ক্রিয়েটিভ রাইটিং (গল্প) || প্রবাসীদের জীবনে দুঃখের কোনো সীমা নেই (তৃতীয় পর্ব )

in আমার বাংলা ব্লগ5 days ago

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।


দ্বিতীয় পর্ব


প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করবো। এর আগে এই গল্পের দ্বিতীয় পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি এবং আজকে তৃতীয় পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। যাইহোক মোবারক ভাই কোম্পানিতে মনোযোগ সহকারে কাজ করা শুরু করলেন। তিনি ৮ ঘন্টা বেসিক ডিউটি করার পরেও,মাঝেমধ্যে ওভারটাইম করতেন ২/৩ ঘন্টা করে। তবে মাঝেমধ্যে কোম্পানিতে কাজের চাপ কম থাকলে কিংবা উনার শরীর ভালো না লাগলে, বেসিক ডিউটি করার পর রুমে ফিরে আসতেন। তো বাবু ভাইয়ের রুমেই যেহেতু তিনি থাকতেন, একদিন সন্ধ্যার পর বাবু ভাইয়ের রুমে যাওয়ার পর দেখলাম, উনি শুয়ে শুয়ে হয়তো কিছু ভাবছে। তো আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম কি ভাবছেন ভাই।


person-8258273_1280.jpg

Source


সেদিন অবশ্য বাবু ভাই কাজ শেষ করে অফিস থেকে তখনও ফিরেনি। যাইহোক মোবারক ভাই বললেন শুয়ে শুয়ে জীবনের হিসাব নিকাশ মেলানোর চেষ্টা করছি। উনি বললেন জীবনটা আসলেই অদ্ভুত। একেবারে সাজানো গোছানো জীবনটা এলোমেলো হয়ে গিয়েছে এবং বারবার শুধু এটাই মনে পড়ে। তখন আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি এমন ঘটনার জন্য আপনার জীবনটা এমন এলোমেলো হয়ে গেলো। তখন উনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমাকে বললো যে,সেসব কথা বলতে গেলে নিজের কাছেই খারাপ লাগে। তাই বলতেও ইচ্ছে করে না। তখন আমার কৌতুহল আরও বেড়ে গেলো উনার জীবনের ইতিহাস শোনার জন্য। তো মোবারক ভাইকে ভালোভাবে বলার পর, উনি উনার জীবনের ইতিহাস আমার সাথে শেয়ার করলেন। তিনি বললেন, উনি পরিবারের বড় সন্তান এবং উনার দুটি ছোট ভাই এবং দুটি ছোট বোন রয়েছে।


তো তাদের দায়িত্ব পালন করতে করতেই উনার জীবনটা শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখন উনি নিজের ছেলেমেয়েদের দায়িত্ব সেভাবে পালন করতে পারছেন না। আর এই ব্যাপারটা উনাকে চরমভাবে আঘাত করে। যেমন উনি দক্ষিণ কোরিয়াতে কাজ করে যা ইনকাম করতো,সম্পূর্ণ টাকা উনার মা বাবার কাছে পাঠাতেন। উনার মা বাবা মোবারক ভাইয়ের টাকা দিয়ে উনার দুই বোনকে বিয়ে দিয়েছে। এমনকি বিয়ের পরেও উনার দুই বোনের শ্বশুর বাড়িতে বিভিন্ন কারণে টাকা পয়সা দিতে হতো। তাছাড়া মোবারক ভাইয়ের দুই ভাইকে উনার টাকা দিয়ে বাড়িতে বিল্ডিং নির্মাণ করে দিয়েছে মোবারক ভাইয়ের বাবা। মোবারক ভাইয়ের বাবার এমনিতে বেশ ভালোই জমিজমা ছিলো,কিন্তু ক্যাশ টাকা ছিলো না। আবার মোবারক ভাইয়ের বাবা নিজেদের জমিতে কৃষি কাজ করতেন এবং অন্য কোনো ইনকাম সোর্স তাদের ছিলো না।


তো সেজন্য মোবারক ভাইয়ের ইনকামের উপর তারা পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু মোবারক ভাইয়ের টাকা দিয়ে দুই বোনকে বিয়ে দিয়েছে এটা ঠিক আছে, তবে উনার টাকা দিয়ে উনার দুই ভাইকে বিল্ডিং করে দেওয়াটা মোটেই উচিত হয়নি। মূলত উনাদের বাড়ি ছিলো বিশাল বড়। মোবারক ভাই দক্ষিণ কোরিয়াতে যাওয়ার আগে, তাদের বাসায় টিন শেড ঘর ছিলো এবং বেশ কয়েকটি টিনের ঘর ছিলো। তো বাড়ির দুই সাইডে দুই ভাইকে বিল্ডিং করে দিয়েছে মোবারক ভাইয়ের মা বাবা, কিন্তু সেটা সম্পূর্ণ মোবারক ভাইয়ের টাকা দিয়ে। এমনকি মোবারক ভাইয়ের কাছ থেকে অনুমতি না নিয়ে। মোবারক ভাইয়ের মা বাবার এটা মোটেই উচিত হয়নি। আসলে কিছু কিছু প্রবাসীদের সাথে এমন ঘটনা ঘটে থাকে। এমন ঘটনা আমি অনেক শুনেছি। যাইহোক মোবারক ভাইয়ের জীবনে আর কি কি ঘটেছিলো, সেটা পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। (চলবে)



2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

পোস্টের বিবরণ

ক্যাটাগরিগল্প(ক্রিয়েটিভ রাইটিং)
পোস্ট তৈরি@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy Note 20 Ultra 5g
তারিখ৫.৭.২০২৪
লোকেশননারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328CzpX9QvbjSPXbrW8KqUMMwTrRCn3xcSQ6EA6R67TcD5gLnqAWu8W41xe41azymkyM19LEXr548bkstuK4YE8RXJKQJWbxQ1hVAD.gif

আমার পরিচয়

IMG-20240212-WA0036.jpg

🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr67352Jpu6E5J43D5L7yhn5d5CrcpnTvTLcF5db3ftZK7V9GzsAkLjb3PriF27x53soS8yKq9EnT1Gez2W6L2XUZu7jXnMduxdzGd4QzpYoozSDTPz3jUEkZ8x9rPrFry12vk2pkpsukTxq2kgJhF2zDYwrV.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81RRg3nBstm6z4qmufGsvFT24rqXwtpQD564XVCvACqesd3KULjLw7vQPhCNBNpraDPBk9z8jqn3ncuykugzMhQ2.png

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PxWHDWW9CETD5B5Jw9Q6ERAnD25KhyHKAX53jBLJKQRtPJf1WFG3aJd6PXbp2rpTXdWPxnRnq65CqtM8PawHiD5knScnfCbWvcVRuFVv1rtwzsXe59AixEGDGYZT2EWzPMzrWjWrbujcJd79Q1Sjs2X.gif

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58484.86
ETH 3100.06
USDT 1.00
SBD 2.40