ক্রিয়েটিভ রাইটিং(গল্প) || বিপদ কখনোই বলে আসে না (দ্বিতীয় পর্ব)
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করবো। গত সপ্তাহে এই গল্পের প্রথম পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম এবং আজকে দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। যাইহোক গত সপ্তাহে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম,রাত ৮ টার দিকে মোশাররফ ভাই আমাকে ফোন করেছিলো। তো ফোন দেওয়ার পর আমাকে বললো যে, তার নাকি প্রচন্ড বুক ব্যথা করছে। আমি তখন উনাকে বললাম যে আমাদেরকে এখনই হসপিটালে যেতে হবে তাহলে। কারণ রাতের বেলা যদি ব্যথা আরও বাড়ে,তখন বিপদে পড়ে যাবেন। তাছাড়া এসব ব্যথা নিয়ে বাসায় বসে থাকাটাও ঠিক না। যাইহোক আমি মোশাররফ ভাইকে বললাম এম্বুলেন্স লাগবে নাকি ট্যাক্সি দিয়ে যেতে পারবেন।
উনি আমাকে বললো এম্বুলেন্স লাগবে না, বরং ট্যাক্সি দিয়েই যেতে পারবে। আমি সাথে সাথে কোরিয়ান কাকাও ট্যাক্সি কল করলাম এবং মোশাররফ ভাইয়ের বাসার ঠিকানায় তাড়াতাড়ি আসতে বললাম। তারপর আরও ২জন ভাই ব্রাদারকে ফোন দিয়ে বললাম, তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে মোশাররফ ভাইয়ের বাসার সামনে যেতে। এদিকে আমি বাসা থেকে রেডি হয়ে তাড়াতাড়ি বের হয়ে গেলাম এবং আমরা ৩ জন মোশাররফ ভাইয়ের রুমে ঢুকে দেখলাম উনি ব্যথায় কাতরাচ্ছে। যাইহোক কাকাও ট্যাক্সি সাধারণত তাড়াতাড়ি চলে আসে। কিন্তু সেদিন আসতে একটু দেরি হয়েছিল। তো কাকাও ট্যাক্সি ড্রাইভারকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম এসেছে কিনা। সে বললো ১ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যাবে। তো আমরা তিনজন মোশাররফ ভাইকে তিনতলা থেকে ধরে ধরে সিঁড়ি দিয়ে নামালাম এবং সাথে সাথে ট্যাক্সিতে উঠলাম।
তারপর ট্যাক্সি ড্রাইভারকে বললাম শিহওয়া সেন্ট্রাল হসপিটালে নিয়ে যেতে। সেই হসপিটাল আমাদের বাসা থেকে মোটামুটি কাছাকাছি অবস্থিত। যাইহোক আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই শিহওয়া সেন্ট্রাল হসপিটালে পৌঁছে গেলাম। সেদিন যেহেতু রবিবার ছিলো, তাই হসপিটাল এমনিতে বন্ধ ছিলো। কিন্তু হসপিটালের ইমারজেন্সি খোলা ছিলো। ইমারজেন্সি মূলত ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে প্রতিদিনই। যাইহোক ইমারজেন্সি তে ঢুকে মোশাররফ ভাইকে বসিয়ে, আমি সবকিছু বিস্তারিত বললাম। তখন তারা মোশাররফ ভাইয়ের কোরিয়ান আইডি কার্ড এবং মেডিক্যাল কার্ড চাইলো। তখন আমি বললাম উনি তো অবৈধ, তাই আইডি কার্ড এবং মেডিক্যাল কার্ড নেই ওনার। তারপর হসপিটাল থেকে বললো মোশাররফ ভাইয়ের পাসপোর্ট দিতে।
কিন্তু তাড়াহুড়ার মধ্যে আমাদের একেবারেই মনে ছিলো না মোশাররফ ভাইয়ের পাসপোর্ট বাসা থেকে নেওয়ার কথা। আসলে তাড়াহুড়ার মধ্যে ভুল হয় সবচেয়ে বেশি। যাইহোক কি আর করার,যেহেতু পাসপোর্ট অবশ্যই লাগবে, তাই মোশাররফ ভাইয়ের রুমের চাবি নিয়ে, সেখান থেকে একটি ট্যাক্সি নিয়ে চলে গেলাম উনার বাসায় পাসপোর্ট আনতে। উনার বাসার সামনে গিয়ে, ট্যাক্সি ড্রাইভারকে বললাম একটু অপেক্ষা করতে। কারণ সেই ট্যাক্সি দিয়ে হসপিটালে গেলেই তাড়াতাড়ি যাওয়া যাবে। তারপর রুমে ঢুকে উনার কথা অনুযায়ী লাগেজ খুলে পাসপোর্ট খুঁজতে লাগলাম। একেবারে অল্প সময়ের মধ্যেই উনার পাসপোর্ট খুঁজে পেলাম। তারপর আবারও ট্যাক্সি তে উঠে তাড়াতাড়ি হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যাইহোক এরপর মোশাররফ ভাইয়ের সাথে আর কি কি হলো,সেটা জানার জন্য আপনাদেরকে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। (চলবে)
