"দুরত্ব'' - নাটকের রিভিউ
হ্যালো বন্ধুরা , কেমন আছেন সবাই ? আশা করি সবাই ভালো আছেন ৷ আমিও বেশ ভালোই আছি ৷ তো আজ আবারও আপনাদের মাঝে চলে , একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে ৷ আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগে ৷
আসলে নাটক আমার ভীষণ পছন্দের ৷ সময় পেলেই আমি নাটক দেখার চেষ্টা করি ৷ অবসর সময় কিংবা রাত জাগা রাতে নাটক দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে ৷ প্রতিটা নাটকের মাঝেই একটা দারুণ গল্প থাকে ৷ বিশেষ করে বাংলাদেশের বাংলা নাটক গুলো আমার ভীষণ পছন্দের ৷ এই নাটক গুলোর মাঝে আছে আমার অন্যরকম এক ভালোলাগা ৷ কিছু দিন আগে আমি একটা নাটক দেখি , নাটকটির নাম দুরত্ব ৷ যেটার রিভিউ আজ আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো ৷ অস্থির কাহিনীর এই নাটক'টি আমার ভীষণ ভালো লেগেছিলো ৷ তাই আজ এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে চলে আসলাম ৷ আশা করি আপনাদের ও সবার ভালো লাগবে ৷ তো চলুন নাটকের রিভিউ শুরু করা যাক..
| নাটকের নাম | দুরত্ব |
|---|---|
| পরিচালক | জাহিদ হাসান |
| অভিনয়ে | নির্জন নাহুয়েল ও সুস্মিতা সিনহা ৷ |
| দেশ | বাংলাদেশে |
| ভাষা | বাংলা |
| ডুরেশন | ৪০ মিনিট |
| নাটকের লিংক | দূরত্ব |
গল্পের শুরুটা ইরাকে দিয়ে ৷ সে তার স্বামীর সাথে কথাও যাচ্ছে ৷ যাওয়ার পথে হঠাৎ তার চোখ আটকে যায় , ছন্নছাড়া রাস্তার এক পাগল ছেলেকে দেখে ৷ সেই পাগল ছেলেটাকে দেখে ইরা ফিরে যায় তার অতীতে....৷
হিমু নামের একটা ছন্নছাড়া আগোছালো ছেলে ৷ যে কখনো সময় মতো কোনো কাজ'ই করে না ৷ সকাল বেলা তারাহুড়ো করে ঘুম থেকে উঠে চলে যায় ইউনিভার্সিটিতে ৷ ক্লাস রুমে ঢুকতেই স্যারের কথা শুনতে হয় তাকে ৷ কারণ সে প্রত্যেক দিন দেরি করে আসে আর বড্ড আগোছালো ভাবে ৷ সেদিন তার এক্সাম ছিলো , কিন্তু সে কলম আনতে ভুলে যায় ৷ পাশের সিটে ছিলো ইরা , তার থেকে কলম নিয়ে লিখতে শুরু করে ৷ কিন্তু সে তো কিছুই পড়েনি , তাই সামনের বন্ধুর কাছ থেকে হেল্প চায় ৷ তার বন্ধু হেল্প না করে উল্টো স্যারকে বলে দেয় ৷ এজন্য সে সেদিন এক্সাম দিতে পারে না , স্যার তাকে এক্সাম হল থেকে বের করে দেয় ৷
এক্সাম শেষে যখন হিমুর সাথে তার সেই বন্ধুর দেখা হয় ৷ তখন হিমু জানতে চায় কোনো সে তার সাথে এক্সাম হলে এমন করলো ৷ তার বন্ধু উত্তরে বলে নিজের যোগ্যতায় এক্সাম দিতে ৷ এসব নিয়ে তাদের মাঝে টুকটাক কথা কাটাকাটি হয় ৷ একটা সময় হাতাহাতি ও হয় তাদের মাঝে ৷ সোখনে ইরাও ছিলো , তাদের থামানোর চেষ্টা করে ৷ কিন্তু তারা থামছে না দেখে ইরা হিমুকে একটা থাপ্পড় দিয়ে দেয় ৷ আর আজেবাজে অনেক কথা হিমুকে শুনিয়ে চলে যায় ইরা সেই ছেলেটার সাথে ৷ হিমু সেদিন চুপ ছিলো...
