স্টুডিওপাড়ায় আজ ফুলের গল্প।। ফুলের ফটোগ্রাফি।।
☘️নমস্কার বন্ধুরা☘️
নীলমের লেখামিতে আপনাদের স্বাগত
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, আশাকরি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ। প্রতিদিনই ব্লগে কিছু না কিছু নিয়ে আসি। সব সময় চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে আমার ব্লগগুলো একঘেয়ে না হয়ে যায়। তার চিন্তাতেই আজকাল সারাদিন কেটে যায়। বলা যায় আমি বেশ ভালোই আছি। আসলে পারি তো অনেক কিছুই, কিন্তু সময়ের অভাবে কত কি যে চাপা পড়ে গেছে, কত কিছু করে উঠতে পারি না তা আমি নিজেই জানিনা। এই যেমন সেদিনই মান্ডালা আর্টটা আঁকলাম। প্রথমে তো ভাবিইনি যে কমপ্লিট করে উঠতে পারব। কিন্তু আপনাদের জন্য হয়েই গেল।
আসলে সব দিন তো সমান সময় হয়ে ওঠে না, তাই নানান ধরনের পোস্ট করতে হয়। আজকে সারা সকাল ধরে মহাভারতের উত্তরা নিয়ে পড়াশোনা করেছি। উত্তরা একটি অবহেলিত চরিত্র সেটা আমার মনে হয়েছে। কত কম বয়সে অভিমুন্যর মৃত্যু ঘটলো, তারপর সে একাই হয়ে গেল। আসলে ভাগ্যের পরিহাস মানুষকে যে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যায় তা আমরা নিজেরাই জানিনা। এই সব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে মোবাইলের গ্যালারিতে দেখছিলাম বেশ সুন্দর সুন্দর ফুলের ছবি রয়েছে। তাই ভেবে নিলাম পোস্টটা ফুল দিয়েই করি।
সৃষ্টিশীল মানুষ আছে ফুল ভালোবাসে না এমনটা কিন্তু নয় তাই না? আমাদের বেশিরভাগেরই বাড়ির সামনে একটা বাগান আছে, আর তা যদি নাও থাকে জানালায় বা ব্যালকনিতে বাঘ বাড়ির ছাদে এক ফালি বাগান তো সকলেরই আছে। আজকাল অবশ্যই ইনডোর প্লান্টেশনটা অনেক বেশি প্রচলিত। আপনারা করেন ইনডোর প্লান্টেশন? এক সময় আমি অনেক করেছিলাম আমার প্রায় ১২-১৪ টা টব ছিল। অনেক ধরনের গাছ। আবার ইচ্ছে আছে নতুন করে করার। দেখা যাক যদি করে উঠতে পারি আপনাদের নিশ্চয়ই দেখাবো। তো চলুন দেরি না করে আজকে ফুলের ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করি আপনাদের সাথে।
ফুলেরই রংটি কি অসম্ভব সুন্দর সামনে থেকে। এ ক্যামেলিয়া ফোটানোর জন্য পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা সকালের রোদ্দুরের প্রয়োজন। যখনই ফুলটা ফুটেছিল তখনকার কবিতায় কতবার ক্যামিলিয়া নাম এসেছে আমার মনে নেই।
চন্দ্রমল্লিকা তো সবারই খুব পরিচিত একটি ফুল। সাধারণত শীতকালে ফোটে। এই চারাটি একদম ছোট্ট এনেছিলাম। কিন্তু সামান্য কয়েক দিনের মধ্যেই ফুল ফুটতে শুরু করেছিল। রংটা কি সুন্দর না?
