সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমন - দ্বিতীয় পর্ব ১০% লাজুক খ্যাঁক-কে ৫% এবিবি স্কুল
আসসালামুআলাইকুম প্রিয় ব্লগার, আশা করি আল্লাহর রহমতে সুস্থ আছেন, আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব সেন্টমার্টিন ভ্রমনের দ্বিতীয় পর্ব, যারা এখনো প্রথম পর্ব দেখেননি তারা দেখে নিতে পারেন।
প্রথম পর্বঃ সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমন - প্রথম পর্ব (গাজিপুর থেকে টেকনাফ)
২য় পর্ব (টেকনাফ থেকে সেনমার্টিন দ্বীপ) রোমাঞ্চকর ভ্রমণ
সকালের সূর্য উদয় এর সাথে টেকনাফ এর জলাভূমি পরিদর্শন শেষ, নাস্তা করাও শেষ এবার সময় রওনা দেবার।
কিন্তু, এটা বিরতিহীন প্রায় চার ঘন্টার জার্নি হবে, এর জন্য কিছু শুকনো খাবার কিনে নিলাম। দুই প্যাকেট পটেটো চিপ্স, দুই প্যাকেট চানাচুর, ১০০ গ্রাম বাদম এবং একটা পানির বোতল।
আমাদের ট্রিকেট রেডি করে রেখেছিলেন "ট্যুরবাজ"
তাই তাদের দেয়া কার্ডটাই আমাদের ট্রিকেট।
গেট থেকে পাশ নিয়ে কাঠের ব্রিজে হেটে হেটে শিপের দিকে রওনা হলাম।
কাঠের ব্রিজ,
ছবিঃ শিপ ঘাট, টেকনাফ
শিপে উঠার সুবিধার্থে কাঠদিয়ে এই ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে
কাঠের ব্রিজের উপর উঠে দক্ষিণ দিকে তাকাতেই দেখা পেলাম সমুদ্রের দিকে বয়ে চলা নাফ নদীর অপরুপ দৃশ্য
ছবিঃ শিপ ঘাট, টেকনাফ । সময়ঃ ৮:১৫
শিপে উঠে ব্যস্ত হয়ে পরলাম সিট খোজা নিয়ে, কিছুক্ষণ খোজা পরে কলিকদের মাধ্যমে সবশেষে সিট পেলাম। কিন্তু জাহাজের সাইড দিয়ে কিসের যেনো হৈ-হল্লা। আমিও যোগ দিতে গেলাম সেই হৈ-হল্লাতে।
মাশাআল্লাহ, এ যেনো প্রকৃতির ডাক, আজ যেন মিশতে যাচ্ছি প্রকৃতির সাথে, আর এই জন্য সমুদ্রের পাখি গুলো এসে পরেছে স্বাগতম জানাতে।
ছবিঃ নাফ নদী, টেকনাফ
ভিডিওঃ স্লো-মোশনে নাফ নদীর পাখি গুলোর অপরুপ চিত্র
শিপ ছাড়তে ১০ মিনিট লেট করে। যখন শিপ ছেড়ে দেয়, পাখি গুলো শিপকে ঘিরে উরতে থাকে, অনেকে পাখির জন্য বাদাম ছুরে মারে অনেকে চিপস ছুরে মারে, মনে হয় এই খাবার গুলোর জন্যই পাখি গুলো শিপের চারপাশে ঘুরতে থাকে। এসময় শিপ কর্তৃপক্ষ চিপ্স ছুরে মার্তে নিষেধ করে কারণ চিপ্স গুলো পাখির জন্য ক্ষতিকর। একপর্যায়ে পাখিগুলোকে আর দেখায় যায় না, কারন ততক্ষণে সবার নিয়ে আসা খাবার শেষ হয়ে যায়।
এর পরে যদি আবার যাই। তাহলে, শিপে উঠার পূর্বে খাবার কেনার সময়, বাদামের পরিমানটা বারিয়ে দেবো।
নাফ নদী শেষ মানেই টেকনাফ এর সীমানা শেষ।
এবং মোবাইলের নেটওয়ার্কও শেষ। এখানে এয়ার্টেল নেটওয়ার্ক এর কিছুটা আভাস পাওয়া যায়। কিন্তু, সেগুলো মায়ানমার এর হওয়ার করনে কোন লাভ হয় না।
নদীর মাঝখানে যখন শিপ চলতে থাকে তখন, শিপের বাম দিকে বা পশ্চিম দিকে দেখা যায় মায়ানমার এর অংশ বিশেষ।
ভিডিওঃ টেকনাফ এবং নাফ নদীর শেষ অংশ
