জেনারেল রাইটিং || ট্রলার দিয়ে বিশ্ব ইজতেমায় যাওয়ার গল্প (প্রথম পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।



প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আমার জীবনের পুরনো কিছু স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। তখন ছিল শীতকাল। আমার স্পষ্ট মনে আছে ২০১৪ সালে আমি এবং আমার বন্ধু বান্ধবসহ প্রায় ৯/১০ জন মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম টঙ্গী ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করবো। আপনারা অনেকেই জানেন যে টঙ্গী ইজতেমায় দেশ বিদেশ থেকে অনেক মুসল্লিরা এসে যোগ দেন। তুরাগ নদীর তীরে টঙ্গী ইজতেমার বিশাল মাঠে তাবু টাঙ্গিয়ে,প্যান্ডেল বানিয়ে ৩/৪ দিন পর্যন্ত থাকেন এবং ইবাদত বন্দেগী করেন। তবে আমরা যাওয়ার প্ল্যান করেছিলাম আখেরি মোনাজাতের আগের দিন বিকেলে।


rafting-168007_1920.jpg

Source


আমরা যদি ট্রেন, বাস বা অন্য কোন যানবাহন দিয়ে যাই তাহলে আখেরি মোনাজাত শেষ করার পর কয়েকঘন্টা ট্রাফিক জ্যামে বসে থাকতে হবে। কারণ একসাথে সবাই রওনা দিবে ইজতেমার মাঠ থেকে। আর সেজন্যই প্রচুর জ্যাম হয় সেখানে। আমরা সেজন্য প্ল্যান করেছিলাম নৌপথে রওনা দিব শীতলক্ষ্যা নদীর সাধুর ঘাট থেকে। এই ঘাটটি হচ্ছে বর্তমানে আদমজী ইপিজেড এর উল্টো পাশে অবস্থিত। তখন আদমজী ইপিজেড নির্মাণ করা হয়নি। যাইহোক আমরা একটি ট্রলার ভাড়া করলাম ৯/১০ জন মিলে। ট্রলার দিয়ে যাবো এবং আখেরি মোনাজাত শেষ করে পরের দিন বাসায় ফিরবো। যদিও আমি প্রথমে রাজি হইনি কারণ আমি সাঁতার পারি না। আবার আসা যাওয়া মিলিয়ে মিনিমাম ১৩/১৪ ঘন্টা ট্রলারে থাকতে হবে সেটা ভেবে।


যাইহোক সবাই মিলে আমাকে রাজি করালো। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে বিকেল ৪টার আগে বাসা থেকে বের হলাম ট্রলারে উঠার উদ্দেশ্যে। ট্রলারের মধ্যে পিকনিক করা হবে সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে। যাইহোক আমরা যাত্রা শুরু করলাম। যেতে যেতে আমরা সবাই গল্প গুজব করতে লাগলাম এবং টুকটাক খেতে লাগলাম। যেহেতু শীতকাল ছিল একটু একটু ঠান্ডা লাগছিল। আমার কাছে ঠান্ডা একটু কম লাগছিল অন্যদের তুলনায়। কারণ আমি তো দক্ষিণ কোরিয়াতে ছিলাম। তখন বাংলাদেশে ছুটিতে এসেছিলাম। আর দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রচন্ড শীতের মধ্যে থেকে অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। তাই বাংলাদেশের শীত তেমন খারাপ লাগে না। তবে যেহেতু নদীপথে যাচ্ছিলাম তাই শরীরে হালকা শীত অনুভূত হচ্ছিল।


মোটামুটি ৩০/৪০ মিনিট যাওয়ার পর একটি ঘাটে ট্রলার থামিয়ে আমরা আসরের নামাজ আদায় করলাম এবং আশেপাশে একটু হাঁটাহাটি করে কিছু শুকনো খাবার সাথে নিয়ে নিলাম। তারপর আবারও আমরা যাত্রা শুরু করলাম। মাগরিবের আযানের সময় আমাদের ট্রলার একটু ডিস্টার্ব দিল। আবার সেই শীতের মধ্যে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। ট্রলার চালক বললো ট্রলারের কি যেন সমস্যা হয়েছে, তাই একটা ঘাটে থামিয়ে মেরামত করার চেষ্টা করবে। তখন আমরা ইছাপুরা ঘাটে নেমে পড়লাম সবাই। আর ট্রলার চালক ট্রলার মেরামত করার লোক খুঁজতে লাগলো। যাইহোক আজকে এই পর্যন্তই। পরের পর্বে আপনাদের সাথে আরও অনেক কিছু শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ।

