স্মৃতিচারণঃস্মৃতির পাতা থেকে বন্ধুদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করার জীবনের গল্প //পর্ব-২

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

আমাদের প্রত্যেকের জীবনে স্মৃতির পাতায় এমন কিছু গল্প রয়েছে। যে গল্পগুলো মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগেম বিশেষ করে ফেলে আসা সেই দিনের কথা যখন কল্পনা করি, তখন সেই দিনে যেন ফিরে যেতে ইচ্ছা করে। আমরা যখন কোন এক সময় নীরবে কোন প্রকৃতির মাঝে বসে থাকি মতখন যেন সেই স্মৃতিময় ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায়। আর বিশেষ করে স্কুল জীবনের কথা তো আরও বেশি মনে পড়ে। কারণ আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্তগুলো আমার মনে হয় স্কুল জীবনে কেটেছে।অনেক খুশির সাথে পার করেছি। এই স্কুল জীবনের মুহূর্তগুলো আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। কলেজ থেকে ইউনিভারসিটি যেন লাইফে অন্যরকম একটা অধ্যায় শুরু হয়। তারপরে তো কর্মব্যস্ততা জীবন নিয়ে যেন অন্যরকম একটা অধ্যায় পার করতে হয়।কিন্তু স্কুল জীবনের সেই মুহূর্তগুলো অন্যরকম জীবনের গল্প ছিল। তো বন্ধুরা আজকে আপনাদের সাথে স্কুল জীবনের স্মৃতিময় সেই গল্পের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করছি এই দ্বিতীয় পর্বের গল্পটি পড়ে ভালো লাগবে।


আমার বন্ধু মানিকের বাড়িতে যখন আমি রনি এবং অন্যান্য বন্ধুরা আসলামম এসে শুনতে পেলাম মানিক হাটে গেছে সবজি বিক্রি করতে। মানিকের বাবা বারান্দায় বসে রয়েছে। সে অনেক অসুস্থ। মানিকের বাবার কাছে এসে বললাম আচ্ছা আঙ্কেল মানিকের কি কোন পরীক্ষা বা ওর কোন বাড়িতে কাজ রয়েছে শুক্রবারে। যেদিন আমাদের পিকনিকে যাবো ঐ ডেটের কথা বললাম। তখন মানিকের বাবা বলল না তো আমাদের বাড়িতে তো কোনো কাজ নেই।তখন বললাম যে মালিক আমাদের সাথে তাহলে মিথ্যা কেন বলছে। ওর বাবা বলল কি হয়েছে, মানিকের বাবাকে বললাম, আমরা পিকনিকে যাবো ৭০০ করে টাকা চাঁদা তোলা হয়েছে। কিন্তু মানিক বলছে ওর বাড়িতে নাকি অনেক কাজ রয়েছে। ও যেতে পারবেনা। তখন মানিকের বাবা বলল দেখো বাবা মানিক আমার কাছে এসে বলেছিল আমার বন্ধুরা পিকনিকে যাবে। ওদের সাথে আনন্দময় মুহূর্তটা উপভোগ করতে পারলাম না। না পারলাম আমি পরে একসময় যাব। এটা বলল কিন্তু এর প্রধান কারণ হলো মানিকের টাকা দেওয়ার সামর্থন নেই। ও যদি পিকনিকে যায় তাহলে ওর জামা কাপড় কিনতে হবে কারণ ওর ভালো কোন পোশাক নেই। কারণ আমি অসুস্থ হয়ে গেছি, আমার এই ঔষধের খরচ অনেক লাগে।

hands-2847508_1280.jpg

Source

মানিকের বাবার কথা শুনে আর বোঝা বাকি রইল না। মানিক কিসের জন্য পিকনিকে যেতে চাচ্ছেনা। আসলে কিছু কিছু পরিবারের সন্তান রয়েছে। যাদের কষ্টগুলো বুকে চাপিয়ে পরিবারের দুঃখগুলোকে নিজের করি নাই এবং এই দুঃখগুলোকে তারা ভাগাভাগি করে নেয়। আবার কিছু কিছু সন্তান রয়েছে পরিবারকে বাধ্য করে তার প্রয়োজনে চাহিদা মিটানোর জন্য। মানিক ছিল খুবই ভালো মনের মানুষ। যার কারণে বাবার দুঃখ কষ্ট এবং পরিবারের কথা চিন্তা করে সে বন্ধুদের কাছে পিকনিকে না যাওয়ার কথা বলেছে। আর এমন ভাবে বলেছে যাতে বন্ধুরাও না বুঝে এবং নিজের কষ্টগুলো নিজের কাছে জমা করে রেখেছে। তাই আমরা মানিকের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। মানিক হাট থেকে কখন আসবে।


