জেনারেল রাইটিং-কয়লা মানব||
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি বিষয় আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। দুইদিন থেকে ফেসবুকে একটি নিউজ দেখে বারবার হৃদয় কেঁপে উঠছে। যতবার নিউজটি চোখের সামনে আসছে ততবারই খারাপ লাগছে। আপনারা হয়তো অনেকেই সেই নিউজটা দেখেছেন। একটি সিএনজি চালক কিভাবে নিমিষেই পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। আর সেই বিষয় নিয়েই কিছু কথা আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি।
কয়লা মানব:
আমাদের এই মানব জীবন ক্ষণিকের। কখন জীবনটা শেষ হয়ে যাবে কেউ জানে না। আমরা কত ব্যস্ততায় সময় কাটাই। কত স্বপ্ন নিয়ে নেমে পড়ি নতুন উদ্দেশ্যে। দিনশেষে আমরা বাড়ি ফিরতে পারবো কিনা সেটাও জানিনা। পরিবার-পরিজন সবাইকে ছেড়ে দূরদূরান্তে চলে যাই আমরা। হয়তো আমরা কখনো জানি না আর কখনো বাড়ি ফিরতে পারব কিনা। আর কখনো আপন মানুষগুলোকে দেখতে পারবো কিনা। কিংবা আমাদের আপন মানুষগুলো যখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে তখন তারাও জানে না আর কখনো বাড়ি ফিরতে পারবে কিনা। এমনকি আমরাও বুঝতে পারি না এটাই হয়তো আমাদের শেষ দেখা।
কয়েকদিন থেকেই ফেসবুকে ঢুকলেই একটি নিউজ দেখতে পাচ্ছি। একজন সিএনজি ড্রাইভার কিভাবে নিমিষেই একেবারে কয়লা হয়ে গেছে। সিএনজিতে বসে থাকা অবস্থাতেই যখন সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়েছে তখন হয়তো সে আপ্রাণ চেষ্টা করেছে নিজের প্রাণ বাঁচানোর। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। জলজ্যান্ত একজন মানুষ নিমিষেই পুড়ে ছাই হয়ে গেল। তার দেহটা ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেল। সোনার দেহ তার আজ যেন কয়লায় পরিণত হলো। সে যে কার আপনজন সেটা আমরা কেউ জানি না। কিন্তু যখন তার এই ক্ষতবিক্ষত কয়লা দেহটা তার পরিবার দেখেছে তাদের কি অবস্থা হয়েছে সেটাই ভেবে পাচ্ছিনা। অচেনা সেই মানুষটিকে দেখেই যখন আমার হৃদয় কেঁদে উঠেছে তখন বারবার ভাবছি তার আপন মানুষগুলো এই কয়লা মানব কে দেখে কতটা কষ্ট পেয়েছে।
যেই মানুষটি ছিল কারো আদরের সন্তান, কিংবা কারো স্বামী, কিংবা কারো বাবা সেই মানুষটি নিমিষেই কয়লা হয়ে গেল। জীবনের এই ভয়ংকর বাস্তবতা দেখে মাঝে মাঝে মনে হয় কেন এত লড়াই। কেন এত প্রতিযোগিতা। একদিন এভাবেই হয়তো আমাদের সাধের জীবন নিমিষেই শেষ হয়ে যাবে। সেদিন থাকবে না কোন প্রতিযোগিতা। থাকবে না কোন হিংসা-বিদ্বেষ। ক্ষণিকের এই জীবনে আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে আমরা নিজেরাও জানিনা। হয়তো সেই সিএনজি চালক জানতোই না তার এই ভয়ঙ্কর মৃত্যু হবে। তখন হয়তো কিছুই সে বুঝতে পারেনি। ক্ষনিকের মধ্যে কিংবা চোখের পলকেই শেষ হয়েছে তার দেহটা। তার পুরো শরীর পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে।
