নাটক রিভিউ || দূর থেকে দূরে

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।



আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে দূর থেকে দূরে। এই নাটকটি বেশ কিছুদিন আগে রিলিজ হয়েছে। এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে জিয়াউল ফারুক অপূর্ব এবং কেয়া পায়েল। অপূর্ব এবং কেয়া পায়েল এর নাটক দেখতে বরাবরই আমার ভীষণ লাগে। এই নাটকটি বর্তমান প্রেক্ষাপটে একেবারে বাস্তব, তাই আরো বেশি ভালো লেগেছে দেখতে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।



Notes_230819_122007_db8.jpg

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে


নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ

নাটকদূর থেকে দূরে
রচনাশাহজাহান সৌরভ
পরিচালনাঅনন্য ইমন
অভিনয়েজিয়াউল ফারুক অপূর্ব, কেয়া পায়েল এবং আরো অনেকে
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা ভাষা
প্রচার৮ই জুলাই ২০২৩
দৈর্ঘ্য৫০ মিনিট
প্লাটফর্মইউটিউব


নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনী নিম্নরুপঃ

নাটকের নায়ক অপূর্ব এবং নায়িকা কেয়া পায়েল স্বামী স্ত্রী। অপূর্ব, কেয়া পায়েল এবং অপূর্বর বাবা মা একসাথে থাকে। তাদের বেশ সুখের সংসার। অপূর্ব চাকরি করে এবং কেয়া পায়েল গৃহিণী। তারা সবাই একসাথে মুভি দেখে, আড্ডা দেয়, গল্প করে সবমিলিয়ে বেশ ভালোই কাটছিল তাদের দিনগুলো। এদিকে অপূর্বর বাবা মা বলছিল বাসাটা একেবারে খালি খালি লাগে। তাই নাতি নাতনি থাকলে খুব ভালো হতো। তবে অপূর্ব চাচ্ছিল যে সন্তান আরো দেরি করে নিতে। কিন্তু কেয়া পায়েল অপূর্বকে বোঝানোর পর অপূর্বও বাচ্চা নিতে রাজি হয়। তারা হসপিটালে গিয়ে চেকআপ করার পর মেডিকেল রিপোর্ট বের হয়। কিন্তু অপূর্ব কেয়া পায়েলকে রিপোর্ট না দেখিয়ে ছিড়ে ফেলে। তারপর অপূর্ব কেয়া পায়েলকে বলে যে, অপূর্ব বাচ্চা জন্ম দিতে পারবে না কারণ সে অক্ষম। এই কথা শোনার পর তাদের সংসারে শোকের ছায়া নেমে আসে। কেয়া পায়েল দুই সপ্তাহ যাবৎ অপূর্বর সাথে কোনো কথাই বলে না।

Notes_230819_144315_f20.jpg

Notes_230819_144328_115.jpg

Notes_230819_144326_032.jpg

কিন্তু অপূর্ব মনে মনে চাচ্ছিল যে, কেয়া পায়েল যেন তাকে মানসিকভাবে সাপোর্ট করে। হঠাৎ করে কেয়া পায়েল নিজের বাবার বাসায় চলে যায় অপূর্ব কে বলে। কেয়া পায়েল তার বাসায় গিয়ে বাবা মার কাছে বলে যে, ছেলে দেখতে কারণ কেয়া পায়েল আবারও বিয়ে করবে। প্রায় একমাস হয়ে গিয়েছে, কিন্তু অপূর্বর সাথে কেয়া পায়েলের একবারের জন্যও ফোনে কথা হয়নি। অপূর্ব কেয়া পায়েলের বাসায় যায় খোঁজ করতে। কিন্তু তার বাবা মা বলে যে কেয়া পায়েল বাসায় নেই তার বোনের বাসায় বেড়াতে গিয়েছে। কবে আসবে তার কোনো ঠিক নেই। কিন্তু কেয়া পায়েল তখন বাসায় ছিলো এবং তার বাবা-মা অপূর্বকে মিথ্যে বলেছিল। কেয়া পায়েলের বাবা কৌশলে অপূর্বর কাছ থেকে সাইন নিয়ে তাদের ডিভোর্স করিয়ে ফেলে। এদিকে কেয়া পায়েলের বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে অন্য একটি ছেলের সাথে। এই কথা অপূর্ব জানতে পারে কেয়া পায়েলের বাসার দারোয়ানের কাছে।

