আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।
হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।
অর্থ টাকা পয়সা এর লোভ কোন মানুষই যেন ছাড়তে পারে না। আসলে অর্থের কারণে মানুষ পশুতে পরিণত হতেও দ্বিধাবোধ করে না। আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে, তারা শুধু অর্থকেই চোখে দেখে। তাদের সামনে কোন মনুষত্ববোধ থাকে না। তারা যেন অর্থের লোভে পড়ে অন্ধ হয়ে যায়। আর এই অর্থ ইনকাম করতে তিনি মানুষকে কুকুরের মত মনে করে। কারণ তার সামনে শুধু অর্থ চোখেই পড়ে। তার সামনে আর কোন মানুষ থাকে না, আর এই মানুষগুলোই যেন অর্থের লোভে পড়ে যায়। আসলে অর্থ প্রত্যেকটা মানুষেরই প্রয়োজন। কিন্তু অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে কি করব, একদিন আমরা এই পৃথিবী থেকে চলে যাব। তখন অর্থ পড়ে থাকবে, আর এই অর্থগুলো আমাদের অভিশাপ দেবে। কিন্তু এই চিন্তা যেন আমাদের মধ্যে থাকে না। আমাদের লোভ, আমরা যত ইনকাম করি, আরও বেশি করব। আরো বেশি করব, আর এই অর্থের লোভে পড়েই মানুষ যেন পশুতে পরিণত হয়। তাই আমাদের সমাজে অনেক মানুষ রয়েছে, যারা অর্থ অন্ধকারে ডুবে যায়। তারা এই অর্থ ইনকাম করতে মানুষকে খুন করে। মানুষকে পশুর মত মনে করে। তাদের কাছে সমাজে অর্থের মূল্য অনেক বেশি, কিন্তু কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যারা অর্থের কারণে বাবা মাকে খুন করতেও দ্বিধাবোধ করে না।
![IMG-20240507-WA0031(1).jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTUNqNdwBL7mvLuCrVdfr8m4aTDRpkSguRQvWXjKGCBmm/IMG-20240507-WA0031(1).jpg)
https://pixabay.com/fr/photos/homme-portrait-sans-abri-852423/
আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে এসেছি মানবতার ফেরিওয়ালা নামে মিল্টন সামাদ্দারকে নিয়ে।এই মিলটন সামাদদারের বাড়ি বরিশাল বিভাগে, ছোটবেলা থেকেই টাকার প্রতি নেশা ছিল তার অসীম। তিনি ছোটবেলা থেকেই নানা ধরনের অপকর্ম সাথে লিপ্ত ছিল। এমনকি শেষ পর্যন্ত তিনি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাবাকে পিটিয়ে শহরে চলে আসে এবং আড়াই হাজার টাকার চাকরি করতো এক ওষুধ কোম্পানিতে। সেখান থেকে তার প্রতারণা শুরু হয় এবং আস্তে আস্তে তিনি মানবতার ফেরিওয়ালা নামে পরিচিত লাভ করেন। আসলে রাস্তার পাশে পরে থাকা মানুষদের নিয়ে তিনি কাজ করতেন, অসহায় দরিদ্র ফকির মিসকিনদের তিনি সহায়তা করতেন, এটাই ছিলো তার প্রতারণার প্রথম ধাপ। মানবতার ফেরিওয়ালা হওয়ার পরিকল্পনাই তিনি সফল হয়। তার ফেসবুক ফলোয়ার পাঁচটি আইডি মিলে প্রায় দুই কোটি ফলোয়ার। আর তার মাধ্যমেই তিনি ভিডিও বড় লোকদের সহায়তার মাধ্যমে প্রতি মাসে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা আয় করে থাকেন।
আসলে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা বৃদ্ধ অসহায় প্রতিবন্ধীদের সহায়তা করলে মানুষ অনেক খুশি হয়। সকল মানুষ সবাইকেই সহায়তা করতে পারে না, কিন্তু কিছু মানুষ যখন এই রাস্তার পাশে পড়ে থাকা মানুষদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় এবং তাদেরকে যত্ন করে। তখন অন্যান্য মানুষেরা তাদের পাশে দাঁড়ায় এবং তাকে সাপোর্ট করে। ঠিক এই মিলটন সামাদ্দার, কেউ অনেক সহায়তা করেছে হাজার হাজার কোটি টাকা দান করেছে। আর এই মিলটন সামাদ্দার এই দানের টাকা দিয়ে তিনি চাইল্ড ওল্ড এন্ড কেয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে এবং সেখানে তিনি এর চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করেন। হাজার হাজার টাকা প্রতি মাসে আসতো, আর এই টাকা দিয়ে তিনি তার এই প্রতিষ্ঠান চালাতেন এবং সে দলবল নিয়ে রাস্তার আশেপাশে অসহায় মানুষ পেলেই, সেখানে ছুটে যেতেন তাদেরকে সাহায্য করতে। তাদেরকে যত্ন করার ভিডিও করতেন এবং যত্ন করে নিয়ে এসে তার এই অসহায় ফাউন্ডেশনে রাখতেন।
