"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা-৫৭ || কাগজ এবং বাঁশের কাঠি দিয়ে একটি কালারফুল প্রজাপতির ঘুড়ি তৈরি
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি এই পোস্টের মাধ্যমে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি কর্তৃক আয়োজিত ৫৭ তম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। আমরা সবাই জানি যে, এবারের প্রতিযোগিতা হচ্ছে ঘুড়ি বানানোর দক্ষতা নিয়ে। ছোটবেলায় প্রায় প্রতিটি ছেলে অন্ততপক্ষে ২/১ বার হলেও ঘুড়ি বানিয়েছে এবং উড়িয়েছে। আমিও ছোটবেলায় হাতেগোনা কয়েকবার ঘুড়ি বানিয়েছিলাম এবং উড়িয়েছিলাম। কনডেন্স মিল্কের দুটি কৌটা জোড়া দিয়ে নাটাই তৈরি করতাম। তারপর ঘুড়ির সুতা ধারালো করার জন্য মাঞ্জা দিতাম কাঁচের টুকরা ভেঙে। যদিও এই বিষয়ে আমি তেমন এক্সপার্ট ছিলাম না। তবে অনেকে দেখতাম এমনটা করতো। তারপর ঘুড়ি আকাশে উড়িয়ে, অন্য কারো ঘুড়ি কেটে দেওয়ার চেষ্টা করতাম। সেজন্য সুতা ধারালো হওয়াটা জরুরী ছিলো।
আর আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় যদি কারো ঘুড়ির সুতা কেটে ফেলতে পারতাম, তাহলে সবাই বাহবা দিতো। সুতা কাটার পর সেই ঘুড়ি ধরার জন্য সবাই ব্যস্ত হয়ে যেতো। সেই মধুর দিনগুলো আসলেই দারুণ ছিলো। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য যখন ঘুড়ি বানাচ্ছিলাম,তখন ছোটবেলার সেই মধুর স্মৃতিতে হারিয়ে গিয়েছিলাম। যাইহোক আমি কাগজ এবং বাঁশের কাঠি দিয়ে একটি কালারফুল প্রজাপতির ঘুড়ি তৈরি করেছি। সাদা কাগজের মধ্যে বিভিন্ন কালারের সাইন পেন দিয়ে রং করার কারণে ঘুড়িটা দেখতে বেশ আকর্ষণীয় লাগছে। তাছাড়া ক্লে দিয়ে ছোট একটি নাটাই এর ডেমো তৈরি করেছি। যাইহোক আমি কিভাবে প্রজাপতি ঘুড়িটা তৈরি করলাম,সেটা ধাপে ধাপে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে। আপনারা চাইলে এই পোস্টটি দেখে এমন ঘুড়ি তৈরি করতে পারেন।
কাগজ এবং বাঁশের কাঠি দিয়ে একটি কালারফুল প্রজাপতির ঘুড়ি তৈরি
প্রয়োজনীয় উপকরণ
- সাদা কাগজ
- রঙিন কাগজ
- বিভিন্ন রঙের সাইন পেন
- বাঁশের কাঠি
- পেন্সিল
- কম্পাস
- রাবার
- কাঁচি
- আঠা
- টেপ
- ক্লে
প্রস্তুত প্রণালী নিম্নরুপঃ
প্রথম ধাপ
প্রথমে দুটি সাদা কাগজের পেজ নিলাম। তারপর উপরের পেজের মধ্যে পেন্সিল দিয়ে প্রজাপতির পাখনার আকৃতি এঁকে নিলাম। তারপর পেন্সিলের দাগ অনুযায়ী কাঁচি দিয়ে পেজ দুটি কেটে, প্রজাপতির দুটি পাখনা তৈরি করে নিলাম।
দ্বিতীয় ধাপ
তারপর প্রজাপতির শরীরের অংশ তৈরি করে,দুই পাখনার মাঝখানে বসিয়ে দিলাম।
তৃতীয় ধাপ
এই পর্যায়ে প্রজাপতির শরীরের অংশ বিভিন্ন কালারের সাইন পেন দিয়ে রং করে নিলাম।
চতুর্থ ধাপ
