিয়া'কে সব সময় সাপোর্ট করার চেষ্টা করে ৷ তাদের মাঝে মাঝে দেখা হয় ৷ তারা ঘুরতে বের হয় আর চায়ের আড্ডা দেয় ৷ বেশ ভালোই যাচ্ছে তাদের দিন গুলো ৷
সাদিয়া'র পরিবারও রোহানকে বেশ পছন্দ করে ৷ তাই সাদিয়া'র মা সাদিয়া'কে বোঝানোর চেষ্টা করে ৷ আগের সব কিছু ভুলে গিয়ে রোহান কে বিয়ে করতে ৷ এবার সাদিয়াও কিছু টা খুশি হয় ৷ এতো দিনে রোহানের সাথে মিশে তারও ভালো লাগতে শুরু করে রোহান'কে ৷
কিছু দিন পর আবারও দেখা হয় রোহান আর সাদিয়া'র ৷ তারা বসে আড্ডা দিচ্ছে ৷ তাদের আড্ডা মাঝে হঠাৎ রোহানের ফোন আসে ৷ সে জানতে পারে তার ব্যবসার সব অর্থ লুটপাট করে চলে গেছে তার বন্ধু ৷ রোহান এবং তার বন্ধু মিলে দু'জন শেয়ারে বিজনেস করে ৷ আজ তার বন্ধু সব নিয়ে ভেগে গেছে ৷ এজন্য রোহান ভেঙে পরে ৷ তার কাছে আর কিছু যে সে আবারও ঘুরে দারাবে ৷
সাদিয়া রোহানের বিষয়টা বুঝতে পারে ৷ এবং রোহানকে সাপোর্ট করার চেষ্টা করে ৷ পরের দিন যখন সাদিয়ার পরিবার রোহানের এই বিষয়টা বুঝতে পারে ৷ তখন সাদিয়া'কে রেহানার সাথে মেলামেশা বন্ধ করতে বলে ৷ সাদিয়া'র মা সাদিয়াকে বলে দেয় যেনো সে আর রোহানের সাথে ঘোরাঘুরি কিংবা কোনোরকম সম্পর্ক না রাখে ৷ রোহানের কিছুই নেই , তার সাথে মেলামেশা বন্ধ ৷
রোহান যখন সাদিয়ার বাসায় আসে ৷ তখন সাদিয়া'র মা তাকে নানান কথা শুনিয়ে বাসা থেকে বের করে দেয় ৷ আর এ ও বলে , যেনো সে আর সাদিয়া'র সাথে কোনো সম্পর্ক না রাখে ৷ সাদিয়া মায়ের এমন আচরণ দেখে কষ্ট পায় , কিন্তু কিছু বলতে পারে না ৷ এদিকে রোহান সব হারিয়ে একা হয়ে যায় ৷ তার বিজনেস শেষ এদিকে সাদিয়াও নেই ৷ অর্থ হারিয়ে যেনো সব হারিয়ে ফেললো রোহান ৷
এদিকে সাদিয়া'কে তার মা বারবার বিয়ের জন্য জেদ করতে থাকে ৷ কিন্তু সাদিয়া বিয়ে করবে না ৷ শেষমেশ তার মা সাদিয়া'কে ইমোশনাল ব্যাক মেল করে জোর করে বিয়ে দিয়ে দে তার মামাতো ভাইয়ের সাথে ৷ সাদিয়া'র কোনো উপায় থাকে না ৷ মায়ের জেদের কাছে হেরে যায় সাদিয়া আর বিয়ে করে ফেলে ৷ তার বিয়ের কিছুক্ষণ পরেই রোহান তাদের বাড়িতে আসে ৷ সাদিয়ার মাকে বলে সে সব কিছু ফেরে পেয়েছে ৷ পুলিশ কেস করে সে তার হারানো সব কিছু ফিরে পেয়েছে ৷ এই বলে সাদিয়া'কে খুজতে থাকে রোহান ৷ কিন্তু সাদিয়া তো নেই তার বিয়ের হয়ে গেছে সাদিয়ার মা উত্তর দেয় ৷ রোহান এমন কথা শুনে চুপ হয়ে যায় ৷ আর নিশ্চুপ হয়ে চলে আসে ৷ রোহান আর সাদিয়া'র কান্না ভেজা চোখ দিয়েই গল্পটা শেষ হয় ৷
রেটিং:- ০৮
আমার মতামতঃ
তৌসিফ মাহবুব ও সাদিয়া আয়মান এর হয়নি বলা কোনো কথা এই নাটকটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে ৷ অনেক সুন্দর ছিলো নাটকের সম্পূর্ণ গল্প ৷ এবং সবার অভিনয়ও ছিলো অসাধারণ ৷ অনেকটা বাস্তবিক গল্প নিয়ে তৈরি এই নাটকটি ৷ আসলে বেকার ছেলেদের জীবন খুবই কঠিন এবং কষ্টের ৷ এই নাটকের শিক্ষণীয় বিষয়টি হলো "যখন তোমার সব থাকবে , তখন সবাইকে পাশে পাবে ৷ কিন্তু যখন তোমার কিছুই থাকবে না , তখন সবাই মুখ ফিরিয়ে নিবে ৷ টাকা থাকলে সবাই আপন , আর টাকা না থাকলে কাছের মানুষটাও পর ৷ যাই হোক , খুবই ভালো লেগেছে আমার নাটকটি দেখে ৷ আশা করি , আপনাদের ও সবার ভালো লাগবে ৷
নাটকের লিংক
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আগে প্রতিনিয়ত অনেক নাটক দেখতাম। তবে এখন ব্যস্ততার কারণে নাটক দেখা হয় না । আজ আপনি খুব সুন্দর করে অত্যন্ত চমৎকার ভাবে হয় নি বলা কোনো কথা এই নাটকটি রিভিউ করেছেন। আপনার নাটক রিভিউ দেখে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামত মন্তব্য করে জানানোর জন্য ৷
