দুখু মিয়ার সুখে থাকার মন্ত্র
আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন? আশা করি আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো সুস্থ আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে নতুন ব্লগ শুরু করলাম।
পৃথিবীটা খুবই অন্যরকম। সব শ্রেণী পেশার মানুষ সুখে থাকতে চায়। কিন্তু সবার কপালে সুখ কী জোটে? না কোনভাবেই সুখ জোটে না। একটু সুখের আশায় সকল শ্রেণীর পেশার মানুষ অক্লান্ত পরিশ্রম থেকে শুরু করে অক্লান্ত ত্যাগ করে থাকে। জীবনের সবকিছু ত্যাগ করে শুধু একটু সুখের আশায়। কিন্তু তারপরও কপালে সুখ জোটে না। কয়েকদিন আগে আমি একজন সুখী ব্যক্তির সাথে কথা বলি। সে সারাক্ষণ বলে সে সুখে আছে। তাকে জিজ্ঞেস করলাম সুখে থাকার মূল মন্ত্র টা কি। সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পারলেও যে ব্যাখ্যা দিয়েছে আমি সন্তুষ্ট হলাম।
তার জীবন নিয়ে ছোট একটি গল্প আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। পরিবারের বড় দুখুমিয়া। নামের মধ্যে দুঃখ থাকলেও সব সময় পরিবার নিয়ে হাসিখুশি ভাবে থাকে। হাসিখুশি পরিবার নিয়ে আশেপাশের সবারই হিংসে হয়। এই লোকটা কিভাবে যে এতগুলো লোকজন নিয়ে সুখে থাকে। তার পরিবার অনেক বড় পরিবার। পরিবারের মধ্যে আটজন সদস্য রয়েছে দুখুমিয়ার। ছেলে সন্তান মা-বাবা ভাই-বোন সবাইকে নিয়ে তার সুখি একটি পরিবার।
পরিবারের সবাই হাসিখুশি ভাবে সময়টা কাটায়। কিন্তু দুখুমিয়ার ভিতরে কিছু কথা শুনে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম। তিনি বললেন আমি সুখী হওয়ার মন্ত্র হলো, আমি একজন গাধা এ জন্য। তার কথা শুনে আমি অবাক হলাম প্রথমে। দুখুমিয়া কে বললাম একটু বুঝিয়ে বলুন। আপনার কথার আগামাথা কিছুই বুঝতেছিনা।
তখন তিনি আমাকে বুঝিয়ে কিছু কথা বললেন। তিনি বললেন পরিবারের সবার সাথে সারাক্ষ দুষ্টামি করেন তিনি। কিন্তু কখনো কাউকে কিছুই বলে না। তিনি বললেন, আমি যদি আমার ছোট বোনকে যে কোন কাজের জন্য, বা লেখাপড়ার জন্য যদি ভালো কোন পরামর্শ দি, তাহলে তার খারাপ লাগবে। অনেক আগে একদিন ছোট বোনকে কিছু কথা বলেছে, দেখলাম সে রাগ করে অনেক দিন কথা বলল না আমার সাথে। সেই থেকে তাকে আর কোনদিনও কোন কিছুর জন্যই, কিছু বলতাম না। এভাবে ছোট ভাই স্ত্রী সন্তান সবাইকেই কোন কিছুর জন্যই বলি না। ভালো কিংবা খারাপ কোন কিছুর জন্যই কাউকে কিছুই বলে না। এজন্য নিজেকে গাধা বলে সে। অর্থাৎ সবার সবকিছু আমি সহ্য করে আছি, কাউকে কিছু বলি না এজন্য , পরিবারটা এত সুন্দর।
দুখু মিয়ার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। একপর্যায়ে কথা বলতে বলতে তিনি চোখের পানি ছেড়ে দিয়েছেন। পুরো পরিবার তিনি খুব কষ্ট করে হলেও পরিচালনা করে। এরপরও কাউকে কখনো কিছুর জন্য বলতে না। তিনি বললেন আমি যদি আজ একটি বিষয়ের জন্য রাগ করি , বা রাগ করে কাউকে কিছু বলি তখনই দুঃখ-কষ্ট অশান্তি শুরু। এজন্য সবাইকে আমি উন্মুক্তভাবে ছেড়ে দিয়েছি। ভালো খারাপ কিছু নিয়েই কাউকে কিছুই বলি না। এজন্য হয়তো আমার পরিবারের মধ্যে কোন অশান্তি নাই।