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | গল্প (ক্রিয়েটিভ রাইটিং) |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S9 Plus |
তারিখ | ২৪.৮.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
X-promotion
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে ভাই বিপদ কখনো কাউকে বলে আসেনা। আর বিপদের মুহূর্তে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সাথে নিতে ভুলে যায় অনেকে। যেমনি আপনাদেরটা হয়েছে। তবে দোয়া করি সবার জন্য যেন এমন হঠাৎ বিপদ থেকে মহান সৃষ্টি করতে আমাদের হেফাজতে রাখেন।
আসলে তাড়াহুড়ার মধ্যে মোশাররফ ভাইয়ের পাসপোর্ট নিতে ভুলে গিয়েছিলাম। তাড়াহুড়া করলে সত্যিই ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ধন্যবাদ আপনাকে।
মানুষের জীবনের যেকোনো মুহূর্তে বিপদ আসতে পারে। আর এই বিপদে আমাদের সকলের ধৈর্য ধারণ করা একান্ত প্রয়োজন। আজকে আপনি বেশি ধারণ একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে আমাদের মাঝে সুন্দর ব্লগ শেয়ার করেছেন। ভালো লাগলো আপনার একটা ব্লগ পড়ে। বেশ ভালো লাগলো আপনার মোশারফ ভাইয়ের সহযোগিতার বিষয়টা আমাদের মাঝে উপস্থিত করেছেন দেখে।
আসলেই বিপদের সময় অবশ্যই ধৈর্য্য ধারণ করতে হয়। কারণ আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বিপদ দিয়ে পরীক্ষা করেন। অনেক ধন্যবাদ আপু।
ভাইয়া আপনার পোষ্টের প্রথম পর্বটি আমি পড়ি নাই। আজকের দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে বুঝতে পারলাম মোশারফ ভাইয়ের বুকের ব্যথা বেশি ছিল। তবে আপনারা ভালো করেছেন তাকে ট্যাক্সি করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন। তবে বিদেশী শুনেছি পাসপোর্ট এবং কাগজপত্র না থাকলে হাসপাতালে চিকিৎসা করতে চাই না। এবং তার বাসা থেকে গিয়ে আবার পাসপোর্ট নিয়ে আসলেন। দেখি পরের পর্বে তার সাথে কি হলো এবং তার কি সমস্যা জানতে পারবো। আশা করি পরে পর্বটি আমাদের মাঝে তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন।
আসলে মোশাররফ ভাই অবৈধভাবে দক্ষিণ কোরিয়াতে বসবাস করতো। তবে পাসপোর্ট থাকলে হসপিটালে চিকিৎসা করে সেখানে। ধন্যবাদ আপু।
আপনার এই পোস্টের প্রথম পর্বও আমি পড়েছিলাম৷ আজকে এর দ্বিতীয় পর্ব পড়েও খুবই ভালো লাগছে৷ আসলে বিপদ কখনোই কাউকে বলে আসেনা৷ যেকোনো সময় যেকোনো দিক থেকেই বিপদ চলে আসতে পারে৷ তবে এই বিপদ আসার পরে আমাদেরকে সে অনুযায়ী সতর্কতা অবলম্বন করে সেই সমস্যা মোকাবেলায় এগিয়ে আসতে হবে৷ ধন্যবাদ এই সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷
অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত আমাদের। তবে কার কখন কি অসুখ বিসুখ হয়ে যায়,সেটা আসলেই বলা যায় না।