Notes_230819_144324_75e.jpg

Notes_230819_144322_ee2.jpg

Notes_230819_144319_cb4.jpg

তাদের বাসায় গিয়ে অপূর্ব চিৎকার চেঁচামেচি করে এবং কেয়া পায়েলকে সামনে আসতে বলে। তবুও কেয়া পায়েল অপূর্বর সামনে আসেনি এবং কেয়া পায়েল এর বাবা মা সবকিছু খুলে বলে। যার সাথে কেয়া পায়েলের বিয়ে ঠিক হয়েছে পরের দিন সেই ছেলে বাসায় আসে রিপোর্ট নিয়ে। আসলে অপূর্ব এবং কেয়া পায়েল যে হসপিটালে চেক-আপ করেছিল,সেখানকার ডাক্তার সেই ছেলের পরিচিত। রিপোর্টে স্পষ্ট লেখা ছিল কেয়া পায়েল সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম এবং অপূর্বর কোনো সমস্যাই নেই। আসলে অপূর্ব কেয়া পায়েলকে সত্যি কথাটা বললে ভীষণ কষ্ট পেত। তাই অপূর্ব নিজেকে অক্ষম বলে। যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল সেই ছেলেটা কেয়া পায়েল এর বাবা মাকে অনেক কথা শুনিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। তারপর কেয়া পায়েল আবারো ফিরে যেতে যায় অপূর্বর কাছে। তারপর কি হলো সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই নাটকটি দেখতে হবে।

Notes_230819_144321_ccc.jpg

Notes_230819_144318_027.jpg

Notes_230819_144316_463.jpg

উপরের সবগুলো ছবি ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে


নাটকের লিংক👇👇

ব্যক্তিগত মতামত

নাটকটি একেবারে বাস্তবধর্মী। নাটকটি দেখে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। মনে মনে ভাবলাম বাস্তবতা খুবই কঠিন। কারণ মানুষ দিনদিন প্রচন্ড স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছে। এই নাটকটিতে কেয়া পায়েলের স্বার্থপরতা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। অপূর্ব চাইলেই রিপোর্টে থাকা সত্যি কথাটা কেয়া পায়েলকে জানাতে পারতো। কিন্তু কেয়া পায়েল ভীষণ কষ্ট পাবে,সেটা ভেবে সে উল্টোটা বলেছে। অপূর্ব চাইলেই অন্য কাউকে বিয়ে করে সুখের সংসার করতে পারতো। কিন্তু অপূর্ব সেটা করেনি। এই নাটকে অপূর্ব মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছে। এটা ঠিক যে মন থেকে কাউকে ভালোবাসলে কষ্ট দেওয়া যায় না। কিন্তু কেয়া পায়েলের ভালোবাসা মিথ্যে ছিলো বিধায়, খুব সহজে অপূর্বকে ছেড়ে চলে যেতে পেরেছে। পরবর্তীতে কেয়া পায়েলও সুখী হতে পারেনি। তাই অপূর্বর কাছে ফিরে আসতে চেয়েছে। আসলে কাউকে এভাবে কষ্ট দিয়ে কেউ সুখী হতে পারে না। সবাই বেশ ভালো অভিনয় করেছে। সবমিলিয়ে নাটকটি এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে।

আমার রেটিং

এই নাটকটিকে আমি ৯/১০ দিলাম।

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

পোস্টের বিবরণ

ক্যাটাগরিনাটক রিভিউ
স্ক্রিনশট ক্রেডিট@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy Note 20 Ultra 5g
তারিখ১৯.৮.২০২৩
লোকেশননারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328CzpX9QvbjSPXbrW8KqUMMwTrRCn3xcSQ6EA6R67TcD5gLnqAWu8W41xe41azymkyM19LEXr548bkstuK4YE8RXJKQJWbxQ1hVAD.gif

আমার পরিচয়

IMG_20220605_234413_388.jpg

🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr67352Jpu6E5J43D5L7yhn5d5CrcpnTvTLcF5db3ftZK7V9GzsAkLjb3PriF27x53soS8yKq9EnT1Gez2W6L2XUZu7jXnMduxdzGd4QzpYoozSDTPz3jUEkZ8x9rPrFry12vk2pkpsukTxq2kgJhF2zDYwrV.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81RRg3nBstm6z4qmufGsvFT24rqXwtpQD564XVCvACqesd3KULjLw7vQPhCNBNpraDPBk9z8jqn3ncuykugzMhQ2.png