এর পরেই দেখা মেলে সাগরের নীল জলরাশি। কিন্তু নাফ নদীর ঘোলাটে পানির সাথে সাগরের পানির মিশ্রণের কারনে বুঝতেই পারছিলাম না কখন সাগরের বুকে চলে এসেছি।
ভিডিওঃ সল্প উত্তাল বঙ্গোপসাগর স্লো-মোশনে
এর কিছুক্ষণ পরেই দেখা মেলে সেন্টমার্টিন দ্বীপ।
শিপ দ্বীপে ভিরতেই সামনের দিকটায় ভীর বেঝে যায়।
এবং সবাই সবকিছু নিয়ে জাহাজ ত্যাগ করে, এ সময় ফোন পকেটে রেখেই সাবধানতার সাথে জাহাজ ত্যাগ করি। যে কারনে আর ছবি তোলা হয় না।
শিপ থেকে নেমে প্রথমেই বাজারের দেখা মেলে।
আমরা যে শিপে করে সেন্টমার্টিন দ্বীপে আসলাম, সেই শিপ এবার লোকজন নিয়ে আবার টেকনাফের উদ্দেশ্য রওনা দিবে, এবং সেই উদ্দেশ্যে প্রস্ততি নিয়ে আছে অনেক লোকজন। আর, এই ভীর কাটিয়ে প্রথমেই দেখা মেলে বাজারের।
বাজারের সকল খাবারের হোটেল গুলোতে অনেক ধরনের সামুদ্রিক মাছ রান্না করার জন্য তৈরি করে রেখেছে, যার যেটা পছন্দ অর্ডার করার সাথে সাথে রান্না করে খাওয়ার উপযোগী করে দিবে।
ছবিঃ সেন্টমার্টিন বাজার এর খাবার হোটেলে রাখা সামুদ্রিক মাছ
যাই হোক, সর্বপ্রথম আমাদের থাকার হোটেলে উঠতে হবে। আমাদের জন্য ট্যুরবাজ থেকে হোটেল বুকিং দেয়া আছে।
সমস্যা হলো সেই হোটেল কোথায় আছে?
আমাদের হোটেলের নাম "নীলদিগন্ত রিসোর্ট"
প্রায় ৮বর্গ কিঃমিঃ এর এই দ্বীপ থেকে খুজে বের করতে হবে আমাদের হোটেল।
যাইহোক ফোন বের করে গুগল ম্যাপকে দায়িত্ব দিলাম
এবং খুব সহজেই লোকেশন পেয়ে গেলাম।
এই রাস্তার সাথে ম্যাপের মিল থাকার পরেও একটু কনফিউশনে ছিলাম, কারন সেখানকার লোকেরাও হোটেলের নাম সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখেনি।
অবশেষে পেয়ে যাই আমাদের রিসোর্ট এবং অনেকটা কষ্টের পরে আমার রুমমেট সহ রুমের চাবি পেলাম।
আমাদের রুমে দুইটি বেড ছিলো, এবং আমরা মোট তিন জন ছিলাম।
সেই মূহুর্তে নিজেকে ভারি ক্লান্ত মনে হচ্ছিলো।
আমাদের দুপুরের খাবারের সিডিউল ছিলো দুপুর ২:৩০, এবং তখন বাজে ২:৪০ এর মত।
তারাহুরো করে বাথরুমে গোছল করে চলে যাই খাবার খেতে।
ছবিঃ নীল দিগন্ত, সেন্টমার্টিন
এ পর্বের সকল ছবি এবং ভিডিও এর ডিভাইস ছিলো আমার মোবাইল "অপ্পো এ৯ ২০২০"
আজ এপর্যন্তই,
তৃতীয় পর্বে আমি আপনাদের সাথে সেয়ার করবো এই ভ্রমনের বা সেন্টমার্টিন এর সৌন্দর্য।
যারা প্রথম পর্ব দেখেনি দেখে নিতে পারেনঃ
সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমন - প্রথম পর্ব (গাজিপুর থেকে টেকনাফ)
সকলে ভালো থাকবেন, সাবধানে থাকবেন এবং তৃতীয় পর্ব পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি, - আল্লাহ হাফেজ।
হও আমি তো সমুদ্রের উড়ন্ত পাখি গুলো দেখে একদম মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এত সুন্দর পাখি উড়তে সামনাসামনি আমি কখনই দেখিনি। তাছাড়া আপনি দেখতে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন। স্বিপে উঠার জন্য অনেক সুন্দর একটি কাঠের বি্রজ ছিল। আর সামুদ্রিক মাছ গুলো দেখে ভীষণ ভালো লেগেছে।