শীতকালে খুব সহজে যে ফুল ফোটে এবং বেশ কিছুদিন ফোটা অবস্থাতেই থাকে তাহলে পিটুনিয়া। পিটুনিয়ার রং গুলো কি দারুন হয়। আমার প্রতিবারই সিঙ্গেল পিটুনিয়া থাকে কিন্তু সেইবার নার্সারীর কাকু ভুল করে একটি জোড়া পিটুনি আর চারা দিয়ে দিয়েছিল। তবে খুব একটা অসুবিধা হয়নি যত্ন করতে। টানা ছয় মাস বেশ সুন্দর ফুল ফুটেছিল।
এই চারাটা বাড়ির পাশেই একটা নার্সারি থেকে কিনেছিলাম। এর ফুলগুলো সারা বছরই ফোটে। আসলে কোথাও একটা বেড়াতে গিয়ে দেখেছিলাম, এই শাওয়ার অফ গোল্ড ফুল।দিয়েই রাস্তার দুই ধার সুন্দর করে সাজানো রয়েছে। দেখেই ভীষণ ভালো লেগে গেছিল, তারপর থেকে খোঁজ চালাতাম। আর পেয়েও গেছিলাম।
টবে এইসব ফুল সাধারণত ফোটে না। মাটিতে হলে বিরাট গাছ হয়। আর অনেকগুলো ফুল একসাথে ফোটে। কিন্তু তাও জেদ করে টবে লাগিয়েছিলাম। দীর্ঘ পরিচর্যার পর দু'চারটি ফুল ফুটেছিল। এবার আবার লাগিয়েছি দেখা যাক কি হয়।
রেইনলিলি কেই না চেনে। ছোটবেলায় বাড়ির সামনের উঠোনে মানে ভেতর দালানে এই বর্ষার সময়টায় প্রচুর ফুটে থাকত। যখন লাগানো হয়েছিল তখন দেখেছিলাম এর বীজটা পেঁয়াজের মত। ছোটবেলা থেকেই আমার ধারণা ছিল এটি পেঁয়াজ ফুল। পরে বড় হয়ে জেনেছি এর নাম রেইন লিলি।
আমার মনে হয় ফুলের মধ্যে সবথেকে সুন্দর অপরাজিতা। কি ক্লাসিক দেখতে। আর রংটা উফ যতবার দেখি কখনো চোখ ফিরিয়ে চলে আসতে পারি না। বড্ড প্রিয় অপরাজিতা।
এই ছবিটা আমার ব্যালকনি বাগানের নয় দেখেই বুঝতে পারছেন। এটি আমার দেশের বাড়ি সামনেই। ওখানে বাড়ির সামনে অনেকটা জুড়ে উঠোন রয়েছে তাই হলুদ আদা, এইসব লাগানো থাকে। হঠাৎ করেই দেখেছিলাম ফুলটির অপূর্ব সুন্দর দেখতে। বেশ কায়দা করে কয়েকটি ছবি তুলেছিলাম কিন্তু সেগুলো খুঁজে পাচ্ছি না।
আমাদের ছোটবেলায় নয়ন তারা মানে ওই একটি রানী কালারের নয়ন তারা ছিল। এখন নানান রকম হাইব্রিড ভার্সন এসে গিয়ে নয়নতারার নানান রং বেরিয়ে গেছে। তবে এগুলো খুব একটা টেকসই নয়। যখন তখন পোকা লাগে আবার একটু বেশি জল পড়ে গেলেই মুষড়ে পড়ে। তাও এই গাছটা প্রায় মাস ছয়েক মতো ভালো ফুল দিয়েছিল।
একে কে আর না চেনে বলুন, কি সুন্দর গন্ধ। অল্প একটু বাড়িতে এনে রাখলেই আর কোন রুম ফ্রেশনারের প্রয়োজন হয় না। আপনাদের পছন্দ বেল ফুল?