কারো প্রিয়জনের মৃত্যু এতটা ভয়ংকর হতে পারে এটা ভাবতেই খারাপ লাগছে। সেই মানুষটি হয়তো পরিবারের কাছে বিদায় নিয়ে সুস্থভাবে বেরিয়ে পড়েছিল উপার্জনের জন্য। কিন্তু তার আর ঘরে ফেরা হলো না। তার প্রিয় মানুষগুলোকে আর শেষবারের মতো দেখতে পেল না। সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হওয়ার সাথে সাথেই হয়তো তার প্রাণ প্রদীপটা নিভে গিয়েছিল। আর সেই সাথে পুরো শরীরটা একেবারে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। যেই মানুষটি এতটা কষ্ট পেয়ে মৃত্যুবরণ করেছে সেই মানুষটির জন্য সত্যিই অনেক খারাপ লাগছে। বিধাতা কার জীবনে কি লিখে রেখেছেন আমরা কেউ জানি না। তবে সব সময় প্রার্থনা করি এরকম ভয়ংকর মৃত্যু যেন কারো না হয়। যে মৃত্যুতে মানুষের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না যে মৃত্যুতে আপন মানুষগুলো তার প্রিয় মানুষটির মায়া ভরা মুখটি শেষবারের মতো দেখতে পাবে না সেই মৃত্যু কারোর না হোক।
জানিনা আমার এই পোস্ট পড়ে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে। তবে এই ঘটনাটি দেখে আমার ভীষণ খারাপ লেগেছে। বারবার যখন চোখের সামনে জলন্ত মানুষটির ছবি ভেসে উঠছিল তখন হৃদয়টা যেন বিষাদে ভরে উঠছিল। মনে হচ্ছিল কতটা কষ্ট পেয়ে একজন মানুষ এই পৃথিবী থেকে চলে গেছে এটা যেন তার জ্বলন্ত উদাহরণ। আর এই কয়লা মানবের জীবনের শেষ পরিণতি দেখে হৃদয় কেঁদে উঠেছে। তবুও বারবার প্রার্থনা করি সৃষ্টিকর্তা যেন এরকম ভয়ংকর মৃত্যু আমাদের শত্রুকেও না দেন। সৃষ্টিকর্তার কাছে বারবার বলি এমন মৃত্যু কাউকে দিওনা যেই মৃত্যুতে মৃত দেহটিকে আঁকড়ে ধরে তার প্রিয় মানুষটি চিৎকার করে কাঁদতে পারবে না কিংবা শেষবারের মতো স্পর্শ করতে পারবে না।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
এই নিউজটি আমি এখনো দেখিনি। তবে এই ধরনের মৃত্যু আসলেই মেনে নিতে খুব কষ্ট হয়। আমাদের জীবনটা একেবারেই অনিশ্চিত। এককথায় বলতে গেলে আমাদের জীবনের এক সেকেন্ডেরও গ্যারান্টি নেই। এই লোকটা কিন্তু জানতোই না এভাবে তার মৃত্যু হবে। তাহলে তো সে কখনোই সিএনজি চালাতো না। তাই আমাদের উচিত হিংসা বিদ্বেষ ভুলে সবার সাথে মিলেমিশে থাকা এবং পরকালের জন্য বেশি বেশি নেক আমল করা। যাইহোক দারুণ লিখেছেন আপু। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপু যদিও আমি নিউজটি দেখিনি। তবুও আপনার পোস্ট পড়ে আমার শরীরে কাটা দিয়ে উঠলো। সত্যিই তো আমাদের এই ক্ষনিকের জীবনে কত স্বপ্ন, আশা আর আকাঙ্খা। সত্যিই কি সেদিন সে জানতো যে সকালে ঘর হতে বের হওয়া মানুষটি আর ঘরে ফিরবে না। দারুন ছিল আজকের পোস্ট। ধন্যবাদ এমন মানবিক একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আসলে ওই নিউজটা দেখার পর এতটাই খারাপ লেগেছে যে বলে বোঝানো যাবে না। একটি জীবন্ত মানুষ পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। মানুষের কখন কি ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে সেটা কেউই জানে না। অপ্রত্যাশিত এই ধরনের মৃত্যুগুলো মানুষের মনকে নাড়া দেয়। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের এই মৃত্যুটি হৃদয় নাড়া দিয়েছে । তার জন্য অনেক অনেক দোয়া করি যেন পরকালে আল্লাহ তায়ালা বেহেস্ত নসিব করে।