প্রজাপতির পাখনার মধ্যে ডিজাইন করার জন্য পেন্সিল এবং কম্পাস দিয়ে দুটি বৃত্ত এঁকে, কাঁচি দিয়ে কেটে নিলাম। তারপর চিত্রের মতো করে বিভিন্নভাবে দাগ দিয়ে নিলাম ডিজাইন করার জন্য।
পঞ্চম ধাপ
এই পর্যায়ে প্রজাপতির পাখনার মধ্যে রং করে নিচ্ছি।
ষষ্ঠ ধাপ
বিভিন্ন কালারের সাইন পেন দিয়ে প্রজাপতির একটি পাখনা খুব সুন্দর ভাবে কালার করে নিলাম। একইভাবে আরেকটি পাখনাও কালার করে নিবো।
সপ্তম ধাপ
এই পর্যায়ে প্রজাপতির শুঁড় তৈরি করে আঠা দিয়ে লাগিয়ে নিলাম। তারপর দুটি পাখনা এবং শরীরের অংশ আঠা দিয়ে লাগিয়ে নিলাম। ব্যাস এভাবেই কালারফুল প্রজাপতিটি তৈরি করে নিলাম।
অষ্টম ধাপ
তারপর রঙিন কাগজ দিয়ে ঘুড়ির নিচের অংশ তৈরি করে নিলাম। এরপর আঠা দিয়ে লাগিয়ে নিবো।
নবম ধাপ
তারপর বাঁশের দুটি কাঠি ঘুড়ির পিছনের অংশে টেপ দিয়ে লাগিয়ে নিলাম। এভাবেই প্রজাপতির ঘুড়ি তৈরি করে ফেললাম।
দশম ধাপ
এরপর ক্লে দিয়ে নাটাই এর ডেমো তৈরি করে নিলাম।
একাদশ ধাপ
তারপর কাগজ দিয়ে মেঘের মতো তৈরি করে ঘুড়ি, নাটাই এবং মেঘের ছবি তুলে নিলাম।
সর্বশেষ ধাপ
তারপর ছাঁদে গিয়ে আকাশের দিকে উঠিয়ে ছবি তুলে নিলাম। নাটাই আর সুতা থাকলে এই ঘুড়িটা উড়াতে পারতাম। যাইহোক প্রজাপতির ঘুড়িটা দেখতে আসলেই খুব সুন্দর লাগছে।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | প্রতিযোগিতা |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ২৮.৪.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
আজকে কাগজ এবং বাঁশের কাঠি দিয়ে কালারফুল প্রজাপতির ঘুড়ি তৈরি করেছেন। দেখতেও ভীষণ ভালো লাগতেছে। আপনার ডিজাইন টা ও কালার কম্বিনেশনটি বেশ ভালো ছিল। এর ওপর সুন্দর আর্ট করেছেন অনেক ভালো লাগলো। যদি আপনি ভিডিও আকারে আকাশে উড়িয়ে দেখাতেন তাহলে আরো ভালো লাগতো ভাই। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
ভাই নাটাই আর সুতা ছিলো না বলে ঘুড়িটি উড়াতে পারিনি। যাইহোক ঘুড়িটি দেখে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। চলমান এই প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে কাগজ এবং বাঁশের কাঠি দিয়ে একটি কালারফুল প্রজাপতির ঘুড়ি তৈরি করেছেন। ঘুড়ি সম্পর্কে আমার তেমন কোন আইডিয়া নেই। তবে আপনার তৈরি ঘুড়িটি কিন্তু দেখতে অনেক আকর্ষণীয় লাগছে। ঘুড়িটি অনেক কালারফুল লাগছে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ভাইয়া।
