বর্ষা সিরিজ - ৩ || বর্ষা যাপনের আরও একটি কবি কথা|| ক্রিয়েটিভ রাইটিং ||
☔নমস্কার ☔
নীলমের লেখামিতে আপনাদের স্বাগত
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
ছবিটি এই ফ্রী সাইট থেকে নিয়ে অনুলিখন অ্যাপে লেখাটা লিখেছি
ভেবেছিলাম আজকে বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হয়ে যাবে আর আমরা আবার আগের মত সবাই একসাথে খাব। কিন্তু সেই গুড়ে বালি। কিছুই হলো না আমরা সেই একা একাই থেকে গেলাম। আপনারা কেউ নেই সে কারণে আজ আমাদের দাদা যে সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন যেমন ফিচার্ড পোস্ট, ব্লগার অফ দা উইক, কনটেস্ট, বা এবিপি ফান প্রশ্ন যেগুলো আমাদের রোজনামচা হিসেবে মন্ত্র মাতিয়ে রাখে সেগুলি আপাতত বন্ধ থাকবে। আসলে কাদের নিয়েই বা সেগুলো চলবে? এই মুহূর্তটাতে আমার ২০২১ সালের করোনা লকডাউনের কথা মনে পড়ছে । অফিস কাচারি বা অন্যান্য সমস্ত পরিষেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। আমাদের এই আমার বাংলা ব্লগে যেন সত্যিই লকডাউন শুরু হয়েছে। আমরা জানি না কতদিন ধরে এই লকডাউন চলবে। আপনারা তাড়াতাড়ি ফিরে এলে আবার সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে আশা রাখি।
আর যারা রয়েছে তাদের জন্যই লিখে ফেললাম বর্ষা সিরিজের আর একটি গদ্য। এখানে আজ সকাল থেকেই বৃষ্টির বিরাম নেই। তবে মুম্বাই বা গোয়ার মত বিরাট বৃষ্টি হয় না। সামনের পাহাড় গুলো আর দেখা যাচ্ছে না। সবটা মেঘে ঢেকে গেছে। হু হু করে ঠান্ডা বাতাস দিচ্ছে সাথে ঝিরিঝিরি অবিরাম বৃষ্টি। এমন আবহাওয়া থাকলে বাড়ির এক কোনায় বসে একের পর এক কিছু না কিছু লিখে যেতে মন চায়। তা ভাবলাম এই কেন লিখবো বর্ষা সিরিজের আর একটা গদ্য লিখে ফেলি। আচ্ছা পশ্চিমবঙ্গে কেমন ওয়েদার? বৃষ্টি নেমেছে আপনাদের? বাড়ির সবাই বলে ওখানে নাকি এখনও প্রচন্ড গরম। আর এদিকে ঠান্ডা বাতাসের জন্য জানলা টুকুও বলতে পারিনা। আজ জানেন আমার ব্যালকনিতে দেখলাম ব্লিডিং হার্ট ফুল ফুটেছে। ভীষণ আনন্দ হয়েছে। ভালোই ফুলের কিছু ছবি আমি তুলব তারপর আপনাদেরকে দেখাবো। এর সাথে সাথেই তো গাছটাতে অনেকগুলো কুঁড়ি এসে গেছে, এবং বেগুনি রঙের জবা গাছেও কুঁড়ি ধরেছে। এগুলো দেখে ভীষণ আনন্দ হয়। ভাবছিলাম এই তো কিছুদিন আগে বাড়ি থেকে ছোট্ট ছোট্ট চারাগাছগুলো এনেছিলাম। সেগুলোই বড় হয়ে ফুল দিতে শুরু করে দিল। সময় কত তাড়াতাড়ি চলে যায় তাই না? চলুন আর এদিক ওদিক না কথা বাড়িয়ে আপনাদের সাথে গদ্য টা শেয়ার করি।
বর্ষা সিরিজ ৩