আসলেই অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু, আপনার মূলবান কমেন্ট করার জন্য।
ভাইয়া সি মার্টিন দ্বীপ আপনি খুব সুন্দর একটা সময় উপভোগ করেছেন। আমার খুব ইচ্ছা সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাওয়ার। সাগর পাড় দেখতে আমার কাছে। আর আপনি তো সাগর পাড়ে সাগরের মাঝখানে চলে গেলেন। যাইহোক সাগরের উপরে পাখিগুলো উড়া উড়ে দেখে আমার কাছে অসম্ভব ভালো লাগছে।
এটা সেনমার্টিন দ্বীপের যাওয়ার গল্প, পরের পর্বে সেয়ার করবো সেন্টমার্টিন এর সবকিছু, ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য
যদিও এখন পর্যন্ত সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যাওয়া হয়নি তবে খুব ইচ্ছে আছে বন্ধুদের সঙ্গে সেন্টমার্টিনদ্বীপে ঘুরাঘুরি করার। আপনার এই মুহূর্তে দেখেই বোঝা যাচ্ছে চমৎকার একটি সময় অতিবাহিত করেছেন সেখানে, শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ভাইয়া, তৃতীয় পর্বে দেখতে পাবেন দ্বীপের আরো সৌন্দর্য। টেকনাফ থেকেই শুরু হয় সেন্টমার্টিন এর সৌন্দর্য। যাইহোক তৃতীয় পর্ব দেখার আমন্ত্রণ রইলো
বলা যেতে পারে বাংলাদেশের সবচাইতে বেশি সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছি। আমার তৃতীয় পর্ব প্রকাশ করেছি, সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমন - তৃতীয় পর্ব
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করার জন্য
দীর্ঘদিন পর দ্বিতীয় পর্ব পোস্ট করলেন। আপনার এই পর্বের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ভিডিও দেয়ার কারণে পোস্টটা দেখতে আরো ভাল হয়েছে। তবে একটি জিনিস দেখে অবাক হলাম। আমরা সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার সময় ও পাখি দেখেছিলাম। কিন্তু এত পাখি একসাথে কখনো দেখিনি। যাই হোক পোস্টটি ভাল ছিলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ভাই,
স্টিম সল্পতার কারণে আমি কমেন্ট করতে পালছিলাম না সেই সাথে পোষ্টের ভেতরে ভিডিও কিভাবে দিবো এটানিয়ে কিছুটা কনফিউজড ছিলাম। কিন্তু বিষয়টা খুবই সহজ।
আর পাখি গুলো মনেহয় কপাল গুনে পেয়েছিলাম হয়তো।
আপনার মন্তব্য পেলে ভালো লাগা কাজ করে। 🙂
মামুন ভাই অসাধারণ অনুভূতি পেলাম। ভাগ্যে যদি থাকে তাহলে আমিও সেন্টমার্টিন যাব। তবে কাঠের ব্রিজ পার হয়ে আপনি যে দেখতে পেলেন অপরূপ সৌন্দর্য তা অমায়িক সেই সাথে সুন্দর ফটোগ্রাফি মজাদার খাবার সব মিলায় বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন উপস্থাপনার মধ্যে।
ভাই জান আপনার অনুভূতি আমি বুঝতে পরেছি। ভাবিকে সাথে নিয়ে যাবেন, দুজনে অনেক সূন্দর সময় অতিবাহিত করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
তৃতীয় পর্ব দেখার আমন্ত্রণ সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমন - তৃতীয় পর্ব