লাইফস্টাইল পোস্ট || ওয়াইফকে নিয়ে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ইফতার করার অনুভূতি
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি লাইফস্টাইল পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। গত মাসের ২৮ তারিখ অর্থাৎ ১৭ রমজানের দিন আমার ওয়াইফকে নিয়ে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ইফতার করেছিলাম। আজকে সেই গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো। যাইহোক রমজান মাসে ঘুরাঘুরি করা আমি একদমই পছন্দ করি না। কারণ রমজান মাসে ঘুরাঘুরি করলে রাতের বেলা খতম তারাবিহ পড়তে সমস্যা হয়ে যায়। সেজন্য বিগত ৩ বছর ধরে আমি রোজার আগেই ঈদের শপিং করে ফেলি সবার জন্য। কারণ সারাদিন রোজা রেখে রাতের বেলা তারাবিহ নামাজ আদায় করতে সবারই কষ্ট হয়ে যায়। রমজান মাস হচ্ছে আমল করার মাস এবং এই মাসে যে যত বাড়তি নেক আমল করতে পারবে,তার জন্য ততই মঙ্গল।
যদিও সাধারণত বাসায় ইফতার করা হয়ে থাকে। তবে মাঝেমধ্যে বাহিরে ইফতার না করলে আসলেই ভালো লাগে না। ইতিমধ্যেই বন্ধু বান্ধবদের সাথে ইফতার পার্টি করেছিলাম এবং আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। কিন্তু ওয়াইফকে নিয়ে এবারের রমজানে একদিনও ইফতার করা হয়নি বাহিরে গিয়ে। সেটা ভেবেই মূলত ইফতার করতে গিয়েছিলাম সেদিন। যাইহোক ১৭ রমজানের দিন আসর নামাজ আদায় করে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। তো আমাদের মদনপুর থেকেই আমার ওয়াইফ প্রথমে নিজের জন্য কিছু কসমেটিকস কিনলো। কসমেটিকস কিনতে কিনতে দেখলাম যে ইফতারের মাত্র ১০ মিনিট বাকি রয়েছে। তো আমরা প্রথমে টেস্ট অফ টাউন রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম ইফতার করার জন্য। তো আমাদের হাতে সময় খুবই কম ছিলো এবং সেই রেস্টুরেন্টে বেশ ভালোই ভিড় ছিলো।
তাদের কাছে জিজ্ঞেস করার পর বললো খাবার দিতে একটু দেরি হবে। তাই আমরা সাথে সাথে সেই রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে, পাশের একটি রেস্টুরেন্টে চলে গেলাম। সে রেস্টুরেন্টের নাম হচ্ছে ড্রিমল্যান্ড চাইনেজ রেস্টুরেন্ট। ড্রিমল্যান্ড রেস্টুরেন্টে এর আগে একবার গিয়েছিলাম। তাদের খাবারের মান মোটামুটি ভালোই বলা যায়। যাইহোক ড্রিমল্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ঢোকার পর, তাদেরকে জিজ্ঞেস করলাম যেহেতু ইফতারের ৪/৫ মিনিট বাকি রয়েছে, কোন খাবারটা আগে সার্ভ করা যাবে। তারা বললো সেট মেনু দ্রুত সার্ভ করা যাবে। যদিও রমজান উপলক্ষে ইফতারের জন্য তাদের আলাদা বেশ কিছু মেনু ছিলো,কিন্তু আমাদের হাতে সময় কম ছিলো বিধায়, শেষ পর্যন্ত সেট মেনু অর্ডার করলাম। তারা বললো খাবার সার্ভ করতে ৭/৮ মিনিট সময় লাগবে।
