নাটক রিভিউ-কিছু কথা বাকি|
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি@monira999। আমি একজন বাংলাদেশী। আজকে আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। যদিও বেশ কিছুদিন থেকে নাটক দেখা হয় না। তবে আজকে কি পোস্ট করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। তাইতো আজকে একটি নাটক দেখার চেষ্টা করেছি এবং সেই নাটকটির রিভিউ সবার মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করছি সবার ভালো লাগবে।
নাম | কিছু কথা বাকি |
---|---|
রচনা | রাসেল আজম |
পরিচালনা | পথিক সাধন |
প্রযোজক | তামান ইসলাম |
অভিনয়ে | ফারহান আহমেদ জোভান, তানজিম সায়েরা তটিনী ও আরো অনেকে |
দৈর্ঘ্য | ৫৫ মিনিট |
মুক্তির তারিখ | ১৯ এপ্রিল ২০২৪ |
ধরন | ড্রামা |
ভাষা | বাংলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
চরিত্রেঃ
- ফারহান আহমেদ জোভান (দুলাল)
- তানজিম সায়েরা তটিনী (লতা)
নাটকের শুরুতেই দেখতে পাই নাটকের প্রধান চরিত্র অর্থাৎ নায়ক দুলালের মা বাবা মারা গিয়েছেন। দুলালের বাবার মৃত্যুতে দুলালের পরিবার একেবারে ভেঙে পড়েছে। অন্যদিকে দুলালের বাবার চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেকগুলো টাকা ঋণ হয়ে গিয়েছে। যেহেতু দুলালের বাবার ক্যান্সার হয়েছিল তাই প্রায় ছয় সাত লাখ টাকা ঋণ হয়েছিল। দুলাল বলে যদি কারো কোন পাওনা দাওনা থাকে তাহলে সে তার বাবার ঋণ শোধ করবে এবং সবাই যেন তার বাবাকে ক্ষমা করে দেয়। এরপর দাফন করা হয়। দুলাল তার বাবার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছিল। এতগুলো টাকা ঋণের বোঝা আর বাবাকে হারিয়ে একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। এবার গ্রামের মহাজন টাইপের এক লোক উনি জানায় সুদসহ তিনি প্রায় আট লাখ টাকা দুলালের বাবার কাছ থেকে পান। আর সবাই মিলে ঠিক করেন দুলাল তাকে ৭ লাখ টাকা পরিশোধ করবে। এরপর টাকা শোধ করার জন্য দুলাল এক বছর সময় চেয়ে নেয়।
অন্যদিকে দুলাল যে মেয়েটিকে ভালোবাসত তার নাম হলো লতা। লতা দুলালের সাথে দেখা করতে আসে। দুলালের এই দুঃসময়ে লতা ভীষণ ভেঙ্গে পড়ে। লতার বাবা লতার বিয়ের জন্য পাত্র খুঁজছে। আর দুলালের এই খারাপ পরিস্থিতিতে লতা কিছুই বলতে পারছে না। লতা বারবার বলার চেষ্টা করেও নিজের বিয়ের কথা বলতে পারছে না। দুলাল লতার সামনে গিয়ে নিজের আবেগ প্রকাশ করে ফেলে। কেঁদে ফেলে দুলাল। লতাও ভীষণভাবে ভেঙে পড়ে আর সান্তনা দেয়। এবার লতা এবং দুলাল দুজনেই চলে যায়। দুলাল কিছুতেই বুঝতে পারছিল না কি করে সে তার বাবার ঋণ শোধ করবে। এবার সে যেই ফ্যাক্টরিতে কাজ করে সেখানে একটি দরখাস্ত দেয় যাতে করে ফ্যাক্টরির মালিক তাকে ঋণ প্রদান করে। কিন্তু দুলালের এই দরখাস্ত দেখে ফ্যাক্টরির মালিক হাসাহাসি করে। অবশেষে এক লাখ টাকা ঋণ প্রদান করে। অন্যদিকে লতার জন্য পাত্র দেখা হচ্ছে। লতার বাবা যেহেতু হজে চলে যাবেন তাই তো যাওয়ার আগেই মেয়ের বিয়েটা দেখে যেতে চান।