ফুল নিয়ে আসলে কিছুই বলার সাজেনা কারণ ফুল এমনি দেখতে সুন্দর তাই না? এই ফুলগুলো বিভিন্ন সময়ে আমার ব্যালকনিতে ফুটেছিল। বেশিরভাগ চারাই আমি আমার দেশের বাড়ি থেকে নিয়ে আসি। এখানে ভালো করে যত্ন নিইএবং ফুল ফুটিয়ে তুলি।
বন্ধুরা আমার এই ফুলগুলি কেমন লাগলো আপনারা জানাতে ভুলবেন না। ফটোগ্রাফি করে আমার শখ। যখন বাগান ভরা ফুল ছিল, সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই শুরু করতাম ফুলের ফটোগ্রাফি। আবার নতুন করে গাছ লাগিয়েছি জানিনা কবে ফুল ফুটবে। ফুটলে আবার দেখাবো।
বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই থাক। আবার আগামীকাল আসব অন্য কিছু নিয়ে। ততক্ষণ আপনারা ভীষণ ভালো থাকুন আর আমার ফুলের ফটোগ্রাফি উপভোগ করুন।
টা টা।
বিষয় | ফুলের ফটোগ্রাফি |
---|
ডিভাইস | আইফোন ১৩ |
স্থান | থানে, মহারাষ্ট্র |
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। তবে বর্তমানে বেশ কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ বর্তমানে ভারতবর্ষের পুনে তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অনেক সুন্দর সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি ধারণ করে আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। আপনার শেয়ার করা সবগুলো ফটোগ্রাফি দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি। বিশেষ করে ক্যামেলিয়া ফুলের ফটোগ্রাফি এবং চন্দ্রমল্লিকা ফুলের ফটোগ্রাফি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে
অনেক ধন্যবাদ জানাই। চেষ্টা করেছি কিছু ভালো ছবি তুলতে৷ তা আপনার ভালো লেগেছে শুনে খুব খুশি হয়েছি৷ আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই আপনাকে। ভাল থাকবেন৷
আপু আপনার ফটোগ্রাফি দেখে আমি মুগ্ধ হলাম। প্রতিটি ফটোগ্রাফি পরিষ্কার এবং স্বচ্ছ ছিল। আপনি খুব সুন্দর ভাবে ক্যাপচার করেছেন। স্থল পদ্ম ও ক্যামেলিয়া ফুলের ফটোগ্রাফি বেশি ভালো লেগেছে। চন্দ্রমল্লিকা ফুল আমার অনেক পছন্দের। নজর কাড়া ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
এখানে কিছু পোস্ট করার সাফল্য এটাই যে আপনাদের ভালো লাগে এবং সেটা গুছিয়ে বলেন। এই মন্তব্যগুলোই পাথেয়৷ অনেক অনেক ভালো থাকবেন দাদা৷ আপনাকে ধন্যবাদ জানাই৷ পোস্টটি যে আপনার মনে জায়গা করেছে এবং রিস্টিম করেছেন তার জন্য আপ্লুত৷ আন্তরিক শুভেচ্ছা রইল। খুব ভালো থাকবেন৷
সবকটি ফুলের ছবিই অনন্যতা দাবী রাখে। দক্ষ হাতের ফটোগ্রাফি সবকটি ছবিতেই পরিষ্কার। আইফোনের ছবি সত্যিই ভীষণ সুন্দর। প্রত্যেকটি ছবির অ্যাঙ্গেল মনে ধরে যাওয়ার মত। এমন ছবি তোলা ও সৃষ্টিশীলতা বজায় থাকুক।
চেষ্টা করি মাত্র। ছবি তোলার শখ তো প্রথম থেকেই। এক কালে অনেক পড়াশুনো করেছি ছবি নিয়ে৷ এখনও দেখি অনেক নামি-দামি পপুলার ছবিওয়ালাদের ছবি৷ কিন্তু কিছুই শিখতে পারি না এটাই আশ্চর্যের৷
শুভেচ্ছা রইল৷ ভালো থেকো
ফুলের গল্পে ফুলের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মন ভরে গেল। যদিও আমার প্রিয় ফুল হচ্ছে বেলি ফুল। তবুও তোমার ফটোগ্রাফিতে চন্দ্রমল্লিকা ফুলের ফটোগ্রাফিটি আমাকে বেশি টাচ করেছে। আর তোমার ফুলের ফটোগ্রাফির মধ্যে দেখতে পেলাম বহু বছর পর হলুদ গাছের ফুল।
ছোটবেলায় শুনেছিলাম এই ফুলের নানা রকম গল্প। ভালো থেকো, আলো হয়ে।
জানি না কেন সব ফুলই ফোটার পর দেখতে অসাধারণ লাগে৷
তোমার থেকে হলুদ গাছের ফুলের গল্পগুলো শুনব৷ কখনও পোস্ট করো।
মনে করে লিখবো কোনোদিন
অপেক্ষায় থাকব।