অনেক সময় আমরা অপেক্ষা করতে লাগলাম। মানিকদের বাড়িতে, তারপরে দেখতে পেলাম মানিক মাথায় একটি ঝুড়ি নিয়ে হাট থেকে ফিরেছে। আর এই ঝুড়ির ভিতর শাক নিয়ে এসে হাটে গিয়েছিলো। হাটে শাক বিক্রি করে প্রয়োজনীয় সবজি কিনে এনেছে এই ঝুড়ির ভিতরে।মানিক তো আমাদের দেখেই যেন অবাক হয়ে গেল। বলল কি রে তোরা কখন আসলপ, তোরা বন্ধুরা আমার বাড়িতে, মনে হচ্ছিল আমাদের দেখে ও চোখে আনন্দে হাসি জলময় করছে।


friendship-2366955_1280.jpg

Source

মানিক মাথা থেকে সবজির ঝুড়িটি তাড়াতাড়ি নামালো এবং ঝুড়ি ভিতর সেও হাট থেকে নেমকি কিনে এনেছে। আর এই নামকি আমাদের বন্ধুদের খাইতে দিল। বলো তোরা কখন এসেছিস, আজকে কি মনে করে আসলেই, বললাম যে আমরা এখান দিয়ে যাচ্ছিলাম। তাই ভাবলাম তোর সাথে দেখা করি। তো তোকে পেলাম না তাই অপেক্ষা করতেছিলাম মতোকে দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। মানিক বললো হায়রে বন্ধু তোরা আসবি এটা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি, ও যেন এক অন্যরকম অনুভূতি নিয়ে আমাদের সাথে কথা বলতে ছিল। কিন্তু আমরা যে মানিকের বাবার সাথে পিকনিকের বিষয়ে কথা বলেছি। সেটা মানিককে বুঝতে দিলাম না।



তারপরে মানিকের সাথে আমরা অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করেছি এবং সন্ধ্যা নেমে আসলো, আমরা বন্ধুরা মিলে মানিকদের বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে আসলাম এবং আসার পথে একটা ব্রিজ রয়েছে। আমরা সেই ব্রিজেে এপর বসে পরিকল্পনা করতে লাগলাম। কিভাবে মানিকে পিকনিকে নেওয়া যায়। রনি বলল যে এই বিষয়ে আমরা স্যারের সাথে আগে কথা বলি। তো বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্ত শেষ করলাম। আগামী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করব স্যারের সাথে এই বিষয়টা আলোচনা করে আমরা কি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেই পর্বের অংশটুকু।

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

জীবন যোদ্ধা মানিকের ঘটণা পড়ে কষ্ট পেলাম। এই বয়সে আনন্দ বিসর্জন দিয়ে পরিবারের দায়িত্ব কাধে নিয়ে, বাবার পাশে দাঁড়িয়েছে। স্যালুট মানিককে। বন্ধুর পাশে বন্ধুরা দাঁড়ায়, সেখানে ধনী-গরীব বাধা হয়ে দাড়ায়না। আপনার পোস্টটি ভাল লেগেছে ভাইয়া। পরবর্তি কিস্তির অপেক্ষায় রইলাম। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 2 months ago 

স্কুলে যাওয়ার বয়সে পরিবারের দায়িত্ব কাঁদে নেওয়া আসলেই অনেক বড় ব্যাপার এই দায়িত্ব সবাই নিতে পারে না।
বন্ধুত্ব কখনো ধনী বা গরিব দেখে হয় না। বন্ধু হয়ে বন্ধুর পাশে দাঁড়ানোর যে ব্যাপারটা গল্পের মাঝে উল্লেখ হয়েছে বিষয়টা সত্যি ভালো লাগলো। পরবর্তী অংশের অপেক্ষায় থাকবো। পোস্টটি এত সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 months ago 

ছোট বেলার এসব স্মৃতি আজ কেবলই গল্প ৷ ছোট বেলায় বন্ধুদের সাথে এমন কত রঙিন মুহূর্তেই না কাটিয়েছি আমরা প্রত্যেকে ৷ যাই হোক , আপনার ছোটবেলায় বন্ধুদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করার রঙিন স্মৃতিময় গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো ৷ খুবই সুন্দর লিখেছেন ৷ এরপর কি হলো জানানোর অপেক্ষায় রইলাম ৷ আশা করি এর পরের পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করবেন ৷ ধন্যবাদ আপনাকে

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 71297.37
ETH 3698.84
USDT 1.00
SBD 3.75