আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে বিসর্জন। এই নাটকটি এক সপ্তাহ আগে রিলিজ হয়েছে। যাইহোক এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে মুশফিক আর ফারহান এবং তানজিন তিশা। এই জুটির অনেক নাটক আমি দেখেছি এবং এই দুজনের জুটি সবসময়ই খুব ভালো লাগে আমার কাছে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।

নাটকের নায়ক ফারহান ব্যবসা করে অর্থাৎ তার একটি মুদি দোকান রয়েছে। কিন্তু তাকে বিয়ে করানোর জন্য তার বাসা থেকে অনেক দিন থেকেই বলা হচ্ছিল, কিন্তু সে নানান তাল-বাহানা করে বিয়ে না করার জন্য। যাইহোক একদিন তার চাচার অসুস্থতার কথা বলে,দোকান থেকে তাকে বাসায় নিয়ে আসে তার বাবা। তারপর সবাই রেডি হয়ে তাকে তানজিন তিশার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করিয়ে দেয়। ফারহান তার বউ অর্থাৎ তানজিন তিশাকে একেবারে বাসর ঘরে দেখে এবং ভীষণ পছন্দ করে একে অপরকে। যাইহোক বিয়ের পর থেকেই একে অপরকে ভীষণ কেয়ার করে তারা। কিন্তু ফারহানের মা অর্থাৎ তিশার শ্বাশুড়ি, তিশাকে উঠতে বসতে কথা শোনায় অকারণে।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

ফারহানের মা এবং ছোট বোন বাসার কোনো কাজ করে না। তিশা বাসার সব কাজ একা হাতে সামলানোর পরেও এমন করে। ফারহানের খালা তাদের বাসায় আসার পর ফারহানের মা'কে কান পড়া দেয় এবং তারপর তিশাকে তার শ্বাশুড়ি আরও বেশি কথা শোনায়। ফারহান এসবকিছু জানলেও, তার মায়ের উপরে কোনো কথা বলতে পারে না। যাইহোক একদিন পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে তিশার হাত কেটে যায় এবং সেজন্য তিশা তার ননদকে বলে পেঁয়াজ কেটে দেওয়ার জন্য। তিশার ননদ পেঁয়াজ কাটে বলে,তিশার শ্বাশুড়ি তিশাকে অনেক কথা শোনায় এবং বলে যে আর কখনো যেনো তিশা তার ননদকে দিয়ে কোনো কাজ না করায়। মোটকথা তার মেয়ে হচ্ছে রাজকন্যা।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

যাইহোক কিছুদিন পর তিশার ননদের বিয়ে ঠিক হয় একজন সিঙ্গাপুর প্রবাসী ছেলের সাথে। বিয়ের মাত্র কয়েকদিন পরেই তিশার ননদকে, ফারহানদের বাসায় দিয়ে যায়। তারপর বলে যে তিশার ননদকে যেনো বাড়ির সব কাজ শিখিয়ে, তারপর বাড়িতে দিয়ে আসে। আর কাজ না পারলে আর কখনোই তিশার ননদকে নিয়ে যাবে না। তখন তিশার শ্বাশুড়ি বলে যে আমি তো আমার মেয়েকে রাজকন্যার মতো রেখেছি, তাই কোনো কাজ করতে পারে না। এরপর তিশা তার শ্বাশুড়িকে বলে, প্রতিটি মা বাবার কাছে তাদের মেয়ে রাজকন্যা। তখন তিশার শ্বাশুড়ি তার ভুল বুঝতে পারে এবং তিশার কাছে ক্ষমা চায়।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

এই নাটকটি বেশ শিক্ষামূলক একটি নাটক। বাস্তবে এমনটা অহরহ ঘটে থাকে। বেশিরভাগ মহিলারা বাড়িতে ছেলের বউ আসলেই কারণ অকারণে জ্বালাতন করে। উঠতে বসতে কথা শোনায়। বাড়ির সব কাজ ছেলের বউকে দিয়ে করানোর পরেও,তাদের মন ভরে না। আর অপরদিকে নিজের মেয়েকে রাজকন্যার মতো রাখে। মেয়েকে দিয়ে কোনো কাজ তো করায় না,বরং একেবারে মাথায় তুলে রাখে। কিন্তু তারা একবারের জন্যও ভাবে না যে,নিজের মেয়েকেও বিয়ে দিয়ে একদিন না একদিন অবশ্যই অন্যের বাড়িতে পাঠাতে হবে। তখন মেয়েটি কোনো কাজ করতে পারবে না এবং উঠতে বসতে কথা শুনতে হবে। আসলে অতিরিক্ত আদর কখনোই ভালো নয়। প্রতিটি মহিলার উচিত ছেলের বউ এবং নিজের মেয়েকে সমান চোখে দেখা। কারণ ছেলের বউ তো কারো না কারো মেয়ে। এই নাটকটি আসলে সবার জন্য একটি ম্যাসেজ। সবাই বেশ ভালো অভিনয় করেছে এই নাটকে। সবমিলিয়ে নাটকটি বেশ উপভোগ করেছি।

আমার রেটিং