মিল্টন সামাদ্দারের এই মানবতার কাজগুলো ভিডিও দেখতে পেয়ে সকলে যেন মুগ্ধ হয়ে যায়। আসলে বৃদ্ধ মানুষদের সেবা করা এবং অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর, এই দৃশ্যগুলো প্রত্যেকটা মানুষের হৃদয়কে জয় করে নেয়। যার কারণে তাকে সবাই মানবতার ফেরিওয়ালা বলে থাকে। আর তাকে সাহায্য করার জন্য অনেক মানুষই টাকা দিয়ে থাকে, বিশেষ করে প্রবাসীরা তার একাউন্টে হাজার হাজার লাখ লাখ টাকা পাঠিয়ে দিত। আর এই টাকাগুলো নিয়ে তিনি গাড়ি-বাড়ি এবং অনেক কিছু তৈরি করতো। যেগুলো এই অসহায় মানুষদের ব্যবহারের জন্যই তিনি রেখেছেন বলে প্রচারণা করতো। তাদেরকে সেবা করতে এবং তাদের সাথে এমন এমন ভিডিও করতো মনে হতো সত্যিই সে মানবতার ফেরিওয়ালা। আর মানুষের সেবাই যেন তিনি জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু এই মানবতার ফেরিওয়ালার আড়ালে যে তিনি কত বড় খারাপ মানুষ, সেটা আসলে এই বাংলার মানুষ কল্পনা করতে পারেনি। আসলে মানুষ এতটা অভিনয় করতে পারে টাকার জন্য, এত খারাপ হতে পারে সেটা কেউই ভাবেনি। সবাই মিল্টন সামাদ্দারকে মানবতার ফেরিওয়ালা এবং তার কাছে বাহবা দিছিল, প্রশংসা করছিল। কিন্তু এই মিল্টন সামাদ্দার যে ভয়াবহ একজন নিকৃষ্ট মানুষ সেটা আজ প্রমাণিত হলো।
রাস্তার পাশে পড়ে থাকা অসহায় মানুষ এবং রোগ আক্রান্ত মানুষদের তিনি সেবা করতেন এবং তারা সুস্থ হয়ে যেত। সুস্থ হওয়ার কিছুদিন পরেই তারা মারা যেত, বেশিরভাগই এই ঘটনা হতো। যারা মারা যেত তাদেরকে শেষ গোসল করানোর জন্য ঢাকার এক মসজিদের কমিটিরা কিছু লোক এর দায়িত্ব নেন, তাকে ফ্রি ফ্রি গোসল করিয়ে দেওয়া হতো। আর যারা এই লাশগুলোকে গোসল করাতেন, তারা দেখতো কিডনির পাশে কাঁটা,ও সেলাই করা। প্রত্যেকটা মানুষেরই কিডনির পাশে কাটা থাকতো, আর এই কাঁটা সকল লাশেই দেখা যেত।তখন থেকেই সন্দেহ হয়,তাই তদন্ত করে শুরু করে।তদন্ত করে দেখে এই মিল্টন তিনি মানবতার ফেরিওয়ালা নয়। তিনি মানবতার একজন নিকৃষ্ট মানুষ। তিনি মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে মানুষকে মানুষই মনে করতো না।আসলে মানুষ এতটা খারাপ হয়, মানুষ যে এতটা কসাইয়ের মতো আচরণ করতে মানুষের সাথে। ভাবতেই ভয়ে শরীর শিউরে উঠছে।
এই মিল্টন সামাদদার আসলে একজন নেশাখোর, তিনি নেশা পান করতেন। আর বৃদ্ধ লোকদের তিনি মারধর করতেন এবং তাদের রক্ত দিয়ে তিনি যেন নেশার ঘোর কাটাতেন। তিনি মানুষের আঙ্গুল কেটে ফেলতেন এবং অনেক ধরনের নির্যাতন করতেন। আর শেষমেষ তিনি কিডনি পাচার করতেন এবং কিডনি বিক্রি করে অর্থ ইনকাম করতেন। আসলে মানুষের অর্থের লোভ কখনো শেষ হয়ে যায় না। তিনি মানবতার ফেরিওয়ালা হয়েও অনেক অর্থ কামাই করতে পেরেছিলেন, তারপরেও যেন তার নেশা ছিল আরো অর্থ কামাই করবে। যার কারণে মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে তিনি অসহায় মানুষদের সাথে প্রতারণা করতেন। তিনি আসলে মানুষ না, তিনি একজন পশু। আর এই পশুর শাস্তি যেন সর্বোচ্চ হয়, এটাই কামনা করি। আসলে মানুষ যে এতটা খারাপ হতে পারে, সেটা এই মিলটন সামাদ্দারকে না দেখলে বাঙালি জানতো না।