"চলবে"

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

পোস্টের বিবরণ

ক্যাটাগরিজেনারেল রাইটিং
পোস্ট তৈরি@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy Note 20 Ultra 5g
তারিখ২৮.৪.২০২৩
লোকেশনঢাকা,বাংলাদেশ

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাল্লাহ দেখা হবে অন্য কোন পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328CzpX9QvbjSPXbrW8KqUMMwTrRCn3xcSQ6EA6R67TcD5gLnqAWu8W41xe41azymkyM19LEXr548bkstuK4YE8RXJKQJWbxQ1hVAD.gif

আমার পরিচয়

IMG_20220605_234413_388.jpg

🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr67352Jpu6E5J43D5L7yhn5d5CrcpnTvTLcF5db3ftZK7V9GzsAkLjb3PriF27x53soS8yKq9EnT1Gez2W6L2XUZu7jXnMduxdzGd4QzpYoozSDTPz3jUEkZ8x9rPrFry12vk2pkpsukTxq2kgJhF2zDYwrV.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81RRg3nBstm6z4qmufGsvFT24rqXwtpQD564XVCvACqesd3KULjLw7vQPhCNBNpraDPBk9z8jqn3ncuykugzMhQ2.png

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PxWHDWW9CETD5B5Jw9Q6ERAnD25KhyHKAX53jBLJKQRtPJf1WFG3aJd6PXbp2rpTXdWPxnRnq65CqtM8PawHiD5knScnfCbWvcVRuFVv1rtwzsXe59AixEGDGYZT2EWzPMzrWjWrbujcJd79Q1Sjs2X.gif

Sort:  
Loading...
 last year 

আসলে ভাইয়া, দক্ষিণ কোরিয়াতে যারা থাকেন, তাদের শীত সহ্য করার আলাদা একটি ক্ষমতা হয়ে যায়। তেমনটি আপনার ক্ষেত্রেও হয়েছে। যাহোক ভাইয়া, ট্রলারে চড়ে টঙ্গী ইজতেমায় যাওয়ার প্রথম পর্বটি পড়ে বেশ ভালো লেগেছে আমার। ট্রলার মেরামতের পর আপনারা পরবর্তী পথটুকু কিভাবে গেলেন সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম।

 last year 

প্রথম পর্বটি পড়ে আপনার বেশ ভালো লেগেছে জেনে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। পরের পর্বে মেরামত সহ আরো অনেক কিছুই জানতে পারবেন। অনুপ্রেরণা মূলক মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

২০১৪ সালে আপনারা ৯/১০ জন বন্ধুরা মিলে বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করার জন্য ট্রলারে গিয়েছিলেন।তারপর ট্রলারে পিকনিক করেছিলেন।৩০/৪০ মিনিট যাওয়ার পর ট্রলারে হঠাৎ সমস্যা হয় তখন ট্রলার মেরামতের সময় কিছুক্ষণ হাটাহাটি করেছিলেন আপনারা।সবার ঠান্ডা লাগলেও আপনার তেমন সমস্যা হয়নি কারণ আপনি দক্ষিণ কোরিয়াতে থেকে শীতে মানিয়ে নিতে অভ্যস্ত ছিলেন।পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

এমন অভিজ্ঞতা এর আগে আমার ছিল না। যাইহোক আমরা যেতে যেতে বেশ মজা করেছিলাম। তবে ট্রলারে সমস্যা হওয়াতে ঝামেলায় পড়ে গিয়েছিলাম। সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আপনাদের বুদ্ধিটা কিন্তু আমার কাছে দারুন মনে হয়েছে। আপনারা কয়েকজন বন্ধু মিলে বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং ট্রাফিক জামের মাঝখানে না পড়ার জন্য বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। খুবই ভালো লাগলো এত সুন্দর একটি তথ্যবহুল ঘটনা পড়ে।

 last year 

আপনি ঠিক বলেছেন ভাই ট্রাফিক জ্যাম থেকেও বাঁচা গেলো, আবার নৌ/ট্রলার ভ্রমণও হয়ে গেলো। আপনার কাছে পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লেগেছে জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 61720.10
ETH 2429.72
USDT 1.00
SBD 2.63