যাইহোক আমরা বসে ২/৩ মিনিট গল্প করলাম এবং কয়েকটি ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। যদিও হাতে সময় কম ছিলো বিধায়, বেশি ফটোগ্রাফি করতে পারিনি। রেস্টুরেন্টের ইন্টেরিয়র ডিজাইন ততোটা ভালো ছিলো না। যাইহোক মাগরিবের আযান দেওয়ার সাথে সাথে, রোজা ভেঙে ওয়েটারকে জিজ্ঞেস করলাম রেস্টুরেন্টের ভিতরে নামাজ পড়ার কোনো ব্যবস্থা রয়েছে কিনা। তেমন কোনো ব্যবস্থা না থাকলেও, তারা আমাকে একটি জায়নামাজ দিলো এবং আমি রেস্টুরেন্টের ভিতরের একটি ফাঁকা জায়গায় নামাজ আদায় করে নিলাম। আসলে খাবার আসতে যেহেতু একটু দেরি হয়েছিল, তাই সেই সময়টা কাজে লাগিয়ে ছিলাম। যাইহোক নামাজ পড়ার পর দেখলাম টেবিলে ইতিমধ্যেই খাবার সার্ভ করা হয়েছে। আমার ওয়াইফ আমার জন্য অপেক্ষা করছিল।
আমার নামাজ শেষ হওয়ার পর আমরা দুজন একসাথে খাবার খাওয়া শুরু করলাম। সেট মেনুটা একেবারে সিম্পল ছিলো। ফ্রাইড রাইস, চিকেন ফ্রাই, চাইনিজ ভেজিটেবল এবং সালাদ। আমাদের দু'জনেরই সর্দি ঠান্ডার সমস্যা ছিলো বিধায়, ঠান্ডা জাতীয় কিছু অর্ডার করিনি। তবে শুধুমাত্র নরমাল শরবত নিয়েছিলাম। এমনিতে খাবারের স্বাদ বেশ ভালো ছিলো। তবে খাওয়া দাওয়া শেষ করে দ্রুত বাসায় ফিরতে হবে বলে,অন্য কিছু অর্ডার করা হয়নি আর। কারণ অন্য কিছু অর্ডার করলে সময় লাগবে। আর ৮ টা থেকে এশার নামাজ এবং তারপর তারাবিহ নামাজ শুরু হয়ে যাবে বলে,আমরা তাড়াতাড়ি খাওয়া দাওয়া শেষ করেছিলাম। যাইহোক তারপর বিল মিটিয়ে বাসায় চলে গিয়েছিলাম এবং অল্প একটু রেস্ট নিয়ে মসজিদে চলে গিয়েছিলাম নামাজ আদায় করতে। সবমিলিয়ে আমরা বেশ ভালো সময় কাটিয়েছিলাম। এতো চমৎকার অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগছে।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | লাইফস্টাইল |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ৬.৪.২০২৪ |
লোকেশন | w3w |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
ভাইয়া আপনি অনেক বেশি চালাক, আপনি রমজান মাসের আগেই শপিং করে নিয়েছেন। আপনি আপনার ওয়াইফকে নিয়ে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে চাইনিজ খাবার দিয়ে ইফতারী করেছেন। খাবার গুলো দেখে মনে হচ্ছে খুবই মজাদার খাবার। যাইহোক আপনারা খুবই সুন্দর একটি সময় উপভোগ করেছেন।
রমজানের আগে শপিং করতে গিয়েই তো একটু পর পর পানি খেতে হয়েছিল। যাইহোক পোস্টটি পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ড্রিমল্যান্ড রেস্টুরেন্টে আপনার ওয়াইফ কে নিয়ে ইফতারি করার বেশ সুন্দর মুহূর্ত সেয়ার করেছেন আপনি ভাইয়া।মাঝে মাঝে বাইরে রেস্টুরেন্ট গুলায় খাবার না খেলে বুঝা যায়না যে খাবারের আসল স্বাদ টা কেমন।খাবার দেরিতে আশায় নামাজ পরে নেওয়ার বিষয়টা বেশ ভালো কাজ করেছেন ভাইয়া।আপনার ওয়াইফ কে নিয়ে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ইফতারি করার অনুভূতি সেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এবারের রমজান মাসে আলহামদুলিল্লাহ এক ওয়াক্ত নামাজও কাজা করিনি। তাই সেদিন রেস্টুরেন্টে মাগরিবের নামাজ আদায় করেছিলাম। যাইহোক পোস্টটি পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলেই রোজা রেখে মার্কেট করে বেশ ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার ফলে রাতে তারাবি নামাজ পরতে বেশ কষ্ট হয়।তাই রোজার আগে আর না হয় ঈদের পরে মার্কেট করলে ভালো হয়।চাইনিজ রেস্টুরেন্টে খাবার সার্ভ করতে বেশ দেরি হয় তাছাড়া ইফতারে অনেক ভীড় থাকে।যাই হোক ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