এর কিছু দিন পর হিমু বসে আছে ক্যান্টিনে , পাশেই কিছু বখাটে ছেলে ইরাকে নিয়ে বাজে কথা বলছে ৷ হিমু সে সব কথা শুনতে পায়.. একটা বখাটে ছেলে ইরা'র কাছে চলে যায় ৷ হিমু বঝাতে পারে ইরা'র সাথে খারাপ কিছু হতে পারে ৷ তাই সেও চলে আসে ইরা'র কাছে ৷ এসে তাই দেখে , বখাটে ছেলেটা ইরার সাথে খারাপ কিছু করতে যাচ্ছে ৷ তখন হিমু এসে ইরাকে বাঁচিয়ে নেয় ৷ ইরা বুঝতে পারে হিমু ছেলেটা আগোছালো হলেও মন্দ নয় ৷ মেয়েদের সম্মান করতে জানে ৷ তাই তো সেদিন ইরা হিমুকে থাপ্পড় দেওয়ার পরও হিমু কিছু বলেনি ৷
এরপর থেকেই ইরার ভালো লাগতে শুরু করে হিমুকে ৷ তাই সে সব সময় হিমুর সাথে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করে ৷ কিন্তু হিমু সব সময় তাকে ইগো করে চলে ৷ এভাবেই একদিন ইরা হিমুর পথ আটকিয়ে সরি বলে , এবং বন্ধু হতে চায় ৷ হিমুও আর না করতে পারে না ৷ তাই দু'জন বন্ধু হয়ে যায় ৷
তারা দু'জন এখন অনেক ভালো বন্ধু ৷ সব সময় তারা এক সাথে সময় কাটায় , আড্ডা দেয় , গল্প করে ৷ কয়েকদিনের মাঝেই তারা অনেক ভালো বন্ধু হয়ে যায় ৷ আর এভাবেই যেতে থাকে তাদের বন্ধুত্বের সেরা দিন গুলো ৷ ঘোরাঘুরি আড্ডা লেকের পাশে বসে বাদাম খাওয়া সব মিলিয়ে দারুণ সময় কাটাতে থাকে তারা ৷
সব কিছুই ভালো যাচ্ছে তাদের ৷ কিন্তু হিমু এখনো আগের মতোই আছে , অনেকটা অগোছালো জীবন পার করছে ৷ ইরার হিমুর জীবন পছন্দ নয় ৷ তাই সে নিজেই ইমুর জন্য কিছু কেনাকাটা করে এবং সে সব হিমুকে দেয় ৷ আর বলে , সে যাতে তার দেওয়া কাপড় গুলো পড়ে সুন্দর ভাবে সকাল সকাল ক্যাম্পাসে চলে আসে ৷ হিমু না বলতে গিয়েও বলতে পারেনা ৷ পরেরদিন হিমু সুন্দর ভাবে সেজেগুজে একটু গোছানো ভাবে ক্যাম্পাসে চলে যায় ৷ তাকে দেখে সেদিন অনেকই অবাক হয় ৷ তার এতো পরিবর্তন কিভাবে আসলো ৷ যে ছেলেটা ঠিকঠাক ক্যাম্পাসে আসে না , সে আজ সকাল সকাল চলে এসেছে ৷ সবাই বেশ খুশি হয় তার এই পরিবর্তন দেখে ৷
ইরা হিমুকে ধীরে ধীরে অনেকটাই ভালোবেসে ফেলেছে ৷ সেদিন হিমুকে এসব কথা বিভিন্ন ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে ইরা ৷ কিন্তু হিমু বুঝতেই পারছে না , ইরার ভাসোবাসার কথা ৷ সেদিন ইরার মন হয় প্রচুন ৷ আর এরপর থেকেই ইরা হারিয়ে যায় হিমুর থেকে ৷
ইরার সাথে আজ বেশ কয়েকদিন দেখা নেই হিমুর ৷ বার বার ফোন দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না ইরাকে ৷ হিমু ভীষণ মিচ করতে থাকে ইরাকে ৷ তার সাথে কাটানো প্রত্যেকটা মুহূর্ত মনে পড়ে যায় তার ৷ সে বুঝতে পারে তার এতো পরিবর্তন কেবল ইরার জন্যই সম্ভব হয়েছে ৷ তাকে ছাড়া তার জীবন চলবে না ৷ অসম্ভব ভালোবাসে ইরাকে ৷ তাকে হারিয়ে সে বুঝতে পারে ইরা কী ছিলো তার জীবনে ৷ সে ভীষণ একাকীত্ব অনুভব করে ৷ আর খুজতে থাকে ইরাকে ৷