লতা দুলালের সাথে দেখা করার পরেও তার বিয়ের কথা সেভাবে বলতে পারেনি। কারণ দুলাল নিজেই অনেক সমস্যার মধ্যে ছিল। এবার দুলাল লতাদের বাড়িতে গিয়ে লতার বাবাকে সাথে করে নিয়ে সেই মহাজনের বাড়িতে যায়। লতার বাবা ছিল একজন ইমাম। তাইতো উনার হাত দিয়ে মহাজনকে এক লাখ টাকা দিয়ে আসে। এবার লতার বাবা লতার বিয়ে প্রায় ঠিক করে ফে। পাত্রপক্ষ তাকে দেখতে আসবে এই কথা বলার সাহস লতা কিছুতেই পাচ্ছিল না। কারণ দুলালের মানসিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। অন্যদিকে যারা দুলালের সাথে কাজ করতো তারা সবাই মিলে কিছু কিছু করে টাকা দিয়ে প্রায় ৫২ হাজার টাকা দুলালের হাতে তুলে দেয়। দুলাল অনেকটা খুশি হয়ে যায়। এবার যখন তাদের বাড়িতে যায় তখন গিয়ে দেখে পাত্র পক্ষ লতাকে দেখতে এসেছে। এই দৃশ্য দেখে দুলাল ভীষণভাবে ভেঙে পড়ে। আর তার দুচোখ জলে টলমল করে।
দুলালকে দেখে লতা ভীষণ কষ্ট পায়। কারণ সে দুলালকে অনেক ভালোবাসে। কিন্তু তার কিছুই করার নেই। বাবার সামনে গিয়ে কিছু বলার সাহস লতার নেই। এবার শুরু হয় আরেক নতুন কাহিনী। মহাজনের একটি প্রতিবন্ধী মেয়ে আছে। আর মহাজনের প্রতিবন্ধী মেয়েটি দুলালকে দেখলে বেশ খুশি হয়ে যায়। তাইতো মহাজনের বউ বলে দুলালের সাথে যদি তাদের প্রতিবন্ধী মেয়েকে বিয়ে দেওয়া যায় তাহলে বেশ ভালো হবে। এবার মহাজন দুলালদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। সাথে বিভিন্ন রকমের বাজার করে নিয়ে আসে। রাতে যখন দুলাল বাড়ি ফিরে তখন দুলালের মা দুলালকে বলে মহাজন তোর সব টাকা মাফ করে দিবে আর বাজারে দোকান করে দিবে যদি তুই তার মেয়েকে বিয়ে করিস। এই কথা শুনে দুলালের ভীষণ মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। সে কি করবে কিছুই বুঝতে পারে না। এবার দুলাল মহাজনদের বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে সেই মেয়েটির সাথে দেখা হয়। এবার মেয়েটি ইশারায় বোঝানোর চেষ্টা করে সে দুলালের বউ হতে চায়। এবার দুলাল বলে সে অন্য কাউকে ভালোবাসে। এই কথা শুনে মেয়েটি ভীষণ কষ্ট পায়। দুলালের কিছুই করার ছিল না। কারণ সে লতাকে অনেক ভালোবাসে।
লতা দুলালের সাথে দেখা করে। আর দুলালকে অনুরোধ করে যাতে করে সে তার জন্য কিছু করে। কারণ সময় একেবারেই ঘনিয়ে এসেছে। বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়ে গেছে। লতা রাতের আঁধারে দুলালের সাথে দেখা করে। লতা বলে সে যেন তাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। দুলাল তাকে বুঝিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দেয়। বলে যে তুমি একজন ইমামের মেয়ে এই কাজ করলে তোমার বাবার মাথা নত হয়ে যাবে এবং তিনি অসম্মানিত হবেন। এরপর দুলাল আবারও লতার সাথে দেখা করে এবং বলে যে করে হোক সে টাকা জোগাড় করবে। আর এই বিয়েটা আটকাবে। লতা কিছুটা খুশি হয়ে যায় আর দুলালকে জড়িয়ে ধরে। এরপর দুলাল একটি ভুল সিদ্ধান্ত নেয়। সে তার মহাজনের টাকা চুরি করে। টাকা চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে এবং ভীষণ ভাবে তাকে মারধর করা হয়। এরপর আহত শরীর নিয়ে লতার সাথে দেখা করে সে এবং বলে লতা তুমি আমার ভাগ্যে নেই। এরপর দুলাল বলে লতা তুমি তো সবসময় বলো সৃষ্টিকর্তা নাকি জন্মের আগেই জোড়া নির্ধারণ করেছেন। আমার মনে হয় তুমি আমার ভাগ্যে নেই। তাইতো তোমাকে ধরে রাখতে পারলাম না। এরপর দুজনেই কান্নায় ভেঙে পড়ে। আর সেখান থেকে চলে যায়। এভাবেই নাটকটি শেষ হয়ে যায়।