আসলে আমি ভেবে পাচ্ছি না যে এত এত অগ্নিকাণ্ড কেন হচ্ছে। কতজন কত আশা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে কিন্তু এই অগ্নিকাণ্ডের কারণে অনেকের আর বাড়ি ফেরা হচ্ছে না। ওই সিএনজি ওনার ফটোটা আমিও দেখেছি। কিছুক্ষণ আগেই যে মানুষটা সুস্থ স্বাভাবিক ছিল কিন্তু কিছু সময়ের ব্যবধানেই সেই মানুষটা কয়লাতে পরিণত হয়ে গেল। দোয়া করি যেন আল্লাহ তায়ালা উনার পরিবারকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করেন।
আসলে এই নিউজটি আমি দেখেছি আর দেখে এতটা খারাপ লেগেছে আসলে, মানুষের মৃত্যু এভাবে হয়। কারো জীবনে যেন এরকম মৃত্যু না হয়। কিভাবে চোখের সামনে আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে যাচ্ছে। আসলে এই রকম দুর্ঘটনা যেন আমাদের প্রতিনিয়ত হয়ে যাচ্ছে। তবে আমি এতে পুলিশদেরই বেশি দোষারোপ করবো,কারণ তারা যদি এভাবে মামলার ভয় না দেখাতো তাহলে চালকেরা এভাবে গাড়ি চলাততো না।যাই হোক তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আর দোয়া করছি সে যেন পরকালে জান্নাতবাসী হয়।
পোস্টটি পড়ে খানিকের জন্য আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম আপু। এরকম মৃত্যুগুলো আমাদের অনেক বেশি কষ্ট দিয়ে থাকে। প্রিয়জনেরা চাইলেও আর সেই মৃত দেহটিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে পারেনা। হয়তো কোন সন্তান পিতৃহারা হয়েছে কোন স্ত্রী বিধবা হয়েছে আর কোন মা বাবা তার সন্তানকে হারিয়েছে। এরকম মৃত্যুগুলো আপনি ঠিকই বলেছেন আমাদের শত্রু কেও যেন আল্লাহ না দেন। মৃত সেই কয়লা মানবের পরিবারকে সমবেদনা জ্ঞাপন করছি আপু।
সমসাময়িক ভয়ংকর একটি ঘটনা নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট লিখে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে আপু সেদিন টেলিভিশনে খবরে দেখতে পেলাম সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে গাড়ির ড্রাইভার যেভাবে পুড়েছে এটা সত্যিই মনের দিক থেকে মেনে নেওয়া যায় না। পুরো বিষয়টি জেনে খুবই খারাপ লেগেছিল আমার। জ্যান্ত মানুষ দিনে দুপুরে আগুনে পুড়ে কয়লা। এর চেয়েও নির্মম ঘটনা আর কি হতে পারে?
এটা দেখার পর আমার খুবই খারাপ লেগেছিল আপু। ড্রাইভিং অবস্থায়ই পুড়ে ছাই হয়ে গেল। কতটা মর্মান্তিক মৃত্যু ছিল এটা। আমাদের জীবনটা আসলেই ক্ষনিকের আপু। কখন কিভাবে মৃত্যু এসে যায় বলা যায় না। আল্লাহ তায়ালা আমাদের এমন মর্মান্তিক দূর্ঘটনা থেকে বাচাঁর তৌফিক দান করুক।
আসলে এরকম ঘটনা গুলো যখন শুনি তখন অনেকটাই খারাপ লাগে। এরকম ঘটনা গুলো একেবারেই আশা করা যায় না৷ যেভাবে সেদিনের এই ঘটনাটি ঘটেছিল তা আমাদের সকলের মনের মধ্যে অনেকটা কষ্ট নিয়ে এসেছিল৷ কারন এরকম হঠাৎ করে ভালো মানুষগুলো যেভাবে পুড়ে ছাই হয়ে গেল তার থেকে বড় কষ্টের বিষয় কিছুই হতে পারে না৷ আশা করি তারা সৃষ্টিকর্তার কাছে গিয়ে খুবই ভালো থাকবেন৷ ধন্যবাদ এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