জানলা গোড়ায় সকালে টাটকা রোদ ওঠার পর যদি ভেবে নিই আজ গাছের পাতায় মেঘ নেমে আসবে না তাহলে নিজেকে মূর্খ শামুক হিসেবে শুইয়ে দিতে হয় মাথাকাটা ঘাসের ওপর।
সময় আছে এসব ভাববার? চোখের ওপর চোখ দিয়ে যেভাবে জলে পা রাখি; শিহরণও পরিচিত রিংটোন৷
এই সব লিখব ভাবতে ভাবতেই ফোন চলে এলো। সাথে ঝড়, গুড়ি বৃষ্টি৷ দৌড়োদৌড়ি করতে গিয়ে ভুলে গেলাম আমার স্নানঘরে যাবার ছিল। অজান্তেই হাত থেকে খসে পড়ল অন্তর্বাস৷ পা দিয়ে ফেলি মোম রঙের ওপর। এঘর ওঘর আধভেজা জানলাগুলো বন্ধ করার পর মনে পড়ল ঘর মোছার কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই৷
গাছের দোলন আর মেঘের অস্থিরতা দেখতে দেখতে শুয়ে পড়ি। ঘুম পায়। অথচ, অসময়ে শোয়া আমার অভ্যেস নয়। বৃষ্টি পড়লে হয়তো ভুল পোকাগুলো মায়া ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে শরীর থেকে। একথা কেউ মনে করায় না। তাও ডুব দিই অসভ্য অভ্যাসের সাগরে৷ যেখানে রয়েছে নির্ঝঞ্ঝাট স্নানঘর৷
দেওয়ালে ঘষা কাঁচ, মাঝ বরাবর জলপ্রপাত। দরজার গায়ে গা এলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সূর্য কিংবা কোন দ্বিতীয় নক্ষত্র।নিজেকে খুলতে শুরু করলে কোমর কামড়ে নক্ষত্র এঁকে দেয় রাজ্যক্ষেত্র৷
বাইরে বৃষ্টি বাড়ে। শব্দ হয়। মুহুর্তে হারিয়ে যায় স্নানঘর, অলংকারিক সূর্য৷ নতুন সাবানের প্যাকেট খুলে ডুকে পড়ি মার্বেলের স্নানঘরে। শাওয়ার চালিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি দীর্ঘ সময়। চিহ্নহীন কোমরে সাবান লাগাই। বেসিনের পাশে ফেসওয়াস নিতে গেলে ফোন বাজে- "আপকি নজরো নে সামঝা প্যায়ায় কে কাবিল মুঝে"।
তো কেমন লাগলো আপনাদের আমার এই বর্ষা সেটি নম্বর গল্পটি? আশা করব কমেন্ট করে উত্তর দেবেন। এখন তো কমিউনিটিতে মাত্র কয়েকজন মানুষ তাই প্রত্যেকেই চেষ্টা করি প্রত্যেকের পোস্ট ভালো করে পড়ার তাই না? এই দু একদিনই বেশ কিছু পরিচিত মানুষ হয়ে গেছেন তারা আমাদের পশ্চিমবঙ্গের। সবাই আমার থেকে ছোট ছোট ভাই বোনের মতো। দিনে অন্তত একবার মেনশন করে ডিসকানে ডাক দেয়, তখন ভাবি এরাও তো আমার পরিবারের মতন। যদি কোনদিন আমি না থাকি তখন কোন না কোন একদিন এদের মনে আসবে। না থাকি মানে কমিউনিটি ছেড়ে যাওয়ার কথা বলছি না মনুষ্য জন্মের কথা বলছি।
বন্ধুরা আপনারা ভালো থাকুন। সৃষ্টির সাথে থাকুন। আবার আসবো কালকে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে। আজ এ পর্যন্তই থাক।
টাটা।
৫% বেনিফিশিয়ারি এবিবি স্কুল কে এবং ১০% বেনিফিশিয়ারি লাজুক খ্যাঁককে
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.