সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমন - প্রথম পর্ব

আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন ’আমার বাংলা ব্লগ’ সদস্যগণ , আশাকরি সকলেই অনেক ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভাল আছি।

আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার সেন্টমার্টিন ভ্রমনের গল্প, আশা করি যারা সেনমার্টিনে ভবিষ্যতে যাবেন, তারা একটু হলেও এডভান্স লেভেলে যাত্রা শুরু করতে পারবেন।

সেন্টমার্টিন ট্যুর - ৩০শে জানুয়ারি ২০২১

1612152969542.JPG
ছবিঃ সেনমার্টিন দ্বীপ, বাংলাদেশ
ডিভাইসঃ ক্যানোন ৭০০ডি

আমার এই ভ্রমণের স্পন্সর ছিলো 'অপ্পো মোবাইল বাংলাদেশ কোঃ লিঃ' এবং এটা পরিচালিত হয়েছিলো 'ট্যুরবাজ' এর মাধ্যমে,

প্রথম যাত্রাঃ গাজিপুর থেকে টেকনাফ

আমাদের যাত্রা শুরু হয় গাজীপুর থেকে, আমাদের যাত্রা তে অংশ গ্রহণ করে ১৫০ জনেরও অধিক সদস্য (গাজিপুর ও টাংগাইলের প্রায় সকল কর্মী)।

IMG20210130171327.jpg

যাত্রার শুরুতে সবার হাতে একটি করে এরকম ট্যুর কার্ড দিয়ে দেওয়া হয়, এবং এই কার্ড প্রতিটা জায়গায় আইডেন্টি বা ট্যুরের সদস্য হিসেবে কাজ করতে থাকে,

আমাদের বাস সন্ধা ৬টা নাগাদ গাজিপুর থেকে টেকনাফ এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।

গাজিপুরের জ্যাম কাটিয়ে বের হতে প্রায় ২ঘন্টা কেটে যায়, এটা কিছুটা বেদনাদায়ক ছিলো।
আমি গাড়ি ভ্রমণকে বড় ধরনের কষ্টসাধ্য মনে করি, বাসের ভেতরে অক্সিজেনের শুন্যতা আমাকে বমি করাতে উৎসাহ দেয়।

গাজিপুর শহর ছেড়ে হালকা অক্সিজেনের ছোয়ায় কিছুটা ভালো লাগে শুরু করে, এবং আমাদের হাল্কা খাবার হিসেবে একটা সিঙ্গারা, একটা কলা ও ছোট পানির বোতল দেয়া হয়। খাবার শেষ করে চোখ বুজে ফেলি, কারন জার্নি করলে শরিল অনেক দূর্বল হয়ে পরে। মাথায় এই বিষয়টা কড়া নারে আমাকে সুস্থ সবল থেকে জার্নি শেষ করতে হবে। তা,নাহলে সেনমার্টিন দ্বীপ উপভোগ করতে পারবো না। কিন্তু কোন ভাবেই ঘুম আসছিলো না, কলিগদের সাথে কথা বলতে বলেতেই সময় কেটে যায়।

রাত ১টা নাগাদ,
মাঝপথে কুমিল্লায় আমাদের যাত্রা বিরতি দেয়া হয় এবং ভারি খাবারের সাথে ডিনার করানো হয়।

IMG20210130223719.jpg
ডিনার শেষে ছবিটা তোলা হয়েছে, হোটেলের নাম মনে নেই, তাই উল্লেখ করতে পারলাম না

১ ঘন্টার বিরতির পরে আবার যাত্রা শুরু হয়, এবং কিছুক্ষণ পরে আবারো ব্রেক দেয়া হয় চা - কফি খাওয়ার জন্য।

আমার কাছে চা বেশি ভালো লাগে, তাই চা নিলাম।
মাশাল্লাহ, এটা সবথেকে ভালো ছিলো, আসলে জার্নিতে চা খেলে শরিলটা চাঙ্গা হয়ে যায়, এটা জানা ছিলো না, জার্নিতে চা এটাই ছিলো আমার প্রথম অভিজ্ঞতা।

এটা ১৫ মিনিটের ছোট্ট ব্রেক ছিলো। কিন্তু, অনেক বড় একটা সুস্থতার সাপোর্ট পেয়েছিলাম।

ভোর সারে চারটার দিকে গাড়িতে হালকা ঝাকুনি শুরু হয়, সকলের ঘুম ভেঙে যায়, গাড়ির সুপারভাইজার জানিয়ে দেন 'আমরা এখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এলাকাতে'।
একথা শুনতেই, জানালা দিয়ে উকি মেরে দেখতে থাকি, কিন্তু রাতের বেলা ভালো ভাবে দেখা যাচ্ছিলো না।

ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আমাদের টেকনাফ টু সেনমার্টিন বন্দরে পৌছানো হয়।

IMG_20210131_055709.jpg
ছবিঃ ভোর ৫টা বেজে ৫৭ মিনিট, ৩১ জানুয়ারী ২০২১
ডিভািসঃ অপ্পো এ নাইন ২০২০
নাইট মোডে ছবিটি ধারন করা হয়েছে।

সময়টা ভালো ছিলো, জাহাজের ট্রিকেট কাউন্টারের টয়লেট দেখতে পাই, এবং সুযোগ বুঝে প্রাকৃতিক কাজ সম্পন্ন করে ফেলি।

সকাল ৬টা ২০মিনিট,
আমাদের বাজারের একটা খাবারের হোটেল থেকে সকালের নাস্তা সেরে ফেলতে বলা হয়, এবং আমরা সকলেই নাস্তা শেষ করে বাজার পরিদর্শন করি

IMG20210131063939.jpg
ছবিঃ টেকনাফ বন্দর, সকাল ৬টা ৩৯মিনিট

খাবার শেষে নোটিস দেয়া হয় আমাদের জাহাজ ছাড়বে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে, কেও লেট করলে সম্পূর্ন দায় ভার তার,

নোটিস মাথায় রেখে লোনা পানি খুজতে বেরিয়ে পরি।

কিন্তি, জোয়ার ভাটার কারনে এ সময়ে লোনা পানির ছোয়া পাওয়া আর গায়ে কাদা লাগানো সমান ব্যাপার হয়ে দারায়।

IMG20210131071557.jpg

তবুও প্রকৃতির বুকে সকালের সূর্য দয় আর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়া স্থান মুগ্ধ করে দেয়। এ যেন এক বিমাল বিশুদ্ধতার মেলা

ইনশাআল্লাহ, দ্বিতীয় পর্বে সেয়ার করবো টেকনাফ থেকে সেনমার্টিন দ্বীপের যাত্রার ঘটনা।

ততক্ষণ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এই কামনা করি,
-আল্লাহ হাফেজ।

Sort:  
 2 years ago 

জাহাজ ভ্রমণ এর আগ পর্যন্ত গাজীপুর থেকে টেকনাফ অনেক লম্বা পথ পাড়ি দিয়েছেন। আপনি খুব চমৎকার করে যাত্রাপথের সম্পূর্ণ বিবরণ আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। সেন্টমার্টিন দ্বীপের সৌন্দর্য অবর্ণনীয়। সেটা স্বচক্ষে উপলব্ধি না করলে জীবনে অনেক বড় না পাওয়া থেকে যায়। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ফটোগ্রাফি গুলো দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

 2 years ago 

খুব সুন্দর করে আপনার যাওয়ার অভিজ্ঞতা গুলো আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন। আমার অনেক ইচ্ছা সেন্টমার্টিনে ঘুরতে যাব। যদি ভাগ্যে রাখে সেই জন তাহলে অবশ্যই যাব। প্রকৃতির বুকে সকালের সূর্য উদয় চমৎকার। ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকবো। শুভকামনা রইল।

অনেক ভালো লাগলো আপনার মনতব্য দেখে, যত জায়গায় ভ্রমন করেছি সবচাইতে সূন্দর জায়গা ছিলো সেনমার্টিন, দ্বিতীয় পর্বের জার্নিটা বেশ ভালোই

 2 years ago 

আপনিও দেখছি অনেকটা আমার মতো জার্নি করতে অপছন্দ করেন। আপনার পরবর্তী পোষ্টের অপেক্ষায় রইলাম। কারণ সেন্টমার্টিন আমার অত্যন্ত পছন্দের একটি জায়গা। ধন্যবাদ আপনাকে।

অনেক অনেক ধন্যবাদ, একমত পেষন করার জন্য। মূলত বাস জার্নিতে আমার ভ্রমনের সতেজতাকে দূর্বল করে তোলে। তাছাড়া, অন্যান যানবাহনে তেমন কোন সমস্যা হয় না।

 2 years ago 

আপনার এই পোস্ট দেখেই বোঝা যাচ্ছে সেন্টমার্টিনদ্বীপে অনেক চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন সেই সাথে কিছু সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি ও আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ভ্রমণ করতে আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আসলে এসব জায়গায় যেতে খুব ভালো লাগে বিভিন্ন দৃশ্য তো অনেক সুন্দর হয় যেগুলো দেখলে আসলে মনটা ভালো হয়ে যায়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আর পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60497.39
ETH 2637.52
USDT 1.00
SBD 2.56