"আমার বাংলা ব্লগ"প্রতিযোগিতা - ৩৯ || চার ধরনের পাতা এবং কালোজিরা দিয়ে তৈরি ইউনিক ঝাল ভর্তা রেসিপি
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি এই পোস্টের মাধ্যমে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি কর্তৃক আয়োজিত ৩৯তম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। আমরা সবাই জানি যে, এবারের প্রতিযোগিতা হচ্ছে ইউনিক ঝাল ভর্তা রেসিপি নিয়ে। এবারের প্রতিযোগিতার আইডিয়াটা আসলেই চমৎকার ছিলো। কারণ কোরবানির গোশত খেতে খেতে সবাই একেবারে বিরক্ত হয়ে গিয়েছে। আর এমন সময় খেতে বসে যদি ঝাল ঝাল ভর্তা পাওয়া যায়, তাহলে দুই প্লেট গরম গরম ধোঁয়া ওঠা ভাত অনায়াসে খাওয়া যাবে। ছোটবেলা থেকেই মাছ মাংসের চেয়ে ভর্তার দিকে আমার আকর্ষণ সবসময়ই বেশি থাকতো। কারণ মাছ মাংস খেতে খেতে অনেক সময় বিরক্তিকর ভাব চলে আসে। তবে ভর্তা প্রতিদিন খেলেও বিরক্তিকর ভাব আসার প্রশ্নই আসে না। আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে কয়েক ধরনের ভর্তা একসাথে থাকলে। যেমন মসুরের ডাল ভর্তা, পোড়া বেগুন ভর্তা, টাকি মাছের ভর্তা এবং আরো অনেক ধরনের ভর্তা আমি খুব পছন্দ করি। যাইহোক গতকালকে প্রতিযোগিতার পোস্টটি দেখে, আমি কয়েক ধরনের পাতা সংগ্রহ করে, আমার ওয়াইফ এর হেল্প নিয়ে মজাদার ভর্তা তৈরি করেছি।
আমি প্রথমে ভেবেছিলাম সব ধরনের পাতা একসাথে ব্লেন্ডার করে ভর্তা তৈরি করে ফেলবো। পরে আমার ওয়াইফ বললো পাটা পুতা দিয়ে ভর্তা তৈরি করলে নাকি আরো বেশি সুস্বাদু লাগে। পরে আমার ওয়াইফ পাটা পুতা দিয়ে ভালো করে বেটে দিয়েছিল সবকিছু। যাইহোক এই ভর্তা তৈরিতে আমি চার ধরনের পাতা এবং কালোজিরা ব্যবহার করেছিলাম। পাতা গুলো হলো টক পাতা,কুচিলা পাতা,ধুন্দল পাতা এবং খারকোল বা খারমান পাতা। এই পাতা গুলো দিয়ে আলাদা ভাবেও ভর্তা তৈরি করা যায়। তবে একসাথে এতগুলো পাতা দিয়ে ভর্তা তৈরি করার পর খেতে খুবই সুস্বাদু লেগেছিল। এই ভর্তায় ঝাল দিয়েছিলাম প্রচুর। প্রায় ২৫ টার মতো শুকনা মরিচ ব্যবহার করেছিলাম। ভর্তা খেয়ে সবাই বেশ প্রশংসা করেছিল। আমি তো দুই বেলা শুধু এই ভর্তা দিয়েই ভাত খেয়েছিলাম। যাইহোক আমি কিভাবে ভর্তাটি তৈরি করলাম, সেটা ধাপে ধাপে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
টক পাতা | পরিমাণ মতো |
কুচিলা পাতা | পরিমাণ মতো |
ধুন্দল পাতা | পরিমাণ মতো |
খারকোল বা খারমান পাতা | পরিমাণ মতো |
কালোজিরা | পরিমাণ মতো |
পেঁয়াজ | ৫টা |
শুকনা মরিচ | ২৫টার মতো |
ধনিয়া পাতা | পরিমাণ মতো |
রসুন | ৫/৬ কোয়া |
লবণ | পরিমাণ মতো |
প্রধান উপকরণ
রেসিপি তৈরির প্রক্রিয়া নিম্নরূপঃ
🍲প্রথম ধাপ🍲
প্রথমে চুলা অন করে একটি কড়াইয়ে শুকনা মরিচ এবং কালোজিরা গুলো হালকা টেলে নিলাম। এরপর আলাদা একটি পাত্রে উঠিয়ে নিব।
🍲দ্বিতীয় ধাপ🍲
তারপর টক পাতা,কুচিলা পাতা,ধুন্দল পাতা এবং খারকোল বা খারমান পাতা গুলো পানি দিয়ে সিদ্ধ করে নিলাম।
🍲তৃতীয় ধাপ🍲
এরপর পেঁয়াজ,রসুন এবং শুকনা মরিচ গুলো পাটা পুতা দিয়ে ভালোভাবে বেটে দিলো আমার ওয়াইফ। তারপর পরিমাণ মতো লবণ নিয়ে নিলাম।
🍲চতুর্থ ধাপ🍲
তারপর সিদ্ধ করে রাখা পাতাগুলো এবং ধনিয়া পাতা ভালোভাবে বেটে দিলো।
🍲পঞ্চম ধাপ🍲
এরপর কালোজিরা গুলো ভালোভাবে বেটে দিলো।
🍲ষষ্ঠ ধাপ🍲
তারপর বেটে রাখা শুকনা মরিচ, পেঁয়াজ রসুন, সিদ্ধ পাতা, কালোজিরা ও লবণ নিয়ে ভালোভাবে মিক্সড করে মজাদার ভর্তা তৈরি করে নিলাম।
🍲সপ্তম ধাপ🍲
তারপর ছোট একটি প্লেটে ভর্তা উঠিয়ে রাখলাম।
🍲পরিবেশন🍲