মাঝে মাঝে পরিস্থিতির কাছে ভালোবাসা হার মেনে যায়। ভালোবাসার মানুষটিকে হারানোর কষ্ট তারাই উপলব্ধি করতে পারে যারা নিজের প্রিয় মানুষটিকে হারিয়ে ফেলে। লতা এবং দুলাল দুজন দুজনকে ভালোবাসতো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেল না। পরিস্থিতি তাদের ভালোবাসাকে অপূর্ণতা এনে দিল। দুজনের একসাথে পথ চলার স্বপ্ন পূর্ণ হল না। তাদের জমানো অনেক কথাই যে বলার বাকি ছিল। না বলা কথাগুলো আর বলা হয়ে উঠলো না। সব মিলিয়ে নাটকটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আশা করছি আপনারাও সময় করে নাটকটি দেখবেন।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি যদিও নাটকটি দেখা হয়নি। তবে নাটকের রিভিউ পড়ে আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে। এটা একদম ঠিকই বলেছেন পরিস্থিতির কাছে ভালোবাসা ও হার মানে। সময় করে নাটকটি দেখার চেষ্টা করব সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপু আপনি যেহেতু এই নাটকটি দেখেননি তাই সময় পেলে দেখতে পারেন। সত্যিই আপু পরিস্থিতির কাছে ভালোবাসা হার মেনে যায়।
বাংলা নাটক দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে। যখনই সময় পাই তখনই আমি বাংলা নাটক দেখি। তবে নাটকটি এখনো দেখা হয়নি। আপনার রিভিউ পড়ে বেশ ভালো লাগলো। সময় পেলে অবশ্যই দেখার চেষ্টা করব। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
নাটক দেখতে আপনি পছন্দ করেন জেনে ভালো লাগলো আপু। সময় পেলে এই নাটকটি দেখতে পারেন। আশা করছি ভালো লাগবে।
নাটক অনেক দিন দেখা হয়না রমজান মাস ছিল বলে।আপনি আজ চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ পোস্ট শেয়ার করেছেন। সত্যি ই আপু পরিস্থিতির চাপে পরে সব ভালোবাসার পূর্ণতা পায় না।এই নাটকটির চমৎকার রিভিউ করলেন আপনি।সময় সুযোগ মতো নাটকটি দেখবো আশাকরি।
ঠিক বলেছেন আপু পরিস্থিতির চাপে পড়ে অনেক সময় ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না। আর প্রিয় মানুষটির থেকে দূরে চলে যেতে হয়।
কিছু কথা বাকি নাটকটি গতকাল দেখেছিলাম। জোভান এবং তোটিনির অভিনয় আমার কাছে বরাবরই ভীষণ ভালো লাগে। নাটকটির গল্প জাস্ট অসাধারন ছিলো। এধরনের নাটক গুলো দেখলে আমি ইমোশনাল হয়ে যাই। নাটকটি দেখে বেশ কষ্ট লেগেছে। আপনার রিভিউ দেখে ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
ভাইয়া আপনি এই নাটক দেখেছেন জেনে ভালো লাগলো। নাটকটি সত্যি দারুন ছিল। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
নাটক দেখতে আমি খুবই ভালবাসি।আজকে আপনি দারুন একটি নাটক রিভিউ করেছেন।নাটকের গল্পটা বেশ লেগেছে।গল্প পড়ে আমারও নাটক টি দেখতে ইচ্ছা করছে।খুবই ভালো লাগলো আপু আপনার নাটক রিভিউ দেখে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
নাটক দেখতে আপনি পছন্দ করেন জেনে ভালো লাগলো। নাটকের গল্পটি সত্যিই দারুণ ছিল। মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
খুব সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি৷ আজকে আপনার এই নাটকের রিভিউ এর মাধ্যমে আপনি অনেকগুলো বিষয় ফুটিয়ে তুলেছেন৷ যা পড়ে খুব খুশি হলাম এবং খুব সুন্দর ভাবে আপনি নাটকের মধ্যে যা কিছু হয়েছিল সবকিছুই ফুটিয়ে তুলেছেন৷ অনেক ভালো লাগলো আপনার কাছ থেকে এই নাটকটি ডিভিউ পড়ে। এই নাটকটি আমি এখনো দেখে নিতে পারিনি৷ তবে অবশ্যই সময় করে দেখে নেওয়ার চেষ্টা করবো৷