আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। নিজের অনুভূতি থেকে কিছু কথা আসলে না বললেই নয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে চোখের সামনে যেন মৃত্যুর মিছিল দেখতে পাচ্ছি। এই পরিস্থিতিতে নিজেকে ভালো রাখা অনেক কঠিন। তাই নিজের অনুভূতি থেকে কিছু কথা আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করবো। আশা করছি সবার ভালো লাগবে

আমি ভাষা আন্দোলন দেখিনি। দেখিনি সেই বীর সন্তানদের। আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। দেখিনি সেই বীর সন্তানদের আত্মত্যাগ। তবে বর্তমান সময়ে এসেও যে এরকম মৃত্যুর মিছিল দেখতে হবে সেটা ভাবতেই হৃদয় কেঁদে উঠছে। নিজের অধিকার চাওয়া যে অন্যায় এটা ভাবতেই খারাপ লাগছে। মৃত্যুর মিছিলে নেমে পড়েছে মেধাবীরা। জীবন বাজি রেখে লড়াই করছে তারা। তাদের এই মৃত্যুর মিছিলে ছুড়ে মারা হচ্ছে গোলাবারুদ। কখনো বা বন্দুকের গুলিতে হাজরা হয়ে যাচ্ছে সেই মেধাবী মানুষের বুক। দৃশ্যগুলো যতটা সহজ ভাবে দেখানো হয় কষ্টটা কিন্তু ততটা সহজ নয়।

রাজপথে আজ মিছিল। অধিকার আদায়ের মিছিল। নিজের অধিকার চাওয়ার মাঝে কোন ভুল দেখি না। স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও যদি নিজের অধিকার চাওয়ার অধিকারটাই না থাকে তাহলে কিসের স্বাধীনতা? যেই মেধাবী মানুষগুলো ভবিষ্যতে দেশের কর্ণধার হবে তাদের উপর কেন এই বর্বরতা? তাদের উপর কেন এই পাশবিক নির্যাতন? দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ যেখানে রক্তে ভেসে গেছে সেখানে ধিক্কার জানানো ছাড়া কোন উপায় নেই। হয়তো কোন কিছু বলার নেই। শুধু নীরবে ধিক্কার জানানো ছাড়া।

শত শত ভাই, শত শত বোনরা আজ মাঠে নেমেছে। নিজের অধিকার আদায়ের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। মৃত্যুর ভয় পেছনে ফেলে বুক পেতে দিয়েছে তরুণ ভাইয়েরা। কখনো বা গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যাচ্ছে তাদের হৃদয়টা। কখনো বা রক্তাক্ত দেহ নিয়ে পড়ে আছে হাসপাতালে কোন এক বিছানায়। আজ তাদের পাশে কেউ নেই। কারণ তারা আজ অধিকার চেয়েছে। অধিকারের লড়াই আজ তাদেরকে পর করে দিয়েছে। মেধাবী মুখগুলো আজ হতাশায় ভরে উঠেছে। রক্তাক্ত দেহ নিয়ে ছুটে চলছে হাসপাতালের দিকে। কখনো বা মৃত্যুর মিছিলে জীবন দিয়ে দিচ্ছে। মায়ের হাহাকার, বোনের আত্মচিৎকারে যেন ভারী হয়ে উঠেছে চারপাশ। ছেলে হারানোর ব্যথায় মা যেন আজ ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। বোনের আহাজানি যেন থামছেই না।

মনে হচ্ছে যেন আবারও সেই ভাষা আন্দোলনের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। ভয়ংকর সেই মুহূর্তগুলো দেখে হৃদয় কেঁদে উঠছে। ভাই বোনেরা পথে নেমেছে। মেধার যাচাই চায় তারা। মেধার লড়াইয়ে নিজের যোগ্য প্রাপ্য সম্মান চায় তারা। ভাইয়েরা রাজপথে বুক পেতে দিয়েছে। আর বর্বরতার শিকার হচ্ছে। তারা তো স্বপ্ন দেখেছিল। দেশের জন্য কাজ করতে চেয়েছিল। তাহলে কেন তাদের উপর এই নির্যাতন হচ্ছে? সবকিছুর যেমন শুরু আছে তেমনি শেষ আছে। কিন্তু শুরু থেকেই যদি সবকিছুর সমাধান করা হতো তাহলে এতগুলো তাজা প্রাণ শেষ হয়ে যেত না। এতগুলো মায়ের বুক খালি হয়ে যেত না। দূর থেকে আমাদের কিছুই করার নেই। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভিডিওগুলো দেখে হৃদয় বারবার কেঁদে উঠছে। মনে হচ্ছে যেন আঘাতটা হৃদয়ে লাগছে। এই আঘাতের ক্ষত শুকানো খুব একটাও সহজ নয়। পুরো জাতি কেঁদে উঠেছে।

গতকাল যখন একটি ভিডিও দেখছিলাম তখন মনের অজান্তেই চোখে পানি চলে এসেছিল। আবু সাঈদ ভাইয়ের মৃত্য মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল। কোন একজন মা তার মৃত সন্তানকে বাঁচানোর জন্য তার সন্তানের মুখে মুখ লাগিয়ে অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করছিল। আহারে সেই অসহায় মা😭। তার আহাজানি দেখে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। গতকাল যখন একটি ছেলের ভিডিও দেখছিলাম তখন ছেলেটি মাথা ধরে আছে। রক্তে ভিজে গেছে তার মুখ। কেউ একজন বলছে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে। তখন ছেলেটি করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আর বলছে ভাইয়া আমি কি মরে যাবো😭? এই কথাটা শুনে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছিলাম না। পুরো দেশ জুড়ে যেন মৃত্যুর মিছিল চলছে। মন থেকে দোয়া করি বাংলার মায়ের বীর সন্তানরা যেনো ভালো থাকে। মৃত্যুর মিছিলে কোন মা যেন আর তার সন্তানকে না হারান। কারণ আপন মানুষের মৃত্যু মেনে নেওয়া খুবই কষ্টের।