হঠাৎ একদিন রাতে ইরাকে ফোনে পায় হিমু ৷ সে ইরাকে দেখা করতে বলে ৷ ইরা আর হিমুর দেখা হয় রাতের বেলা ৷ হিমু জানতে চায় কথায় ছিলো ইরা এতো দিন ৷ ইরা কিছু না বলে চুপ থেকে একটু পর বলে উঠে একটা খুশির খবর আছে ৷ তার আগেই হিমু বলে ফেলে তার ভালোবাসার কথা ৷ ইরা আবারও হিমুকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলে , সে তাকে ভালো বন্ধু ভাবে এর চেয়ে বেশি আর কিছু না ৷ তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে এই খাবারটাই হিমুকে জানাতে এসেছে ইরা ৷ ইরার কথা শুনে চুপ হয়ে যায় হিমু ৷ আর ইরা চলে আসে...
আসলে ইরারও হিমুকে অসম্ভব ভালো বাসে ৷ কিন্তু সেদিন হঠাৎ ইরার বাবা ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ে ৷ বাবার শেষ ইচ্ছে মেয়ে বিয়ে দেখার ৷ তাই পাত্র পক্ষ ডেকে এনে বিয়ে ঠিক করে ফেলে ইরার ৷ ইরা চাইলেও সেদিন কিছু বলতে পারে না ৷ বাবার অসুস্থতা আর হিমুর সাথে তার কোনো সম্পর্ক না থাকায় ৷ সেদিন হিমুকে ফিরিয়ে দিয়ে ইরা নিজেও কেদেছে ভীষণ ৷
আজ বহুদিন পর হিমুর এমন অবস্থা দেখে নিরবে আরো কাঁদতে থাকে ইরা ৷ এই সেই হিমু আজ যে পাগল হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷
গল্পটা এখানেই শেষ হয়......৷
রেটিং:-০৯
আমার মতামত:-
শুরুতেই বলবো দূরত্ব নাটকটি আমার ভীষণ ভালো লেগেছিলো ৷ অস্থির একটা গল্প নিয়ে সম্পূর্ণ নাটক'টি তৈরি ৷ সবার অভিনয়ও ছিলো অসাধারণ অপূর্ব ৷ আসলে এই নাটকটি অসমাপ্ত ভালোবাসার হৃদয় ছুয়ে যাওয়া অনুভূতির একটি গল্পের ৷ শুরুটা এলোমেলো ভাবেই , এরপর বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা ৷ কিন্তু শেষটা শুরু হবার আগেই শেষ ৷ এভাবেই পরিবারের কারণে অনেক ভালোবাসা হারিয়ে যায় ৷ তবে প্রত্যেকটা প্রিয় মানুষের উচিত ছেড়ে যাওয়ার আগে অনন্ত নিজের অসুবিধাগুলো প্রিয় মানুষটিকে জানানোর ৷ হয়তো তাদের মিথ্যা অভিনয়ের কারণে তাদের-ই প্রিয় মানুষ গুলো হয়ে ওঠে বেপরোয়া ৷ যাই হোক অনেক ইমোশনাল একটি নাটক ৷ শেষটা বিচ্ছেদের ৷ তবে অস্থির গল্পটা ৷ আশা করি আপনাদের ভালো থাকবে ৷ নাটকটি দেখার চেষ্টা করবেন সময় পেলে.. ৷৷
নাটকের লিংক:-
নাটক আমার খুব পছন্দ। খুব সুন্দর রিভিউ দিয়েছেন আপনি। আপনার রিভিউ পরে নাটকটি দেখার আগ্রহ পেলাম। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে নাটকটি রিভিউ করার জন্য।
আপনাকে ও ধন্যবাদ আপু , আপনার সুন্দর মতামত মন্তব্য করে জানানোর জন্য ৷
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
নাটকটা আমি দেখেছি বেশ ভালো লেগেছে আর নির্জন নাহুয়েল অভিনয় অনেক সুন্দর হয়। আপনি সুন্দর ভাবে গুছিয়ে রিভিউ আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামত মন্তব্য করে জানানোর জন্য ৷