তখন আমি বুঝতে পারলাম, সব পরিবারেই ভালো কিংবা খারাপ কিছুর জন্য বললেই সংসারে অশান্তি হয়। যদি সব বিষয়ে নিজেকে ছোট করে গাধার মতো থাকতে পারে তাহলে কারো সাথে কোন সমস্যা হবে না। এক কথায় সুখে থাকার মূল মন্ত্র হলো নিজেকে গাধার মতো পরিবারের আত্মীয়-স্বজনের বন্ধু-বান্ধবের সব কথা সহ্য করতে হবে। কোনদিন কাউকে রাগ করে কিছু বলা যাবে না। যদি মুখ বুজে সব কিছু সহ্য করতে পারেন তাহলে আপনি সুখী থাকতে পারবেন। পরিবারের মধ্যে অশান্তি হবে না। আমি আশা করি বিষয়টা সবাই বুঝতে পেরেছেন।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আমার নাম নুরুল আলম রকি। আমার steemit I'd narocky71। আমি বাংলাদেশী নাগরিক । বাংলাদেশে বসবাস করি। তার সাথে সাথে আমি বিশ্বনাগরিক। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলি। বাংলা ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করি। আমি বাংলা ভাষাকে ভালবাসি। আমি ফটোগ্রাফি করতে ও ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে জল রং দিয়ে পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। যখনই আমার সময় এবং হাতে টাকা থাকে তখন ভ্রমণ করতে বেরিয়ে পড়ি। বিশেষ করে আমি ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি অনেক বছর আগ থেকে ফটোগ্রাফি করে থাকি। কিন্তু বিশেষ করে ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি বেশি করা হয়। বর্তমানে তার সাথে আর্ট করতে অনেক ভালোবাসি। বর্তমানে আমি বেশি সময় কাটাই আর্ট শিখতে। বর্তমানে আমার স্বপ্ন, আমি একজন ভালো ফটোগ্রাফার, ও একজন ভালো আর্টিস্ট হব। ( ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দুখু মিয়ার মন্ত্র পড়ে খারাপ লেগেছে। তবে এটা অনেকটাই বাস্তব বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্ষেত্রে। পরিবারের সবাই সবকিছু পছন্দ করবে না এটাই স্বাভাবিক তখন ভালো সম্পর্ক রাখার জন্য নিজেকেই সেক্রিফাইস করতে হয় যেমনটি দুখু মিয়া করেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনি ঠিক বলেছেন ভাই সেক্রিফাইস করলে সবকিছুই সুন্দর থাকা যায়। মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার আজকের বিষয়টি পড়ে বুঝতে পারলাম যে দুখু মিয়ার সুখের মন্ত্রটা খুবই কষ্টকর। আসলে এই পৃথিবীতে সেক্রিফাইস করলেই সব কিছু সম্ভব। কিন্তু সেক্রিফাইসটা যদি একেবারে বেশি হয়ে যায় তাহলে তো মুশকিল। সবাইকে সবার মত থাকতে দিলেই সবকিছু সমাধান। কিন্তু এভাবে কি আর সব সময় থাকা সম্ভব। দুখুমিয়ার ক্ষেত্রেও ঠিক সেটাই হয়েছে। বিশেষ করে এরকম মধ্যবিত্ত পরিবারের বেশি দেখা যায়। যারা কিনা নিজের পরিবারের শান্তি বজায় রাখার জন্য সবকিছু সহ্য করে।
ঠিকই বলেছেন মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্ষেত্রে এরকম বেশি দেখা যায়। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
এভাবে তো দুখু মিয়ার মত করে সুখে থাকা যায় না।এটা হচ্ছে সম্পূর্ণ সহ্য করা, নীরবতা পালন করা। একটা পরিবারের প্রধান ইনকামের ব্যক্তির কথা সবাই প্রাধান্য দেয়।দুখু মিয়া বেকার তাই এমন পরিস্থিতি তার এমন।সারাদিন এভাবে বসে থেকে অন্যজনের বোঝা হয়ে থাকলে তো এমনিতে সহ্য করতে পারবেনা কেউ।দুখু মিয়া যদি ইনকাম করে মোটা টাকা এনে দেয় তাহলে সবাই তার কথায় গুরুত্ব দিবে।আমি মনে করি এভাবে সুখে থাকার কোনো প্রয়োজন বলে আমি মনে করি না।