ডিবি পুলিশ হারুনের মুখে তার অপকর্মের কথা জানতে পেরে গা যেন ভয়ে শিউরে উঠল। সে কিভাবে এতটা জঘন্য মানুষ হয়ে গেল, আর কিভাবে এই জঘন্যতম কাজ করতে পারল। আসলে মানবতার সেবার নামে যে তিনি প্রতিষ্ঠান খুলেছেন সেই সেবাকে কেন্দ্র করে তিনি এই অসৎ কাজ করতেন। এই সমাজে মানবতার ফেরিওয়ালা সেজেও অনেক মানুষ অপকর্ম করে যাচ্ছে। আসলে মিলটন সমাদ্দার ছোটবেলা থেকেই তিনি খারাপ মানুষ ছিলেন, বাবাকে যে পিটিয়েছে সে ঢাকায় আসে,সেই মানুষ অসহায় মানুষদের কি সেবা করবে, যার কারণে তার মধ্যে ছিল এই মানবতার সেবা করার পরিকল্পনা এবং এই সেবা করেই তিনি মানুষের দুর্বল পয়েন্টগুলোকে আঘাত করে অর্থ ইনকাম করবেন। আসলে অর্থ লোভ তাকে ছাড়তে পারিনি, আর পাপ কাজ করলে যে শাস্তি পেতেই হয় এটাই তার প্রমাণ।পাব তার বাপকেও ছাড়ে না, এটাই যেন প্রমাণ হয়েছে। আশা করছি মিলটন সমাদ্দারকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে এবং এই জঘন্যতম কাজ যেন বাংলার আর কোন মানুষ করতে সাহস না পায়।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmfRETShxA5EQdPmpF6ChkQd5MkXJPifATT3TZdvk5sEC1/standard_Discord_Zip.gif)
আমার পরিচয়
![IMG_20230821_180423.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW19mPSEN3sfPY4ik8ubDQ1oYiWMmVAnS8B3CjUim6BzQ/IMG_20230821_180423.jpg)
আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।
![Amar_Bangla_Blog_logo_png.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmT7FS4G6HK5QQR2iNVKKn4AkXtczka4eyHTUhtFyeERAZ/Amar_Bangla_Blog_logo_png.png)
👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺
https://twitter.com/mohamad786FA/status/1787856746368901280?t=xVquiAHsSt31ZquGXmB5XQ&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে ভাই মানুষ অর্থের লোভে এতটা খারাপ হতে পারে সেটা এই মিল্টন সামাদ্দকে না দেখলে বুঝতাম না। মিল্টন সামাদের এই অপকর্মের খবর শুনতে পেয়ে সত্যিই অনেক খারাপ লেগেছে। তার ফেসবুকে ভিডিওগুলো আমি দেখেছি। সত্যি মানব সেবাই যেন সে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলো,এত সহানুভূতি এসে দেখিয়েছে আর সেই মিল্টন সে মানবতার ফেরিওয়ালার পেছনে যে এত জঘন্যতম কাজ করেছে। সেটা সত্যি নিকৃষ্ট মানুষ ছাড়া সম্ভব না।সমাজের মানুষের হৃদয় নিয়ে খেলেছে, আসলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হোক এটাই কামনা করি।
ভাই কি আর বলবো বর্তমান যুগটাই চলছে এমন মানবতার নামে চলছে অমানবিক কর্মকাণ্ড।ভালোভাবে খুঁতিয়ে দেখতে গেলে মুখোশের আড়ালে এরকম অনেক ভয়ংকার মিল্টন সামাদ্দার খুঁজে পাওয়া যাবে।এদেরকে আইনের আওতায় আনা দরকার এবং এমন শাস্তি দেওয়া দরকার যাতে করে কেউ আর এরকম অন্যায় করতে সাহস না করে ।
আসলেই, মানুষ নামের কলঙ্ক এমক্ন মিল্টন সমাদ্দার রা। ঘেন্নায় যেন গা গুলিয়ে আসে এদের কর্মকাণ্ড শুনলে! মিডিয়ার মাধ্যমে জানা হয়েছে এনার সম্পর্কে। মানবতার ফেরিওয়ালার আড়ালে কী ভয়াবহতা এনার কর্মকান্ডে!! একারণেই সহজে সবকিছু চোখের দেখা দেখে বিশ্বাস করতে হয় না। ভাবতেই অবাক লাগে,, এদের বিবেক কি একটুও কাজ করে না! আদৌ কি এদের বিবেক বলে কিছু আছে!