হ্যাঁ আপু মেয়েদের আসলে ঘুড়ি তৈরি করার ব্যাপারে তেমন আইডিয়া নেই। যাইহোক ঘুড়িটি দেখে এমন প্রশংসনীয় মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি ভাইয়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্যে।ভাইয়া আপনার তৃতীয় ধাপের প্রজাপতির দৃশ্যটি দেখে মনে হয়েছি এটি একটি সুন্দর রকমের ঝিঁঝিঁ পোকা।ছোট বেলার সুন্দর একটি কথা আপনার পোস্ট এর মাধ্যমে মনে হয় গেলো সেটি হচ্ছে নিজের ঘুড়ির সুতা দিয়ে অন্যের ঘুড়ির সুতা কাটা।এটা যে কত আনন্দের ছিল বলে বোঝাতে পারবোনা।অসংখ্য ধন্যবাদ শৈশবের কিছু স্মৃতি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যে।
ছোটবেলায় ঘুড়ি উড়াতে গিয়ে আসলেই অনেক মজা করতাম। যাইহোক ঘুড়িটি দেখে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
প্রথমেই অভিনন্দন জানাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। প্রজাপতির ঘুড়িটা বেশ দারুন লাগছে দেখতে। আসলেই অনেক বেশি কালারফুল হয়েছে যার কারণে আকাশে উড়ালে অনেক ভালো লাগবে দেখতে। আর দেখতেও একদম প্রজাপতির মতই দেখাচ্ছে। ঘুড়ির নিচের অংশটুকুও দারুন লাগছে দেখতে। নাটাই না থাকার কারণে উড়াতে পারেননি। যাইহোক, শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
হ্যাঁ আপু নাটাই আর সুতা থাকলে ঘুড়িটি উড়াতে পারতাম। যাইহোক ঘুড়িটি দেখে এভাবে অনুপ্রাণিত করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
শৈশবে কত ঘুড়ি উড়িয়েছি! পলিথিনের কাগজ দিয়ে ঘুড়ি বানিয়ে আকাশে উড়াতাম। ত্রিশ টাকা দিয়ে সুতার কৌটা কিনে সেটার সবটাই ছেড়ে দিতাম! যাইহোক, আপনার কাগজে বানানো ঘুড়িটি খুবই সুন্দর হয়েছে। আকাশে উড়াতে পারলে ভালো লাগবে।
হ্যাঁ ভাই পলিথিনের কাগজ দিয়ে আমরাও ঘুড়ি বানাতাম। যাইহোক ঘুড়িটি দেখে এভাবে উৎসাহিত করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
প্রথমেই আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য।এই প্রতিযোগিতা উপলক্ষে অনেক সুন্দর একটি প্রজাপতির ঘুড়ি তৈরি করেছেন।বাঁশের কাঠি এবং কাগজ দিয়ে তৈরি কালারফুল এই ঘুড়িটি দেখতে অনেক চমৎকার হয়েছে।এই ঘুড়িটি আকাশে উড়ালেও দেখতে অনেক আকর্ষণীয় লাগবে।আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।
আপনার কাছ থেকে এমন প্রশংসনীয় মন্তব্য পেয়ে ভীষণ অনুপ্রাণিত হলাম আপু। যাইহোক ঘুড়িটি দেখে এমন অনুপ্রেরণামূলক মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
X-promotion
শৈশবে ঘুড়ি উড়ানোর একটা স্মৃতি মোটামুটি সবারই রয়েছে। প্রজাপ্রতির আকারে ঘুড়িটা দারুণ তৈরি করেছেন ভাই। দেখে বেশ চমৎকার লাগছে। ঘুড়িটা বেশ সুন্দর। প্রতিটা ধাপ খুবই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। তবে যদি একটু জোরে বাতাস হয় তাহলে হয়তো এই ঘুড়ি আর আকাশে উড়বে না ছিড়ে চলে যাবে।
হ্যাঁ বাতাস কম থাকলে এই ঘুড়িটি উড়ানো যাবে খুব ভালোভাবে। যাইহোক ঘুড়িটি দেখে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।