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PxWHDWW9CETD5B5Jw9Q6ERAnD25KhyHKAX53jBLJKQRtPJf1WFG3aJd6PXbp2rpTXdWPxnRnq65CqtM8PawHiD5knScnfCbWvcVRuFVv1rtwzsXe59AixEGDGYZT2EWzPMzrWjWrbujcJd79Q1Sjs2X.gif

Sort:  
 last year 

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

দূর থেকে দূরে নাটকটির গল্পটি অসাধারন ছিলো। কারন সামাজিক এবং শিক্ষা মূলক একটি নাটক। বাস্তবতা সম্পর্কের নাটক গুলো দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। নাটকটিতে সবাই চমৎকার অভিনয় করেছেন। অপূর্বর নাটক ভীষণ ভালো লাগে। নাটকটি আগে কিছুদিন আগে দেখেছিলাম।

 last year 

এমন বাস্তবসম্মত নাটক দেখতে যেমন ভালো লাগে, তেমনি অনেক কিছু শিখা যায়। যাইহোক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই।

 last year 

খুব সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি। পুরো নাটকের রিভিউ পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আসলে এ ধরনের নাটক গুলো দেখতে খুব ভালো লাগে। সময় করে নাটকটি দেখার চেষ্টা করব। এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 last year 

নাটকের রিভিউ পড়ে আপনার খুব ভালো লেগেছে, জেনে ভীষণ অনুপ্রাণিত হলাম আপু। সময় করে অবশ্যই নাটকটি দেখে নিবেন। এমন প্রশংসনীয় মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 last year 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি নাটক রিভিউ এর মাধ্যমে শেয়ার করেছেন। নাটকটি কিছুদিন আগে আমি দেখেছি কিন্তু অল্প দিন হলো মুক্তি পেয়েছে
। আসলে নাটকটি বর্তমান সময়ে বেশ রোমান্টিক একটি নাটক। এমনিতে আমার কাছে অপূর্ব ও কেয়া পায়েল এর নাটকগুলো দেখতে বেশ ভালো লাগে। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি নাটক শেয়ার করার জন্য।

 last year 

এই নাটকটি আপনি কিছুদিন আগে দেখেছিলেন, জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। নাটকটি অবশ্যই শিক্ষামূলক। যাইহোক গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

তুমি নাটকটা যখন আমি দেখেছিলাম মাঝখানে খুবই খারাপ লেগেছিল। কেননা নায়িকা অজান্তেই ডিভোর্স পেপারে সিগনেচার করিয়ে নিয়েছিল সেটা নায়ক বুঝতে পেরেছিল না। আবার নায়িকার চেয়ে বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে সেটাও নায়ক জানতে পারে বাড়ির দারোয়ানের কাছ থেকে। শেষ পর্যন্ত নাটকটি দেখে খুবই ভালো লেগেছিল।

 last year 

এই নাটকে নায়িকার বাবা অপূর্বর কাছ থেকে চালাকি করে ডিভোর্স পেপারে সিগনেচার করিয়ে নেয়। যাইহোক এভাবে সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

বর্তমান দুনিয়াটা এমন একটি পর্যায়ে চলে গেছে ভাইজান যেন মানুষ কখনো কাউকে মন থেকে বিশ্বাস করতে পারে না। একদম মন থেকে বিশ্বাস করাটা ও দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে পড়ছে। তবে বাস্তবতাকে কেন্দ্র করেই নাটকটা সৃষ্টি হয়েছে। বেশ ভালো লাগলো নাটকটা আপনি রিভিউ করেছেন দেখে চেষ্টা করব দেখে। যে কোন মুহূর্তে নাটকটা দেখার জন্য চেষ্টা করব।

 last year 

একদম ঠিক বলেছেন ভাই, বিশ্বাস শব্দটা দিনদিন যেন উঠে যাচ্ছে। তবে এমন ঘটনা গুলো শুনলে সত্যিই খুব খারাপ লাগে। যাইহোক রিভিউ পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58729.26
ETH 2640.67
USDT 1.00
SBD 2.47