সেজন্যই আমি বিগত ৩ বছর ধরে রোজার আগে শপিং করে ফেলি সবার জন্য। যাইহোক পোস্টটি পড়ে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
ড্রিমল্যান্ড রেস্টুরেন্টে স্ত্রীকে নিয়ে বেশ ভালো একটা সময় কাটিয়েছেন। তাদের খাবারের মান ভালো দেখে সত্যি ভালো লাগলো। দুজনে বেশ ভালো একটা সময় কাটিয়েছেন। সত্যি প্রিয় জনকে নিয়ে এভাবে ঘুরতে পারলে অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ আপু আমরা বেশ ভালো সময় কাটিয়েছিলাম সেদিন। যাইহোক পোস্টটি পড়ে সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
ভাই আপনারা ইফতারিতে যে, খাবারগুলো খেয়েছেন এই খাবার আমার ভীষণ পছন্দের। চিকেন ফ্রাই, ফ্রাইড রাইস, চাইনিজ ভেজিটেবল ও সালাদ সত্যি দারুন খাবার খেয়েছেন। নিজের অর্ধাঙ্গিনী কে নিয়ে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে খাওয়ার দারুণ অনুভূতি পড়ে ভালো লাগলো ভাই। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
হ্যাঁ ভাই আমরা সবাই কমবেশি এসব খাবার পছন্দ করে থাকি। তবে হাতে সময় থাকলে আরও কিছু অর্ডার করতাম। যাইহোক পোস্টটি পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
রোজার সময় একদিন যদি প্রিয় মানুষটার সাথে বাহিরে গিয়ে না ইফতার করা হয় তাহলে যেন ভালোই লাগে না। ভাবির সাথে রেস্টুরেন্টে গিয়ে ইফতার করেছিলেন শুনে খুব ভালো লাগলো। আপনাদের ইফতার করার মুহূর্তটা অনেক সুন্দর করেই আপনি সবার মাঝে তুলে ধরেছেন। খাবারের মেনু বেশ ভালো ছিল। নিশ্চয়ই খাবারের মানও ভালো ছিল। আমি তো মনে করি রমজানের আগেই ঈদের শপিং করে নেওয়াটাই বেটার। কারণ রমজানের সময় সবকিছুর দাম যেমন বাড়তি থাকে, তেমনি অনেক কষ্ট করে শপিং করা লাগে। আর রমজানের আগে যদি শপিং করে নেওয়া হয়, তাহলে রমজানের সময় আর কোন চিন্তাই থাকেনা শপিং করা নিয়ে।
হ্যাঁ আপু এই রেস্টুরেন্টের খাবারের মান বেশ ভালো। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি আর ভাবি মিলে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করতে গিয়েছি দেখে ভালো লাগলো। রেস্টুরেন্টে পরিবেশটা খুবই সুন্দর। আর খাবারের ফটোগ্রাফি গুলোও দেখে ভালো লাগলো। খাবার গুলো খুব সুন্দরভাবে সার্ভ করেছে তারা। আপনাদের কাটানো এই মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
হ্যাঁ আপু রেস্টুরেন্টের পরিবেশটা মোটামুটি ভালোই ছিলো। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আমি মাঝে মাঝেই সোনিয়াকে নিয়ে বাহিরে খাওয়া-দাওয়া করার চেষ্টা করি। কারণ মাঝেমধ্যে বাইরে খাওয়া দাওয়া করতে অনেক ভালো লাগে। আপনি ভাবিকে নিয়ে বাহিরে ইফতার করেছেন জেনে ভালো লেগেছে ভাই। ভাবিও নিশ্চয়ই অনেক বেশি খুশি হয়েছিল আপনার সাথে বাহিরে ইফতার করতে পেরে। জায়নামাজ নিয়ে একটা জায়গায় নামাজ আদায় করে ভালোই করেছেন। খাবার গুলো দেখতে তো লোভনীয় মনে হচ্ছে। সব মিলিয়ে পুরো সময়টাই ভালো কেটেছিল দেখছি।
আসলেই ভাই মাঝেমধ্যে বাহিরে খাওয়া দাওয়া করতে খুব ভালো লাগে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।