ঠিক বলেছেন আপু দুখু মিয়ার মত করে সবাই সুখে থাকতে পারেনা। কারণ সবাই সব সম্পর্কের সহ্য করা নীরবতা পালন করা সম্ভব নয়। আপনি আমার পোস্ট পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ
দুখু মিয়ার গল্প শুনে যা বুঝলাম তাতে মনে হল সেকি আদৌ সুখী? সে সুখী থাকার অভিনয় করছে তার কথাতেই তো বোঝা যাচ্ছে । সে ভিতরে ভিতরে অনেক কষ্ট পেয়েছে। সে কষ্ট পেয়ে কাউকে কিছু বলে না। বললে সবাই রাগ করে। এজন্য সে নিজেই সবকিছু সহ্য করছে। একে সুখী থাকা বলে না। অন্যের ভালোর জন্য কিছু বলে যদি দুঃখী থাকা লাগে আমার মনে হয় সেটাই ভালো।
কাউকে কিছু না বললে রাগ করে নিজের সহ্য করলে সবকিছু তাহলে সব পরিবারের সুন্দর থাকে। সব সহ্য করে হলেও পরিবার সুন্দর রেখেছে।
ঠিকই বলেছেন অনেকের সুখের পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে সারাটা জীবন শেষ হয়ে যায় সুখ পায় না। আবার অনেকে অল্পতে অনেক সুখী থাকে যেটা দেখতে ভালো লাগে। আসলেই চোখের সামনে সবকিছু দেখে যদি মুখ বুজে তা সহ্য করা যায় তাহলে আসলেই সুখে থাকা যায় আর মুখ খুললেই তখন অশান্তির সৃষ্টি হয়ে যায়। এভাবে মুখ বুজে থাকলে নিজের কষ্টটা বাড়ে আর কি।
আপনি ঠিক বলেছেন আপু অনেকেই অল্পতেই খুশি থাকে। এটা চিরন্তন সত্য মুখ বুঝে সবকিছু সহ্য করলে সুখে থাকা যায় কিন্তু সবার দ্বারা এটি সম্ভব নয়। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভাইয়া খুবই শিক্ষনীয় একটি গল্প শেয়ার করেছেন আপনি। আসলেই প্রতিটা পরিবারেই সুখ দুঃখের পাশাপাশি ছোট বড় অনেক ঝামেলাও থাকে। সেক্ষেত্রে মুখ বুজে সব কিছু সহ্য করার মধ্যেই পরিবারের সুখ শান্তি বজায় থাকে। সঠিক কথা বলতে গেলে অনেক সময় অশান্তির সৃষ্টি হয়। লোকটি ভাল কাজ করেছে পরিবারের শান্তি বজায় রেখে সবকিছু সহ্য করে চলেছে।বেশ ভালো ছিল গল্পটি।ধন্যবাদ।
ঠিক আপু এভাবে সহ্য করে থাকতে পারলে তাহলে সুখী হওয়া যায়। কিন্তু সহ্য সবাই করতে পারে না। অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
এক কথায় পড়ে যা বুঝলাম পুরো বিষয়টাই স্যাক্রিফাইসের। আসলে মধ্যবিত্ত পরিবারেই হয়তো এই ধরনের বিষয়গুলো দেখা যায়।কিছু মানুষ অন্যের সুখেই নিজের সুখ দেখতে পায়।নিজের ইচ্ছে চাহিদা সবকিছুকেই বিসর্জন দিয়ে মুখ বন্ধ করে থাকলে তাদের কাছে সমস্ত কিছু সঠিক।কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সবথেকে বেশি ভোগ করতে হয় তাদের। দুখু মিয়ার কথা শুনে বড্ডায় খারাপ লাগছে।কিন্তু কি আর করা যাবে?আমাদের প্রত্যেকের জীবনে বা পরিবারেই এমন কিছু মানুষ থাকে, যারা নিজেদের ভালো থাকাটাকে বিসর্জন দেয়,বাকিদের ভালো রাখার জন্য।
আপনার মন্তব্য ভীষণ ভালো লেগেছে। সবসময়ই মন্তব্য করে আমার পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ। দুখু মিয়ার কথাগুলো আমার নিজের কাছেও ভীষণ খারাপ লেগেছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