চমৎকার একটি নাটক আজকে আপনি আমাদের মাঝে রিভিউ করে দেখিয়েছেন ভাইজান। আপনার নাটক রিভিউ টা কিন্তু আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছে। এ জাতীয় নাটকগুলো আমি খুবই পছন্দ করি। বর্তমান সময় নাটকগুলো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তরুণ সমাজের কাছে।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ৷
অনেক সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ পোস্ট করেছেন আপনি। এরকম নাটক গুলো দেখলে খুব ভালো লাগে। তেমনি নাটকের রিভিউগুলো ও খুব পছন্দ করি আমি। এই নাটকটার রিভিউ পড়তে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। তবে হিমু পাগল হয়ে গিয়েছে এটা দেখে সত্যি অনেক বেশি খারাপ লাগলো। ইরাও কিন্তু হিমুকে অনেক বেশি ভালোবাসতো। তবে তার বাবার অসুস্থতার কারণে ঐদিন কিছুই বলতে পারেনি। হিমু ইরাকে হারিয়ে পাগল হয়ে গিয়েছে। সম্পূর্ণটা সুন্দর করে লিখেছেন দেখে ভালো লেগেছে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মতামত মন্তব্য করে জানানোর জন্য ৷
দারুন একটি নাটকের রিভিউ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। নাটকের রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে নাটকের প্রথম অংশটি অনেক সুন্দর ছিল। আর মনে হচ্ছে নাটকের শেষের অংশটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। যাহোক নাটকের রিভিউ করে নাটকটি দেখতে খুব ইচ্ছে করছে আমার। সময় পেলে অবশ্যই নাটকটি দেখে নেব।
হ্যাঁ ভাইয়া শুরুটা সুন্দর ছিলো তবে শেযটা বিচ্ছেদের ৷
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আজ চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ পোস্ট শেয়ার করলেন। নাটকটির রিভিউ পোস্ট শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। নাটকটি যদিও দেখা হয়নি। সময় সুযোগ পেলে অবশ্য ই দেখব আশাকরি।
হ্যাঁ আপু নাটকটি সময় পেলে দেখার চেষ্টা করিয়েন , দারুণ একটি নাটক এটি ৷ আশা করি আপনার ভালো লাগবে ৷
নির্জনের নাটক গুলো অনেক সুন্দর হয় সব সময়। তার কয়েকটা নাটক আমি দেখেছিলাম। দূরত্ব নাটকটার রিভিউ পোস্ট পড়তে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আসলে ভালোবাসার মানুষ যদি নিজের থেকে দূরে চলে যায়, তখন অন্য মানুষটা একেবারে পাগলের মত হয়ে যায়। হিমুর এরকম অবস্থা দেখে আমার কাছে খুব খারাপ লেগেছে। তবে ইরার ও কোন কিছু করার ছিল না। আপনি এই নাটকে রেটিং নয় দিয়েছেন দেখে খুব ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ৷ আসলেই এই নাটকের শেষটা আমার ও ভীষণ খারাপ লেগেছে ৷
ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দিয়েছেন। আপনার রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। আমি নাটক দেখতে খুব পছন্দ করি। তারজন্য সময় পেলেই নাটক দেখা শুরু করি। ধন্যবাদ এত সুন্দর নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ৷