আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে তুই ছাড়া মন ভালো নাই। এই নাটকটি ২ সপ্তাহ আগে রিলিজ হয়েছে। এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে খায়রুল বাশার এবং সাদিয়া আইমান। সাদিয়া এবং খায়রুল এর কয়েকটি নাটক দেখেছিলাম। এই দুজন বেশ ভালোই অভিনয় করে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।

নাটকের নায়ক খায়রুল বাশার ডিশের লাইন সংযোগ ও পরিচালনার কাজ করে এবং নাটকের নায়িকা সাদিয়া আইমান এলাকার চেয়ারম্যান এর বোন। তারা একই গ্রামে বসবাস করে। একদিন এলাকার একটি ব্রীজে খায়রুল সাদিয়াকে দেখে। দেখার পর সাদিয়াকে ভীষণ পছন্দ করে খায়রুল। সাদিয়াও বেশ কয়েকবার তাকায় খায়রুলের দিকে। তারপর খায়রুল সাদিয়ার ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়। মূলত যার আন্ডারে খায়রুল ডিশের লাইনের কাজ করে, তার কাছ থেকে খোঁজখবর নেয়। তখন ডিশ ব্যবসায়ী খায়রুলকে নিষেধ করে সাদিয়ার ধারে কাছে যেতে। কারণ সাদিয়া চেয়ারম্যান এর বোন। চেয়ারম্যান বা তার ছোট ভাই জানতে পারলে একেবারে মেরে ফেলবে খায়রুলকে। তবে খায়রুল নাছোড়বান্দা, সে যেভাবেই হোক সাদিয়াকে পেতে চায়। সাদিয়ার সাথে রাস্তায় বেশ কয়েকবার দেখা হয় খায়রুলের। দেখে বুঝা যায় সাদিয়াও খায়রুলকে পছন্দ করে।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

একদিন সাহস করে ভালোবাসার কথা খায়রুল বলে দেয় সাদিয়াকে। সাদিয়াও রাজি হয়ে যায়। তারা চুটিয়ে প্রেম করতে থাকে। একদিন খায়রুল তার মা'কে বলে যে সাদিয়াকে পছন্দ করে। তারপর খায়রুলের মা সাদিয়ার ভাইয়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়। সাদিয়ার ভাই অনেক অপমান করে খায়রুলের মা'কে। বলে যে আমি ৫ বারের মেম্বার এবং ৩ বারের চেয়ারম্যান। এমন জায়গায় বিয়ে দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। কিন্তু খায়রুলের বাবা এবং সাদিয়ার বাবা জীবিত থাকতে সাদিয়া ও খায়রুলের বিয়ে ঠিক করে রেখেছিল। তখন সাদিয়ারা খায়রুলদের চেয়েও গরীব ছিলো। খায়রুলের বাবা বিভিন্ন ভাবে সাদিয়ার পরিবারকে সাহায্য সহযোগিতা করেছিল। যাইহোক বর্তমানে সাদিয়ারা খুব ধনী, তাই সাদিয়ার ভাই এগুলো মেনে না নিয়ে অপমান করে, খায়রুলের মা'কে বাসা থেকে বের করে দেয়। এরপর সাদিয়াকে তার ভাই বলে যে, যদি খায়রুলের সাথে সম্পর্ক রাখে,তাহলে খায়রুলকে মেরে ফেলবে।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

এতে করে কিছুদিন তাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ হয় না। কিন্তু একে অপরকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারছিল না,তাই দুজন পালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। রাতের বেলায় অটো নিয়ে যখন পালাচ্ছিল,তখন চেয়ারম্যান এর ছোট ভাই তাদেরকে ধরে ফেলে। তারপর খায়রুলকে ইচ্ছেমতো মারধর করে এবং সাদিয়াকে বাসায় নিয়ে আটকে রাখে। তারপর সাদিয়ার দুই ভাই চেয়ারম্যান এবং ছোট ভাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরের দিন সাদিয়াকে বিয়ে দিয়ে দিবে। সাদিয়া যখন কনে সেজেছিল,তখন চেয়ারম্যান তার ছোট ভাইকে বলছিল, খায়রুলকে খুন করে ফেলতে। একদিকে সাদিয়ার বিয়ে হচ্ছে এবং অপরদিকে খায়রুলকে খুন করার জন্য সাদিয়ার ছোট ভাই চলে গিয়েছে। এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে অবশ্যই আপনাদেরকে নাটকটি দেখতে হবে।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

নাটকটি দেখার সময় মনে হয়নি যে নাটক দেখছিলাম। কারণ একেবারে বাস্তবসম্মত একটি নাটক। বাস্তবে আমরা এমন ঘটনা অহরহ দেখে থাকি। আসলে প্রেম ভালোবাসা স্বর্গীয় ব্যাপার। কখন কার সাথে প্রেম হয়ে যায় এটা বলা মুশকিল। প্রেম ভালোবাসা ধনী গরীব বিচার করে হয় না। কিন্তু অনেক পরিবার আছে, ছেলেদের বা মেয়েদের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকলে সম্পর্ক মেনে নেয় না। তারা সন্তানদের সুখের কথা না ভেবে, নিজেদের স্ট্যাটাস রক্ষা করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। জোর করে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয়,অনেক সময় অনেকে আত্মহত্যা করে ফেলে। এমন আরও বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। তারা একবারও ভাবে না যাদের জীবন তারা কি চায়। তাদের জোড়াজুড়ির কারণে অনেক মানুষের জীবন একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। বিয়ের পরও হারানো প্রেমিক বা প্রেমিকাকে ভুলতে পারে না। সারাজীবন মনের মধ্যে হারানোর আফসোস থেকে যায়। যাইহোক সকল প্রকৃত ভালোবাসা পূর্ণতা পাক সেই কামনা করছি। সবাই বেশ ভালো অভিনয় করেছে। সবমিলিয়ে নাটকটি দারুণ উপভোগ করেছি।

আমার রেটিং