এরপর রাতের খাবারের সময় সবার সামনে পরিবেশন করলাম।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | কনটেস্ট(ইউনিক ঝাল ভর্তা রেসিপি) |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ৭.৭.২০২৩ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন দেখে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। এরকম প্রতিযোগিতাগুলোর মাধ্যমে অনেক ইউনিক রেসিপি দেখা যায়। আজকে আপনার কাছ থেকে অনেক ইউনিক একটা ভর্তা রেসিপি দেখতে পারলাম। চার ধরনের পাতা এবং কালোজিরা দিয়ে আপনি ইউনিক ঝাল ভর্তা রেসিপি তৈরি করেছেন। আমার তো ইচ্ছে করছে এখনই এক প্লেট ভাত এনে এই রেসিপিটা খেতে। পরিবেশন টা দেখে যে কারোরই খেতে ইচ্ছে করবে।
আপনি ঠিক বলেছেন ভাই,এমন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ইউনিক রেসিপি গুলো দেখা যায়। গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Twitter Link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই ভাইয়া।অনেক গুলো পাতা আর কালোজিরা দিয়ে তৈরি করা ভর্তার রেসিপি টি দেখতে খুবই লোভনীয় লাগছে।আপনি যে পাকা রাঁধুনি তা আগে থেকেই আমরা জানি সেজন্য সবাই আপনার ভর্তা খেয়ে প্রশংসা করেছে।অনেক লোভনীয় একটি ভর্তা রেসিপি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।শুভকামনা রইলো।
হাহাহা, আপনার মন্তব্য পেয়ে খুবই ভালো লাগলো আপু। পাকা রাঁধুনি তো আর না,তবে চেষ্টা করি যেকোনো রেসিপি ভালোভাবে তৈরি করতে। যাইহোক এমন প্রশংসনীয় মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
প্রথমেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। অনেক ইউনিক একটি ভর্তার রেসিপি শেয়ার করেছেন। ভর্তা আমার খুব পছন্দ। আর ভর্তা ঝাল ঝাল হলে তো কোন কথাই নেই। আমি অবশ্য বাসায় একদিন এভাবে ট্রাই করবো। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
ভর্তা ঝাল না হলে খেয়ে কোনো মজা নেই আপু। এই রেসিপিটা অবশ্যই বাসায় ট্রাই করবেন আপু। যাইহোক সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রথমেই বলি পরিবেশন টা দেখে খেতে ইচ্ছা করছে বেশ। মাংস খেতে খেতে আমিও একদম তেতো হয়ে গেলাম। মেস্তা পাতা আমার খাওয়া হয়েছে কিন্তু অন্য তিন পাতার এক পাতা ও কখনো খাওয়া হয়নি। ধুন্দলপাতা যে খাওয়া যায় তা আমি জানতামই না। আর আরেকটি পাতা চিনলাম না। নতুন একটা রেসিপি শিখে নিলাম ভাইয়া। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন আপনাকে।
হ্যাঁ আপু মাংস খেতে খেতে সত্যিই বিরক্তিকর ভাব চলে এসেছে। তাই এখন এইসব খাবার খেতে খুব ভালো লাগে। পাতাগুলো খুব কষ্ট করে সংগ্রহ করেছি আপু। যাইহোক পোস্টটি দেখে এমন অনুপ্রেরণামূলক মন্তব্য করার জন্য, আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
কালজিরা ভর্তা অনেক ভাবে খেয়েছি ।কিন্তু কখনও এভাবে ভর্তা করে খাওয়া হয়নি। বেশ ইউনিক একটি ভর্তা বানিয়েছেন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহনের জন্য। নতুন একটা ভর্তা শিখে নিলাম আপনার থেকে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
এভাবে ভর্তা তৈরি করে খেয়ে দেখবেন আপু। আশা করি খুব ভালো লাগবে খেতে। সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে সাপোর্ট করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
চার ধরনের পাতা ও কালোজিরা দিয়ে মজাদার ইউনিক রেসিপি তৈরি করেছেন। আসলে প্রথমেই আপনাকে স্বাগতম জানাই প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য। আর আপনার রেসিপি পরিবেশন আমার খুবই ভালো লেগেছে। এত সুন্দর এবং ইউনিক রেসিপি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
রেসিপির পরিবেশন আপনার খুব ভালো লেগেছে, জেনে ভীষণ অনুপ্রাণিত হলাম ভাই। গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।