এই নাটকটি আমিও দেখেছি এবং এটার রিভিউ পোস্ট ও শেয়ার করেছিলাম। আপনি বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে রিভিউ করেছেন। আমার নিজের থেকেও আপনার রিভিউ পোস্ট টি অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আপনার লেখার হাত খুবই ভালো। আশা করবো এভাবেই কন্টিনিউ করবেন। তবে একটা সাজেশন থাকবে, নাটক রিলেটেড কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আরোও এড করতে পারেন।
ধন্যবাদ দিদি , আপনার সুন্দর মতামত মন্তব্য করে জানানোর জন্য ৷
এই নাটকটি আমি দেখেছিলাম এবং আপনার কাছ থেকে আজকে আবার এই নাটকের রিভিউ দেখতে পেরে খুবই ভালো লাগলো৷ সাদিয়া আয়মানের নাটক আমি অনেক বেশি পরিমাণে পছন্দ করি। তার নাটক গুলো আমি কখনোই মিস করি না। অসংখ্য ধন্যবাদ সাদিয়া আয়মান ও তৌসিফ মাহবুব এর সুন্দর নাটকটি শেয়ার করার জন্য৷
আপনাকে ও ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ৷
এই নাটকটির কয়েকটি ক্লিপ ফেসবুক থেকে দেখেছিলাম।সাদিয়া আইমান এর নাটকগুলো আমার বেশ ভালো লাগে।আপনি খুব সুন্দর করে রিভিউ সাজিয়েছেন।ভালো লাগলো পোস্টটি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু , আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ৷
নাটক কম দেখা হলেও মাঝে মাঝে রিভিউ দেখতে খুব ভালো লাগে। খুবই চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ করেছেন ভাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।ভালো থাকুন সর্বদা ফ্যামিলির সবাইকে নিয়ে সব সময়এল এই কামনা করি।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ৷
এই নাটকটার রিভিউ করতে খুবই ভালো লাগছিল। তবে শেষের দিকটা পড়ে অনেক খারাপ লাগলো। প্রথম দিকে সাদিয়ার বাবা মা চেয়ে ছিল রোহানের সাথে তাকে বিয়ে দিতে। কিন্তু তখন সাদিয়া বিয়েতে অমত করেছিল, কারণ সে এখন বিয়ে করতে চায় না। তবে পরবর্তীতে সাদিয়া রোহানের সাথে মেলামেশা করার কারণে নিজেই খুশি হয়েছিল বিয়ের কথা শুনে। কিন্তু তখন রোহানের সবকিছু তার বন্ধু নিয়ে যাওয়ার কারণে, সাদিয়ার বাবা-মা বলেছিল যেন রোহানের সাথে কোন সম্পর্ক না রাখে। আর জোর করে সাদিয়াকে তার মামাতো ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়। কিন্তু বিয়ের কিছুক্ষণ পরে দেখা যায় রোহান তাদের বাড়িতে এসেছে। তবে এসব কিছু শুনে তার অনেক কষ্ট হয়েছিল। খুব খারাপ লেগেছে নাটকের শেষটা।
আসলেই নাটকের শেষটা ভীষণ কষ্টের ছিলো এবং অনেকটা বাস্তবিক ৷ ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ৷
এই নাটকের মধ্যে তৌসিফ আর সাদিয়া দুজনেই খুব ভালো অভিনয় করেছে, যা সম্পূর্ণ রিভিউ পড়েই বুঝতে পেরেছি। আসলে এখন এই বিষয়টা বেশি দেখা যায়, যখন একটা মানুষের সব কিছু থাকে তখন তার পাশে সবাই থাকে। তবে যখন তার কাছে কিছুই থাকে না, তখন কেউই তার পাশে থাকে না। এটাও হতে পারতো সাদিয়ার সাথে রোহানের বিয়ে হলে তখন তার সবকিছু চলে যেতে পারত। তখন সাদিয়ার ফ্যামিলি কি করত? বাস্তবিক গল্প নিয়ে এ নাটকটি তৈরি করা হয়েছে দেখেই ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ আপনাকে , আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ৷ আসলে বাস্তবতা ভীষণ কঠিন ৷ আর গল্পটা অনেকটা বাস্তবিক ৷